ইউএনও নারী, তাই গার্ড অব অনারে ফের কাদের সিদ্দিকীর বাধা

টাঙ্গাইলের সখীপুরে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার (রাষ্ট্রীয় সম্মান) দেয়ার সময় নারী ইউএনওকে বাধা দিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম। কাদের সিদ্দিকী একজন পুরুষ কর্মকর্তাকে দিয়ে গার্ড অব অনার দিতে বলেন। এরপর ইউএনও চলে গেলে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে অবশ্য কাদের সিদ্দিকী চলে যাওয়ার পর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ইউএনওর নেতৃত্বেই রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের পর দাফন অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়টি এলাকায় বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। গত শনিবার দুপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ খানের মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের প্রস্তুতির সময় সখীপুর পিএম পাইলট মডেল গভ. স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ খান গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সখীপুরের নিজ বাড়িতে মারা যান। এরপর গত শনিবার দুপুরে আবদুল হামিদ খানের জানাজার নামাজের আগে গার্ড অব অনার দিতে সেখানে উপস্থিত হন সখীপুরের নারী ইউএনও ফারজানা আলম। এ সময় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী তাকে বাধা দেন। পরে অবশ্য কাদের সিদ্দিকী চলে যাওয়ার পর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ইউএনওর নেতৃত্বেই রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের পর দাফন অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজার আগে এক বক্তব্যে কাদের সিদ্দিকী বলেন, কোন মহিলার গার্ড অব অনার দেয়ার সুযোগ নেই। তিনি এখানে এসে মুক্তিযোদ্ধার মরদেহের সঙ্গে বেয়াদবি করেছেন। যদি এখন বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন তাহলে এখানকার অনেক কর্মকর্তাকে লাথি মেরে ঢাকায় পাঠাতাম।

এ সময় তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মান করার কারণে এই ইউএনওকে রবিবারের মধ্যে সখীপুর থেকে সরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, আবদুল হামিদ খান একজন বড় মাপের বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। দেশ স্বাধীন হলেও দেশের স্বাধীনতা অর্থবহ হয় নাই, মুক্তিযোদ্ধারা যথাযথ সম্মান পায়নি। আমি খুবই মর্মাহত পুলিশের গার্ড অব অনার নিয়ে। রাত ১২টার দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা গেলেও আজ শনিবার বেলা ২টার মধ্যেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে কেউ আসেননি। মেয়ে যত বড়ই হোক, মেয়েদের জানাজায় শামিল হওয়ার সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আলম বলেন, আমি জানাজা পড়াতে যাইনি। আমি গিয়েছিলাম বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের জন্য। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী হাজার লোকের সামনে আমাকে অপমান করেছেন। কাদের সিদ্দিকী একজন বড় মাপের বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই।

জানাজায় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার খোকা (বীর প্রতীক), পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হানিফ আজাদ, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর ছোট ভাই আজাদ সিদ্দিকী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত শিকদার, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার এম ও গণি, সাবেক পৌর মেয়র সানোয়ার হোসেন সজীব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর
সিরাজগঞ্জে ৩২৩ চরমপন্থির আত্মসমর্পণ
গাজীপুর : আজমত উল্লার ২৮ দফা নির্বাচনী ইশতেহার
আমি নির্দোষ, দুদককে ব্যবহার করে হয়রানি করা হচ্ছে : জাহাঙ্গীর
বরিশালে মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে স্বশিক্ষিত থেকে এমএ পাস রয়েছেন
রাজশাহী : সিটি ভোটে অংশ নিলে বিএনপি করার সুযোগ থাকবে না : মিনু
চার বছরেও মামলার চার্জসিট দেয়নি দুদক
গ্যাটকো মামলায় খালেদা জিয়ার অভিযোগ গঠন শুনানি ৬ জুন
আর শান্তি সমাবেশ নয়, এবার সরাসরি প্রতিরোধ : বিএনপিকে হুঁশিয়ারি কাদেরের
সিটি নির্বাচনও নীলনকশার হবে : মির্জা ফখরুল
৯ মাস পর বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ
তারেক-জোবায়দার মামলায় সাক্ষ্য দিতে আদালতে হুদা

সোমবার, ২২ মে ২০২৩ , ০৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ০২ জিলক্বদ শাওয়াল ১৪৪৪

বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু

ইউএনও নারী, তাই গার্ড অব অনারে ফের কাদের সিদ্দিকীর বাধা

জেলা বার্তা পরিবেশেক, টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলের সখীপুরে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার (রাষ্ট্রীয় সম্মান) দেয়ার সময় নারী ইউএনওকে বাধা দিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম। কাদের সিদ্দিকী একজন পুরুষ কর্মকর্তাকে দিয়ে গার্ড অব অনার দিতে বলেন। এরপর ইউএনও চলে গেলে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে অবশ্য কাদের সিদ্দিকী চলে যাওয়ার পর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ইউএনওর নেতৃত্বেই রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের পর দাফন অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়টি এলাকায় বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। গত শনিবার দুপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ খানের মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের প্রস্তুতির সময় সখীপুর পিএম পাইলট মডেল গভ. স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ খান গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সখীপুরের নিজ বাড়িতে মারা যান। এরপর গত শনিবার দুপুরে আবদুল হামিদ খানের জানাজার নামাজের আগে গার্ড অব অনার দিতে সেখানে উপস্থিত হন সখীপুরের নারী ইউএনও ফারজানা আলম। এ সময় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী তাকে বাধা দেন। পরে অবশ্য কাদের সিদ্দিকী চলে যাওয়ার পর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ইউএনওর নেতৃত্বেই রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের পর দাফন অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজার আগে এক বক্তব্যে কাদের সিদ্দিকী বলেন, কোন মহিলার গার্ড অব অনার দেয়ার সুযোগ নেই। তিনি এখানে এসে মুক্তিযোদ্ধার মরদেহের সঙ্গে বেয়াদবি করেছেন। যদি এখন বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন তাহলে এখানকার অনেক কর্মকর্তাকে লাথি মেরে ঢাকায় পাঠাতাম।

এ সময় তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মান করার কারণে এই ইউএনওকে রবিবারের মধ্যে সখীপুর থেকে সরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, আবদুল হামিদ খান একজন বড় মাপের বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। দেশ স্বাধীন হলেও দেশের স্বাধীনতা অর্থবহ হয় নাই, মুক্তিযোদ্ধারা যথাযথ সম্মান পায়নি। আমি খুবই মর্মাহত পুলিশের গার্ড অব অনার নিয়ে। রাত ১২টার দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা গেলেও আজ শনিবার বেলা ২টার মধ্যেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে কেউ আসেননি। মেয়ে যত বড়ই হোক, মেয়েদের জানাজায় শামিল হওয়ার সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আলম বলেন, আমি জানাজা পড়াতে যাইনি। আমি গিয়েছিলাম বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের জন্য। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী হাজার লোকের সামনে আমাকে অপমান করেছেন। কাদের সিদ্দিকী একজন বড় মাপের বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই।

জানাজায় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার খোকা (বীর প্রতীক), পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হানিফ আজাদ, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর ছোট ভাই আজাদ সিদ্দিকী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত শিকদার, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার এম ও গণি, সাবেক পৌর মেয়র সানোয়ার হোসেন সজীব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।