নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ

অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে শিল্প-কারখানা স্থাপনে এগিয়ে আসার আহ্বান ডিসিসিআইর

নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ পেতে অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে শিল্প-কারখানা স্থাপনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। গতকাল ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘জ্বালানি নিরাপত্তা; ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা’বিষয়ক স্টেকহোল্ডার ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ব্যবসায়ীরা এই আহ্বান জানান। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) উক্ত অনুষ্ঠানে যথাক্রমে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার জানান, অস্থিতিশীল বৈশ্বিক ভূ-অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সময়কালে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে জ্বালানি নিরাপত্তা অন্যতম পূর্বশর্ত।

তিনি বলেন, ‘নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রাখতে প্রাথমিক জ্বালানি উৎসে আমাদের আরও বেশি বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে। রাষ্ট্রায়িত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এগুলোর সংস্কার একান্ত অপরিহার্য। দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়নে একটি পূর্ব অনুমানযোগ্য জ্বলানির মূল্য নীতিমালা একান্ত অপরিহার্য। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে জ্বালানি চাহিদা এবং সরবরাহের ভিত্তিতে ‘পাওয়ার সেক্টর মাস্টার প্ল্যান’ পুনঃসংশোধন করতে হবে।’

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে এবং এ লক্ষ্য পূরণে সরকার সব শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সংযোগ অব্যাহত রাখতে ইতোমধ্যে পরিকল্পনা করছে এবং কার্যকরভাবে তা বাস্তবায়ন করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অপরিকল্পিত শিল্পায়নের কারণে সরকারের পক্ষে গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না, তাই গ্যাস-বিদ্যুৎসহ অন্য সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে তিনি উদ্যোক্তাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে শিল্প-কারখানা স্থাপন ও স্থানান্তরে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি বা হ্রাস করা হবে এবং এ খাতে সরকার ভর্তুকি হ্রাসের পরিকল্পনা নিয়েছে। সরকার ইতোমধ্যে একটি ‘মূল্য নীতিমালা’ প্রণয়ন করেছে। গ্যাস অনুসন্ধানের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে প্রচুর সময় ও বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগের প্রয়োজন হলেও অনুসন্ধান কার্যকক্রম অব্যাহত রাখার কোন বিকল্প নেই। গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে এবং এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’ এছাড়া জ্বালানি ব্যয় হ্রাসের লক্ষ্যে শিল্প খাতকে সক্ষমতার সঙ্গে জ্বালানি ব্যবহারের আহ্বান জানান।

এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) বলেন, ‘করোনা মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা পৃথিবীতে জ্বালানি প্রাপ্তিতে স্বল্পতা এবং সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় বিশ্বব্যাপী জ্বালানির মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে স্থানীয় বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে এবং সেই সঙ্গে বেড়েছে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দেশের শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিতকল্পে সরকারকে আরও কৌশলী হওয়া ও সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোকে আরও উদ্যোগ নিতে হবে। সরকার গৃহীত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে এখনও গ্যাস-বিদু্যুৎ, পরিবহনসহ অন্যান্য সেবার শতভাগ নিশ্চিত করা যায়নি। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে সব সেবা নিশ্চিত করতে হবে। যেটি আমাদের উদ্যোক্তাদের শিল্পাঞ্চলে কলকারখানা স্থাপনে উৎসাহিত করবে। যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে অবৈধ গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে তা বিচ্ছিন্নকরণে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। এটা বন্ধ করা না গেলের সত্যিকারের উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’

অনুষ্ঠানের আলোচনায় সামিট পাওয়ারের পরিচালক ফয়সাল করিম বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি আমদানিতে একটি সুনির্দিষ্ট কর কাঠামোর অনুসরনের আহ্বান জানান। ‘পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি ম্যাগাজিন’-এর সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন বিদ্যুৎকেন্দ্রের অব্যবহৃত নিসৎরিত তাপ শিল্পখাতে ব্যবহারের প্রস্তাব করেন।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং সিইও আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘জ্বালানির দাম বিষয়ে আরও স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন এবং জ্বালানির অনুমানযোগ্য মূল্যের বিষয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা থাকা অপরিহার্য।’ ফিকি’র সভাপতি নাসের এজাজ বিজয় বলেন, ‘স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা, কার্যকর রোডম্যাপ এবং জ্বালানি প্রাপ্তি ও ব্যবহার নিশ্চিতকরণ খুবই জরুরি।’

ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম বলেন, ‘আমাদের জল ও স্থল সীমায় গ্যাস প্রাপ্তির প্রচুর সম্ভবনা রয়েছে এবং এ লক্ষ্যে অনুসন্ধানে কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।’ বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান শিল্প খাতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণে সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান এবং সৌরি বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির ওপর শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব করেন।

এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ ডন বলেন, ‘কার্বন নিঃসরণ হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে আমাদের অদূঢ় ভবিষ্যতে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে হবে এবং রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ‘ইলেকট্রিক চার্জিং স্টেশন’ স্থাপনে এখনই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।’

image
আরও খবর
পেঁয়াজের দাম বাড়ায় মানুষের কষ্ট হচ্ছে : বাণিজ্যমন্ত্রী
করমুক্ত আয়সীমা বেড়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা হওয়ার সম্ভাবনা
নকল ও ভেজালকারী ব্যবসায়ীদের কালো তালিকাভুক্ত করুন : শিল্পমন্ত্রী
শিল্প খাতে সিআইপি সম্মাননা পাচ্ছেন ৪৪ ব্যক্তি
স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে বিএসইসির সম্মতি
বিড়ি শ্রমিক জনসভায় বিএটির আগ্রাসন বন্ধের দাবি
দিনাজপুরে ‘এবি স্মার্ট কৃষিঋণ’ বিতরণ করলেন জাতীয় সংসদের হুইপ
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের উদ্যোগে বিনামূল্যে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষণ
প্রাণের শিল্পপার্ক পরিদর্শন করলেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান
গ্রাহকদের সুবিধা দিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করছে ওয়ালটন

রবিবার, ২১ মে ২০২৩ , ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ৩০ শাওয়াল ১৪৪৪

নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ

অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে শিল্প-কারখানা স্থাপনে এগিয়ে আসার আহ্বান ডিসিসিআইর

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ পেতে অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে শিল্প-কারখানা স্থাপনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। গতকাল ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘জ্বালানি নিরাপত্তা; ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা’বিষয়ক স্টেকহোল্ডার ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ব্যবসায়ীরা এই আহ্বান জানান। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) উক্ত অনুষ্ঠানে যথাক্রমে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার জানান, অস্থিতিশীল বৈশ্বিক ভূ-অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সময়কালে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে জ্বালানি নিরাপত্তা অন্যতম পূর্বশর্ত।

তিনি বলেন, ‘নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রাখতে প্রাথমিক জ্বালানি উৎসে আমাদের আরও বেশি বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে। রাষ্ট্রায়িত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এগুলোর সংস্কার একান্ত অপরিহার্য। দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়নে একটি পূর্ব অনুমানযোগ্য জ্বলানির মূল্য নীতিমালা একান্ত অপরিহার্য। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে জ্বালানি চাহিদা এবং সরবরাহের ভিত্তিতে ‘পাওয়ার সেক্টর মাস্টার প্ল্যান’ পুনঃসংশোধন করতে হবে।’

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে এবং এ লক্ষ্য পূরণে সরকার সব শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সংযোগ অব্যাহত রাখতে ইতোমধ্যে পরিকল্পনা করছে এবং কার্যকরভাবে তা বাস্তবায়ন করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অপরিকল্পিত শিল্পায়নের কারণে সরকারের পক্ষে গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না, তাই গ্যাস-বিদ্যুৎসহ অন্য সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে তিনি উদ্যোক্তাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে শিল্প-কারখানা স্থাপন ও স্থানান্তরে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি বা হ্রাস করা হবে এবং এ খাতে সরকার ভর্তুকি হ্রাসের পরিকল্পনা নিয়েছে। সরকার ইতোমধ্যে একটি ‘মূল্য নীতিমালা’ প্রণয়ন করেছে। গ্যাস অনুসন্ধানের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে প্রচুর সময় ও বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগের প্রয়োজন হলেও অনুসন্ধান কার্যকক্রম অব্যাহত রাখার কোন বিকল্প নেই। গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে এবং এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’ এছাড়া জ্বালানি ব্যয় হ্রাসের লক্ষ্যে শিল্প খাতকে সক্ষমতার সঙ্গে জ্বালানি ব্যবহারের আহ্বান জানান।

এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) বলেন, ‘করোনা মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা পৃথিবীতে জ্বালানি প্রাপ্তিতে স্বল্পতা এবং সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় বিশ্বব্যাপী জ্বালানির মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে স্থানীয় বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে এবং সেই সঙ্গে বেড়েছে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দেশের শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিতকল্পে সরকারকে আরও কৌশলী হওয়া ও সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোকে আরও উদ্যোগ নিতে হবে। সরকার গৃহীত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে এখনও গ্যাস-বিদু্যুৎ, পরিবহনসহ অন্যান্য সেবার শতভাগ নিশ্চিত করা যায়নি। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে সব সেবা নিশ্চিত করতে হবে। যেটি আমাদের উদ্যোক্তাদের শিল্পাঞ্চলে কলকারখানা স্থাপনে উৎসাহিত করবে। যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে অবৈধ গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে তা বিচ্ছিন্নকরণে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। এটা বন্ধ করা না গেলের সত্যিকারের উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’

অনুষ্ঠানের আলোচনায় সামিট পাওয়ারের পরিচালক ফয়সাল করিম বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি আমদানিতে একটি সুনির্দিষ্ট কর কাঠামোর অনুসরনের আহ্বান জানান। ‘পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি ম্যাগাজিন’-এর সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন বিদ্যুৎকেন্দ্রের অব্যবহৃত নিসৎরিত তাপ শিল্পখাতে ব্যবহারের প্রস্তাব করেন।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং সিইও আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘জ্বালানির দাম বিষয়ে আরও স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন এবং জ্বালানির অনুমানযোগ্য মূল্যের বিষয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা থাকা অপরিহার্য।’ ফিকি’র সভাপতি নাসের এজাজ বিজয় বলেন, ‘স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা, কার্যকর রোডম্যাপ এবং জ্বালানি প্রাপ্তি ও ব্যবহার নিশ্চিতকরণ খুবই জরুরি।’

ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম বলেন, ‘আমাদের জল ও স্থল সীমায় গ্যাস প্রাপ্তির প্রচুর সম্ভবনা রয়েছে এবং এ লক্ষ্যে অনুসন্ধানে কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।’ বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান শিল্প খাতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণে সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান এবং সৌরি বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির ওপর শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব করেন।

এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ ডন বলেন, ‘কার্বন নিঃসরণ হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে আমাদের অদূঢ় ভবিষ্যতে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে হবে এবং রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ‘ইলেকট্রিক চার্জিং স্টেশন’ স্থাপনে এখনই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।’