ভারত সরকারের উপহারের ২০ লোকোমোটিভ বাংলাদেশে

রেলওয়ের লোকোমোটিভ সংকট নিরসনে বাংলাদেশকে অনুদানের ২০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ হস্তান্তর করেছে ভারত। গতকাল বিকেলে ভারতীয় রেলওয়ে থেকে দর্শনা-গেদে ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্টের মাধ্যমে এই লোকোমোটিভগুলো বাংলাদেশে পৌঁছায়।

এ উপলক্ষে দর্শনা ও বাংলাদেশ রেলওয়ে ভবনে হস্তান্তর অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। রেলভবন থেকে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং নয়া দিল্লির রেলভবন থেকে ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন। এছাড়া দর্শনা রেল স্টেশন থেকে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশের পশ্চিম রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার অসীম কুমার তালুকদার। গেদ রেলওয়ে স্টেশন থেকে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন ভারতের রেলওয়ে কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে দুই দেশের মন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব এবং পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক দিন দিন আরও বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। রেলমন্ত্রী সুজন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই ভারত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। বঙ্গবন্ধু সরকারের সময় থেকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরের সময় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতিতে ভারতীয় রেলওয়ে থেকে ২০টি বিজি লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে দেয়ার বিষয়টি আলোচনা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই লোকোমোটিভ এলো। আমি ভারত সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, তারা আমাদের এই সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক চিরজীবী হোক।’

ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, ‘যেসব লোকোমোটিভ দেয়া হয়েছে, সেগুলো আধুনিক, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন, ৩ হাজার ৩০০ হর্সপাওয়ার সম্পন্ন।’ তিনি বলেন, ‘দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক বজায় রেখে নানা বিষয়ে সহযোগিতা করছেন।? আমরা দুই দেশের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময়সহ নানা বিষয় নিয়ে কাজ করতে পারছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা-কলকাতা, ঢাকা-জলপাইগুড়ি, খুলনা-কলকাতা রুটে বর্তমানে দু’দেশের যাত্রীবাহী ট্রেন চলছে। ভবিষ্যতে রুটের সংখ্যা আরও বাড়বে।’

রেলপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের চাপ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ২০২০ সালে ভারত থেকে ১০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে পেয়েছিল বাংলাদেশ। বর্তমানে সেগুলো দেশের রেলওয়ের বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে। বাংলাদেশ ও ভারতের রেলমন্ত্রীর মধ্যে গত বছরের ১ জুন নয়াদিল্লির রেলভবনে অনুষ্ঠিত এক সভায় বাংলাদেশ রেলওয়েকে ২০টি বিজি লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে দেয়ার বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়। পরে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় দুদেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতিতে ভারতীয় রেলওয়ে থেকে ২০টি বিজি লোকোমোটিভ দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

হস্তান্তরকৃত লোকোমোটিভ নম্বর হচ্ছে- ১১৫৪৫, ১১৪০৩, ১১৪৪১, ১১৫৪৭, ১১৫৭২, ১১৫৩৫, ১১৫৩৮, ১১৫৪৮, ১১৫৬৮, ১১৪১২, ১১৫৮১, ১১৪১৯, ১১৪২০, ১১৪২২, ১১৪৮২, ১১৪৯৪, ১১৩৬৯, ১১৩৭৮, ১১৩৭৯ এবং ১১৩৩৬। এগুলোর হর্স পাওয়ার ৩ হাজার ৩০০, অ্যাক্সেল লোড ১৯.৫ টন ও গড় বয়স ৮-১০ বছর। এগুলোর কমিশনিং তারিখ ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত।

বুধবার, ২৪ মে ২০২৩ , ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ০৪ জিলক্বদ শাওয়াল ১৪৪৪

ভারত সরকারের উপহারের ২০ লোকোমোটিভ বাংলাদেশে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রেলওয়ের লোকোমোটিভ সংকট নিরসনে বাংলাদেশকে অনুদানের ২০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ হস্তান্তর করেছে ভারত। গতকাল বিকেলে ভারতীয় রেলওয়ে থেকে দর্শনা-গেদে ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্টের মাধ্যমে এই লোকোমোটিভগুলো বাংলাদেশে পৌঁছায়।

এ উপলক্ষে দর্শনা ও বাংলাদেশ রেলওয়ে ভবনে হস্তান্তর অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। রেলভবন থেকে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং নয়া দিল্লির রেলভবন থেকে ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন। এছাড়া দর্শনা রেল স্টেশন থেকে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশের পশ্চিম রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার অসীম কুমার তালুকদার। গেদ রেলওয়ে স্টেশন থেকে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন ভারতের রেলওয়ে কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে দুই দেশের মন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব এবং পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক দিন দিন আরও বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। রেলমন্ত্রী সুজন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই ভারত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। বঙ্গবন্ধু সরকারের সময় থেকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরের সময় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতিতে ভারতীয় রেলওয়ে থেকে ২০টি বিজি লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে দেয়ার বিষয়টি আলোচনা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই লোকোমোটিভ এলো। আমি ভারত সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, তারা আমাদের এই সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক চিরজীবী হোক।’

ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, ‘যেসব লোকোমোটিভ দেয়া হয়েছে, সেগুলো আধুনিক, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন, ৩ হাজার ৩০০ হর্সপাওয়ার সম্পন্ন।’ তিনি বলেন, ‘দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক বজায় রেখে নানা বিষয়ে সহযোগিতা করছেন।? আমরা দুই দেশের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময়সহ নানা বিষয় নিয়ে কাজ করতে পারছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা-কলকাতা, ঢাকা-জলপাইগুড়ি, খুলনা-কলকাতা রুটে বর্তমানে দু’দেশের যাত্রীবাহী ট্রেন চলছে। ভবিষ্যতে রুটের সংখ্যা আরও বাড়বে।’

রেলপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের চাপ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ২০২০ সালে ভারত থেকে ১০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে পেয়েছিল বাংলাদেশ। বর্তমানে সেগুলো দেশের রেলওয়ের বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে। বাংলাদেশ ও ভারতের রেলমন্ত্রীর মধ্যে গত বছরের ১ জুন নয়াদিল্লির রেলভবনে অনুষ্ঠিত এক সভায় বাংলাদেশ রেলওয়েকে ২০টি বিজি লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে দেয়ার বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়। পরে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় দুদেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতিতে ভারতীয় রেলওয়ে থেকে ২০টি বিজি লোকোমোটিভ দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

হস্তান্তরকৃত লোকোমোটিভ নম্বর হচ্ছে- ১১৫৪৫, ১১৪০৩, ১১৪৪১, ১১৫৪৭, ১১৫৭২, ১১৫৩৫, ১১৫৩৮, ১১৫৪৮, ১১৫৬৮, ১১৪১২, ১১৫৮১, ১১৪১৯, ১১৪২০, ১১৪২২, ১১৪৮২, ১১৪৯৪, ১১৩৬৯, ১১৩৭৮, ১১৩৭৯ এবং ১১৩৩৬। এগুলোর হর্স পাওয়ার ৩ হাজার ৩০০, অ্যাক্সেল লোড ১৯.৫ টন ও গড় বয়স ৮-১০ বছর। এগুলোর কমিশনিং তারিখ ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত।