১৩শ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ১৩

খুলনায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় এক হাজার ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সদর থানার এসআই খালিদ উদ্দিন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

খুলনা সদর থানা পুলিশের ওসি হাসান আল মামুন জানান, গত শুক্রবার রাতে মামলাটি দায়ের হয়েছে। মামলায় বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ ৪৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা এক হাজার ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ওসি মামুন আরও বলেন, এ মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৩ জনকে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, খালিশপুরের আলমনগর এলাকার মৃত হোসেন আলীর ছেলে সোহেল রানা (২০), ২৬নং ওয়ার্ড ওয়ার্লেস ক্রসরোড এলাকার আহমেদ হোসেন গাজীর ছেলে গাজী সালাউদ্দীন (৪২), রূপসার দেয়াড়া এলাকার আজিজুর রহমানের ছেলে আতাউর রহমান (৪৮), আইচগাতী এলাকার মৃত মখলেছুর রহমানের ছেলে সেকেন্দার শেখ (৬০), বটিয়াঘাটার বাড়োয়াড়িয়া এলাকার মৃত আলতাফ মোল্যার ছেলে শাইখুল মোল্যা (৩৪), হরিনটানা এলাকার মৃত নুরুল হকের ছেলে ওয়াহিদ শেখ (৩২), দাকোপ থানার খেজুরিয়া এলাকার আবদুল আজিজের ছেলে রাসেল (২৪), নগরের বানরগাতী ইসলাম কমিশনার মোড় এলাকার আশরাফ উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে রাব্বি চৌধুরী (২৯), দাকোপ থানার গুনারী এলাকার আ. সালাম গাজীর ছেলে মাহবুব গাজী (২৬), রূপসার আইচগাতী এলাকার আবদুল আজিম উদ্দিন শেখের ছেলে মনিরুজ্জামান মামুন (৪২), সোনাডাঙ্গার ট্রাকস্ট্যান্ড, আবদুল গনি সড়ক এলাকার আবদুল জলিল শেখের ছেলে রাজু শেখ (৪১), নগরের নতুন বাজার ওয়াপদা বেড়িবাঁধ রোড এলাকার মৃত আবদুল মান্নানের ছেলে আলিফ মিলন (৩১) এবং নতুন বাজার খ্রিস্টানগলি এলাকার আউয়ালের ছেলে রাসেল (২৭)।

খুলনা নগর বিএনপির আহ্বায়ক এসএম শফিকুল আলম মনা বলেন, সরকারের পদত্যাগ, গায়েবি মামলা ও গণগ্রেপ্তার বন্ধ, সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদ এবং ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে গত শুক্রবার দুপুরে নগরের প্রেসক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ আহ্বান করে বিএনপি। দুপুরে পর থেকেই প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হন। আগে থেকেই সেখানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল। বিকেলের দিকে সমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল প্রাইভেটকারে করে প্রেসক্লাবের সামনে আসেন। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন।

নেতাকর্মীদের মিছিলে পুলিশ বাধা দেয়। এরপর তাদের লাঠিপেটা করে এবং কাঁদানে গ্যাস ও গুলি ছুড়ে। এতে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের অন্তত ২০ জন আহত হন। মনা বলেন, সমাবেশে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। বক্তব্য দিতে দেয়নি। এখন উল্টো আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।

তিনি আরও বলেন, হামলা-মামলা করে বিএনপি নেতাকর্মীদের দমন করা যাবে না।

অন্যদিকে পুলিশ বলছে, বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে।

খুলনা নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুক্রবার বলেন, শুক্রবার দুপুরে প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে বিএনপির কর্মিসভা ছিল। রাস্তায় কোন কর্মসূচির অনুমতি বিএনপির ছিল না। বিকেলে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা এলে দলের নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক অবরোধ করে বসে পড়েন।

এ সময় পুলিশ একটু পিছিয়ে যায়। একপর্যায়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে বিএনপির নেতাকর্মীরা ইট-পাটকেল ছুড়েন। এ সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে। বিএনপির হামলায় পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্যও আহত হন। পরে ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে আটক করে।

রবিবার, ২১ মে ২০২৩ , ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ৩০ শাওয়াল ১৪৪৪

খুলনায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ

১৩শ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ১৩

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, খুলনা

খুলনায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় এক হাজার ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সদর থানার এসআই খালিদ উদ্দিন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

খুলনা সদর থানা পুলিশের ওসি হাসান আল মামুন জানান, গত শুক্রবার রাতে মামলাটি দায়ের হয়েছে। মামলায় বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ ৪৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা এক হাজার ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ওসি মামুন আরও বলেন, এ মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৩ জনকে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, খালিশপুরের আলমনগর এলাকার মৃত হোসেন আলীর ছেলে সোহেল রানা (২০), ২৬নং ওয়ার্ড ওয়ার্লেস ক্রসরোড এলাকার আহমেদ হোসেন গাজীর ছেলে গাজী সালাউদ্দীন (৪২), রূপসার দেয়াড়া এলাকার আজিজুর রহমানের ছেলে আতাউর রহমান (৪৮), আইচগাতী এলাকার মৃত মখলেছুর রহমানের ছেলে সেকেন্দার শেখ (৬০), বটিয়াঘাটার বাড়োয়াড়িয়া এলাকার মৃত আলতাফ মোল্যার ছেলে শাইখুল মোল্যা (৩৪), হরিনটানা এলাকার মৃত নুরুল হকের ছেলে ওয়াহিদ শেখ (৩২), দাকোপ থানার খেজুরিয়া এলাকার আবদুল আজিজের ছেলে রাসেল (২৪), নগরের বানরগাতী ইসলাম কমিশনার মোড় এলাকার আশরাফ উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে রাব্বি চৌধুরী (২৯), দাকোপ থানার গুনারী এলাকার আ. সালাম গাজীর ছেলে মাহবুব গাজী (২৬), রূপসার আইচগাতী এলাকার আবদুল আজিম উদ্দিন শেখের ছেলে মনিরুজ্জামান মামুন (৪২), সোনাডাঙ্গার ট্রাকস্ট্যান্ড, আবদুল গনি সড়ক এলাকার আবদুল জলিল শেখের ছেলে রাজু শেখ (৪১), নগরের নতুন বাজার ওয়াপদা বেড়িবাঁধ রোড এলাকার মৃত আবদুল মান্নানের ছেলে আলিফ মিলন (৩১) এবং নতুন বাজার খ্রিস্টানগলি এলাকার আউয়ালের ছেলে রাসেল (২৭)।

খুলনা নগর বিএনপির আহ্বায়ক এসএম শফিকুল আলম মনা বলেন, সরকারের পদত্যাগ, গায়েবি মামলা ও গণগ্রেপ্তার বন্ধ, সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদ এবং ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে গত শুক্রবার দুপুরে নগরের প্রেসক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ আহ্বান করে বিএনপি। দুপুরে পর থেকেই প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হন। আগে থেকেই সেখানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল। বিকেলের দিকে সমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল প্রাইভেটকারে করে প্রেসক্লাবের সামনে আসেন। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন।

নেতাকর্মীদের মিছিলে পুলিশ বাধা দেয়। এরপর তাদের লাঠিপেটা করে এবং কাঁদানে গ্যাস ও গুলি ছুড়ে। এতে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের অন্তত ২০ জন আহত হন। মনা বলেন, সমাবেশে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। বক্তব্য দিতে দেয়নি। এখন উল্টো আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।

তিনি আরও বলেন, হামলা-মামলা করে বিএনপি নেতাকর্মীদের দমন করা যাবে না।

অন্যদিকে পুলিশ বলছে, বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে।

খুলনা নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুক্রবার বলেন, শুক্রবার দুপুরে প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে বিএনপির কর্মিসভা ছিল। রাস্তায় কোন কর্মসূচির অনুমতি বিএনপির ছিল না। বিকেলে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা এলে দলের নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক অবরোধ করে বসে পড়েন।

এ সময় পুলিশ একটু পিছিয়ে যায়। একপর্যায়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে বিএনপির নেতাকর্মীরা ইট-পাটকেল ছুড়েন। এ সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে। বিএনপির হামলায় পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্যও আহত হন। পরে ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে আটক করে।