ভোলা মেঘনা-তেতুলিয়ায় ইলিশ নেই জেলে পল্লীতে হাহাকার

ভোলার জেলার মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীর উপকূলীয় নদ-নদীতে ভরা মৌসুমে ইলিশ নেই। জেলেরা নদ-নদীতে জাল ফেলে ইলিশ না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফেরেন। অথচ এখন ইলিশ মৌসুম। কিন্তু নদ-নদী এবং সাগরে তেমন ইলিশের দেখা নেই। লাখ লাখ টাকা খরচ করে একটি ফিশিং ট্রলার নিয়ে ১০ থেকে ১৫ জন জেলে সাগরে গিয়ে প্রায় খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। গত সোমবার ২২ মে মেঘনা-তেতুলিয়া নদীর উপকূলীয় এলাকার জেলে-মৎস্য আড়ৎ মালিকদের সাথে কথা বলে এমনটিই জানা যায়।

শুধু জেলেরাই নন, মেঘনার তীরবর্তী তজুমদ্দিন মৎস্য আড়ৎদার ও ক্ষুদ্র মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মেম্বার একই কথা জানান। তিনি বলেন, গত দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে ট্রলার মালিকরা মোটা অংকের টাকা খরচ করে নদীতে জেলেদের পাঠিয়ে খরচের টাকাও ওঠাতে পারছেন না। ট্রলার মালিক, আড়ৎদার ও জেলেদের এখন না খেয়ে মরার পালা।

তিনি আরো বলেন, স্থানীয় নদ-নদী এবং সাগরে ইলিশ নেই বললেই চলে। ট্রলার মালিকরা ধার-দেনা করতে করতে এখন অসহায়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। মেঘনার উপকূলীয় তজুমদ্দিন শশীগঞ্জ, চৌমুহনী, মহেষ খালি, স্লইস খাল, বাগের খাল, ধরনীর খাল জেলে পল্লীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিবার-পরিজন নিয়ে জেলেরা যেমন কষ্টে দিন পার করছেন তেমনি ফিশিং ট্রলার মালিক ও আড়ৎদাররাও ধার-দেনায় জড়িয়ে পড়েছেন। ফিশিং ট্রলার নদী-সাগরে পাঠাতে যে সমস্ত কাঁচা বাজার (নিত্যপণ্যে দোকান) সরবরাহকারী দোকানদার রয়েছেন জেলেরা মাছ না পাওয়ায়, তারাও সমস্যায় পড়েছেন। মেঘনায় চলতি বছরের বেমৌসুমে সিজন ছাড়া কিছু ইলিশ দেখা গেলেও এখন চলতি মৌসুমে ইলিশ নেই বললেই চলে। একই অবস্থা বিরাজ করছে তেতুলিয়া নদীতেও।

তেঁতুলিয়া নদীর নয়নের খালের আড়ৎদার জুয়েল বলেন, গত কয়েকদিন হলো আমার মহলে কোনো ইলিশ মাছ আসেনি। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ শিকারের আশায় প্রতিদিনই জাল, নৌকা, ট্রলার ও বরফ নিয়ে দল বেঁধে নদীতে পাঠাচ্ছি জেলেদের, ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নদী চষে বেড়ালেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। ফলে অনেকটা হতাশা নিয়ে তীরে ফিরছেন তারা।

আড়ৎদার জাহাঙ্গীর মাঝি, তেতুলিয়ার কালাম বর্দার, মোশারফ হোসেন বলেন, লাখ লাখ টাকা দাদন দিয়ে আমরা এখন অসহায়। নদীতে মাছ নেই। আমাদের ব্যবসাও নেই।

ভোলা- জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি শাহে আলম বলেন, এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। তাই, সে অনুযায়ী নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছ পড়ার কথা। নদীতে চর জাগা, উজানের প্রবাহ কম থাকা এবং বৃষ্টি কম হওয়ায় ভোলার নদীতে এখনো কাঙ্খিত রুপালি ইলিশ ধরা পড়ছে না।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্ল্যা জানান, মেঘনা, তেঁতুলিয়ায় নদীতে বিভিন্ন পয়েন্টে চর পড়ায় সাগর থেকে মাছ আসা বাধাগ্রস্থ হওয়ায় মেঘনায় ইলিশের আকাল দেখা দিয়েছে। আশাকরি ভারী বৃষ্টি এবং বাতাস হলে মাছের দেখা মিলবে। তিনি আরো বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত বিশ্বব্যাপী উষ্ণায়ণের প্রভাব, তেঁতুলিয়া ও মেঘনা নদীর নাব্য সংকটে নদীর গতিপথ পরিবর্তণ, বৃষ্টি কম হওয়ায় সমুদ্র থেকে নদীর অভিমুখে পানির চাপ কম হওয়ায় এসব সমস্যা হতে পারে।

আরও খবর
ভালুকায় রাস্তার কাজ বন্ধ পানি জমে জনদুর্ভোগ
শিক্ষার্থীদের ডেকে ভূমি সেবাসপ্তাহ পালন
শ্যামনগরে সড়ক নির্মাণে ‘রাবিশ’ ব্যবহারের অভিযোগ
কৃষি প্রযুক্তি মেলা ১০০ জাতের আম দেখেতে হাজারও মানুষের ভিড়
চান্দিনায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে
ঠাকুরগাঁওয়ে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল ৭ম শ্রেণির ছাত্রী
নড়াইল জেলার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ‘শেখ হাসিনা সড়ক’ এখন বিনোদন কেন্দ্র
সোনারগাঁয়ে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদে মানববন্ধন
দশমিনায় জেলেদের বৈধ জাল বিতরণ
বোয়ালখালীতে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু
বাকেরগঞ্জ পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম ট্রাইবুনালে মামলা
নেত্রকোনায় বিএনপি অফিসে অগ্নিসংযোগ
বন্যহাতির তাণ্ডবে ফলদ গাছ বিনষ্ট

বুধবার, ২৪ মে ২০২৩ , ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ০৪ জিলক্বদ শাওয়াল ১৪৪৪

ভোলা মেঘনা-তেতুলিয়ায় ইলিশ নেই জেলে পল্লীতে হাহাকার

প্রতিনিধি, বোরহানউদ্দিন (ভোলা)

ভোলার জেলার মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীর উপকূলীয় নদ-নদীতে ভরা মৌসুমে ইলিশ নেই। জেলেরা নদ-নদীতে জাল ফেলে ইলিশ না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফেরেন। অথচ এখন ইলিশ মৌসুম। কিন্তু নদ-নদী এবং সাগরে তেমন ইলিশের দেখা নেই। লাখ লাখ টাকা খরচ করে একটি ফিশিং ট্রলার নিয়ে ১০ থেকে ১৫ জন জেলে সাগরে গিয়ে প্রায় খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। গত সোমবার ২২ মে মেঘনা-তেতুলিয়া নদীর উপকূলীয় এলাকার জেলে-মৎস্য আড়ৎ মালিকদের সাথে কথা বলে এমনটিই জানা যায়।

শুধু জেলেরাই নন, মেঘনার তীরবর্তী তজুমদ্দিন মৎস্য আড়ৎদার ও ক্ষুদ্র মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মেম্বার একই কথা জানান। তিনি বলেন, গত দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে ট্রলার মালিকরা মোটা অংকের টাকা খরচ করে নদীতে জেলেদের পাঠিয়ে খরচের টাকাও ওঠাতে পারছেন না। ট্রলার মালিক, আড়ৎদার ও জেলেদের এখন না খেয়ে মরার পালা।

তিনি আরো বলেন, স্থানীয় নদ-নদী এবং সাগরে ইলিশ নেই বললেই চলে। ট্রলার মালিকরা ধার-দেনা করতে করতে এখন অসহায়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। মেঘনার উপকূলীয় তজুমদ্দিন শশীগঞ্জ, চৌমুহনী, মহেষ খালি, স্লইস খাল, বাগের খাল, ধরনীর খাল জেলে পল্লীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিবার-পরিজন নিয়ে জেলেরা যেমন কষ্টে দিন পার করছেন তেমনি ফিশিং ট্রলার মালিক ও আড়ৎদাররাও ধার-দেনায় জড়িয়ে পড়েছেন। ফিশিং ট্রলার নদী-সাগরে পাঠাতে যে সমস্ত কাঁচা বাজার (নিত্যপণ্যে দোকান) সরবরাহকারী দোকানদার রয়েছেন জেলেরা মাছ না পাওয়ায়, তারাও সমস্যায় পড়েছেন। মেঘনায় চলতি বছরের বেমৌসুমে সিজন ছাড়া কিছু ইলিশ দেখা গেলেও এখন চলতি মৌসুমে ইলিশ নেই বললেই চলে। একই অবস্থা বিরাজ করছে তেতুলিয়া নদীতেও।

তেঁতুলিয়া নদীর নয়নের খালের আড়ৎদার জুয়েল বলেন, গত কয়েকদিন হলো আমার মহলে কোনো ইলিশ মাছ আসেনি। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ শিকারের আশায় প্রতিদিনই জাল, নৌকা, ট্রলার ও বরফ নিয়ে দল বেঁধে নদীতে পাঠাচ্ছি জেলেদের, ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নদী চষে বেড়ালেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। ফলে অনেকটা হতাশা নিয়ে তীরে ফিরছেন তারা।

আড়ৎদার জাহাঙ্গীর মাঝি, তেতুলিয়ার কালাম বর্দার, মোশারফ হোসেন বলেন, লাখ লাখ টাকা দাদন দিয়ে আমরা এখন অসহায়। নদীতে মাছ নেই। আমাদের ব্যবসাও নেই।

ভোলা- জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি শাহে আলম বলেন, এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। তাই, সে অনুযায়ী নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছ পড়ার কথা। নদীতে চর জাগা, উজানের প্রবাহ কম থাকা এবং বৃষ্টি কম হওয়ায় ভোলার নদীতে এখনো কাঙ্খিত রুপালি ইলিশ ধরা পড়ছে না।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্ল্যা জানান, মেঘনা, তেঁতুলিয়ায় নদীতে বিভিন্ন পয়েন্টে চর পড়ায় সাগর থেকে মাছ আসা বাধাগ্রস্থ হওয়ায় মেঘনায় ইলিশের আকাল দেখা দিয়েছে। আশাকরি ভারী বৃষ্টি এবং বাতাস হলে মাছের দেখা মিলবে। তিনি আরো বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত বিশ্বব্যাপী উষ্ণায়ণের প্রভাব, তেঁতুলিয়া ও মেঘনা নদীর নাব্য সংকটে নদীর গতিপথ পরিবর্তণ, বৃষ্টি কম হওয়ায় সমুদ্র থেকে নদীর অভিমুখে পানির চাপ কম হওয়ায় এসব সমস্যা হতে পারে।