টি-২০’র রেকর্ড রানের ম্যাচে প্রোটিয়ার জয়

প্রথমবারের মতো টি-২০ ক্রিকেটে এক ম্যাচে ৫শ’ রানের বিশ্ব রেকর্ড হলো। গত রোববার রাতে সেঞ্চুরিয়ানে দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার টি-২০ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের দুই ইনিংস মিলিয়ে মোট ৫১৭ রান হয়েছে। এমন বিশ্ব রেকর্ডের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এ ম্যাচ জিতে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা ফেরালো প্রোটিয়ারা।

ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৫৮/৮ ও দক্ষিণ আফ্রিকা ১৮.৫ ওভারে ২৫৯/৪ রান করে। এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রানের বিশ^রেকর্ড হয় এ ম্যাচে। আগেরটি ছিল ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ২০১৬ সালে এক ম্যাচে ৪৮৯ রান করেছিল ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে পাকিস্তান সুপার লীগের এক ম্যাচে ৫১৫ রানের রেকর্ডও ভাঙেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ-দক্ষিণ আফ্রিকা দল।

এ ম্যাচে সর্বমোট বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি হয়েছে ৮১টি। যা টি-২০ ইতিহাসে বিশ^রেকর্ড।

ম্যাচে সর্বোচ্চ ৩৫টি ছক্কারও বিশ^রেকর্ড গড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এর মধ্যেÑ ২২টি ছক্কা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসে। ইনিংসে এক দলের সর্বোচ্চ ছক্কায় আফগানিস্তানের সাথে যৌথভাবে বিশ^রেকর্ডের মালিক এখন ক্যারিবীয়রা।

টস জিতে বোলিং করতে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো না হলেও দ্বিতীয় উইকেটে ৫৮ বলে ১৩৫ রান যোগ করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইল মায়ার্স ও জনসন চার্লস। ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় ২৭ বলে ৫১ রান করে ফিরেন মায়ার্স।

৩৯ বলে টি-২০ ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন চার্লস। ৪৭ বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে করা ক্রিস গেইলের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙেন চার্লস। শেষ পর্যন্ত ১০টি চার ও ১১টি ছক্কায় ৪৬ বলে ১১৮ রানে আউট হন চার্লস।

চার্লসের পর অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল ১৯ বলে ২৮ এবং রোমারিও শেফার্ড ১৮ বলে অপরাজিত ৪১ রান করেন। ১টি চার ও ৪টি ছয় মারেন শেফার্ড। এতে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২৫৮ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যা ক্যারিবীয়দের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। বল হাতে দক্ষিণ আফ্রিকার মার্কো জানসেন ৩টি ও ওয়েন পারনেল ২টি উইকেট নেন।

২৫৯ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৬৫ বলে ১৫২ রান তোলেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও রেজা হেনড্রিক্স। ৩৩ বলেই ১০০ রান তুলে ফেলেন তারা। যা উদ্বোধনী জুটিতে দ্বিতীয় দ্রুততম শতরান। পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ১০২ রান করে বিশ^রেকর্ডের মালিক হয় প্রোটিয়ারা।

জুটিতে ৪৩ বল খেলে টি-২০ ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ডি কক। শতরানে পা দিয়ে সেখানেই থামেন তিনি। ৪৪ বল খেলে ৯টি চার ও ৮টি ছক্কা মারেন ডি কক।

দলীয় ১৫২ রানে ডি কক ফেরার পর ২৮ বলে ১১টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৮তে আউট হন হেনড্রিক্স। পরের দিকে রিলি রুশো ৪ বলে ১৬ ও ডেভিড মিলার ১০ বলে ১০ রান করেন।

এরপর ৭ বল বাকি রেখে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অবস্মরণীয় জয়ের স্বাদ দেন অধিনায়ক আইডেন মার্করাম ও হেনরিচ ক্লাসেন। মার্করাম ২১ বলে অপরাজিত ৩৮ এবং ক্লাসেন ৭ বলে অপরাজিত ১৬ রান করেন। ২৫৯ রানের টার্গেট স্পর্শ করে ম্যাচ জয়ের বিশ^রেকর্ড গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচ সেরা হন প্রোটিয়াদের ডি কক।

সংক্ষিপ্ত স্কোর : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০ ওভারে ২৫৮/৫ (মেয়ার্স ৫১, চার্লস ১১৮, পাওয়েল ২৮, শেফার্ড ৪১*; পার্নেল ২/৪৩, ইয়ানসেন ৩/৫২)

দক্ষিণ আফ্রিকা ১৮.৫ ওভারে ২৫৯/৪ (ডি কক ১০০, হেনড্রিকস ৬৮, মারক্রাম ৩৮*; হোল্ডার ১/৪৮, স্মিথ ১/৩৬, রিফার ১/৪২, পাওয়েল ১/২৭)।

ম্যাচ সেরা : কুইন্টন ডি কক।

আজ জোহানেবার্গে শেষ টি-২০।

মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩ , ১৪ চৈত্র ১৪২৯, ০৫ রমজান ১৪৪৪

টি-২০’র রেকর্ড রানের ম্যাচে প্রোটিয়ার জয়

সংবাদ স্পোর্টস ডেস্ক

image

প্রথমবারের মতো টি-২০ ক্রিকেটে এক ম্যাচে ৫শ’ রানের বিশ্ব রেকর্ড হলো। গত রোববার রাতে সেঞ্চুরিয়ানে দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার টি-২০ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের দুই ইনিংস মিলিয়ে মোট ৫১৭ রান হয়েছে। এমন বিশ্ব রেকর্ডের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এ ম্যাচ জিতে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা ফেরালো প্রোটিয়ারা।

ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৫৮/৮ ও দক্ষিণ আফ্রিকা ১৮.৫ ওভারে ২৫৯/৪ রান করে। এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রানের বিশ^রেকর্ড হয় এ ম্যাচে। আগেরটি ছিল ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ২০১৬ সালে এক ম্যাচে ৪৮৯ রান করেছিল ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে পাকিস্তান সুপার লীগের এক ম্যাচে ৫১৫ রানের রেকর্ডও ভাঙেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ-দক্ষিণ আফ্রিকা দল।

এ ম্যাচে সর্বমোট বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি হয়েছে ৮১টি। যা টি-২০ ইতিহাসে বিশ^রেকর্ড।

ম্যাচে সর্বোচ্চ ৩৫টি ছক্কারও বিশ^রেকর্ড গড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এর মধ্যেÑ ২২টি ছক্কা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসে। ইনিংসে এক দলের সর্বোচ্চ ছক্কায় আফগানিস্তানের সাথে যৌথভাবে বিশ^রেকর্ডের মালিক এখন ক্যারিবীয়রা।

টস জিতে বোলিং করতে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো না হলেও দ্বিতীয় উইকেটে ৫৮ বলে ১৩৫ রান যোগ করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইল মায়ার্স ও জনসন চার্লস। ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় ২৭ বলে ৫১ রান করে ফিরেন মায়ার্স।

৩৯ বলে টি-২০ ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন চার্লস। ৪৭ বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে করা ক্রিস গেইলের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙেন চার্লস। শেষ পর্যন্ত ১০টি চার ও ১১টি ছক্কায় ৪৬ বলে ১১৮ রানে আউট হন চার্লস।

চার্লসের পর অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল ১৯ বলে ২৮ এবং রোমারিও শেফার্ড ১৮ বলে অপরাজিত ৪১ রান করেন। ১টি চার ও ৪টি ছয় মারেন শেফার্ড। এতে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২৫৮ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যা ক্যারিবীয়দের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। বল হাতে দক্ষিণ আফ্রিকার মার্কো জানসেন ৩টি ও ওয়েন পারনেল ২টি উইকেট নেন।

২৫৯ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৬৫ বলে ১৫২ রান তোলেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও রেজা হেনড্রিক্স। ৩৩ বলেই ১০০ রান তুলে ফেলেন তারা। যা উদ্বোধনী জুটিতে দ্বিতীয় দ্রুততম শতরান। পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ১০২ রান করে বিশ^রেকর্ডের মালিক হয় প্রোটিয়ারা।

জুটিতে ৪৩ বল খেলে টি-২০ ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ডি কক। শতরানে পা দিয়ে সেখানেই থামেন তিনি। ৪৪ বল খেলে ৯টি চার ও ৮টি ছক্কা মারেন ডি কক।

দলীয় ১৫২ রানে ডি কক ফেরার পর ২৮ বলে ১১টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৮তে আউট হন হেনড্রিক্স। পরের দিকে রিলি রুশো ৪ বলে ১৬ ও ডেভিড মিলার ১০ বলে ১০ রান করেন।

এরপর ৭ বল বাকি রেখে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অবস্মরণীয় জয়ের স্বাদ দেন অধিনায়ক আইডেন মার্করাম ও হেনরিচ ক্লাসেন। মার্করাম ২১ বলে অপরাজিত ৩৮ এবং ক্লাসেন ৭ বলে অপরাজিত ১৬ রান করেন। ২৫৯ রানের টার্গেট স্পর্শ করে ম্যাচ জয়ের বিশ^রেকর্ড গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচ সেরা হন প্রোটিয়াদের ডি কক।

সংক্ষিপ্ত স্কোর : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০ ওভারে ২৫৮/৫ (মেয়ার্স ৫১, চার্লস ১১৮, পাওয়েল ২৮, শেফার্ড ৪১*; পার্নেল ২/৪৩, ইয়ানসেন ৩/৫২)

দক্ষিণ আফ্রিকা ১৮.৫ ওভারে ২৫৯/৪ (ডি কক ১০০, হেনড্রিকস ৬৮, মারক্রাম ৩৮*; হোল্ডার ১/৪৮, স্মিথ ১/৩৬, রিফার ১/৪২, পাওয়েল ১/২৭)।

ম্যাচ সেরা : কুইন্টন ডি কক।

আজ জোহানেবার্গে শেষ টি-২০।