পনেরো কোটি টাকার কাজে পাঁচ কোটির অনিয়মের অভিযোগ

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ১৪টি লিফট এবং ফায়ার ফাইটিং ডিটেকশন ও প্রোটেকশন সিস্টেম স্থাপনে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ১৫ কোটি টাকার এই দুটি কাজে বড় ধরনের অনিয়ম নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে তোলপাড় চলছে। অভিযোগ উঠেছে, ১৪টি মেশিনরুম টাইপ লিফট স্থাপনের কথা থাকলেও আনা হয়েছে অর্ধেক দামের মেশিনরুমলেস টাইপ লিফট। একইভাবে ফায়ার ফাইটিং ডিটেকশন ও প্রোটেকশন সিস্টেমেও দরপত্র অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ করা হয়নি। এইসব অনিয়ম ও টেন্ডার বাণিজ্যের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে যবিপ্রবি শিক্ষকদের একটি অংশ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছরের শুরুতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ১৪টি লিফট স্থাপনের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রথম দরপত্রে হরিজন টেকনো লিমিটেড সর্বনিম্ন দরদাতা নির্বাচিত হয়। কিন্তু তাদেরকে কার্যাদেশ না দিয়ে রি-টেন্ডার করে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তর। রি- টেন্ডারের পর গতবছর এপ্রিলে কার্যাদেশ প্রদান করা হয় প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডকে। প্রায় ১০ কোটি ৪৫ লাখ টাকার ১৪টি লিফটের এই কার্যাদেশে টেন্ডারের স্পেসিফিকেশন ছিল ‘মেশিনরুম টাইপ’। সম্প্রতি প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড লিফটগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে, ‘মেশিনরুম টাইপ’ -এর পরিবর্তে তারা ‘মেশিনরুমলেস টাইপ’ লিফট সরবরাহ করেছে।

সূত্রের দাবি, ‘মেশিনরুম টাইপ’ লিফটের দাম ৭০ লক্ষাধিক টাকা। এর বিপরীতে ‘মেশিনরুমলেস টাইপ’ লিফটের দাম প্রায় অর্ধেক। অর্থাৎ টাইপ পরিবর্তন করে প্রায় চার কোটি লুটপাটের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডকে কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য রি-টেন্ডার করা হয়। এ কারণে প্রথম টেন্ডারে সর্বনিম্ন দরদাতা হরিজন টেকনো লি. উকিল নোটিশ পাঠায়। পরবর্তীতে টেকনোকে ৭৫ লাখ টাকা দিয়ে ম্যানেজ করা হয়। যে টাকা প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের কাছ থেকে গ্রহণ করা হয় বলেও অভিযোগকারীদের দাবি। টেন্ডারের স্পেসিফিকেশন কমপ্লাই না করা সত্ত্বেও তাদেরকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, তাদের অভিজ্ঞতা সনদ ও লিফট সম্পর্কিত তথ্য ও কাগজপত্র পূর্ণাঙ্গ ছিল না। দুজন অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে দিয়ে ‘প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন’ করার কথা থাকলেও তা পূরণ করা হয়নি। ইতোমধ্যে লিফটের যন্ত্রাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছেছে। তবে যন্ত্রাংশ মেশিনরুমলেস টাইপ হওয়ায় তোলপাড় চলছে।

এ ব্যাপারে লিফট বুঝে নেয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির আহ্বায়ক কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. সৈয়দ গালিব ও সদস্য সচিব পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের সহকারী পরিচালক কুতুবউদ্দিন চিশতী বলেন, লিফটের মালামাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছেছে। যন্ত্রাংশ এখনও কার্টুনবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এগুলো খুলে স্পেসিফিকেশন মেলানো হবে। এছাড়া এর সঙ্গে আরও কয়েকটি কমিটি জড়িত রয়েছে। সব কমিটি বসেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ফায়ার ফাইটিং ডিটেকশন ও প্রোটেকশন সিস্টেম সরবরাহ ও স্থাপন কাজের জন্য গতবছর ০৫ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তর ই-জিপি পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করে। কাজের প্রাক্কলিত দর ছিল ৪ কোটি ১৭ লাখ ৮৫ হাজার ৬৫২ টাকা। যেখানে ইজিপি পদ্ধতিতে দরপত্র মূল্যায়ন শেষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে মরগান ইন্টারন্যাশনাল নির্বাচিত হন। মরগান ইন্টারন্যাশনালের দর ছিল ৩ কোটি ৭৬ লাখ ৭ হাজার ৮৬৮ টাকা। যা প্রাক্কলিত মূল্য থেকে ১০ ভাগ কম। কিন্তু টেন্ডার বাণিজ্যে সুবিধা না হওয়ায় ভুল তথ্য (এস্টিমেডেট কস্ট এবং কোটেড কস্ট একই) দিয়ে ওই টেন্ডার বাতিল করে দেয়া হয়। এরপর ১০ অক্টোবর’২২ রি-টেন্ডার করে কার্যাদেশ দেয়া হয় লিফটের জন্য কার্যাদেশ দেয়া ‘প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড’কে। তাদেরকে কাজ দেয়ার জন্য কমিটি কর্তৃক প্রণয়নকৃত অফিসিয়াল স্পেসিফিকেশন পরিবর্তন করে প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের স্পেসিফিকেশন ই-জিপি তে আপলোড করা হয়। এছাড়া প্রথম দরপত্রের সর্বনিম্ন দরদাতার চেয়ে বেশি দরে এই কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। অভিযোগকারীদের দাবি, এখানেও কোটি টাকার বেশি টেন্ডার বাণিজ্য হয়েছে।

ফায়ার সিস্টেমের মালামাল প্রায় দু’মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছেছে। কিন্তু দরপত্র অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ করা হয়নি বলে তা বুঝে নেয়নি দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কমিটি। এই কমিটির প্রধান যবিপ্রবির ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্সের প্রফেসর ড.আনিছুর রহমান বলেন, ফায়ার ফাইটিং ডিটেকশন ও প্রোটেকশন সিস্টেম স্থাপনে দরপত্রে যে স্পেসিফিকেশন উল্লেখ করা হয়েছে, সে অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ করা হয়নি। এ কারণে তা গ্রহণ করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে তা জানিয়েও দেয়া হয়েছে। এরপর মালামাল সেই অবস্থায়ই রয়েছে। এক মাসের বেশি সময় হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি আর যোগাযোগ করেনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, দুটি টেন্ডারে ১৪টি লিফট এবং ফায়ার ফাইটিং ডিটেকশন ও প্রোটেকশন সিস্টেম স্থাপনের প্রায় ১৫ কোটি টাকার কাজে এই অনিয়মের পরিমাণ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। এ কারণে লিফট এবং ফায়ার ফাইটিং ডিটেকশন ও প্রোটেকশন সিস্টেম স্থাপনে অনিয়মের অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদনও করেছেন তারা। এই আবেদনে টেন্ডার বাণিজ্যের বিষয়টি তুলে ধরে তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণেরও অনুরোধ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে যবিপ্রবির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ও পূর্ত দপ্তরের পরিচালক পরিতোষ কুমার বিশ্বাসকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। আর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ও পূর্ত দপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুর রউফ এ ব্যাপারে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। লিখিতভাবে আবেদনের বাইরে তিনি কোন তথ্য বা বক্তব্য দেবেন না বলে জানিয়েছেন।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, লিফটের মালামাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছেছে। ইভালুয়েশন, মালামাল বুঝে নেয়াসহ এ ব্যাপারে একাধিক কমিটি রয়েছে। ফলে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কোন মালামাল গ্রহণ করা হবে না। আর ফায়ার ফাইটিং ডিটেকশন ও প্রোটেকশন সিস্টেম’র মালামাল গ্রহণ না করার বিষয়টি তিনি অবহিত নন বলে জানান।

শনিবার, ২০ মে ২০২৩ , ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৪

যবিপ্রবিতে ১৪টি লিফট এবং ফায়ার সিস্টেম স্থাপন

পনেরো কোটি টাকার কাজে পাঁচ কোটির অনিয়মের অভিযোগ

যশোর অফিস

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ১৪টি লিফট এবং ফায়ার ফাইটিং ডিটেকশন ও প্রোটেকশন সিস্টেম স্থাপনে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ১৫ কোটি টাকার এই দুটি কাজে বড় ধরনের অনিয়ম নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে তোলপাড় চলছে। অভিযোগ উঠেছে, ১৪টি মেশিনরুম টাইপ লিফট স্থাপনের কথা থাকলেও আনা হয়েছে অর্ধেক দামের মেশিনরুমলেস টাইপ লিফট। একইভাবে ফায়ার ফাইটিং ডিটেকশন ও প্রোটেকশন সিস্টেমেও দরপত্র অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ করা হয়নি। এইসব অনিয়ম ও টেন্ডার বাণিজ্যের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে যবিপ্রবি শিক্ষকদের একটি অংশ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছরের শুরুতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ১৪টি লিফট স্থাপনের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রথম দরপত্রে হরিজন টেকনো লিমিটেড সর্বনিম্ন দরদাতা নির্বাচিত হয়। কিন্তু তাদেরকে কার্যাদেশ না দিয়ে রি-টেন্ডার করে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তর। রি- টেন্ডারের পর গতবছর এপ্রিলে কার্যাদেশ প্রদান করা হয় প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডকে। প্রায় ১০ কোটি ৪৫ লাখ টাকার ১৪টি লিফটের এই কার্যাদেশে টেন্ডারের স্পেসিফিকেশন ছিল ‘মেশিনরুম টাইপ’। সম্প্রতি প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড লিফটগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে, ‘মেশিনরুম টাইপ’ -এর পরিবর্তে তারা ‘মেশিনরুমলেস টাইপ’ লিফট সরবরাহ করেছে।

সূত্রের দাবি, ‘মেশিনরুম টাইপ’ লিফটের দাম ৭০ লক্ষাধিক টাকা। এর বিপরীতে ‘মেশিনরুমলেস টাইপ’ লিফটের দাম প্রায় অর্ধেক। অর্থাৎ টাইপ পরিবর্তন করে প্রায় চার কোটি লুটপাটের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডকে কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য রি-টেন্ডার করা হয়। এ কারণে প্রথম টেন্ডারে সর্বনিম্ন দরদাতা হরিজন টেকনো লি. উকিল নোটিশ পাঠায়। পরবর্তীতে টেকনোকে ৭৫ লাখ টাকা দিয়ে ম্যানেজ করা হয়। যে টাকা প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের কাছ থেকে গ্রহণ করা হয় বলেও অভিযোগকারীদের দাবি। টেন্ডারের স্পেসিফিকেশন কমপ্লাই না করা সত্ত্বেও তাদেরকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, তাদের অভিজ্ঞতা সনদ ও লিফট সম্পর্কিত তথ্য ও কাগজপত্র পূর্ণাঙ্গ ছিল না। দুজন অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে দিয়ে ‘প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন’ করার কথা থাকলেও তা পূরণ করা হয়নি। ইতোমধ্যে লিফটের যন্ত্রাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছেছে। তবে যন্ত্রাংশ মেশিনরুমলেস টাইপ হওয়ায় তোলপাড় চলছে।

এ ব্যাপারে লিফট বুঝে নেয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির আহ্বায়ক কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. সৈয়দ গালিব ও সদস্য সচিব পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের সহকারী পরিচালক কুতুবউদ্দিন চিশতী বলেন, লিফটের মালামাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছেছে। যন্ত্রাংশ এখনও কার্টুনবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এগুলো খুলে স্পেসিফিকেশন মেলানো হবে। এছাড়া এর সঙ্গে আরও কয়েকটি কমিটি জড়িত রয়েছে। সব কমিটি বসেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ফায়ার ফাইটিং ডিটেকশন ও প্রোটেকশন সিস্টেম সরবরাহ ও স্থাপন কাজের জন্য গতবছর ০৫ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তর ই-জিপি পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করে। কাজের প্রাক্কলিত দর ছিল ৪ কোটি ১৭ লাখ ৮৫ হাজার ৬৫২ টাকা। যেখানে ইজিপি পদ্ধতিতে দরপত্র মূল্যায়ন শেষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে মরগান ইন্টারন্যাশনাল নির্বাচিত হন। মরগান ইন্টারন্যাশনালের দর ছিল ৩ কোটি ৭৬ লাখ ৭ হাজার ৮৬৮ টাকা। যা প্রাক্কলিত মূল্য থেকে ১০ ভাগ কম। কিন্তু টেন্ডার বাণিজ্যে সুবিধা না হওয়ায় ভুল তথ্য (এস্টিমেডেট কস্ট এবং কোটেড কস্ট একই) দিয়ে ওই টেন্ডার বাতিল করে দেয়া হয়। এরপর ১০ অক্টোবর’২২ রি-টেন্ডার করে কার্যাদেশ দেয়া হয় লিফটের জন্য কার্যাদেশ দেয়া ‘প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড’কে। তাদেরকে কাজ দেয়ার জন্য কমিটি কর্তৃক প্রণয়নকৃত অফিসিয়াল স্পেসিফিকেশন পরিবর্তন করে প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের স্পেসিফিকেশন ই-জিপি তে আপলোড করা হয়। এছাড়া প্রথম দরপত্রের সর্বনিম্ন দরদাতার চেয়ে বেশি দরে এই কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। অভিযোগকারীদের দাবি, এখানেও কোটি টাকার বেশি টেন্ডার বাণিজ্য হয়েছে।

ফায়ার সিস্টেমের মালামাল প্রায় দু’মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছেছে। কিন্তু দরপত্র অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ করা হয়নি বলে তা বুঝে নেয়নি দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কমিটি। এই কমিটির প্রধান যবিপ্রবির ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্সের প্রফেসর ড.আনিছুর রহমান বলেন, ফায়ার ফাইটিং ডিটেকশন ও প্রোটেকশন সিস্টেম স্থাপনে দরপত্রে যে স্পেসিফিকেশন উল্লেখ করা হয়েছে, সে অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ করা হয়নি। এ কারণে তা গ্রহণ করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে তা জানিয়েও দেয়া হয়েছে। এরপর মালামাল সেই অবস্থায়ই রয়েছে। এক মাসের বেশি সময় হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি আর যোগাযোগ করেনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, দুটি টেন্ডারে ১৪টি লিফট এবং ফায়ার ফাইটিং ডিটেকশন ও প্রোটেকশন সিস্টেম স্থাপনের প্রায় ১৫ কোটি টাকার কাজে এই অনিয়মের পরিমাণ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। এ কারণে লিফট এবং ফায়ার ফাইটিং ডিটেকশন ও প্রোটেকশন সিস্টেম স্থাপনে অনিয়মের অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদনও করেছেন তারা। এই আবেদনে টেন্ডার বাণিজ্যের বিষয়টি তুলে ধরে তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণেরও অনুরোধ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে যবিপ্রবির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ও পূর্ত দপ্তরের পরিচালক পরিতোষ কুমার বিশ্বাসকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। আর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ও পূর্ত দপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুর রউফ এ ব্যাপারে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। লিখিতভাবে আবেদনের বাইরে তিনি কোন তথ্য বা বক্তব্য দেবেন না বলে জানিয়েছেন।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, লিফটের মালামাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছেছে। ইভালুয়েশন, মালামাল বুঝে নেয়াসহ এ ব্যাপারে একাধিক কমিটি রয়েছে। ফলে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কোন মালামাল গ্রহণ করা হবে না। আর ফায়ার ফাইটিং ডিটেকশন ও প্রোটেকশন সিস্টেম’র মালামাল গ্রহণ না করার বিষয়টি তিনি অবহিত নন বলে জানান।