গাজীপুর : আজমত উল্লার ২৮ দফা নির্বাচনী ইশতেহার

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন বলতে গেলে এখন একেবারে দ্বারপ্রান্তে। এখন দিন গণনা নয়, শুরু হয়েছে ক্ষণ গণনার পালা। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীগণ শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী প্রচারণায় প্রচণ্ড ব্যস্ত রয়েছেন। ব্যাপক প্রতীক্ষা, প্রবল উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার অবসান ঘটিয়ে ২৫ মে অনুষ্ঠিত হবে তৃতীয়বারের মতো গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এ নির্বাচন। তাই মাঝখানে ভোট গ্রহণের বাকি আছে আর মাত্র দুই দিন এবং প্রচারণার বাকি রয়েছে মাত্র একদিন। আগামী মঙ্গলবার মধ্যরাত ১২টায় শেষ হবে নির্বাচনী প্রচারণা। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট আমেজ ও জমজমাট ভাব থাকলেও ভোটার ও সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার ভাবও পরিলক্ষিত হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে বিএনপি মাঠে না থাকায় এবং মেয়র পদে তাদের কোন প্রার্থী অংশ না নেয়ায় নির্বাচনী আমেজে খানিকটা ভাটার টান থাকলেও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেমন চমক সৃষ্টি করেছিল তেমনি নির্বাচনী আবহ ও আমেজ অনেকটা চাঙ্গা করে তুলেছে। নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি প্রার্থীর অনুপস্থিতি আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে অনেকটা নির্ভার এবং তার সহজ জয়ের পথ সুগম মনে হলেও তার সেই আশা খানিকটা ব্যাহত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন তার ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ইমেজ কাজে লাগিয়ে অনেক ভোটারকে কাছে টানার পাশাপাশি আজমত উল্লা খানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন। গাজীপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনে একেবারেই নবাগত স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন সিটি নির্বাচনের ভোটের মাঠে এমন শক্ত অবস্থানে আসতে পারবেন সেটা অনেকের ভাবনায় না থাকলেও মনোনয়নপত্র বাতিলের কারণে মেয়র পদে জাহাঙ্গীর আলম প্রতিদ্বন্দ্বী না হওয়ায় মায়ের হয়ে তিনি প্রচার-প্রচারণায় সক্রিয় রয়েছেন। ফলশ্রুতিতে জাহাঙ্গীর আলমের জনপ্রিয়তা ও তার প্রতি সমর্থক-ভোটারদের আবেগ-সহানুভূতি জায়েদা খাতুনকে ভোটের লড়াইয়ের মাঠে আজমত উল্লা খানের বিপরীতে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিয়ে এসেছে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান নিঃসন্দেহে মেয়র পদে শক্তিশালী প্রার্থী। তার পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাকর্মী ছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই। তাই তার জয়ের ব্যাপারে দলের নেতাকর্মীরা যথেষ্ট আস্থাশীল। তবে নির্বাচনী পর্যবেক্ষকগণ জায়েদা খাতুনকে আজমত উল্লা খানের বিরুদ্ধে অন্যতম শক্তিশালী প্রার্থী মনে করছেন। অবশ্য জয়-পরাজয়ের ব্যাপারটি এখনও ভোটারদের কী মনোভাব তা না জেনে নিশ্চিত বলা না গেলেও আগামী ২/৩ দিনের নির্বাচনী পরিবেশ-পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় তার ওপর সেটা নির্ভর করছে।

আজমত উল্লার ২৮ দফা নির্বাচনী ইশতেহার

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে গাজীপুর জেলা শহরের প্রকৌশল ভবনের হলরুমে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি ২৮ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন।

ইশতেহার ঘোষণাকালে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী আলিম উদ্দিন, অ্যাডভোকেট ওয়াজউদ্দিন মিয়া, আফজাল হোসেন সরকার রিপন, আমজাদ হোসেন বাবুল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আমানত হোসেন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আহমেদ, মজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হাদী শামীম, মাসুদ রানা এরশাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচনী ইশতেহারে আজমত উল্লা খান বলেন এ নির্বাচন আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর ওপর নির্ভর করছে আমাদের ভবিষ্যৎ নগরজীবন। যে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে যথাযথ সেবা পেতে হলে সে প্রতিষ্ঠানে সৎ, যোগ্য ও অভিজ্ঞ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা অনিবার্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত নেতৃত্বের অদক্ষতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে আমরা কাক্সিক্ষত সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু হওয়ার পর থেকে বর্তমান সরকার গাজীপুর সিটির উন্নয়নে বহু আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা, সততা ও স্বচ্ছতার অভাবে সরকার বরাদ্দকৃত অর্থের সঠিকভাবে ব্যয় না হওয়ায় শহরের সমস্যাগুলোর সমাধান আমরা পাইনি। অনেক সমস্যা এখনও বিদ্যমান রয়েছে, যেগুলোর সমাধানে প্রয়োজন সৎ ও যোগ্য প্রতিনিধি, যিনি জনগণকে সম্পৃক্ত করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান করে নাগরিকদের সেবা নিশ্চিত করবেন।

তিনি বলেন শৈশবকাল হতে আমি মানুষের সেবায় নিয়োজিত থেকে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গাজীপুর মহানগরের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। প্রায় ৫৮ বছর যাবৎ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছি। আপনারা জানেন যে, ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত আমি টঙ্গী পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। সে সময় টঙ্গী পৌর এলাকার অভূতপূর্ব উন্নয়নের প্রেক্ষিতে আমি চারবার বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান/ মেয়র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছি ও টঙ্গী পৌরসভা চারবার শ্রেষ্ঠ পৌরসভার স্বীকৃতি লাভ করেছে। আপনারা জেনে খুশি হবেন, আমি জাতিসংঘসহ বিশ্বের প্রায় ২৮টি দেশে স্থানীয় সরকার পরিচালনাবিষয়ক বিভিন্ন সভা, সেমিনার ও কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে সিটি করপোরেশনকে কীভাবে আধুনিক নগরী রূপে গড়ে তোলা যায় সে বিষয়ে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করেছি। আপনাদের মূল্যবান ভোটে মেয়র নির্বাচিত হলে আমি একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে রাস্তা, ড্রেন, কালভার্ট, ব্রিজসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সেবামূলক খাতগুলোকে আরও শক্তিশালী করে সেবার মানকে সুনিশ্চিত করতে এক বছর, দুই বছর ও পাঁচ বছর মেয়াদি তিন স্তর বিশিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করব।

আজমত উল্লা খান বলেন, গাজীপুর বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ শিল্পশহর। এ নগরীতে রয়েছে অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ডুয়েট, ইসলামিক ইউনির্ভাসিটি অব টেকনোলজি, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজ, শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ, রয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, সমবায় কারখানা, টাকশাল, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারসহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু জাতীয় প্রতিষ্ঠান, আছে সিরামিক, ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিসহ অসংখ্য পোশাক ও অন্যান্য শিল্পকারখানায় কর্মরত ভাই- বোনেরাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত লাখো মানুষের বসবাস। আমি বিশ্বাস করি, আপনারা যদি আমাকে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করেন তাহলে প্রশাসনের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সিটি মাস্টারপ্ল্যান এবং জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে গাজীপুর সিটি করপোরেশনকে সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত একটি সমৃদ্ধ সুষম নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারব - ইনশাআল্লাহ।

এছাড়া ইশতেহারে তিনি যে ২৮ দফা সংযুক্ত করেছেন মোটা দাগে সেগুলো হলো : পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে পরামর্শক/নগর উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি, সেবার মান বৃদ্ধিকরণ, হোল্ডিং কর সহনশীল করা, অধিগ্রহণকৃত ভূমির জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান, স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, ফুটপাতসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ, সংযোগ সড়ক নেটওয়ার্ক তৈরি, শিক্ষার মান উন্নয়ন ও কারিগরি শিক্ষা প্রবর্তন, শ্রমিক-কর্মচারী ও বস্তিবাসীদের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতকরণ, শিল্পকলা ওয়ার্ড সেন্টার ও ডিজিটাল কমান্ড সেন্টার নির্মাণ, বর্জ্য ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড প্রসারের উদ্যোগ, ক্রীড়া ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও সংবাদকর্মীদের সহায়তা, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও সুবিধা বঞ্চিতদের সহায়তা প্রদান, পার্ক ও উদ্যান নির্মাণ ও উন্নয়ন প্রভৃতি।

মেয়র প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা

গতকাল নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খানের পক্ষে চিত্র নায়ক ফেরদৌস, সায়মন সাদিক, নিপুন আক্তারসহ অন্যান্য চলচ্চিত্র শিল্পীরা নৌকার পক্ষে প্রচারণায় যোগ দেন। তারা খোলা ট্রাকে করে চান্দনা চৌরাস্তা, টঙ্গীসহ বিভিন্ন স্থানে প্রচারণা চালান। বিকেলে চিত্র নায়িকা মাহিয়া সরকার মাহি ও তার স্বামী আওয়ামী লীগ নেতা রকিব সরকার নৌকার পক্ষে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় গণসংযোগ করেন এবং নৌকার পক্ষে ভোট প্রদানের জন্য আহ্বান জানান। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামালসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম খান নিখিল, মহানরগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেলসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের যুবলীগের নেতারা প্রচারণায় যোগ দেন। অন্যদিকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রচার-প্রচারণা চালানোর ফলে নৌকার পক্ষে সৃষ্টি হচ্ছে গণ জোয়ার।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান গতকাল গাজীপুর মহানগরীর সদর মেট্রো থানার জয়দেবপুর বাজার, জোরপুকুরপাড়, দাক্ষিণ খান, ধীরাশ্রম, ভারারুল জামতলা, ভোড়া পাকা মসজিদ,তড়ৎপাড়া, নীলেরপাড়া, পূর্ব চান্দনা, হাড়িনাল, ভানুয়া, পাজুলিয়া, বিআইডিসি গেইট, চতর বাজার, থানা কাউন্সিলর লক্ষীপুরা, কুষি গবেষণা ও ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালান এবং পথসভায় বক্তব্য রাখেন। এসব পথসভায় তিনি নগরীর উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান।

স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন তার ছেলে নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলমকে সঙ্গে নিয়ে বিকেলে তার বাসভবন থেকে প্রচারণায় বের হন। তিনি ছয়দানা মালেকের বাড়ি, বাসন সড়ক, ভোগড়া বাইপাস, নাওজোর, কড্ডা, কোনাবাড়ি পেয়ারা বাগান এলাকায় গণসংযোগ করেন। প্রচারণাকালে জায়েদা খাতুন আগামী ২৫ মে নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য ভোটারদের অনুরোধ জানান।

জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী এম. এম নিয়াজ উদ্দিন নগরীর ৪৭ নং ওয়ার্ডের মুরকুন, গোলাপপুর, পাগাড়, বিসিক, জামাই বাজার, মধুমিতা, স্টেশন রোড, থানা গেইট, তিস্তার গেইট, দত্তপাড়া, কলেজ গেইট, গাজীপুরা, চেরাগআলী, গাজীপুরা, শিমুলতলী ও কাউলতিয়া এলাকায় গণসংযোগ করেন। তিনি লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান নগরীর টঙ্গী পূর্ব থানার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভায় বক্তব্য রাখেন। এ সময় তিনি বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ, সংশয় ও শঙ্কা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনূর ইসলাম রনি গাজীপুর মহানগরীর সদর মেট্রো থানার জয়দেবপুর, বাজার, বাসস্ট্যান্ড, বিলাসপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করে হাতি প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।

আরও খবর
সিরাজগঞ্জে ৩২৩ চরমপন্থির আত্মসমর্পণ
আমি নির্দোষ, দুদককে ব্যবহার করে হয়রানি করা হচ্ছে : জাহাঙ্গীর
বরিশালে মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে স্বশিক্ষিত থেকে এমএ পাস রয়েছেন
রাজশাহী : সিটি ভোটে অংশ নিলে বিএনপি করার সুযোগ থাকবে না : মিনু
চার বছরেও মামলার চার্জসিট দেয়নি দুদক
গ্যাটকো মামলায় খালেদা জিয়ার অভিযোগ গঠন শুনানি ৬ জুন
আর শান্তি সমাবেশ নয়, এবার সরাসরি প্রতিরোধ : বিএনপিকে হুঁশিয়ারি কাদেরের
সিটি নির্বাচনও নীলনকশার হবে : মির্জা ফখরুল
ইউএনও নারী, তাই গার্ড অব অনারে ফের কাদের সিদ্দিকীর বাধা
৯ মাস পর বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ
তারেক-জোবায়দার মামলায় সাক্ষ্য দিতে আদালতে হুদা

সোমবার, ২২ মে ২০২৩ , ০৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ০২ জিলক্বদ শাওয়াল ১৪৪৪

নগর নির্বাচন

গাজীপুর : আজমত উল্লার ২৮ দফা নির্বাচনী ইশতেহার

প্রতিনিধি, গাজীপুর

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন বলতে গেলে এখন একেবারে দ্বারপ্রান্তে। এখন দিন গণনা নয়, শুরু হয়েছে ক্ষণ গণনার পালা। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীগণ শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী প্রচারণায় প্রচণ্ড ব্যস্ত রয়েছেন। ব্যাপক প্রতীক্ষা, প্রবল উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার অবসান ঘটিয়ে ২৫ মে অনুষ্ঠিত হবে তৃতীয়বারের মতো গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এ নির্বাচন। তাই মাঝখানে ভোট গ্রহণের বাকি আছে আর মাত্র দুই দিন এবং প্রচারণার বাকি রয়েছে মাত্র একদিন। আগামী মঙ্গলবার মধ্যরাত ১২টায় শেষ হবে নির্বাচনী প্রচারণা। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট আমেজ ও জমজমাট ভাব থাকলেও ভোটার ও সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার ভাবও পরিলক্ষিত হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে বিএনপি মাঠে না থাকায় এবং মেয়র পদে তাদের কোন প্রার্থী অংশ না নেয়ায় নির্বাচনী আমেজে খানিকটা ভাটার টান থাকলেও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেমন চমক সৃষ্টি করেছিল তেমনি নির্বাচনী আবহ ও আমেজ অনেকটা চাঙ্গা করে তুলেছে। নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি প্রার্থীর অনুপস্থিতি আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে অনেকটা নির্ভার এবং তার সহজ জয়ের পথ সুগম মনে হলেও তার সেই আশা খানিকটা ব্যাহত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন তার ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ইমেজ কাজে লাগিয়ে অনেক ভোটারকে কাছে টানার পাশাপাশি আজমত উল্লা খানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন। গাজীপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনে একেবারেই নবাগত স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন সিটি নির্বাচনের ভোটের মাঠে এমন শক্ত অবস্থানে আসতে পারবেন সেটা অনেকের ভাবনায় না থাকলেও মনোনয়নপত্র বাতিলের কারণে মেয়র পদে জাহাঙ্গীর আলম প্রতিদ্বন্দ্বী না হওয়ায় মায়ের হয়ে তিনি প্রচার-প্রচারণায় সক্রিয় রয়েছেন। ফলশ্রুতিতে জাহাঙ্গীর আলমের জনপ্রিয়তা ও তার প্রতি সমর্থক-ভোটারদের আবেগ-সহানুভূতি জায়েদা খাতুনকে ভোটের লড়াইয়ের মাঠে আজমত উল্লা খানের বিপরীতে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিয়ে এসেছে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান নিঃসন্দেহে মেয়র পদে শক্তিশালী প্রার্থী। তার পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাকর্মী ছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই। তাই তার জয়ের ব্যাপারে দলের নেতাকর্মীরা যথেষ্ট আস্থাশীল। তবে নির্বাচনী পর্যবেক্ষকগণ জায়েদা খাতুনকে আজমত উল্লা খানের বিরুদ্ধে অন্যতম শক্তিশালী প্রার্থী মনে করছেন। অবশ্য জয়-পরাজয়ের ব্যাপারটি এখনও ভোটারদের কী মনোভাব তা না জেনে নিশ্চিত বলা না গেলেও আগামী ২/৩ দিনের নির্বাচনী পরিবেশ-পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় তার ওপর সেটা নির্ভর করছে।

আজমত উল্লার ২৮ দফা নির্বাচনী ইশতেহার

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে গাজীপুর জেলা শহরের প্রকৌশল ভবনের হলরুমে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি ২৮ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন।

ইশতেহার ঘোষণাকালে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী আলিম উদ্দিন, অ্যাডভোকেট ওয়াজউদ্দিন মিয়া, আফজাল হোসেন সরকার রিপন, আমজাদ হোসেন বাবুল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আমানত হোসেন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আহমেদ, মজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হাদী শামীম, মাসুদ রানা এরশাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচনী ইশতেহারে আজমত উল্লা খান বলেন এ নির্বাচন আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর ওপর নির্ভর করছে আমাদের ভবিষ্যৎ নগরজীবন। যে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে যথাযথ সেবা পেতে হলে সে প্রতিষ্ঠানে সৎ, যোগ্য ও অভিজ্ঞ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা অনিবার্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত নেতৃত্বের অদক্ষতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে আমরা কাক্সিক্ষত সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু হওয়ার পর থেকে বর্তমান সরকার গাজীপুর সিটির উন্নয়নে বহু আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা, সততা ও স্বচ্ছতার অভাবে সরকার বরাদ্দকৃত অর্থের সঠিকভাবে ব্যয় না হওয়ায় শহরের সমস্যাগুলোর সমাধান আমরা পাইনি। অনেক সমস্যা এখনও বিদ্যমান রয়েছে, যেগুলোর সমাধানে প্রয়োজন সৎ ও যোগ্য প্রতিনিধি, যিনি জনগণকে সম্পৃক্ত করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান করে নাগরিকদের সেবা নিশ্চিত করবেন।

তিনি বলেন শৈশবকাল হতে আমি মানুষের সেবায় নিয়োজিত থেকে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গাজীপুর মহানগরের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। প্রায় ৫৮ বছর যাবৎ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছি। আপনারা জানেন যে, ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত আমি টঙ্গী পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। সে সময় টঙ্গী পৌর এলাকার অভূতপূর্ব উন্নয়নের প্রেক্ষিতে আমি চারবার বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান/ মেয়র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছি ও টঙ্গী পৌরসভা চারবার শ্রেষ্ঠ পৌরসভার স্বীকৃতি লাভ করেছে। আপনারা জেনে খুশি হবেন, আমি জাতিসংঘসহ বিশ্বের প্রায় ২৮টি দেশে স্থানীয় সরকার পরিচালনাবিষয়ক বিভিন্ন সভা, সেমিনার ও কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে সিটি করপোরেশনকে কীভাবে আধুনিক নগরী রূপে গড়ে তোলা যায় সে বিষয়ে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করেছি। আপনাদের মূল্যবান ভোটে মেয়র নির্বাচিত হলে আমি একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে রাস্তা, ড্রেন, কালভার্ট, ব্রিজসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সেবামূলক খাতগুলোকে আরও শক্তিশালী করে সেবার মানকে সুনিশ্চিত করতে এক বছর, দুই বছর ও পাঁচ বছর মেয়াদি তিন স্তর বিশিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করব।

আজমত উল্লা খান বলেন, গাজীপুর বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ শিল্পশহর। এ নগরীতে রয়েছে অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ডুয়েট, ইসলামিক ইউনির্ভাসিটি অব টেকনোলজি, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজ, শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ, রয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, সমবায় কারখানা, টাকশাল, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারসহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু জাতীয় প্রতিষ্ঠান, আছে সিরামিক, ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিসহ অসংখ্য পোশাক ও অন্যান্য শিল্পকারখানায় কর্মরত ভাই- বোনেরাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত লাখো মানুষের বসবাস। আমি বিশ্বাস করি, আপনারা যদি আমাকে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করেন তাহলে প্রশাসনের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সিটি মাস্টারপ্ল্যান এবং জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে গাজীপুর সিটি করপোরেশনকে সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত একটি সমৃদ্ধ সুষম নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারব - ইনশাআল্লাহ।

এছাড়া ইশতেহারে তিনি যে ২৮ দফা সংযুক্ত করেছেন মোটা দাগে সেগুলো হলো : পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে পরামর্শক/নগর উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি, সেবার মান বৃদ্ধিকরণ, হোল্ডিং কর সহনশীল করা, অধিগ্রহণকৃত ভূমির জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান, স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, ফুটপাতসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ, সংযোগ সড়ক নেটওয়ার্ক তৈরি, শিক্ষার মান উন্নয়ন ও কারিগরি শিক্ষা প্রবর্তন, শ্রমিক-কর্মচারী ও বস্তিবাসীদের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতকরণ, শিল্পকলা ওয়ার্ড সেন্টার ও ডিজিটাল কমান্ড সেন্টার নির্মাণ, বর্জ্য ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড প্রসারের উদ্যোগ, ক্রীড়া ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও সংবাদকর্মীদের সহায়তা, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও সুবিধা বঞ্চিতদের সহায়তা প্রদান, পার্ক ও উদ্যান নির্মাণ ও উন্নয়ন প্রভৃতি।

মেয়র প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা

গতকাল নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খানের পক্ষে চিত্র নায়ক ফেরদৌস, সায়মন সাদিক, নিপুন আক্তারসহ অন্যান্য চলচ্চিত্র শিল্পীরা নৌকার পক্ষে প্রচারণায় যোগ দেন। তারা খোলা ট্রাকে করে চান্দনা চৌরাস্তা, টঙ্গীসহ বিভিন্ন স্থানে প্রচারণা চালান। বিকেলে চিত্র নায়িকা মাহিয়া সরকার মাহি ও তার স্বামী আওয়ামী লীগ নেতা রকিব সরকার নৌকার পক্ষে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় গণসংযোগ করেন এবং নৌকার পক্ষে ভোট প্রদানের জন্য আহ্বান জানান। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামালসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম খান নিখিল, মহানরগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেলসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের যুবলীগের নেতারা প্রচারণায় যোগ দেন। অন্যদিকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রচার-প্রচারণা চালানোর ফলে নৌকার পক্ষে সৃষ্টি হচ্ছে গণ জোয়ার।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান গতকাল গাজীপুর মহানগরীর সদর মেট্রো থানার জয়দেবপুর বাজার, জোরপুকুরপাড়, দাক্ষিণ খান, ধীরাশ্রম, ভারারুল জামতলা, ভোড়া পাকা মসজিদ,তড়ৎপাড়া, নীলেরপাড়া, পূর্ব চান্দনা, হাড়িনাল, ভানুয়া, পাজুলিয়া, বিআইডিসি গেইট, চতর বাজার, থানা কাউন্সিলর লক্ষীপুরা, কুষি গবেষণা ও ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালান এবং পথসভায় বক্তব্য রাখেন। এসব পথসভায় তিনি নগরীর উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান।

স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন তার ছেলে নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলমকে সঙ্গে নিয়ে বিকেলে তার বাসভবন থেকে প্রচারণায় বের হন। তিনি ছয়দানা মালেকের বাড়ি, বাসন সড়ক, ভোগড়া বাইপাস, নাওজোর, কড্ডা, কোনাবাড়ি পেয়ারা বাগান এলাকায় গণসংযোগ করেন। প্রচারণাকালে জায়েদা খাতুন আগামী ২৫ মে নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য ভোটারদের অনুরোধ জানান।

জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী এম. এম নিয়াজ উদ্দিন নগরীর ৪৭ নং ওয়ার্ডের মুরকুন, গোলাপপুর, পাগাড়, বিসিক, জামাই বাজার, মধুমিতা, স্টেশন রোড, থানা গেইট, তিস্তার গেইট, দত্তপাড়া, কলেজ গেইট, গাজীপুরা, চেরাগআলী, গাজীপুরা, শিমুলতলী ও কাউলতিয়া এলাকায় গণসংযোগ করেন। তিনি লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান নগরীর টঙ্গী পূর্ব থানার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভায় বক্তব্য রাখেন। এ সময় তিনি বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ, সংশয় ও শঙ্কা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনূর ইসলাম রনি গাজীপুর মহানগরীর সদর মেট্রো থানার জয়দেবপুর, বাজার, বাসস্ট্যান্ড, বিলাসপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করে হাতি প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।