ভারতের ‘বাতিল’ লোকোমোটিভ আমদানির ‘সুযোগ’, ভাবছে বাংলাদেশ

ডিজেলচালিত থেকে বিদ্যুৎ চালিত লোকোমেটিভে যাচ্ছে ভারত। এতে দেশটির অনেক ডিজেলচালিত লোকোমেটিভ বাতিল হয়ে যাচ্ছে। ফলে ভারত থেকে এসব ইঞ্জিন সংগ্রহ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে বলছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা। এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা না হলেও দুই দেশের আগ্রহ রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

জানতে চাইলে গতকাল রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আমাদের ইঞ্জিন সংকট রয়েছে। ভারত থেকে লোকোমোটিভ সংগ্রহে আমাদেরও আগ্রহ আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যেমন আগ্রহ লাগবে, তেমনি তাদেরও (ভারত) আগ্রহ লাগবে। তাছাড়া ভারতে লোকোমেটিভগুলো সব ডুয়েলগেজ, আর আমাদের এখানে এখনও অনেক রেলপথ মিটারগেজ। পদ্ম সেতুর ওপর দিয়ে রেলপথ ও যমুনায় নতুন রেল সেতু হলে তখন আমাদের ডুয়েলগেজ ইঞ্জিনগুলোর চাহিদা বাড়বে। তাছাড়া আমাদের সব রেলপথ ডুয়েলগেজে রূপান্তর করা হচ্ছে। আমাদেরও কিছু প্রক্রিয়া আছে সেগুলো শেষ হলে আমরা ভারত থেকে লোকোমেটিভ আনার বিষয়ে প্রক্রিয়া চালাবো।’

তিনবারে ভারত সরকারের উপহারের বেশকিছু লোকোমোটিভ সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ গতকালও ২০টি ইঞ্জিন ভারতের কাছ থেকে সংগ্রহ করে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, এই ২০ ইঞ্জিন বাছাই করতে ভারত যায় রেলওয়ের একটি প্রতিনিধিদল। দলটি ইঞ্জিন যাছাই-বাছাই করে সংগ্রহের সুপারিশ করে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎকে রূপান্তর হওয়ায় ভারতের বাতিল হয়ে যাওয়া ডিজেলচালিত ইঞ্জিনগুলো থেকে সংগ্রহ করার সুযোগ রয়েছে বলে সুপারিশ করে রেলের প্রতিনিধিদল। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের ৩২৭টি লোকোমোটিভ রয়েছে। এর মধ্যে ১৯৭টি মিটারগেজ এবং ১৩০টি ব্রডগেজ। মিটারগেজ লোকোমোটিভের মধ্যে ১৬৯টি তথা ৬৯ শতাংশ লোকোমোটিভ ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক মেয়াদ ২০ বছর অতিক্রম করেছে। অন্যদিকে ৮৭টি তথা ৪৪ শতাংশ লোকোমোটিভ ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। এগুলো ইঞ্জিনগুলো প্রতিস্থাপন জরুরি বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা বলছেন, চাহিদার তুলনায় রেলের ইঞ্জিনের সংখ্যা অনেক কম। তাছাড়া চলাচলরত ওভারেজ লোকোমোটিভগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ কঠিন এবং ব্যয়বহুল, যন্ত্রাংশও দুষ্প্রাপ্য। ফলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণ করেও আর্থিকভাবে লাভজনক হওয়া যাচ্ছে না। তাই সংকট নিরসনে দ্রুত ইঞ্জিন আমদানি করা জরুরি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান বলেন, ‘ভারত থেকে লোকোমোটিভ সংগ্রহের বিষয়ে আলোচনার শুরুর জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা পরবর্তী প্রদক্ষেপ নেবো।’

বুধবার, ২৪ মে ২০২৩ , ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ০৪ জিলক্বদ শাওয়াল ১৪৪৪

ভারতের ‘বাতিল’ লোকোমোটিভ আমদানির ‘সুযোগ’, ভাবছে বাংলাদেশ

মোস্তাফিজুর রহমান

image

দর্শনা: গতকাল দর্শনা এসে পৌঁছে ভারত সরকারের পাঠানো লোকোমোটিভ -সংবাদ

ডিজেলচালিত থেকে বিদ্যুৎ চালিত লোকোমেটিভে যাচ্ছে ভারত। এতে দেশটির অনেক ডিজেলচালিত লোকোমেটিভ বাতিল হয়ে যাচ্ছে। ফলে ভারত থেকে এসব ইঞ্জিন সংগ্রহ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে বলছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা। এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা না হলেও দুই দেশের আগ্রহ রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

জানতে চাইলে গতকাল রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আমাদের ইঞ্জিন সংকট রয়েছে। ভারত থেকে লোকোমোটিভ সংগ্রহে আমাদেরও আগ্রহ আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যেমন আগ্রহ লাগবে, তেমনি তাদেরও (ভারত) আগ্রহ লাগবে। তাছাড়া ভারতে লোকোমেটিভগুলো সব ডুয়েলগেজ, আর আমাদের এখানে এখনও অনেক রেলপথ মিটারগেজ। পদ্ম সেতুর ওপর দিয়ে রেলপথ ও যমুনায় নতুন রেল সেতু হলে তখন আমাদের ডুয়েলগেজ ইঞ্জিনগুলোর চাহিদা বাড়বে। তাছাড়া আমাদের সব রেলপথ ডুয়েলগেজে রূপান্তর করা হচ্ছে। আমাদেরও কিছু প্রক্রিয়া আছে সেগুলো শেষ হলে আমরা ভারত থেকে লোকোমেটিভ আনার বিষয়ে প্রক্রিয়া চালাবো।’

তিনবারে ভারত সরকারের উপহারের বেশকিছু লোকোমোটিভ সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ গতকালও ২০টি ইঞ্জিন ভারতের কাছ থেকে সংগ্রহ করে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, এই ২০ ইঞ্জিন বাছাই করতে ভারত যায় রেলওয়ের একটি প্রতিনিধিদল। দলটি ইঞ্জিন যাছাই-বাছাই করে সংগ্রহের সুপারিশ করে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎকে রূপান্তর হওয়ায় ভারতের বাতিল হয়ে যাওয়া ডিজেলচালিত ইঞ্জিনগুলো থেকে সংগ্রহ করার সুযোগ রয়েছে বলে সুপারিশ করে রেলের প্রতিনিধিদল। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের ৩২৭টি লোকোমোটিভ রয়েছে। এর মধ্যে ১৯৭টি মিটারগেজ এবং ১৩০টি ব্রডগেজ। মিটারগেজ লোকোমোটিভের মধ্যে ১৬৯টি তথা ৬৯ শতাংশ লোকোমোটিভ ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক মেয়াদ ২০ বছর অতিক্রম করেছে। অন্যদিকে ৮৭টি তথা ৪৪ শতাংশ লোকোমোটিভ ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। এগুলো ইঞ্জিনগুলো প্রতিস্থাপন জরুরি বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা বলছেন, চাহিদার তুলনায় রেলের ইঞ্জিনের সংখ্যা অনেক কম। তাছাড়া চলাচলরত ওভারেজ লোকোমোটিভগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ কঠিন এবং ব্যয়বহুল, যন্ত্রাংশও দুষ্প্রাপ্য। ফলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণ করেও আর্থিকভাবে লাভজনক হওয়া যাচ্ছে না। তাই সংকট নিরসনে দ্রুত ইঞ্জিন আমদানি করা জরুরি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান বলেন, ‘ভারত থেকে লোকোমোটিভ সংগ্রহের বিষয়ে আলোচনার শুরুর জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা পরবর্তী প্রদক্ষেপ নেবো।’