মিথেন নির্গমন কমানো জরুরি

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য কার্বন ডাই অক্সাইডের পর মিথেন গ্যাসকেই বেশি দায়ী মনে করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রশ্নে এই প্রাকৃতিক গ্যাস এমনকি কার্বন ডাই অক্সাইডের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর। কারণ মিথেনে উষ্ণায়ন বেশি বাড়ে। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত প্রভাব প্রতিরোধে মিথেন নির্গমন কমানো অত্যন্ত জরুরি।

রাজধানী ঢাকায় মিথেনের উপস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ লেটারস-এর একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিথেন গ্যাস নির্গত হওয়া বিশ্বের ৬১টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। গত ১৪ মার্চ এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভূ-উপগ্রহ থেকে নেয়া ছবি বিশ্লেষণ করে ওই গবেষণা করা হয়েছে। গবেষণা অনুযায়ী, ওই সময়ের মধ্যে ঢাকার বায়ুম-লে মিথেন গ্যাসের পরিমাণ বেড়েছে ২১ দশমিক ১ পিপিবি (পার্টস পার বিলিয়ন)।

মিথেন গ্যাস সৃষ্টির বড় কারণ হচ্ছে বর্জ্যরে ভাগাড়। জানা গেছে, ঢাকায় ১৩টি স্থানে অবস্থিত বর্জ্যরে ভাগাড় মিথেন গ্যাসের জন্য বহুলাংশে দায়ী। রাজধানীতে ৪৭ শতাংশ মিথেনের সৃষ্টি হচ্ছে এসব ভাগাড় থেকে। ভাগাড়ে ফেলা জৈব ও পলিথিন-প্লাস্টিক বর্জ্য পচে মিথেন গ্যাস তৈরি হচ্ছে। জলাভূমিতে জমা হওয়া দূষিত পানি, নদ-নদীর দূষণের কারণেও মিথেন গ্যাস সৃষ্টি হচ্ছে।

ঢাকায় আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা বেশি। এটাও মিথেন গ্যাস বেশি হওয়ার আরেকটি কারণ। বাড়তি জনসংখ্যা মানে বাড়তি বর্জ্য। কিন্তু এখানে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। আবাসিক ও শিল্পকারখানার ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস সংযোগ থেকেও মিথেন গ্যাস নির্গত হচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

মিথেন গ্যাস যে শুধু জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটাচ্ছে তা নয়। বাতাসে মিথেনের উপস্থিতি বাড়লে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় বলে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন। যে কারণে রাজধানীবাসীর বড় একটি অংশকে শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যায় ভুগতে হয়।

মিথেন গ্যাস নিঃসরণ কমাতে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এই গ্যাসের উৎস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা জরুরি। রাজধানীর জনঘনত্ব কমাতে বিকেন্দ্রীকরণের বিকল্প নেই। আবাসিক ও শিল্পকারখানায় গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে হতে হবে সতর্ক।

মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩ , ১৪ চৈত্র ১৪২৯, ০৫ রমজান ১৪৪৪

মিথেন নির্গমন কমানো জরুরি

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য কার্বন ডাই অক্সাইডের পর মিথেন গ্যাসকেই বেশি দায়ী মনে করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রশ্নে এই প্রাকৃতিক গ্যাস এমনকি কার্বন ডাই অক্সাইডের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর। কারণ মিথেনে উষ্ণায়ন বেশি বাড়ে। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত প্রভাব প্রতিরোধে মিথেন নির্গমন কমানো অত্যন্ত জরুরি।

রাজধানী ঢাকায় মিথেনের উপস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ লেটারস-এর একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিথেন গ্যাস নির্গত হওয়া বিশ্বের ৬১টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। গত ১৪ মার্চ এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভূ-উপগ্রহ থেকে নেয়া ছবি বিশ্লেষণ করে ওই গবেষণা করা হয়েছে। গবেষণা অনুযায়ী, ওই সময়ের মধ্যে ঢাকার বায়ুম-লে মিথেন গ্যাসের পরিমাণ বেড়েছে ২১ দশমিক ১ পিপিবি (পার্টস পার বিলিয়ন)।

মিথেন গ্যাস সৃষ্টির বড় কারণ হচ্ছে বর্জ্যরে ভাগাড়। জানা গেছে, ঢাকায় ১৩টি স্থানে অবস্থিত বর্জ্যরে ভাগাড় মিথেন গ্যাসের জন্য বহুলাংশে দায়ী। রাজধানীতে ৪৭ শতাংশ মিথেনের সৃষ্টি হচ্ছে এসব ভাগাড় থেকে। ভাগাড়ে ফেলা জৈব ও পলিথিন-প্লাস্টিক বর্জ্য পচে মিথেন গ্যাস তৈরি হচ্ছে। জলাভূমিতে জমা হওয়া দূষিত পানি, নদ-নদীর দূষণের কারণেও মিথেন গ্যাস সৃষ্টি হচ্ছে।

ঢাকায় আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা বেশি। এটাও মিথেন গ্যাস বেশি হওয়ার আরেকটি কারণ। বাড়তি জনসংখ্যা মানে বাড়তি বর্জ্য। কিন্তু এখানে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। আবাসিক ও শিল্পকারখানার ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস সংযোগ থেকেও মিথেন গ্যাস নির্গত হচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

মিথেন গ্যাস যে শুধু জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটাচ্ছে তা নয়। বাতাসে মিথেনের উপস্থিতি বাড়লে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় বলে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন। যে কারণে রাজধানীবাসীর বড় একটি অংশকে শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যায় ভুগতে হয়।

মিথেন গ্যাস নিঃসরণ কমাতে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এই গ্যাসের উৎস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা জরুরি। রাজধানীর জনঘনত্ব কমাতে বিকেন্দ্রীকরণের বিকল্প নেই। আবাসিক ও শিল্পকারখানায় গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে হতে হবে সতর্ক।