তিস্তা পানিশূন্য হয়ে মরা খালে পরিণত, জেগেছে ধু-ধু বালুচর

শত শত বছর ধরে প্রবাহমান খরস্্েরাতা রংপুর অঞ্চলের প্রধান নদী তিস্তা নদী, ভারতের উজানে গজল ডোবা ব্যারেজসহ বিভিন্ন খালের মাধ্যমে একতরফা ভাবে প্রত্যাহার করে নেয়ায় বাংলাদেশ অংশ রংপুর অঞ্চলে শুস্ক মৌসুমে পানি শুন্য হয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। পুরোনদী জুড়ে জেগে উঠেছে ধুধু বালু চর। ফলে তিস্তা ব্যারেজকে কেন্দ্র করে ধান ক্ষেতে পানি দিয়ে সেচ কাজও বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে। তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ এ যাবতকালের সর্বনিম্ন ৮শ’ কিউসেকে দাঁড়িয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহি প্রকৌশলী আসাফাদৌলা গতকাল সকালে সংবাদকে জানিয়েছেন তিস্তা ব্যারেজে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ সর্ব নিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। তবে গত শুক্রবার ভারতের উজানে বৃষ্টিপাত হওয়ায় ভারতের গজলডোবা ব্যারেজ দিয়ে গত শনিবার পর্যন্ত ৮শ’ কিউসেক পানি এসেছে। তবে সেই পানি চরের বালুতে মিশে শুকিয়ে গেছে। এখন পুরো তিস্তা নদী মরা খালে পরিণত হয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ অব্যাহত থাকার কোন সম্ভাবনা নেই।

অন্যদিকে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল জানিয়েছেন এবার শুস্ক মৌসুমে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ একেবারে সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করে নীচে নেমে গেছে। নীলফামারীর ডালিয়া থেকে শুরু করে রংপুর লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদীর অবস্থা করুন মরা খালে পরিণত হওয়ায় তিস্তা ব্যারেজ থেকে নদী পানি দিয়ে জমিতে ধান চাষে মহাবিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে তিস্তা নদী পানি শুন্য হওয়ার কারণে জীব বৈচিত্রে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। তার ওপর ভারতের পশ্চিম বঙ্গে সেচ খাল করার পরিকল্পনা তিস্তা পাড়ের মানুষের মরার ওপর খাড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এর প্রতিবাদে ফুসে উঠেছে রংপুর অঞ্চলের মানুষ প্রতিদিনই চলছে বিক্ষোভ সমাবেশ মানব বন্ধন।

তিস্তা নদীর ওপর নির্ভরশীল রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলার প্রায় কোটি মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে নদী খনন না করায় ভরাট হয়ে গেছে নদীর বেশিরভাগ এলাকা। ফলে ভরা বর্ষা মৌসুমে পানি ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলায় দুকুল ছাপিয়ে বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় বাড়ি ঘর ফসলের ক্ষেত। সেই সঙ্গে নদী ভাঙনে গৃহহারা হয়ে পড়ছে হাজার হাজার পরিবার। তিস্তা নদীর উজানে ভারত গজল ডোবা বাঁধ দিয়ে এক তরফা ভাবে পানি প্রত্যাহার করায় শুস্ক মৌসুমে এ অঞ্চলে পুরো পানি শুন্য হয়ে পড়ে। কিন্তু তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় পানির প্রবাহ মাত্র ৫শ’ কিউসেকে নেমে এসেছে যা বিগত ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিশ্চুক তিস্তা ব্যারজে কর্মরত একজন প্রকৌশলী জানান ভারত উজানে গজলডোবা বাঁধ নির্মাণ করে এমনিতেই শুস্ক মৌসুমে পানি প্রত্যাহার করে নেয় এবার তারা ব্যারেজের পাশাপাশি খাল খনন করেও পানি নিয়ে নিচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদী পানি শুন্য হয়ে পড়েছে। চারিদিকে শুধু ধুধু বালু চর ছাড়া পানি নেই। নৌকা চলাচল বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ অংশে নির্মিত তিস্তা ব্যারেজের মাধ্যমে এ অঞ্চলে প্রায় ৭ লাখ হেক্টর জমিতে নদীর পানি সেচ দিয়ে ধান চাষ হতো সেটা ভারতের উজানে পানির প্রবাহ আটকে রাখার কারণে তা কমতে কমতে ৬০ থেকে ৭০ হাজার হেক্টরে নেমে এসেছে। এবার আরও ভয়াবহ অবস্থা নদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় সেচ কার্যক্রম বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তা আবদুল বাতেন জানান তিস্তা ব্যারেজের মাধ্যমে রংপুর দিনাজপুর অঞ্চলের ৩৫টি উপজেলায় খাল খননের মাধ্যমে নদীর পানি সরবরাহ করার মাধ্যমে যে জমিতে সেচ দেয়া হতো তাও এবার পানির অভাবে দেয়া যাচ্ছেনা। ফলে কৃষকরা বাধ্য হয়ে সেচ যন্ত্রে ব্যবহার করে জমিতে সেচ দিচ্ছে এতে দ্বিগুণ ব্যায় করতে বাধ্য হচ্ছে। সরেজমিন তিস্তা ব্যারেজ এলাকা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তিস্তা নদী সংলগ্ন জমি এমনিতেই বালু মিশ্রিত। নদীর পানি ছাড়া সেচ যন্ত্র দিয়ে জমিতে পানি দিনে ৩/৪ বার দিলেও পানি ধারণ করতে পারছেনা। দোয়ানী এলাকার কৃষক আকব্দুর রহমান, সাহেব আলীসহ অনেকেই জানালো একই কথা।

অন্যদিকে তিস্তা ব্যারেজের সঙ্গে সংযুক্ত করে খালের মাধ্যমে পানি নেয়া তারাগজ্ঞ উপজেলার সহিদার রহমান, আবুল খায়ের , রহমানসহ অনেকেই অভিযোগ করলেন জমিতে পানি সেচ দেয়া যাচ্ছেনা।

এদিকে ভারতের পশ্চিম বঙ্গ সরকার আর্ন্তজাতিক আইন লংঘন করে জলপাইগুড়ি আর কোচবিহার জেলায় ৪৭ কিলোমিটার দীর্ঘ দুটি খাল নির্মাণ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চলে তিস্তা নদী মরা খালে পরিণত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে রংপুরে প্রতিদিন বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ মানববন্ধন ও সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সফিয়ার রহমান অভিযোগ করেছেন ভারত তাদের উজানে আর্ন্তজাতিক আইন লংঘন করে

ব্যারেজ নির্মান করে পানি প্রত্যাহার করছে এখন আবার খাল খনন করে রংপুর অঞ্চলকে মরুভুমিতে পরিনত করার পায়তারা করছে। তিনি বলেন দীর্ঘদিন ধরে শুনছি ভারতের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিলেও রাজ্য সরকারের বাঁধায় তা বাস্তবায়ন হচ্ছেনা। এটা পাতানো খেলা উল্লেখ করে বলেন পদ্মা সেতুর মতো নিজেদের অর্থায়নে নদী খনন বাঁধ নির্মান এবং জলাধার নির্মান করে পানি সংরক্ষনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।

একই দাবি করলেন তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সভাপতি অধ্যাক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী। তিনি বলেন দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা পাড়ের মানুষের দাবি নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা নদী খনন করে বর্ষা কালে পানি ধরে রাখার জন্য খাল নির্মান নদী ভাঙন রোধ করতে বাঁধ নির্মান যা বাস্তবায়ন কোন উদ্যেগ নেয়া হচ্ছেনা। তিনি বলেন ভারতের আগ্রাসন বন্ধ আর কোন দেশের উপর ভরসা না করে নিজস্ব অর্থায়নে নদী খনন করে পানির প্রবাহ অব্যাহত রাখার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান তিনি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মাহবুবার রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পশ্চিম বঙ্গ সরকারের তিস্তা নদীর উজানে এক তরফা খাল খনন করে পানি প্রত্যাহারের বিষয়টি আনুষ্ঠানিক ভাবে অবহিত নন বলে দাবি করে তিস্তা নদী পুনঃ খনন করা সহ সার্বিক বিষয়ে পদক্ষেপ নেবার কথা জানালেন এ কর্মকর্তা।

মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩ , ১৪ চৈত্র ১৪২৯, ০৫ রমজান ১৪৪৪

তিস্তা পানিশূন্য হয়ে মরা খালে পরিণত, জেগেছে ধু-ধু বালুচর

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর

image

রংপুর : শুকিয়ে গেছে তিস্তার পানি, ধু-ধু বালুচর -সংবাদ

শত শত বছর ধরে প্রবাহমান খরস্্েরাতা রংপুর অঞ্চলের প্রধান নদী তিস্তা নদী, ভারতের উজানে গজল ডোবা ব্যারেজসহ বিভিন্ন খালের মাধ্যমে একতরফা ভাবে প্রত্যাহার করে নেয়ায় বাংলাদেশ অংশ রংপুর অঞ্চলে শুস্ক মৌসুমে পানি শুন্য হয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। পুরোনদী জুড়ে জেগে উঠেছে ধুধু বালু চর। ফলে তিস্তা ব্যারেজকে কেন্দ্র করে ধান ক্ষেতে পানি দিয়ে সেচ কাজও বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে। তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ এ যাবতকালের সর্বনিম্ন ৮শ’ কিউসেকে দাঁড়িয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহি প্রকৌশলী আসাফাদৌলা গতকাল সকালে সংবাদকে জানিয়েছেন তিস্তা ব্যারেজে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ সর্ব নিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। তবে গত শুক্রবার ভারতের উজানে বৃষ্টিপাত হওয়ায় ভারতের গজলডোবা ব্যারেজ দিয়ে গত শনিবার পর্যন্ত ৮শ’ কিউসেক পানি এসেছে। তবে সেই পানি চরের বালুতে মিশে শুকিয়ে গেছে। এখন পুরো তিস্তা নদী মরা খালে পরিণত হয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ অব্যাহত থাকার কোন সম্ভাবনা নেই।

অন্যদিকে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল জানিয়েছেন এবার শুস্ক মৌসুমে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ একেবারে সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করে নীচে নেমে গেছে। নীলফামারীর ডালিয়া থেকে শুরু করে রংপুর লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদীর অবস্থা করুন মরা খালে পরিণত হওয়ায় তিস্তা ব্যারেজ থেকে নদী পানি দিয়ে জমিতে ধান চাষে মহাবিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে তিস্তা নদী পানি শুন্য হওয়ার কারণে জীব বৈচিত্রে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। তার ওপর ভারতের পশ্চিম বঙ্গে সেচ খাল করার পরিকল্পনা তিস্তা পাড়ের মানুষের মরার ওপর খাড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এর প্রতিবাদে ফুসে উঠেছে রংপুর অঞ্চলের মানুষ প্রতিদিনই চলছে বিক্ষোভ সমাবেশ মানব বন্ধন।

তিস্তা নদীর ওপর নির্ভরশীল রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলার প্রায় কোটি মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে নদী খনন না করায় ভরাট হয়ে গেছে নদীর বেশিরভাগ এলাকা। ফলে ভরা বর্ষা মৌসুমে পানি ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলায় দুকুল ছাপিয়ে বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় বাড়ি ঘর ফসলের ক্ষেত। সেই সঙ্গে নদী ভাঙনে গৃহহারা হয়ে পড়ছে হাজার হাজার পরিবার। তিস্তা নদীর উজানে ভারত গজল ডোবা বাঁধ দিয়ে এক তরফা ভাবে পানি প্রত্যাহার করায় শুস্ক মৌসুমে এ অঞ্চলে পুরো পানি শুন্য হয়ে পড়ে। কিন্তু তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় পানির প্রবাহ মাত্র ৫শ’ কিউসেকে নেমে এসেছে যা বিগত ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিশ্চুক তিস্তা ব্যারজে কর্মরত একজন প্রকৌশলী জানান ভারত উজানে গজলডোবা বাঁধ নির্মাণ করে এমনিতেই শুস্ক মৌসুমে পানি প্রত্যাহার করে নেয় এবার তারা ব্যারেজের পাশাপাশি খাল খনন করেও পানি নিয়ে নিচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদী পানি শুন্য হয়ে পড়েছে। চারিদিকে শুধু ধুধু বালু চর ছাড়া পানি নেই। নৌকা চলাচল বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ অংশে নির্মিত তিস্তা ব্যারেজের মাধ্যমে এ অঞ্চলে প্রায় ৭ লাখ হেক্টর জমিতে নদীর পানি সেচ দিয়ে ধান চাষ হতো সেটা ভারতের উজানে পানির প্রবাহ আটকে রাখার কারণে তা কমতে কমতে ৬০ থেকে ৭০ হাজার হেক্টরে নেমে এসেছে। এবার আরও ভয়াবহ অবস্থা নদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় সেচ কার্যক্রম বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তা আবদুল বাতেন জানান তিস্তা ব্যারেজের মাধ্যমে রংপুর দিনাজপুর অঞ্চলের ৩৫টি উপজেলায় খাল খননের মাধ্যমে নদীর পানি সরবরাহ করার মাধ্যমে যে জমিতে সেচ দেয়া হতো তাও এবার পানির অভাবে দেয়া যাচ্ছেনা। ফলে কৃষকরা বাধ্য হয়ে সেচ যন্ত্রে ব্যবহার করে জমিতে সেচ দিচ্ছে এতে দ্বিগুণ ব্যায় করতে বাধ্য হচ্ছে। সরেজমিন তিস্তা ব্যারেজ এলাকা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তিস্তা নদী সংলগ্ন জমি এমনিতেই বালু মিশ্রিত। নদীর পানি ছাড়া সেচ যন্ত্র দিয়ে জমিতে পানি দিনে ৩/৪ বার দিলেও পানি ধারণ করতে পারছেনা। দোয়ানী এলাকার কৃষক আকব্দুর রহমান, সাহেব আলীসহ অনেকেই জানালো একই কথা।

অন্যদিকে তিস্তা ব্যারেজের সঙ্গে সংযুক্ত করে খালের মাধ্যমে পানি নেয়া তারাগজ্ঞ উপজেলার সহিদার রহমান, আবুল খায়ের , রহমানসহ অনেকেই অভিযোগ করলেন জমিতে পানি সেচ দেয়া যাচ্ছেনা।

এদিকে ভারতের পশ্চিম বঙ্গ সরকার আর্ন্তজাতিক আইন লংঘন করে জলপাইগুড়ি আর কোচবিহার জেলায় ৪৭ কিলোমিটার দীর্ঘ দুটি খাল নির্মাণ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চলে তিস্তা নদী মরা খালে পরিণত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে রংপুরে প্রতিদিন বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ মানববন্ধন ও সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সফিয়ার রহমান অভিযোগ করেছেন ভারত তাদের উজানে আর্ন্তজাতিক আইন লংঘন করে

ব্যারেজ নির্মান করে পানি প্রত্যাহার করছে এখন আবার খাল খনন করে রংপুর অঞ্চলকে মরুভুমিতে পরিনত করার পায়তারা করছে। তিনি বলেন দীর্ঘদিন ধরে শুনছি ভারতের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিলেও রাজ্য সরকারের বাঁধায় তা বাস্তবায়ন হচ্ছেনা। এটা পাতানো খেলা উল্লেখ করে বলেন পদ্মা সেতুর মতো নিজেদের অর্থায়নে নদী খনন বাঁধ নির্মান এবং জলাধার নির্মান করে পানি সংরক্ষনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।

একই দাবি করলেন তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সভাপতি অধ্যাক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী। তিনি বলেন দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা পাড়ের মানুষের দাবি নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা নদী খনন করে বর্ষা কালে পানি ধরে রাখার জন্য খাল নির্মান নদী ভাঙন রোধ করতে বাঁধ নির্মান যা বাস্তবায়ন কোন উদ্যেগ নেয়া হচ্ছেনা। তিনি বলেন ভারতের আগ্রাসন বন্ধ আর কোন দেশের উপর ভরসা না করে নিজস্ব অর্থায়নে নদী খনন করে পানির প্রবাহ অব্যাহত রাখার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান তিনি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মাহবুবার রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পশ্চিম বঙ্গ সরকারের তিস্তা নদীর উজানে এক তরফা খাল খনন করে পানি প্রত্যাহারের বিষয়টি আনুষ্ঠানিক ভাবে অবহিত নন বলে দাবি করে তিস্তা নদী পুনঃ খনন করা সহ সার্বিক বিষয়ে পদক্ষেপ নেবার কথা জানালেন এ কর্মকর্তা।