অগ্নি প্রতিরোধ আইন কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে?

অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইনের (২০০৩) একটি ধারা অনুযায়ী, ‘যদি কোন ব্যক্তি লাইসেন্সপ্রাপ্ত না হয়ে কোন ভবন বা স্থানকে মালগুদাম বা কারখানা হিসেবে ব্যবহার করেন, তাহলে তিনি সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এছাড়া ওই ভবন বা স্থানের যাবতীয় মালামাল বাজেয়াপ্ত করা যাবে।’

কিন্তু আইনের এই ধারাটি প্রয়োগে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের তেমন কোন তৎপরতা নেই। এই ধারাই নয়, আইনের অন্যান্য ধারা বাস্তবায়ন নিয়েও সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ার কারণেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বাড়ছে। যদিও ফায়ার সার্ভিস বলছে, আইন প্রয়োগে তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নেই। তারা শুধু নোটিশ করার ক্ষমতা রাখে। তবে আইন বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়ের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট চেয়েছে তারা।

এ বিষয়ে অগ্নি-নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সেলিম নেওয়াজ ভূঁইয়া সংবাদকে বলেন, ‘অগ্নি প্রতিরোধ আইনে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা আছে। আইনের বিভিন্ন ধারায় জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে। কিন্তু সেটি ঠিকঠাক হচ্ছে না। এই কারণেই অগ্নি-দুর্ঘটনা বাড়ছে।’

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, কোন ভবন বা কারখানা চালুর আগে আইন অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স নিতে হয়। আইনানুযায়ী কোন ব্যক্তি লাইসেন্সের কোন শর্ত পালন করতে ব্যর্থ হলে তাকে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার কথা বলা হয়েছে। আবার বিধান লঙ্ঘনকারী ব্যক্তি যদি কোম্পানি হয়, তাহলে ওই কোম্পানির প্রত্যেক পরিচালক, ম্যানেজার, সচিব বা অন্য কোন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা এজেন্ট বিধান লঙ্ঘন করেছেন বলে ধরা হবে। যদি না তিনি প্রমাণ করতে পারেন ওই লঙ্ঘন তার অজ্ঞাতসারে হয়েছে অথবা লঙ্ঘন রোধ করার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে আরও জানা গেছে, যদি কোন ব্যক্তি এই আইন বা নির্ধারিত বিধান লঙ্ঘন করে কোন ভবন বা স্থানে দাহ্য বস্তু সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, সংকোচন বা বাছাই করেন, তাহলে তিনি সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং এর অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন এবং ওইসব দাহ্য বস্তু সরকার বাজেয়াপ্ত করতে পারবে। আবার কোন ব্যক্তি যদি এমন কোন কাজ করেন বা করতে বিরত থাকেন যা এই আইনের কোন বিধান বা বিধানের অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ বা নির্দেশ অমান্য করার শামিল কিন্তু এজন্য এই আইনে কোন স্বতন্ত্র দণ্ডের ব্যবস্থা রাখা হয়নি, তাহলে তিনি সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড এবং এর অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পাশাপাশি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কথা রয়েছে। কিন্তু বড় কোন দুর্ঘটনার পরই ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো অভিযান পরিচালনা করে। তবে এর বাইরে তেমন কঠোর কোন ভূমিকায় তাদের দেখা যায় না। এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের দাবি, তারা শুধু নোটিশ দিয়ে ভবন মালিককে সতর্ক করার ক্ষমতা রাখেন। কিন্তু আইন মানতে বাধ্য করার এখতিয়ার তাদের নেই।

জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সংবাদকে বলেন, ঝুঁকিপূর্ণের বিষয়টি নোটিশ করার দায়িত্ব তাদের। এর বাইরে এখতিয়ার নেই।

‘বঙ্গবাজারে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো। আমরা এই মার্কেটটি যে ঝুঁকিপূর্ণ সেটি আগেই নোটিশ করেছি। আসলে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করতে পারি। এর বাইরে আমাদের এখতিয়ার নেই। তবে আমাদের ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পরবর্তী বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার।’ বলেন সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের এই পরিচালক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অগ্নি প্রতিরোধ আইন প্রয়োগে নিজেদের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। কোন স্থাপণা অগি-ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পর যেন পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারে সেজন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট চেয়েছে তারা। ম্যাজিস্ট্রেট পেলে পুলিশের সহায়তায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে অধিদপ্তর। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে এখনও ম্যাজিস্ট্রেটের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি বলে সূত্র জানায়।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, ‘আইন প্রয়োগে আমরা ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা চাচ্ছি না। আমরা মূলত ম্যাজিস্ট্রেট চাচ্ছি। কারণ আইনটা প্রয়োগ করতে হলে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা লাগবে, যেটি ম্যাজিস্ট্রেট হলেই করা যাবে।’

কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ইনিসিয়েটিভস (সিডিআই) উপদেষ্টা ও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাবেক উপপরিচালক সেলিম নেওয়াজ ভূঁইয়া সংবাদকে বলেন, আইন অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিসের যথেষ্ট ক্ষমতা আছে। তারা যাদের লাইন্সেস দিয়েছে সেগুলোর কোন শর্ত ভঙ্গ করলে লাইন্সেস বাতিল করতে পারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কয়টা লাইন্সেস বাতিল করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আবেদন করলে লাইসেন্স দিয়েই বসে থাকলে হবে না, কোন শর্ত অমান্য করছে কি না সেটির নজরদারি বাড়াতে হবে। আবার দেখা যায় বিভিন্ন বিল্ডিং পরিদর্শন করে অগ্নিঝুঁকি থাকলে নোটিশ দিয়ে বসে থাকছে। শুধু নোটিশ দিয়েই কেন বসে থাকবে? তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য যা যা প্রয়োজন তা করা দরকার।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক ও পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান সংবাদকে বলেন, ‘রাজধানীর অধিকাংশ ভবনই অগ্নি প্রতিরোধ আইন মানছে না। সংশ্লিষ্টরা আইনের বিধানগুলো কতটা বাস্তবায়ন করছে সেটি একটি প্রশ্ন। আমি মনে করি অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আইনের যথাযথ প্রয়োগে সংশ্লিষ্টদের নজরদারি বাড়ানো দরকার।’

ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান সংবাদকে বলেন, ‘অগ্নিনির্বাপক আইন মানার বিষয়ে কাউকে ছাড় দেয়ার কোন সুযোগ নেই। শুধু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য নয়। সব ভবনগুলোকে এই আইন মানতে বাধ্য করতে হবে।’

বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩ , ১৪ বৈশাখ ১৪৩০, ০৬ ‍শাওয়াল ১৪৪৪

অগ্নি প্রতিরোধ আইন কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে?

মোস্তাফিজুর রহমান

অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইনের (২০০৩) একটি ধারা অনুযায়ী, ‘যদি কোন ব্যক্তি লাইসেন্সপ্রাপ্ত না হয়ে কোন ভবন বা স্থানকে মালগুদাম বা কারখানা হিসেবে ব্যবহার করেন, তাহলে তিনি সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এছাড়া ওই ভবন বা স্থানের যাবতীয় মালামাল বাজেয়াপ্ত করা যাবে।’

কিন্তু আইনের এই ধারাটি প্রয়োগে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের তেমন কোন তৎপরতা নেই। এই ধারাই নয়, আইনের অন্যান্য ধারা বাস্তবায়ন নিয়েও সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ার কারণেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বাড়ছে। যদিও ফায়ার সার্ভিস বলছে, আইন প্রয়োগে তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নেই। তারা শুধু নোটিশ করার ক্ষমতা রাখে। তবে আইন বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়ের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট চেয়েছে তারা।

এ বিষয়ে অগ্নি-নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সেলিম নেওয়াজ ভূঁইয়া সংবাদকে বলেন, ‘অগ্নি প্রতিরোধ আইনে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা আছে। আইনের বিভিন্ন ধারায় জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে। কিন্তু সেটি ঠিকঠাক হচ্ছে না। এই কারণেই অগ্নি-দুর্ঘটনা বাড়ছে।’

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, কোন ভবন বা কারখানা চালুর আগে আইন অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স নিতে হয়। আইনানুযায়ী কোন ব্যক্তি লাইসেন্সের কোন শর্ত পালন করতে ব্যর্থ হলে তাকে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার কথা বলা হয়েছে। আবার বিধান লঙ্ঘনকারী ব্যক্তি যদি কোম্পানি হয়, তাহলে ওই কোম্পানির প্রত্যেক পরিচালক, ম্যানেজার, সচিব বা অন্য কোন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা এজেন্ট বিধান লঙ্ঘন করেছেন বলে ধরা হবে। যদি না তিনি প্রমাণ করতে পারেন ওই লঙ্ঘন তার অজ্ঞাতসারে হয়েছে অথবা লঙ্ঘন রোধ করার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে আরও জানা গেছে, যদি কোন ব্যক্তি এই আইন বা নির্ধারিত বিধান লঙ্ঘন করে কোন ভবন বা স্থানে দাহ্য বস্তু সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, সংকোচন বা বাছাই করেন, তাহলে তিনি সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং এর অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন এবং ওইসব দাহ্য বস্তু সরকার বাজেয়াপ্ত করতে পারবে। আবার কোন ব্যক্তি যদি এমন কোন কাজ করেন বা করতে বিরত থাকেন যা এই আইনের কোন বিধান বা বিধানের অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ বা নির্দেশ অমান্য করার শামিল কিন্তু এজন্য এই আইনে কোন স্বতন্ত্র দণ্ডের ব্যবস্থা রাখা হয়নি, তাহলে তিনি সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড এবং এর অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পাশাপাশি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কথা রয়েছে। কিন্তু বড় কোন দুর্ঘটনার পরই ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো অভিযান পরিচালনা করে। তবে এর বাইরে তেমন কঠোর কোন ভূমিকায় তাদের দেখা যায় না। এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের দাবি, তারা শুধু নোটিশ দিয়ে ভবন মালিককে সতর্ক করার ক্ষমতা রাখেন। কিন্তু আইন মানতে বাধ্য করার এখতিয়ার তাদের নেই।

জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সংবাদকে বলেন, ঝুঁকিপূর্ণের বিষয়টি নোটিশ করার দায়িত্ব তাদের। এর বাইরে এখতিয়ার নেই।

‘বঙ্গবাজারে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো। আমরা এই মার্কেটটি যে ঝুঁকিপূর্ণ সেটি আগেই নোটিশ করেছি। আসলে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করতে পারি। এর বাইরে আমাদের এখতিয়ার নেই। তবে আমাদের ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পরবর্তী বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার।’ বলেন সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের এই পরিচালক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অগ্নি প্রতিরোধ আইন প্রয়োগে নিজেদের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। কোন স্থাপণা অগি-ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পর যেন পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারে সেজন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট চেয়েছে তারা। ম্যাজিস্ট্রেট পেলে পুলিশের সহায়তায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে অধিদপ্তর। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে এখনও ম্যাজিস্ট্রেটের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি বলে সূত্র জানায়।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, ‘আইন প্রয়োগে আমরা ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা চাচ্ছি না। আমরা মূলত ম্যাজিস্ট্রেট চাচ্ছি। কারণ আইনটা প্রয়োগ করতে হলে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা লাগবে, যেটি ম্যাজিস্ট্রেট হলেই করা যাবে।’

কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ইনিসিয়েটিভস (সিডিআই) উপদেষ্টা ও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাবেক উপপরিচালক সেলিম নেওয়াজ ভূঁইয়া সংবাদকে বলেন, আইন অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিসের যথেষ্ট ক্ষমতা আছে। তারা যাদের লাইন্সেস দিয়েছে সেগুলোর কোন শর্ত ভঙ্গ করলে লাইন্সেস বাতিল করতে পারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কয়টা লাইন্সেস বাতিল করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আবেদন করলে লাইসেন্স দিয়েই বসে থাকলে হবে না, কোন শর্ত অমান্য করছে কি না সেটির নজরদারি বাড়াতে হবে। আবার দেখা যায় বিভিন্ন বিল্ডিং পরিদর্শন করে অগ্নিঝুঁকি থাকলে নোটিশ দিয়ে বসে থাকছে। শুধু নোটিশ দিয়েই কেন বসে থাকবে? তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য যা যা প্রয়োজন তা করা দরকার।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক ও পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান সংবাদকে বলেন, ‘রাজধানীর অধিকাংশ ভবনই অগ্নি প্রতিরোধ আইন মানছে না। সংশ্লিষ্টরা আইনের বিধানগুলো কতটা বাস্তবায়ন করছে সেটি একটি প্রশ্ন। আমি মনে করি অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আইনের যথাযথ প্রয়োগে সংশ্লিষ্টদের নজরদারি বাড়ানো দরকার।’

ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান সংবাদকে বলেন, ‘অগ্নিনির্বাপক আইন মানার বিষয়ে কাউকে ছাড় দেয়ার কোন সুযোগ নেই। শুধু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য নয়। সব ভবনগুলোকে এই আইন মানতে বাধ্য করতে হবে।’