যুক্তরাষ্ট্রের শুভবুদ্ধির উদয় হবে, আশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর কোন নিষেধাজ্ঞা দেবে না বলে আশা করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাতার সফর নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কাতার সফর নিয়ে বিস্তারিত কর্মসূচি জানান তিনি। এছাড়াও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এবং মার্কিন নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে সকর্ততা জারির বিষয়ে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আসবে কি না সেই বিষয়ে কিছু জানি না। কারণ যুক্তরাষ্ট্র বলে কয়ে কিছু করে না। তিনি বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রতিনিধি এসেছিলেন। বাংলাদেশ নিয়ে তাদের বক্তব্য অত্যন্ত পজিটিভ ছিল। নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কোন কারণ নেই। এটা হলে দুঃখজনক হবে। যুক্তরাষ্ট্র তো হাজার হাজার নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। আমি আশা করি তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। তারা এসব (নিষেধাজ্ঞা আরোপ) করবে না। নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে রোববার দেয়া কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্য উদ্ধৃত করে মোমেন বলেন, ‘তবে, আমাদের কৃষিমন্ত্রী গতকাল বলেছেন, দেশে স্যাংশনের কোন কারণই নাই।

নাগরিকদের চলাচলে মার্কিন দূতাবাসের সতর্কতার বিষয়ে ড. মোমেন বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। তারা কেন এমন সতর্কতা দিয়েছে জানি না। আমাদের দেশে কোন হত্যা নেই। গুলি করে কাউকে মারা হয় না। আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। সহিংসতা হওয়ার কোন কারণ নেই।

কেন মার্কিন দূতাবাস দেশটির নাগরিকদের চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তার কারণ দূতাবাস থেকে জানতে সাংবাদিকদের পরামর্শ দেন মন্ত্রী। মোমেন বলেন, প্রায় সাত থেকে আট মাস পর নির্বাচন হবে। আর ইতোমধ্যে মার্কিন দূতাবাস তাদের নাগরিকদের সতর্কবার্তা দিয়েছে। এটা তাদের জিজ্ঞেস করেন, কেন তারা এটা দিয়েছে? আমাদের দেশে কোন ধরনের হত্যা নাই। রাস্তাঘাটে কেউ কাউকে গুলি করে মারে না, কোন সভা বা মিটিংয়ে কেউ কাউকে গুলি করে মারে না। আমাদের দেশে অজ্ঞাতভাবে রাস্তাঘাটে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় জিরো।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আর মার্কিন নাগরিকদের বিরুদ্ধে তারা (বাংলাদেশিরা) এত ক্ষেপবে কেন? কোন অন্যায় তো মার্কিন নাগরিকরা করছে না। এটা খুবই অদ্ভুত, তারা কেন উদ্বিগ্ন, এটা তাদের জিজ্ঞেস করুন।

বর্তমান সময়ে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত উন্নত বলে দাবি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তার ভাষ্য, ‘ইদানীং আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এত ভালো হয়েছে যে, কোথাও কোন অপকর্ম হলে পুলিশ সত্যি সত্যি তাদের ধরে নিয়ে আসে; অল্প সময়ের মধ্যে। অভূতপূর্ব উন্নয়ন। তারা খুব ভালো কাজ করছে। খারাপ কিছু হওয়ার মতো কোন কারণ আমাদের এখানে নেই, যার জন্য অগ্রিম একটা সতর্কবার্তা দিতে হবে।’

তিনি বলেন, বরং কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্রে গেলে সতর্ক করা উচিত। সেখানে শপিংমলে, স্কুলে, বারে গেলে সতর্ক থাকতে হবে। এটা খুব প্রাসঙ্গিক। তবে এটা তাদের ব্যাপার।

রোববার মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইটে ‘ডেমনস্ট্রেশন অ্যালার্ট’ শিরোনামে প্রচারিত ভ্রমণ সতর্কবার্তায় বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ঢাকাসহ সারা দেশে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারির আগে বা ওই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ওই নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলের মিছিল-সমাবেশ এবং অন্যান্য নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে।

এছাড়া স্থানীয় ঘটনাসহ আশপাশের বিষয়ে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, মার্কিন নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পরিকল্পনা পর্যালোচনা করতে হবে। স্থানীয় ঘটনাসহ আশপাশের পরিবেশ পরিস্থিতির বিষয়ে সচেতন থেকে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে নজর রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর কাতার সফর

‘তৃতীয় কাতার ইকোনোমিক ফোরাম : অ্যা নিউ গ্লোবাল গ্রোথ স্টোরি’ শীর্ষক ফোরামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগদান বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানির আমন্ত্রণে দেশটি সফরে যাচ্ছেন সরকারপ্রধান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ২৩-২৫ মে প্রধানমন্ত্রী কাতার সফর করবেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল দোহায় যাবেন।

প্রধানমন্ত্রীর কাতারের কর্মসূচি জানিয়ে মোমেন বলেন, ২৩ মে সকালে প্রধানমন্ত্রী কাতার ইকোনোমিক ফোরামের উদ্বোধনী সেশনে অংশগ্রহণ করবেন। এ অধিবেশনে কাতারের আমির থাকবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি সমাবেশে যোগদান করবেন এবং উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিজ্ঞতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করবেন। একই দিন দুপুরে কাতারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এবং সৌদি আরবের বিনিয়োগবিষয়ক মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

তিনি জানান, ২৪ মে সকালে ফোরামে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী ‘ইন কনভারসেশন ইউথ প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা’ শীর্ষক একটি সাক্ষাৎকার ভিত্তিক আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন। একইদিন কাতারের আমিরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

কাতারের আমিরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার বিষয়ে মোমেন জানান, গত মার্চে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতারের আমিরের বৈঠকের ধারাবাহিকতায় পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। মোমেন জানান, কাতারের আমিরের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী কাতার ফাউন্ডেশনের আওতাধীন আওসাজ একাডেমি নামক বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য পরিচালিত একটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করবেন।

চলতি বছরে তিন মাসের ব্যবধানে সরকারপ্রধানের কাতার সফর আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের দৃশ্যমান উপস্থিতির পাশাপাশি ভাতৃপ্রতিম কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের নিবিড় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের স্বাক্ষর বহন করে বলে মনে করছেন মন্ত্রী।

সফরে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রীসহ উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল। আগামী ২৪ মে রাতে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার উদ্দেশে দোহা ত্যাগ করবেন।

প্রকাশিত খবরের প্রতিবাদ

সংবাদ সম্মেলনে একটি দৈনিক পত্রিকার নাম উল্লেখ করে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এখানে একটি মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। এটি আমাদের সরকারের জন্য অপমানজনক। মিথ্যা তথ্যটি হচ্ছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মানে আমি, মন্ত্রী হওয়ার আগে চাইনিজ লবিস্ট হিসেবে কাজ করেছি। এইটা সম্পূর্ণ ডাহা মিথ্যা।’

কোনদিন কোন চাইনিজ কোম্পানিতে কাজ করেননি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বরং বলতে পারেন, আমি সারা জীবন আমেরিকায় ছিলাম এবং সেখানে কাজ করেছি। আমি জানি না, তারা কেন এটি করল। খুব অদ্ভুত! জেনেশুনে এই মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়েছে।’

মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩ , ০৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ০৩ জিলক্বদ শাওয়াল ১৪৪৪

যুক্তরাষ্ট্রের শুভবুদ্ধির উদয় হবে, আশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

কূটনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর কোন নিষেধাজ্ঞা দেবে না বলে আশা করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাতার সফর নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কাতার সফর নিয়ে বিস্তারিত কর্মসূচি জানান তিনি। এছাড়াও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এবং মার্কিন নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে সকর্ততা জারির বিষয়ে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আসবে কি না সেই বিষয়ে কিছু জানি না। কারণ যুক্তরাষ্ট্র বলে কয়ে কিছু করে না। তিনি বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রতিনিধি এসেছিলেন। বাংলাদেশ নিয়ে তাদের বক্তব্য অত্যন্ত পজিটিভ ছিল। নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কোন কারণ নেই। এটা হলে দুঃখজনক হবে। যুক্তরাষ্ট্র তো হাজার হাজার নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। আমি আশা করি তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। তারা এসব (নিষেধাজ্ঞা আরোপ) করবে না। নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে রোববার দেয়া কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্য উদ্ধৃত করে মোমেন বলেন, ‘তবে, আমাদের কৃষিমন্ত্রী গতকাল বলেছেন, দেশে স্যাংশনের কোন কারণই নাই।

নাগরিকদের চলাচলে মার্কিন দূতাবাসের সতর্কতার বিষয়ে ড. মোমেন বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। তারা কেন এমন সতর্কতা দিয়েছে জানি না। আমাদের দেশে কোন হত্যা নেই। গুলি করে কাউকে মারা হয় না। আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। সহিংসতা হওয়ার কোন কারণ নেই।

কেন মার্কিন দূতাবাস দেশটির নাগরিকদের চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তার কারণ দূতাবাস থেকে জানতে সাংবাদিকদের পরামর্শ দেন মন্ত্রী। মোমেন বলেন, প্রায় সাত থেকে আট মাস পর নির্বাচন হবে। আর ইতোমধ্যে মার্কিন দূতাবাস তাদের নাগরিকদের সতর্কবার্তা দিয়েছে। এটা তাদের জিজ্ঞেস করেন, কেন তারা এটা দিয়েছে? আমাদের দেশে কোন ধরনের হত্যা নাই। রাস্তাঘাটে কেউ কাউকে গুলি করে মারে না, কোন সভা বা মিটিংয়ে কেউ কাউকে গুলি করে মারে না। আমাদের দেশে অজ্ঞাতভাবে রাস্তাঘাটে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় জিরো।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আর মার্কিন নাগরিকদের বিরুদ্ধে তারা (বাংলাদেশিরা) এত ক্ষেপবে কেন? কোন অন্যায় তো মার্কিন নাগরিকরা করছে না। এটা খুবই অদ্ভুত, তারা কেন উদ্বিগ্ন, এটা তাদের জিজ্ঞেস করুন।

বর্তমান সময়ে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত উন্নত বলে দাবি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তার ভাষ্য, ‘ইদানীং আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এত ভালো হয়েছে যে, কোথাও কোন অপকর্ম হলে পুলিশ সত্যি সত্যি তাদের ধরে নিয়ে আসে; অল্প সময়ের মধ্যে। অভূতপূর্ব উন্নয়ন। তারা খুব ভালো কাজ করছে। খারাপ কিছু হওয়ার মতো কোন কারণ আমাদের এখানে নেই, যার জন্য অগ্রিম একটা সতর্কবার্তা দিতে হবে।’

তিনি বলেন, বরং কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্রে গেলে সতর্ক করা উচিত। সেখানে শপিংমলে, স্কুলে, বারে গেলে সতর্ক থাকতে হবে। এটা খুব প্রাসঙ্গিক। তবে এটা তাদের ব্যাপার।

রোববার মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইটে ‘ডেমনস্ট্রেশন অ্যালার্ট’ শিরোনামে প্রচারিত ভ্রমণ সতর্কবার্তায় বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ঢাকাসহ সারা দেশে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারির আগে বা ওই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ওই নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলের মিছিল-সমাবেশ এবং অন্যান্য নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে।

এছাড়া স্থানীয় ঘটনাসহ আশপাশের বিষয়ে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, মার্কিন নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পরিকল্পনা পর্যালোচনা করতে হবে। স্থানীয় ঘটনাসহ আশপাশের পরিবেশ পরিস্থিতির বিষয়ে সচেতন থেকে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে নজর রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর কাতার সফর

‘তৃতীয় কাতার ইকোনোমিক ফোরাম : অ্যা নিউ গ্লোবাল গ্রোথ স্টোরি’ শীর্ষক ফোরামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগদান বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানির আমন্ত্রণে দেশটি সফরে যাচ্ছেন সরকারপ্রধান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ২৩-২৫ মে প্রধানমন্ত্রী কাতার সফর করবেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল দোহায় যাবেন।

প্রধানমন্ত্রীর কাতারের কর্মসূচি জানিয়ে মোমেন বলেন, ২৩ মে সকালে প্রধানমন্ত্রী কাতার ইকোনোমিক ফোরামের উদ্বোধনী সেশনে অংশগ্রহণ করবেন। এ অধিবেশনে কাতারের আমির থাকবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি সমাবেশে যোগদান করবেন এবং উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিজ্ঞতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করবেন। একই দিন দুপুরে কাতারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এবং সৌদি আরবের বিনিয়োগবিষয়ক মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

তিনি জানান, ২৪ মে সকালে ফোরামে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী ‘ইন কনভারসেশন ইউথ প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা’ শীর্ষক একটি সাক্ষাৎকার ভিত্তিক আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন। একইদিন কাতারের আমিরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

কাতারের আমিরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার বিষয়ে মোমেন জানান, গত মার্চে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতারের আমিরের বৈঠকের ধারাবাহিকতায় পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। মোমেন জানান, কাতারের আমিরের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী কাতার ফাউন্ডেশনের আওতাধীন আওসাজ একাডেমি নামক বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য পরিচালিত একটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করবেন।

চলতি বছরে তিন মাসের ব্যবধানে সরকারপ্রধানের কাতার সফর আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের দৃশ্যমান উপস্থিতির পাশাপাশি ভাতৃপ্রতিম কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের নিবিড় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের স্বাক্ষর বহন করে বলে মনে করছেন মন্ত্রী।

সফরে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রীসহ উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল। আগামী ২৪ মে রাতে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার উদ্দেশে দোহা ত্যাগ করবেন।

প্রকাশিত খবরের প্রতিবাদ

সংবাদ সম্মেলনে একটি দৈনিক পত্রিকার নাম উল্লেখ করে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এখানে একটি মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। এটি আমাদের সরকারের জন্য অপমানজনক। মিথ্যা তথ্যটি হচ্ছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মানে আমি, মন্ত্রী হওয়ার আগে চাইনিজ লবিস্ট হিসেবে কাজ করেছি। এইটা সম্পূর্ণ ডাহা মিথ্যা।’

কোনদিন কোন চাইনিজ কোম্পানিতে কাজ করেননি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বরং বলতে পারেন, আমি সারা জীবন আমেরিকায় ছিলাম এবং সেখানে কাজ করেছি। আমি জানি না, তারা কেন এটি করল। খুব অদ্ভুত! জেনেশুনে এই মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়েছে।’