দাম কমলেও ক্রেতা কম ব্রয়লারের

কয়েকদিন আগেও প্রায় ৩০০ ছুঁই ছুঁই করছিল ব্রয়লারের দাম। ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায় প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে। তবে বিভিন্ন অভিযান ও নানা পদক্ষেপের কারণে ব্রয়লারের দাম কমে আসতে শুরু করেছে। দুই দিন আগে ২৪৫ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হলেও আজ প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়।

তবে বিক্রেতারা বলছেন, ব্রয়লারের দাম বাড়তি থাকায় এতদিন ক্রেতা খুব কম ছিল। একজন বিক্রেতা যেখানে প্রতিদিন ১০০ মুরগি বিক্রি করত, দাম বাড়তি থাকায় সেখানে ৫০টি মুরগিও বিক্রি করতে পারেনি। গত দুই দিনে যখন মুরগির দাম কিছুটা কমেছে তখনও ব্রয়লারের তেমন ক্রেতা পাওয়া যায়নি। এর কারণ হতে পারে মাসের শেষ, তাই সবার হাতে এখন টাকা নেই। তাছাড়া ব্রয়লারের দাম কমেছে এটা এখনও অনেকে জানে না। তবে দুই-একদিনের মধ্যে আবার ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে বলে আশা বিক্রেতাদের।

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ বাজারেই ব্রয়লার প্রতি কেজি ২২০ টাকায় বিক্রি হলেও কিছু কিছু দোকানে ২৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, পাশাপাশি কক লেয়ার ৩৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজারের ক্রেতা সাজেদুর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষের কাছে জোর করে যে দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করেছে তা কি মানুষ ভুলে গেছে? অসাধুরা সাধারণ নিম্নআয়ের মানুষের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে নিয়েছে। গতকাল দাম কমেছে ব্রয়লারের কিন্তু এখনও ক্রেতা কম দেখছি। তবু সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ, কিছুটা হলেও দাম কমানো হয়েছে ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে।

রাজধানীর গুলশানসংলগ্ন লেকপাড়ের বড় বাজারের ব্রয়লার বিক্রেতা খলিলুর রহমান বলেন, কিছুদিন বাড়তি থাকার পর এখন ব্রয়লারের বাজার কিছুটা কম যাচ্ছে। যেই মুরগির দাম ২৭০/২৮০ টাকা হয়ে গিয়েছিল সেটা এখন ২২০ টাকা হয়েছে। তবুও সকাল থেকে ক্রেতা নেই তেমন। দাম বাড়তি যাওয়ায় আমাদের ব্যবসাও অর্ধেকে নেমে এসেছিল, ক্রেতার সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে কমে এসেছিল। যে ব্যবসায়ী আগে ১০০টি মুরগি বিক্রি করত, সে ব্যবসায়ীর তখন ৫০টি মুরগি বিক্রি করাও কঠিন হয়ে গিয়েছিল। এখন নতুন করে ব্রয়লারের দাম কমলেও ক্রেতার সংখ্যা তেমন বাড়েনি। নতুন মাস এলে বেতন পাওয়ার পর ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে।

একই বাজারে ব্রয়লার কিনতে আসা ডাব বিক্রেতা খোরশেদ আলম বলেন, বাজারে এসে দেখলাম ব্রয়লারের দাম কমেছে, তাই দেড় কেজি ওজনের একটা ব্রয়লার কিনলাম। কয়েকদিন আগে যখন ব্রয়লারের দাম বাড়তি যাচ্ছিল তখন অতিরিক্ত দামের কারণে ব্রয়লার কিনিনি। দাম কমের কারণে কিনলাম।

এদিকে, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) সহকারী পরিচালক (বাজার তথ্য) নাসির উদ্দিন তালুকদার জানিয়েছেন, বাজারে ব্রয়লার মুরগি ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এক মাস আগে দাম ছিল ২০০ থেকে ২৩০ টাকা। আর এক বছর আগে এসময় ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা।

মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩ , ১৪ চৈত্র ১৪২৯, ০৫ রমজান ১৪৪৪

দাম কমলেও ক্রেতা কম ব্রয়লারের

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

কয়েকদিন আগেও প্রায় ৩০০ ছুঁই ছুঁই করছিল ব্রয়লারের দাম। ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায় প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে। তবে বিভিন্ন অভিযান ও নানা পদক্ষেপের কারণে ব্রয়লারের দাম কমে আসতে শুরু করেছে। দুই দিন আগে ২৪৫ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হলেও আজ প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়।

তবে বিক্রেতারা বলছেন, ব্রয়লারের দাম বাড়তি থাকায় এতদিন ক্রেতা খুব কম ছিল। একজন বিক্রেতা যেখানে প্রতিদিন ১০০ মুরগি বিক্রি করত, দাম বাড়তি থাকায় সেখানে ৫০টি মুরগিও বিক্রি করতে পারেনি। গত দুই দিনে যখন মুরগির দাম কিছুটা কমেছে তখনও ব্রয়লারের তেমন ক্রেতা পাওয়া যায়নি। এর কারণ হতে পারে মাসের শেষ, তাই সবার হাতে এখন টাকা নেই। তাছাড়া ব্রয়লারের দাম কমেছে এটা এখনও অনেকে জানে না। তবে দুই-একদিনের মধ্যে আবার ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে বলে আশা বিক্রেতাদের।

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ বাজারেই ব্রয়লার প্রতি কেজি ২২০ টাকায় বিক্রি হলেও কিছু কিছু দোকানে ২৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, পাশাপাশি কক লেয়ার ৩৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজারের ক্রেতা সাজেদুর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষের কাছে জোর করে যে দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করেছে তা কি মানুষ ভুলে গেছে? অসাধুরা সাধারণ নিম্নআয়ের মানুষের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে নিয়েছে। গতকাল দাম কমেছে ব্রয়লারের কিন্তু এখনও ক্রেতা কম দেখছি। তবু সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ, কিছুটা হলেও দাম কমানো হয়েছে ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে।

রাজধানীর গুলশানসংলগ্ন লেকপাড়ের বড় বাজারের ব্রয়লার বিক্রেতা খলিলুর রহমান বলেন, কিছুদিন বাড়তি থাকার পর এখন ব্রয়লারের বাজার কিছুটা কম যাচ্ছে। যেই মুরগির দাম ২৭০/২৮০ টাকা হয়ে গিয়েছিল সেটা এখন ২২০ টাকা হয়েছে। তবুও সকাল থেকে ক্রেতা নেই তেমন। দাম বাড়তি যাওয়ায় আমাদের ব্যবসাও অর্ধেকে নেমে এসেছিল, ক্রেতার সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে কমে এসেছিল। যে ব্যবসায়ী আগে ১০০টি মুরগি বিক্রি করত, সে ব্যবসায়ীর তখন ৫০টি মুরগি বিক্রি করাও কঠিন হয়ে গিয়েছিল। এখন নতুন করে ব্রয়লারের দাম কমলেও ক্রেতার সংখ্যা তেমন বাড়েনি। নতুন মাস এলে বেতন পাওয়ার পর ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে।

একই বাজারে ব্রয়লার কিনতে আসা ডাব বিক্রেতা খোরশেদ আলম বলেন, বাজারে এসে দেখলাম ব্রয়লারের দাম কমেছে, তাই দেড় কেজি ওজনের একটা ব্রয়লার কিনলাম। কয়েকদিন আগে যখন ব্রয়লারের দাম বাড়তি যাচ্ছিল তখন অতিরিক্ত দামের কারণে ব্রয়লার কিনিনি। দাম কমের কারণে কিনলাম।

এদিকে, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) সহকারী পরিচালক (বাজার তথ্য) নাসির উদ্দিন তালুকদার জানিয়েছেন, বাজারে ব্রয়লার মুরগি ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এক মাস আগে দাম ছিল ২০০ থেকে ২৩০ টাকা। আর এক বছর আগে এসময় ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা।