এবার আদা বিক্রি হচ্ছে কেজি ৫০০ টাকায়

দেশের অন্যতম আমদানি নির্ভর ভোগ্যপণ্য আদা। দেশে বছরে প্রায় ৩ লাখ ৭১ হাজার মেট্রিকটন আদার চাহিদা থাকলেও এ বছর উৎপাদন হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৭৮ হাজার মেট্রিকটন। বাকি ১ লাখ ৯৩ হাজার মেট্রিকটন আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে। সবচেয়ে বেশি আদা আসে চীন থেকে। তবে বিশ্ববাজারে বুকিং দরের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লোকসানের ঝুঁকি এড়াতে দেশের আমদানিকারকেরা পণ্যটির আমদানিতে লাগাম টেনেছেন। ফলে বাজারে এক ধরনের সরবরাহ ‘সংকট’ তৈরি হয়েছে। ১ মাস আগে বাজারে যে চীনা আদার কেজি ছিল ২২০ টাকা, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়।

কৃষি অর্থনীতিবিদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) এর তথ্য মতে, চলতি বছর দেশে উৎপাদন কম, বাজারে সরবরাহ কম ও সামনে কোরবানিতে চাহিদা বাড়ার কারণে আদার দামে এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চীনা আদার দাম বাড়ার কারণ আমদানি কমে যাওয়া। সরবরাহ ঘাটতির কারণে ভারত ও মায়ানমার থেকে আমদানি করা আদার দামও বেড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গতকাল কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি চীনা আদা বিক্রি হয়েছে ৫০০ টাকায়। ২ দিন আগে শনিবারও আদা বিক্রি হয়েছে ৪৬০ টাকায়। আর রমজান মাসে এই আদার কেজি ছিল ২২০ টাকা। এমন দাম বৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। বিশেষত আদার চড়া দামে বেকায়দায় পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ। আসন্ন ঈদুল আজহার আগে বাজারে আদার দামের এ উত্তাপ শিথিল না হওয়ার আশঙ্কা করছেন ভোক্তারা।

শুধু আদা নয়, বাজারে দাম বেড়েছে পেঁয়াজ-রসুনেরও। এসব কাঁচা পণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিকে ঈদুল আজহা সামনে রেখে বাড়তি চাহিদার অজুহাতে অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিতে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন ক্রেতারা। মোহাম্মদপুরেরর এক ক্রেতা রায়হান আলম সংবাদকে বলেন, ‘অতিরিক্ত মুনাফার লোভে ইচ্ছা করেই দাম বাড়ানো হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরনের উদ্যোগ বা যথাযথ বাজার মনিটরিং না থাকায় নিত্যপণ্যের বাজারের এ অবস্থা।’ তিনি বলেন, ‘কোরবানির ঈদে বাজারে সব ধরনের মসলার চাহিদা বাড়ে। সে সুযোগ কাজে লাগাতে এবার আগেভাগেই মসলার দাম নিয়ে সিন্ডিকেট হচ্ছে। যেন ঈদের আগমুহূর্তে নতুন করে দাম বাড়িয়ে কোন সমালোচনা তৈরি না হয়, সেজন্য আগেভাগে দাম বাড়ানো হচ্ছে। এখন সব পণ্যের ব্যবসায়ীরাই সুযোগ বুঝে এমনটি করছেন।’

কারওয়ান বাজারে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘কাঁচা মসলা পণ্য আমদানি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। একদিকে ডলারের দাম বৃদ্ধিতে বিশ্ববাজারে বুকিং দর বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে মসলা পণ্য আমদানিতে শতভাগ এলসি মার্জিন দিতে হচ্ছে। এসব মিলে আমদানি খরচ খুব বেড়ে গেছে।’ দাম বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে খাতুনগঞ্জের কাঁচা মসলা পণ্য ব্যবসায়ী মেসার্স আজমির ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নেওয়াজ মোরশেদ বলেন, ‘বাজারে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় আদার সরবরাহ কম রয়েছে। নতুন মৌসুমের দেশি আদা আসতে শুরু হয়েছে মাত্র। এতদিন আমদানির ওপর নির্ভরশীল ছিল আদার পুরো চাহিদা।’

‘কিন্তু গত দুই-তিন মাস আদা আমদানিকারকরা বেশি লোকসান করেছে। এতে পণ্যটির আমদানি কমে সরবরাহ সংকটে দাম বেড়ে চলেছে’ জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আমদানিকারক বলেন, ‘গত দুই-তিন মাস ধরে চীন থেকে আমদানি করা আদাগুলোর কোয়ালিটি খারাপ ছিল। যেই কারণে বিক্রির ধীরগতি ও কোয়ালিটি খারাপ থাকায় বেশিরভাগ আদা নষ্ট হয়ে আমদানিকারকরা লোকসানে পড়ে। এরপর লোকসানের ঝুঁকিতে পণ্যটির আমদানি কমিয়ে দিলে গত দুই সপ্তাহ ধরে বাজারে পণ্যটির দাম বাড়তে শুরু করে।’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি ব্যবসা ও বিপণন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম সংবাদকে বলেন, ‘দাম বাড়া মানেই সাপ্লাইয়ের শর্টেজ অথবা অর্টিফিশিয়ালি শর্টেজ। যেটাকে আমরা মেনুপুলেশন বা সিন্ডিকেট বলছি। একদিকে, সামনে কোরবানি ঈদ আসছে আদার ডিমান্ড বাড়ছে। আরেকটা দিক হচ্ছে; সব জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে সো এটারও দাম বাড়ার ট্রেন্ডের দিকে আছে যদি বাজারে সাপ্লাই কম হয়।’

কৃষিপণ্যের দীর্ঘ সময় ধরে মজুদ করা সম্ভব না কারণ কৃষিপণ্য পচনশীল। এটা ধরে রাখতে তার পিছনে খরচ হয় আবার অনেক নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া, বসতবাড়ির খোলা জায়গা কমে যাওয়া ও আদা চাষ দীর্ঘমেয়াদি সময় লাগার কারণে মানুষের নিরুৎসাহিত হওয়াও উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণ মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলে আদার উৎপাদন কমছে কারণে আগের মতো খোলা জায়গা গ্রামাঞ্চলে কমে গিয়েছে। মানুষের অন্যান্য চাহিদা বেড়েছে। নতুন বসতবাড়ির জন্য জায়গা কমে গিয়েছে ফলে স্বাভাবিকভাবেই আগের মতো বাড়ির পাশের খোলা জায়গাগুলো নাই। ওইসব খোলা জায়গায় অনেক আদা হতো যেগুলো দিয়ে স্থানীয় চাহিদা মিটতো। সেগুলো আর নেই।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক রাসেল আহমেদ সংবাদকে বলেন, ‘আমরা আদাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ না। সব ধরনের মসলাই আমাদেরকে বাইরে থেকে আনতে হয়। দেশে আদার চাহিদা প্রায় ৩ লাখ ৭১ হাজার মেট্রিকটন। গত অর্থবছরে দেশে আদার উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিকটন। এ বছর উৎপাদন কমে হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার মেট্রিকটন। গত অর্থবছরে ১৭ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আদা চাষ হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে হয়েছে ১৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আদা চাষে সময় লাগে ৩০০ থেকে ৩১০ দিন। একই সময় অন্য ফসল চাষ করলে ২টি ফসল চাষ করা যায়। এজন্য আমরা আন্তঃফসল হিসেবে আম বাগান, লিচু বাগানসহ বিভিন্ন ফল বাগানে বস্তায় আদা চাষের প্রদর্শনী দিয়েছি এবং প্রায় ৫৪০০ কৃষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছি । এছাড়া ৫ টন বারি আদা-২ এর বীজ কৃষক পর্যায়ে বিতরণ করেছি যার পুষ্টিগুণ চায়না আদার থেকে বেশি। যেহেতু আমরা কৃষি গবেষণা থেকে উন্নত ও অধিক ফলনশীল জাত মাঠ পর্যায়ে দিচ্ছি সেহেতু আন্তঃফসল হিসেবে এবং বসতবাড়িতে যার যতটুকু সুযোগ রয়েছে ততটুকুতে আদা চাষ করলে বৈদেশিক নির্ভরতা কমবে বলে আশা করি।’

মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩ , ০৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ০৩ জিলক্বদ শাওয়াল ১৪৪৪

এবার আদা বিক্রি হচ্ছে কেজি ৫০০ টাকায়

শাফিউল ইমরান

দেশের অন্যতম আমদানি নির্ভর ভোগ্যপণ্য আদা। দেশে বছরে প্রায় ৩ লাখ ৭১ হাজার মেট্রিকটন আদার চাহিদা থাকলেও এ বছর উৎপাদন হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৭৮ হাজার মেট্রিকটন। বাকি ১ লাখ ৯৩ হাজার মেট্রিকটন আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে। সবচেয়ে বেশি আদা আসে চীন থেকে। তবে বিশ্ববাজারে বুকিং দরের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লোকসানের ঝুঁকি এড়াতে দেশের আমদানিকারকেরা পণ্যটির আমদানিতে লাগাম টেনেছেন। ফলে বাজারে এক ধরনের সরবরাহ ‘সংকট’ তৈরি হয়েছে। ১ মাস আগে বাজারে যে চীনা আদার কেজি ছিল ২২০ টাকা, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়।

কৃষি অর্থনীতিবিদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) এর তথ্য মতে, চলতি বছর দেশে উৎপাদন কম, বাজারে সরবরাহ কম ও সামনে কোরবানিতে চাহিদা বাড়ার কারণে আদার দামে এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চীনা আদার দাম বাড়ার কারণ আমদানি কমে যাওয়া। সরবরাহ ঘাটতির কারণে ভারত ও মায়ানমার থেকে আমদানি করা আদার দামও বেড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গতকাল কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি চীনা আদা বিক্রি হয়েছে ৫০০ টাকায়। ২ দিন আগে শনিবারও আদা বিক্রি হয়েছে ৪৬০ টাকায়। আর রমজান মাসে এই আদার কেজি ছিল ২২০ টাকা। এমন দাম বৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। বিশেষত আদার চড়া দামে বেকায়দায় পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ। আসন্ন ঈদুল আজহার আগে বাজারে আদার দামের এ উত্তাপ শিথিল না হওয়ার আশঙ্কা করছেন ভোক্তারা।

শুধু আদা নয়, বাজারে দাম বেড়েছে পেঁয়াজ-রসুনেরও। এসব কাঁচা পণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিকে ঈদুল আজহা সামনে রেখে বাড়তি চাহিদার অজুহাতে অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিতে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন ক্রেতারা। মোহাম্মদপুরেরর এক ক্রেতা রায়হান আলম সংবাদকে বলেন, ‘অতিরিক্ত মুনাফার লোভে ইচ্ছা করেই দাম বাড়ানো হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরনের উদ্যোগ বা যথাযথ বাজার মনিটরিং না থাকায় নিত্যপণ্যের বাজারের এ অবস্থা।’ তিনি বলেন, ‘কোরবানির ঈদে বাজারে সব ধরনের মসলার চাহিদা বাড়ে। সে সুযোগ কাজে লাগাতে এবার আগেভাগেই মসলার দাম নিয়ে সিন্ডিকেট হচ্ছে। যেন ঈদের আগমুহূর্তে নতুন করে দাম বাড়িয়ে কোন সমালোচনা তৈরি না হয়, সেজন্য আগেভাগে দাম বাড়ানো হচ্ছে। এখন সব পণ্যের ব্যবসায়ীরাই সুযোগ বুঝে এমনটি করছেন।’

কারওয়ান বাজারে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘কাঁচা মসলা পণ্য আমদানি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। একদিকে ডলারের দাম বৃদ্ধিতে বিশ্ববাজারে বুকিং দর বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে মসলা পণ্য আমদানিতে শতভাগ এলসি মার্জিন দিতে হচ্ছে। এসব মিলে আমদানি খরচ খুব বেড়ে গেছে।’ দাম বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে খাতুনগঞ্জের কাঁচা মসলা পণ্য ব্যবসায়ী মেসার্স আজমির ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নেওয়াজ মোরশেদ বলেন, ‘বাজারে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় আদার সরবরাহ কম রয়েছে। নতুন মৌসুমের দেশি আদা আসতে শুরু হয়েছে মাত্র। এতদিন আমদানির ওপর নির্ভরশীল ছিল আদার পুরো চাহিদা।’

‘কিন্তু গত দুই-তিন মাস আদা আমদানিকারকরা বেশি লোকসান করেছে। এতে পণ্যটির আমদানি কমে সরবরাহ সংকটে দাম বেড়ে চলেছে’ জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আমদানিকারক বলেন, ‘গত দুই-তিন মাস ধরে চীন থেকে আমদানি করা আদাগুলোর কোয়ালিটি খারাপ ছিল। যেই কারণে বিক্রির ধীরগতি ও কোয়ালিটি খারাপ থাকায় বেশিরভাগ আদা নষ্ট হয়ে আমদানিকারকরা লোকসানে পড়ে। এরপর লোকসানের ঝুঁকিতে পণ্যটির আমদানি কমিয়ে দিলে গত দুই সপ্তাহ ধরে বাজারে পণ্যটির দাম বাড়তে শুরু করে।’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি ব্যবসা ও বিপণন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম সংবাদকে বলেন, ‘দাম বাড়া মানেই সাপ্লাইয়ের শর্টেজ অথবা অর্টিফিশিয়ালি শর্টেজ। যেটাকে আমরা মেনুপুলেশন বা সিন্ডিকেট বলছি। একদিকে, সামনে কোরবানি ঈদ আসছে আদার ডিমান্ড বাড়ছে। আরেকটা দিক হচ্ছে; সব জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে সো এটারও দাম বাড়ার ট্রেন্ডের দিকে আছে যদি বাজারে সাপ্লাই কম হয়।’

কৃষিপণ্যের দীর্ঘ সময় ধরে মজুদ করা সম্ভব না কারণ কৃষিপণ্য পচনশীল। এটা ধরে রাখতে তার পিছনে খরচ হয় আবার অনেক নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া, বসতবাড়ির খোলা জায়গা কমে যাওয়া ও আদা চাষ দীর্ঘমেয়াদি সময় লাগার কারণে মানুষের নিরুৎসাহিত হওয়াও উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণ মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলে আদার উৎপাদন কমছে কারণে আগের মতো খোলা জায়গা গ্রামাঞ্চলে কমে গিয়েছে। মানুষের অন্যান্য চাহিদা বেড়েছে। নতুন বসতবাড়ির জন্য জায়গা কমে গিয়েছে ফলে স্বাভাবিকভাবেই আগের মতো বাড়ির পাশের খোলা জায়গাগুলো নাই। ওইসব খোলা জায়গায় অনেক আদা হতো যেগুলো দিয়ে স্থানীয় চাহিদা মিটতো। সেগুলো আর নেই।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক রাসেল আহমেদ সংবাদকে বলেন, ‘আমরা আদাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ না। সব ধরনের মসলাই আমাদেরকে বাইরে থেকে আনতে হয়। দেশে আদার চাহিদা প্রায় ৩ লাখ ৭১ হাজার মেট্রিকটন। গত অর্থবছরে দেশে আদার উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিকটন। এ বছর উৎপাদন কমে হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার মেট্রিকটন। গত অর্থবছরে ১৭ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আদা চাষ হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে হয়েছে ১৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আদা চাষে সময় লাগে ৩০০ থেকে ৩১০ দিন। একই সময় অন্য ফসল চাষ করলে ২টি ফসল চাষ করা যায়। এজন্য আমরা আন্তঃফসল হিসেবে আম বাগান, লিচু বাগানসহ বিভিন্ন ফল বাগানে বস্তায় আদা চাষের প্রদর্শনী দিয়েছি এবং প্রায় ৫৪০০ কৃষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছি । এছাড়া ৫ টন বারি আদা-২ এর বীজ কৃষক পর্যায়ে বিতরণ করেছি যার পুষ্টিগুণ চায়না আদার থেকে বেশি। যেহেতু আমরা কৃষি গবেষণা থেকে উন্নত ও অধিক ফলনশীল জাত মাঠ পর্যায়ে দিচ্ছি সেহেতু আন্তঃফসল হিসেবে এবং বসতবাড়িতে যার যতটুকু সুযোগ রয়েছে ততটুকুতে আদা চাষ করলে বৈদেশিক নির্ভরতা কমবে বলে আশা করি।’