রাজশাহী : বিএনপি সরে গেছে মেয়র পদ থেকে, কাউন্সিলর প্রার্থীরা নৌকার কাছে ভিড়ছে

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ -এর অংশ নেয়ার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন দলীয়ভাবে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে। এদিকে গত কয়েকদিন আগে মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক সাঈদ হাসান নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন এমনটি শোনা গেলেও তিনিও সেখান থেকে সরে গেছেন। গত বৃহস্পতিবার বিবৃতি দিয়ে তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় ধানের ডগায় ভোটের আগেই তৈরি হয়েছে নৌকার জয়জয়কার অবস্থা। যদিও নির্বাচনী লড়াইয়ে মাঠে নেমেছে লাঙল ও হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থীরা। তবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বেশ এগিয়ে, নেতাকর্মীরাও উৎফুল্ল। তবে বিএনপিপন্থি অন্তত ২৫ জন কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এদের মধ্যে অনেকেই আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছেন।

আর সেই সুযোগ নিতে কাউন্সিলর প্রার্থীরা এমনকি বিএনপির প্রার্থীরাও মেয়র লিটনের দিকে ঝুঁকছেন। গত ১০ বছরে বিএনপিপন্থি অন্তত ৫ জন কাউন্সিলর আওয়ামী লীগে ভিড়েছেন। এবার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আরও অন্তত ১০-১২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী মেয়র লিটনের সমর্থন পেতে ছুটছেন বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

দলীয় সূত্র মতে, রাজশাহীর ৩০টি ওয়ার্ড থেকে এবার অন্তত ২৫ জন বিএনপিপন্থি কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। যাদের মধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারী বিএনপি নেতাদের মধ্যে রয়েছেন-১৬ নম্বর ওয়ার্ডে শাহমখদুম থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বেলাল হোসেন, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান টিটো, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক টুটুল, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আব্দুস সোবহান লিটন, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সহ-সভাপতি দিলদার হোসেন, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কিনু, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি জিল্লুর রহমান, ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আনোয়ারুল আমিন আযব, ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা আশরাফুল হাসান (বাচ্চু)। এছাড়া সংরক্ষিত ১৩, ১৪ ও ১৫ নং ওয়ার্ডে মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক সামসুন নাহার এবং সংরক্ষিত ৬, ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডে মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী বেলি খাতুন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও আরও অন্তত ১০-১২ জন বিএনপিপন্থি কাউন্সিলর প্রার্থী এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

এদিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগপন্থি কাউন্সিলরদের পাশাপাশি বিএনপিপন্থি কাউন্সিলররা নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন সমানে।

নগরীর জিন্নাহনগর এলাকায় গতকালকেও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও শাহমখদুম থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বেলাল হোসেনের ফেস্টুন বিদ্যুতের পোলে ঝুলতে দেখা গেছে।

জানতে চাইলে বেলাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, দলীয় ব্যানারে এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি না। কাউন্সিলর প্রার্থীদের সেই সুযোগ নাই। এলাকার সাধারণ মানুষ আমাকে চান, তাই এবারও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। দল সাংগঠনিকভাবে কোন ব্যবস্থা নিলেও করার কিছু নাই।’

রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ইশা বলেন, ‘আমরা বেশকিছু কাউন্সিলর প্রার্থীর নাম শুনতে পাচ্ছি। কিন্তু সিটি নির্বাচনে এখনও চূড়ান্তভাবে প্রার্থী কেউ হননি। তাই কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সর্বশেষ কারা নির্বাচনে থাকছে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ তবে বিএনপির পক্ষ থেকে কোন প্রার্থী এ নির্বাচনে অংশ নিবে না। এমনকি আমরা ভোট দিতেও যাব না।’

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, ‘কাউন্সিলর পদে আমাদের দলেরই অনেকেই অংশ নিচ্ছে। আমরা কাউকেই সমর্থন দিব না। আমাদের প্রধান লক্ষ্য মেয়র পদে বিজয়। সেটা নিশ্চিত করেই ঘরে ফিরব। এর বাইরে যারা যে যার মতো করে কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হয়ে আসুক আমাদের কোন কিছু বলার নাই।’

রবিবার, ২১ মে ২০২৩ , ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ৩০ শাওয়াল ১৪৪৪

রাজশাহী : বিএনপি সরে গেছে মেয়র পদ থেকে, কাউন্সিলর প্রার্থীরা নৌকার কাছে ভিড়ছে

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ -এর অংশ নেয়ার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন দলীয়ভাবে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে। এদিকে গত কয়েকদিন আগে মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক সাঈদ হাসান নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন এমনটি শোনা গেলেও তিনিও সেখান থেকে সরে গেছেন। গত বৃহস্পতিবার বিবৃতি দিয়ে তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় ধানের ডগায় ভোটের আগেই তৈরি হয়েছে নৌকার জয়জয়কার অবস্থা। যদিও নির্বাচনী লড়াইয়ে মাঠে নেমেছে লাঙল ও হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থীরা। তবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বেশ এগিয়ে, নেতাকর্মীরাও উৎফুল্ল। তবে বিএনপিপন্থি অন্তত ২৫ জন কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এদের মধ্যে অনেকেই আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছেন।

আর সেই সুযোগ নিতে কাউন্সিলর প্রার্থীরা এমনকি বিএনপির প্রার্থীরাও মেয়র লিটনের দিকে ঝুঁকছেন। গত ১০ বছরে বিএনপিপন্থি অন্তত ৫ জন কাউন্সিলর আওয়ামী লীগে ভিড়েছেন। এবার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আরও অন্তত ১০-১২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী মেয়র লিটনের সমর্থন পেতে ছুটছেন বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

দলীয় সূত্র মতে, রাজশাহীর ৩০টি ওয়ার্ড থেকে এবার অন্তত ২৫ জন বিএনপিপন্থি কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। যাদের মধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারী বিএনপি নেতাদের মধ্যে রয়েছেন-১৬ নম্বর ওয়ার্ডে শাহমখদুম থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বেলাল হোসেন, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান টিটো, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক টুটুল, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আব্দুস সোবহান লিটন, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সহ-সভাপতি দিলদার হোসেন, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কিনু, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি জিল্লুর রহমান, ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আনোয়ারুল আমিন আযব, ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা আশরাফুল হাসান (বাচ্চু)। এছাড়া সংরক্ষিত ১৩, ১৪ ও ১৫ নং ওয়ার্ডে মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক সামসুন নাহার এবং সংরক্ষিত ৬, ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডে মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী বেলি খাতুন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও আরও অন্তত ১০-১২ জন বিএনপিপন্থি কাউন্সিলর প্রার্থী এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

এদিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগপন্থি কাউন্সিলরদের পাশাপাশি বিএনপিপন্থি কাউন্সিলররা নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন সমানে।

নগরীর জিন্নাহনগর এলাকায় গতকালকেও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও শাহমখদুম থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বেলাল হোসেনের ফেস্টুন বিদ্যুতের পোলে ঝুলতে দেখা গেছে।

জানতে চাইলে বেলাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, দলীয় ব্যানারে এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি না। কাউন্সিলর প্রার্থীদের সেই সুযোগ নাই। এলাকার সাধারণ মানুষ আমাকে চান, তাই এবারও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। দল সাংগঠনিকভাবে কোন ব্যবস্থা নিলেও করার কিছু নাই।’

রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ইশা বলেন, ‘আমরা বেশকিছু কাউন্সিলর প্রার্থীর নাম শুনতে পাচ্ছি। কিন্তু সিটি নির্বাচনে এখনও চূড়ান্তভাবে প্রার্থী কেউ হননি। তাই কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সর্বশেষ কারা নির্বাচনে থাকছে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ তবে বিএনপির পক্ষ থেকে কোন প্রার্থী এ নির্বাচনে অংশ নিবে না। এমনকি আমরা ভোট দিতেও যাব না।’

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, ‘কাউন্সিলর পদে আমাদের দলেরই অনেকেই অংশ নিচ্ছে। আমরা কাউকেই সমর্থন দিব না। আমাদের প্রধান লক্ষ্য মেয়র পদে বিজয়। সেটা নিশ্চিত করেই ঘরে ফিরব। এর বাইরে যারা যে যার মতো করে কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হয়ে আসুক আমাদের কোন কিছু বলার নাই।’