নরসিংদীতে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

নরসিংদীতে স্ত্রী ও ১৬ মাস বয়সী ছেলে সন্তানকে হত্যার দায়ে স্বামী ফখরুল ইসলাম (৩১) কে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক শামীমা পারভীন এই আদেশ দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ফখরুল ইসলাম সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের ঘোড়াদিয়া গ্রামের মো. সাইফুল্লাহর ছেলে। জানা গেছে, ২০১৯ সালে নরসিংদী শহরের পূর্ব দত্তপাড়া মহল্লার মো. পারভেজ মিয়ার মেয়ে রেশমী আক্তারের সঙ্গে ঘোড়াদিয়া এলাকার ফখরুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্যজীবনে এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকে কাজকর্ম না থাকায় স্ত্রী রেশমীর কাছে টাকা পয়সার জন্য মানসিক চাপ দিত স্বামী ফখরুল ইসলাম। টাকা না দিলে স্ত্রী রেশমীকে মারধর করত বেকার স্বামী। রেশমীকে মানসিক চাপ ও শারীরিক নির্যাতন থেকে রক্ষার জন্য বিভিন্ন সময়ে স্বামী ফখরুলকে টাকা পয়সা দিয়ে আসছিলেন রেশমীর পরিবার। ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে গৃহবধূ রেশমী আক্তার ও তার ১৬ মাস বয়সী সন্তানের গোঙ্গানীর শব্দ শুনতে পান পরিবারের সদস্যরা। এ সময় বাড়ির লোকজন ওই ঘরের দরজায় নক করলে দরজা খুলে পালিয়ে যায় স্বামী ফখরুল ইসলাম। পরে বাড়ির লোকজন ঘরে ঢুকে খাটের উপর স্ত্রী রেশমী আক্তার ও তার ১৬ মাসের ছেলে সন্তান ফাহিম মাহমুদ সালমানের গলাকাটা মরদেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ওই রাতেই স্থানীয়দের সহায়তায় অভিযুক্ত ফখরুল ইসলামকে ব্রাহ্মন্দী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে নরসিংদীর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসাইন এর আদালতে প্রেরণ করিলে ফখরুল ইসলাম কাঃবিঃ ১৬৪ ধারার দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। স্বীকারোক্তিতে ফখরুল বলেন, ছুরি দিয়ে প্রথমে পেটে ৩/৪টি পোছ দিয়ে এবং পরে গলায় ছুরি লাগিয়ে জবাই করে এবং পরে শিশু সন্তান ফাহিম মাহমুদ সালমানকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।

এ ঘটনায় নিহত রেশমীর বাবা মো. পারভেজ মিয়া বাদী হয়ে ফখরুল ইসলামকে একমাত্র আসামি করে নরসিংদী সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।

দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করেন।

অত্র মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর স্বাক্ষর আদালত গ্রহণ করে বৃহস্পতিবার জনাকীর্ণ আদালতে বিজ্ঞ বিচারক উক্ত রায় ঘোষণা করেন।

আরও খবর
ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবনে এসএসসি পরীক্ষা, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা
রাজশাহীতে জমে উঠেছে কুটির শিল্প মেলা
শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাটকেলঘাটা আদর্শ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়
ভুয়া ডেপুটি জেলার সেজে ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ
শরণখোলায় রাজনৈতিক সহাবস্থানের দাবিতে মানববন্ধন
সরকারি অনুমতি নিয়েও নদীতে মাছ শিকার করতে পারছে না পাথরঘাটার অর্ধশতাধিক জেলে
শহরের সুবিধা মিলছে ঘিওরের ৭টি ইউনিয়নের গ্রামেও
সুন্দরবনের বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জেলে-বাওয়ালিদের বিস্তর অভিযোগ
মহাদেবপুরে পরীক্ষামূলক চিনা বাদাম চাষ
রাজাপুরে অসহায় নারীকে ঘর তুলে দিলেন কেন্দ্রীয় আ.লীগ নেতা মনির
জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ : নিহত ২ আহত ১০

রবিবার, ২১ মে ২০২৩ , ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ৩০ শাওয়াল ১৪৪৪

নরসিংদীতে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

জেলা বার্তা পরিবেশক, নরসিংদী

নরসিংদীতে স্ত্রী ও ১৬ মাস বয়সী ছেলে সন্তানকে হত্যার দায়ে স্বামী ফখরুল ইসলাম (৩১) কে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক শামীমা পারভীন এই আদেশ দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ফখরুল ইসলাম সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের ঘোড়াদিয়া গ্রামের মো. সাইফুল্লাহর ছেলে। জানা গেছে, ২০১৯ সালে নরসিংদী শহরের পূর্ব দত্তপাড়া মহল্লার মো. পারভেজ মিয়ার মেয়ে রেশমী আক্তারের সঙ্গে ঘোড়াদিয়া এলাকার ফখরুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্যজীবনে এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকে কাজকর্ম না থাকায় স্ত্রী রেশমীর কাছে টাকা পয়সার জন্য মানসিক চাপ দিত স্বামী ফখরুল ইসলাম। টাকা না দিলে স্ত্রী রেশমীকে মারধর করত বেকার স্বামী। রেশমীকে মানসিক চাপ ও শারীরিক নির্যাতন থেকে রক্ষার জন্য বিভিন্ন সময়ে স্বামী ফখরুলকে টাকা পয়সা দিয়ে আসছিলেন রেশমীর পরিবার। ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে গৃহবধূ রেশমী আক্তার ও তার ১৬ মাস বয়সী সন্তানের গোঙ্গানীর শব্দ শুনতে পান পরিবারের সদস্যরা। এ সময় বাড়ির লোকজন ওই ঘরের দরজায় নক করলে দরজা খুলে পালিয়ে যায় স্বামী ফখরুল ইসলাম। পরে বাড়ির লোকজন ঘরে ঢুকে খাটের উপর স্ত্রী রেশমী আক্তার ও তার ১৬ মাসের ছেলে সন্তান ফাহিম মাহমুদ সালমানের গলাকাটা মরদেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ওই রাতেই স্থানীয়দের সহায়তায় অভিযুক্ত ফখরুল ইসলামকে ব্রাহ্মন্দী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে নরসিংদীর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসাইন এর আদালতে প্রেরণ করিলে ফখরুল ইসলাম কাঃবিঃ ১৬৪ ধারার দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। স্বীকারোক্তিতে ফখরুল বলেন, ছুরি দিয়ে প্রথমে পেটে ৩/৪টি পোছ দিয়ে এবং পরে গলায় ছুরি লাগিয়ে জবাই করে এবং পরে শিশু সন্তান ফাহিম মাহমুদ সালমানকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।

এ ঘটনায় নিহত রেশমীর বাবা মো. পারভেজ মিয়া বাদী হয়ে ফখরুল ইসলামকে একমাত্র আসামি করে নরসিংদী সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।

দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করেন।

অত্র মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর স্বাক্ষর আদালত গ্রহণ করে বৃহস্পতিবার জনাকীর্ণ আদালতে বিজ্ঞ বিচারক উক্ত রায় ঘোষণা করেন।