চাহিদা কম থাকায় ২ হাজার টাকার নোট বাতিল ভারতে

নিত্যপ্রয়োজনীয় লেনদেনে চাহিদা কম থাকায়, দুই হাজার রুপির নোট বাতিল করছে ভারত। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ক্লিন নোট নীতির অংশ হিসেবে বাজার থেকে ২,০০০ টাকার অঙ্কের ব্যাংক নোট প্রত্যাহার করা হবে। গত শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক।

এরআগে ৫০০ এবং ১,০০০ টাকার কাগজি নোট প্রত্যাহার করার পর ২,০০০ টাকার নোট চালু করা হয়েছিল। সেটা ২০১৬ সালের কথা। তারপর প্রায় সাত বছর পার হয়ে গিয়েছে। ভারতজুড়ে ২,০০০ টাকার নোট ছড়িয়ে পড়লেও, ধীরে ধীরে তার সংখ্যা কমিয়ে আনাটাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্য ছিল। সেই উদ্দেশ্যে ২০১৮-১৯ সাল থেকেই ২,০০০ টাকার নোট ছাপানো বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে এই ঘোষণাকে একেবারে আকস্মিক সিদ্ধান্ত ভাবলে ভুল হবে।

২,০০০ টাকার নোটের ৮৯ শতাংশ (আনুমানিক) ২০১৭ সালের মার্চের আগেই ছেপে বের হয়েছিল। তাদের ৪-৫ বছরের আয়ু প্রায় শেষের দিকে। ৩১ মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত, বাজারে প্রচলনে থাকা এই নোটগুলোর মোট মূল্য প্রায় ৬.৭৩ লাখ কোটি টাকা (ভারতীয়) ছিল। ওই সময়ে মোট প্রচলিত নোটের প্রায় ৩৭.৩ শতাংশ ছিল এই ২,০০০ টাকার নোটই। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তা হ্রাস পেয়েছে।

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের পরিকল্পনামাফিক, বর্তমানে বাজারে প্রচলিত মোট নোটের মাত্র ১০.৮ শতাংশই ২,০০০ টাকার নোট। অর্থাৎ প্রতি ১০টি বিভিন্ন অঙ্কের নোটের মধ্যে মাত্র ১টি ২,০০০ টাকার নোট। ফলে এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় লেনদেনের ক্ষেত্রে ২,০০০ টাকার নোটের চাহিদা কম। এটি বন্ধ হলে লেনদেনে সমস্যা হওয়ার পরিসরও কম। ঠিক সেই কারণেই ২,০০০ টাকার নোট তুলে নিচ্ছে তারা।

সেই পরিপ্রেক্ষিতেই আরবিআই ২,০০০ টাকার ব্যাংকনোট বাজার থেকে তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে আইনি দরপত্র হিসেবে তাদের বৈধতা বজায় থাকবে। ২০১৩-১৪ সালে আরবিআই ঠিক যেভাবে টাকা ফেরত নিয়েছিল, অনেকটা সেই ধাঁচেই পুরো ব্যাপারটা হবে।

২,০০০ টাকার নোট এক্সচেঞ্জ বা ডিপোজিটের বিষয়ে বলা হয়েছে, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গিয়েই ২,০০০ টাকার নোট জমা করতে যাবে। অথবা যেকোন ব্যাংক শাখায় গিয়ে বিনিময় করে নিতে পারবেন। কারো কাছে একটি ২,০০০ টাকার নোট আছে। সেটি বদলে চারটি ৫০০ টাকার নোট নিয়ে নিতে পারবে।

আগামীকাল থেকে যেকোন ব্যাংকে গিয়ে এই সুবিধা পাওয়া যাবে। তবে এক সময়ে, একসঙ্গে মোট ২০,০০০ টাকার সীমা পর্যন্ত অঙ্কের নোটই বদল করা যাবে। অর্থাৎ ১০টির বেশি ২,০০০ টাকার নোট নিয়ে গেলে পাল্টানো যাবে না। ২,০০০ টাকার নোট দিয়ে ছোট নোট নেয়ার এই সুবিধা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত সমস্ত ব্যাংকেই পাওয়া যাবে। শুধু তাই নয়। উপরন্তু, ২৩ মে ২০২৩ থেকে আরবিআই এর এমন ১৯টি রিজিওনাল অফিসে গিয়েও নোট বিনিময় করা সম্ভব।

সোমবার, ২২ মে ২০২৩ , ০৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ০২ জিলক্বদ শাওয়াল ১৪৪৪

চাহিদা কম থাকায় ২ হাজার টাকার নোট বাতিল ভারতে

সংবাদ ডেস্ক

image

নিত্যপ্রয়োজনীয় লেনদেনে চাহিদা কম থাকায়, দুই হাজার রুপির নোট বাতিল করছে ভারত। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ক্লিন নোট নীতির অংশ হিসেবে বাজার থেকে ২,০০০ টাকার অঙ্কের ব্যাংক নোট প্রত্যাহার করা হবে। গত শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক।

এরআগে ৫০০ এবং ১,০০০ টাকার কাগজি নোট প্রত্যাহার করার পর ২,০০০ টাকার নোট চালু করা হয়েছিল। সেটা ২০১৬ সালের কথা। তারপর প্রায় সাত বছর পার হয়ে গিয়েছে। ভারতজুড়ে ২,০০০ টাকার নোট ছড়িয়ে পড়লেও, ধীরে ধীরে তার সংখ্যা কমিয়ে আনাটাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্য ছিল। সেই উদ্দেশ্যে ২০১৮-১৯ সাল থেকেই ২,০০০ টাকার নোট ছাপানো বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে এই ঘোষণাকে একেবারে আকস্মিক সিদ্ধান্ত ভাবলে ভুল হবে।

২,০০০ টাকার নোটের ৮৯ শতাংশ (আনুমানিক) ২০১৭ সালের মার্চের আগেই ছেপে বের হয়েছিল। তাদের ৪-৫ বছরের আয়ু প্রায় শেষের দিকে। ৩১ মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত, বাজারে প্রচলনে থাকা এই নোটগুলোর মোট মূল্য প্রায় ৬.৭৩ লাখ কোটি টাকা (ভারতীয়) ছিল। ওই সময়ে মোট প্রচলিত নোটের প্রায় ৩৭.৩ শতাংশ ছিল এই ২,০০০ টাকার নোটই। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তা হ্রাস পেয়েছে।

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের পরিকল্পনামাফিক, বর্তমানে বাজারে প্রচলিত মোট নোটের মাত্র ১০.৮ শতাংশই ২,০০০ টাকার নোট। অর্থাৎ প্রতি ১০টি বিভিন্ন অঙ্কের নোটের মধ্যে মাত্র ১টি ২,০০০ টাকার নোট। ফলে এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় লেনদেনের ক্ষেত্রে ২,০০০ টাকার নোটের চাহিদা কম। এটি বন্ধ হলে লেনদেনে সমস্যা হওয়ার পরিসরও কম। ঠিক সেই কারণেই ২,০০০ টাকার নোট তুলে নিচ্ছে তারা।

সেই পরিপ্রেক্ষিতেই আরবিআই ২,০০০ টাকার ব্যাংকনোট বাজার থেকে তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে আইনি দরপত্র হিসেবে তাদের বৈধতা বজায় থাকবে। ২০১৩-১৪ সালে আরবিআই ঠিক যেভাবে টাকা ফেরত নিয়েছিল, অনেকটা সেই ধাঁচেই পুরো ব্যাপারটা হবে।

২,০০০ টাকার নোট এক্সচেঞ্জ বা ডিপোজিটের বিষয়ে বলা হয়েছে, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গিয়েই ২,০০০ টাকার নোট জমা করতে যাবে। অথবা যেকোন ব্যাংক শাখায় গিয়ে বিনিময় করে নিতে পারবেন। কারো কাছে একটি ২,০০০ টাকার নোট আছে। সেটি বদলে চারটি ৫০০ টাকার নোট নিয়ে নিতে পারবে।

আগামীকাল থেকে যেকোন ব্যাংকে গিয়ে এই সুবিধা পাওয়া যাবে। তবে এক সময়ে, একসঙ্গে মোট ২০,০০০ টাকার সীমা পর্যন্ত অঙ্কের নোটই বদল করা যাবে। অর্থাৎ ১০টির বেশি ২,০০০ টাকার নোট নিয়ে গেলে পাল্টানো যাবে না। ২,০০০ টাকার নোট দিয়ে ছোট নোট নেয়ার এই সুবিধা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত সমস্ত ব্যাংকেই পাওয়া যাবে। শুধু তাই নয়। উপরন্তু, ২৩ মে ২০২৩ থেকে আরবিআই এর এমন ১৯টি রিজিওনাল অফিসে গিয়েও নোট বিনিময় করা সম্ভব।