গাজীপুর : পরিবেশ ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে

- আমার আর ছেলের নিরাপত্তা চাই : জাহিদা - আজমত উল্লা বললেন, হামলার ঘটনা সাজানো নাটক

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের তৃতীয় দফার নির্বাচন আগামী ২৫ মে। ভোটগ্রহণের হাতেগোনা কয়দিন মাত্র বাকি। গাজীপুর সিটির নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা, আলোচনা-পর্যালোচনা যখন সিটি ছাড়িয়ে দেশব্যাপী তুঙ্গে, পাশাপাশি সিটির ভোটার ও নাগরিকদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে যে সংশয় ও শঙ্কা কিছুদিন পূর্ব থেকে কিছুটা প্রচ্ছন্ন ছিল সে দৃশ্যপট যেন ক্রমশঃ পাল্টে যাচ্ছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিল ও বাছাই, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচনী আবহ ও প্রচারণায় যে শান্তিপূর্ণ ও শঙ্কাহীন পরিবেশ ছিল, ভোটগ্রহণের আর মাত্র ৬ দিন বাকি থাকতে সে আবহ ও নগরীর রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেন ক্রমশঃ উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় নির্বাচন সহিংস ও সংঘাতপূর্ণ হয়ে ওঠে কি-না এমন সংশয় ও শঙ্কা ক্রমশঃ ভোটার, সাধারণ নাগরিক ও নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে। এতদিন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণায় ৪-৫টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া তেমন বিঘœ সৃষ্টি বা সংঘাতময় হয়ে ওঠেনি। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনের নির্বাচনী প্রচারণাকালে হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা যেন শান্তির সুবাতাসে অশান্তির ছোঁয়া লাগার মতো। নির্বাচনী প্রচারণায় তার মায়ের সঙ্গে থাকা জাহাঙ্গীর আলমের অভিযোগ তার মা ও তাকে হত্যা করতেই এই হামলা করা হয়েছে। এ নিয়ে জায়েদা খাতুন তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে গতকাল দুপুরে মহানগরীর ছয়দানা এলাকায় তার বাসভবন প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তবে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জায়েদা খাতুন বলেন অন্য প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে ভোট চাইতে পারে, আমি মহিলা তাই ভোট চাইতে গেলে বাধা দেয়া ও হয়রানি করা হয়। এমন হলে আমি ভোট কীভাবে কালেকশন করবো। আজমত উল্লা খানের লোকেরা যা করেছে তা আমি ভাবতেই পারিনি। তিনি বলেন যারা আমাকে টেবিল ঘড়ি মার্কায় ভোট দিবে আমি তাদের নিরাপত্তা চাই। আমার ছেলেকে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়েছে, তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। আমার ছেলে ভালো ছাড়া মন্দ কিছু করেনি। ভালো-মন্দ সব আল্লাহ জানেন। আমি আর আমার ছেলে সত্য না মিথ্যা তা ২৫ তারিখের নির্বাচনে প্রমাণিত হবে। আমার দাবি ঘড়ি মার্কার যারা ভোটার তাদের নিরাপত্তা পাশাপাশি আমার ও ছেলের নিরাপত্তা চাই। ভোটাররা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারে আমি সে প্রত্যাশাই করি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বৃহস্পতিবারের হামলার ঘটনায় আমি থানায় অভিযোগ করেছি কিন্তু কোন ফল পাইনি। সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর আলম বলেন গাজীপুর সিটি নির্বাচনে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বা নির্বাচনী পরিবেশ নেই বললেই চলে। আমার মায়ের নির্বাচনী প্রচারণায় বার বার বাধা দেয়া হচ্ছে। আমাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ রাখা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। সরকারেরও এখানে দায়িত্ব আছে। আগামী ২১ ও ২২ মে দুর্নীতি দমন কার্যালয় (দুদক)-এ আমাকে তলব করা হয়েছে। আমি বলি দুদক একটি সম্মানজনক প্রতিষ্ঠান, এর সম্মান কেউ নষ্ট করবেন না। আর দুদক-এ তলব করা মানে আমাকে বসিয়ে রাখা যাতে ২১ ও ২২ তারিখে আমরা প্রচারণা চালাতে না পারি। তিনি বলেন আমার মা ও আমাকে হত্যা করার জন্যই এ হামলা চালানো হয়েছে। আল্লাহ আমাদের বাঁচিয়েছেন। আমি বলব রাষ্ট্রীয় যন্ত্রকে নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করবেন না। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে যাতে হয়রানি করা না হয় আমি সে অনুরোধ জানাই। আমার ওপর যে অবিচার করা হয়েছে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়েছে তার প্রতিবাদে মা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। তার (জাহাঙ্গীর আলম) বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের যে অভিযোগ করা হয়েছে তার প্রতিবাদে তিনি বলেন আজমত উল্লা খান বলেছেন আমি সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছি। অথচ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মাত্র ৬শ কোটি টাকা। আমার মা ও আমার নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্ভিগ্ন। তবে ওপরে আল্লাহ আছেন আর নিচে জনগণ। আমাদের নিরাপত্তা তারাই দিবেন।

প্রচারণায় মেয়র প্রার্থীরা

আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান গতকাল জুম্মার নামাযের পর নগরীর টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী প্রচারণা করেন। এ সময় তিনি নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট চান। তিনি বলেন অত্যন্ত উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যিনি মেয়র নির্বাচিত হন তিনি যেন দুর্নীতির ঊর্ধ্বে ওঠে সত্যিকার অর্থে নাগরিক অধিকার ও তাদের সেবা পাওয়া নিশ্চিত করেন। টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থীর ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন আপনারা প্রকৃত ঘটনা জানুন। একজন ভদ্র মহিলা সম্পর্কে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না। জাহাঙ্গীর আলম তো নাটকে ওস্তাদ। একেক সময়ে সে একেক রকম নাটক করে। দল থেকে তাকে বহিষ্কার করায় আমাকে দোষারোপ করেছে, আবার মনোনয়নপত্র বাতিল করলেও আমাকে একই রকম দোষারোপ করেছে। আমার রাজনৈতিক জীবন অনেক দীর্ঘ। আমি জনগণের সেবার জন্য রাজনীতি করি। আঠারো বছর টঙ্গী পৌরসভার মেয়র হিসেবে আমি দায়িত্ব পালনকালে জনবান্ধব মেয়র হিসেবে কাজ করেছি। আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোন অভিযোগ কেউ করেনি। নির্বাচিত হলে আমি সিটির সব স্তরের মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাব। গাজীপুর সিটিকে দুর্নীতিমুক্ত, জবাবদিহিমূলক আধুনিক সিটি হিসেবে গড়ে তুলবো।

অন্যদিকে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন তার ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে সঙ্গে নিয়ে গতকাল সকালে তার বাসভবনে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এরপর নিজ বাসভবন প্রাঙ্গণে জাহাঙ্গীর আলমসহ তিনি এক জণাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে তিনি বলেন আমরা কারো নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দিচ্ছি না। কোন ভোটারকে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে মানা করছি না। অথচ প্রচারণা করতে গিয়েই আমরা বার বার বাধার সম্মুখিন হচ্ছি। এরপর তিনি ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে নগরীর ছয়দানা, বোর্ডবাজার, বড়বাজার, মার্কাস প্রভৃতি এলাকায় প্রচারণা চালান। এ সময় জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করে বলেন আমরা নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে বারে বারে বাধার সম্মুখিন হচ্ছি। আমরা পোস্টার লাগাতে ও মাইকিং করতে গেলে হুমকি দেয়া হচ্ছে।

জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী এমএম নিয়াজউদ্দিনও গতকাল জুম্মার নামাযের পর থেকে একই দিন গাজীপুর সদর এলাকার বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিলি, নির্বাচনী প্রচারণা ও পথসভায় বক্তব্য রাখেন।

হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম রনিও গতকাল সদরের ৪১ নম্বর ওয়ার্ড পূবাইল, হায়দরাবাদ প্রভৃতি এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট চান।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমানও সদর এলাকার বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ করে হাতপাখা মার্কায় ভোট চান।

শনিবার, ২০ মে ২০২৩ , ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৪

নগর নির্বাচন

গাজীপুর : পরিবেশ ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে

- আমার আর ছেলের নিরাপত্তা চাই : জাহিদা - আজমত উল্লা বললেন, হামলার ঘটনা সাজানো নাটক

প্রতিনিধি, গাজীপুর

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের তৃতীয় দফার নির্বাচন আগামী ২৫ মে। ভোটগ্রহণের হাতেগোনা কয়দিন মাত্র বাকি। গাজীপুর সিটির নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা, আলোচনা-পর্যালোচনা যখন সিটি ছাড়িয়ে দেশব্যাপী তুঙ্গে, পাশাপাশি সিটির ভোটার ও নাগরিকদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে যে সংশয় ও শঙ্কা কিছুদিন পূর্ব থেকে কিছুটা প্রচ্ছন্ন ছিল সে দৃশ্যপট যেন ক্রমশঃ পাল্টে যাচ্ছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিল ও বাছাই, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচনী আবহ ও প্রচারণায় যে শান্তিপূর্ণ ও শঙ্কাহীন পরিবেশ ছিল, ভোটগ্রহণের আর মাত্র ৬ দিন বাকি থাকতে সে আবহ ও নগরীর রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেন ক্রমশঃ উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় নির্বাচন সহিংস ও সংঘাতপূর্ণ হয়ে ওঠে কি-না এমন সংশয় ও শঙ্কা ক্রমশঃ ভোটার, সাধারণ নাগরিক ও নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে। এতদিন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণায় ৪-৫টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া তেমন বিঘœ সৃষ্টি বা সংঘাতময় হয়ে ওঠেনি। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনের নির্বাচনী প্রচারণাকালে হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা যেন শান্তির সুবাতাসে অশান্তির ছোঁয়া লাগার মতো। নির্বাচনী প্রচারণায় তার মায়ের সঙ্গে থাকা জাহাঙ্গীর আলমের অভিযোগ তার মা ও তাকে হত্যা করতেই এই হামলা করা হয়েছে। এ নিয়ে জায়েদা খাতুন তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে গতকাল দুপুরে মহানগরীর ছয়দানা এলাকায় তার বাসভবন প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তবে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জায়েদা খাতুন বলেন অন্য প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে ভোট চাইতে পারে, আমি মহিলা তাই ভোট চাইতে গেলে বাধা দেয়া ও হয়রানি করা হয়। এমন হলে আমি ভোট কীভাবে কালেকশন করবো। আজমত উল্লা খানের লোকেরা যা করেছে তা আমি ভাবতেই পারিনি। তিনি বলেন যারা আমাকে টেবিল ঘড়ি মার্কায় ভোট দিবে আমি তাদের নিরাপত্তা চাই। আমার ছেলেকে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়েছে, তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। আমার ছেলে ভালো ছাড়া মন্দ কিছু করেনি। ভালো-মন্দ সব আল্লাহ জানেন। আমি আর আমার ছেলে সত্য না মিথ্যা তা ২৫ তারিখের নির্বাচনে প্রমাণিত হবে। আমার দাবি ঘড়ি মার্কার যারা ভোটার তাদের নিরাপত্তা পাশাপাশি আমার ও ছেলের নিরাপত্তা চাই। ভোটাররা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারে আমি সে প্রত্যাশাই করি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বৃহস্পতিবারের হামলার ঘটনায় আমি থানায় অভিযোগ করেছি কিন্তু কোন ফল পাইনি। সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর আলম বলেন গাজীপুর সিটি নির্বাচনে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বা নির্বাচনী পরিবেশ নেই বললেই চলে। আমার মায়ের নির্বাচনী প্রচারণায় বার বার বাধা দেয়া হচ্ছে। আমাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ রাখা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। সরকারেরও এখানে দায়িত্ব আছে। আগামী ২১ ও ২২ মে দুর্নীতি দমন কার্যালয় (দুদক)-এ আমাকে তলব করা হয়েছে। আমি বলি দুদক একটি সম্মানজনক প্রতিষ্ঠান, এর সম্মান কেউ নষ্ট করবেন না। আর দুদক-এ তলব করা মানে আমাকে বসিয়ে রাখা যাতে ২১ ও ২২ তারিখে আমরা প্রচারণা চালাতে না পারি। তিনি বলেন আমার মা ও আমাকে হত্যা করার জন্যই এ হামলা চালানো হয়েছে। আল্লাহ আমাদের বাঁচিয়েছেন। আমি বলব রাষ্ট্রীয় যন্ত্রকে নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করবেন না। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে যাতে হয়রানি করা না হয় আমি সে অনুরোধ জানাই। আমার ওপর যে অবিচার করা হয়েছে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়েছে তার প্রতিবাদে মা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। তার (জাহাঙ্গীর আলম) বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের যে অভিযোগ করা হয়েছে তার প্রতিবাদে তিনি বলেন আজমত উল্লা খান বলেছেন আমি সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছি। অথচ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মাত্র ৬শ কোটি টাকা। আমার মা ও আমার নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্ভিগ্ন। তবে ওপরে আল্লাহ আছেন আর নিচে জনগণ। আমাদের নিরাপত্তা তারাই দিবেন।

প্রচারণায় মেয়র প্রার্থীরা

আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান গতকাল জুম্মার নামাযের পর নগরীর টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী প্রচারণা করেন। এ সময় তিনি নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট চান। তিনি বলেন অত্যন্ত উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যিনি মেয়র নির্বাচিত হন তিনি যেন দুর্নীতির ঊর্ধ্বে ওঠে সত্যিকার অর্থে নাগরিক অধিকার ও তাদের সেবা পাওয়া নিশ্চিত করেন। টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থীর ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন আপনারা প্রকৃত ঘটনা জানুন। একজন ভদ্র মহিলা সম্পর্কে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না। জাহাঙ্গীর আলম তো নাটকে ওস্তাদ। একেক সময়ে সে একেক রকম নাটক করে। দল থেকে তাকে বহিষ্কার করায় আমাকে দোষারোপ করেছে, আবার মনোনয়নপত্র বাতিল করলেও আমাকে একই রকম দোষারোপ করেছে। আমার রাজনৈতিক জীবন অনেক দীর্ঘ। আমি জনগণের সেবার জন্য রাজনীতি করি। আঠারো বছর টঙ্গী পৌরসভার মেয়র হিসেবে আমি দায়িত্ব পালনকালে জনবান্ধব মেয়র হিসেবে কাজ করেছি। আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোন অভিযোগ কেউ করেনি। নির্বাচিত হলে আমি সিটির সব স্তরের মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাব। গাজীপুর সিটিকে দুর্নীতিমুক্ত, জবাবদিহিমূলক আধুনিক সিটি হিসেবে গড়ে তুলবো।

অন্যদিকে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন তার ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে সঙ্গে নিয়ে গতকাল সকালে তার বাসভবনে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এরপর নিজ বাসভবন প্রাঙ্গণে জাহাঙ্গীর আলমসহ তিনি এক জণাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে তিনি বলেন আমরা কারো নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দিচ্ছি না। কোন ভোটারকে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে মানা করছি না। অথচ প্রচারণা করতে গিয়েই আমরা বার বার বাধার সম্মুখিন হচ্ছি। এরপর তিনি ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে নগরীর ছয়দানা, বোর্ডবাজার, বড়বাজার, মার্কাস প্রভৃতি এলাকায় প্রচারণা চালান। এ সময় জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করে বলেন আমরা নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে বারে বারে বাধার সম্মুখিন হচ্ছি। আমরা পোস্টার লাগাতে ও মাইকিং করতে গেলে হুমকি দেয়া হচ্ছে।

জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী এমএম নিয়াজউদ্দিনও গতকাল জুম্মার নামাযের পর থেকে একই দিন গাজীপুর সদর এলাকার বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিলি, নির্বাচনী প্রচারণা ও পথসভায় বক্তব্য রাখেন।

হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম রনিও গতকাল সদরের ৪১ নম্বর ওয়ার্ড পূবাইল, হায়দরাবাদ প্রভৃতি এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট চান।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমানও সদর এলাকার বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ করে হাতপাখা মার্কায় ভোট চান।