সিলেট : মেয়র পদে ১১ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন ১১ জন। তাদের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রার্থী ৪ জন, বাকি ৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ এপ্রিল থেকে সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ শুরু করেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ২৭ দিনে মেয়র পদে মোট ১১ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে সবাই জমা দিয়েছেন।

সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের মিডিয়া সেল (সিটি নির্বাচন) কর্মকর্তা সৈয়দ কামাল হোসেন জানান, মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন ১১ জন। এর মধ্যে দলীয় প্রতীকের প্রার্থী ৪ জন। তারা হলেন- মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (আওয়ামী লীগ), নজরুল ইসলাম বাবুল (জাতীয় পার্টি), হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (ইসলামী আন্দোলন) ও মো. জহিরুল আলম (জাকের পার্টি)।

মনোনয়ন দাখিল করা স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীরা হলেন- মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু, মোহাম্মদ আবদুল মান্নান খান, সামছুন নুর তালুকদার, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন, মাওলানা জাহিদ উদ্দিন চৌধুরী, মো. শাহজাহান মিয়া ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।

স্বতন্ত্র প্রার্থী ছাড়াও চারটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও ধারণা করা হচ্ছে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীদের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

এই তিন প্রার্থীর মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান। তারা দুজনই স্নাতক ডিগ্রিধারী। অন্য প্রার্থী জাতীয় পার্টির মো. নজরুল ইসলাম (বাবুল) হলফনামায় নিজেকে ‘স্বশিক্ষিত’ বলে দাবি করেছেন। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে প্রার্থীর ব্যক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি তাদের আয়, আয়ের উৎস, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, মামলা, দেনাসহ বেশ কিছু তথ্য দিতে হয়। প্রার্থীদের হলফনামা ঘেঁটে শিক্ষাগত যোগ্যতার এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

তিনজন প্রার্থীই নিজেদের ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়েছেন। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারি মামলা না থাকলেও অন্য দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা ছিল এবং এখনও আছে।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটা মামলা তদন্তাধীন। এছাড়া অতীতে তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হলেও সেগুলো থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে বর্তমানে কোন মামলা না থাকলেও অতীতে তার বিরুদ্ধে একটা মামলা ছিল, এবং সেই মামলায় তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।

আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইভিএমে হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিল গতকাল (২৩ মে)। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৫ মে। আর ১ জুন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।

২০০২ সালে প্রতিষ্ঠার পর সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রথম ও দ্বিতীয় নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। ২০১৩ সাথে তৃতীয় ও ২০১৮ সালে চতুর্থ নির্বাচনে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। চারটি নির্বাচনেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে। এবার বিএনপিদলীয় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না।

নির্বাচনে যাচ্ছেন

বিএনপির কাউন্সিলররা

এদিকে বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। তবে এই সিদ্ধান্ত কয়েকজন মানলেও অন্য নেতারা কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হচ্ছেন।

দলের সিদ্ধান্ত না মেনে নেতাকর্মীরা নির্বাচনমুখী হচ্ছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ থেকে জমা দেয়া, এমনকি প্রচারাণাও চালিয়ে যাচ্ছেন বেশ জোরেশোরে। আর তাদের এই বর্জন-গ্রহণ নিয়ে সিলেটজুড়ে চলছে তুমুল আলোচনা সমালোচনা।

এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেনা বিএনপি। এমননীতিতে তারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে গেলেও মাঝে মাঝে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা এলাকাগুলোয় তারা অংশগ্রহণও করেন।

মূলত : বিএনপির এমননীতির কারণে তৃণমূল নেতাকর্মীরা দলটির নীতিনির্ধারকদের তেমন একটা বিশ্বাস করতে পারছেন না।

জানা গেছে, সিলেট সিটি করপোরেশনের এবারের নির্বাচনে বর্তমান ৭ কাউন্সিলরের মধ্যে ৬ জনই নির্বাচনী মাঠে সক্রিয়। তারা মনোনয়নপত্রও দাখিল করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়ে একমাত্র বিএনপি নেতা রেজাউল হাসান কয়েস লোদী নির্বাচন বর্জন করেছেন।

বিএনপির বর্তমান কাউন্সিলরদের মধ্যে যে ৬ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তারা হলেন, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুর রকিব তুহিন, মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌফিকুল হাদী, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মুনিম, ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবিএম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল ও সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর, সদ্য বিদায়ী সিলেট মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রোকসানা বেগম শাহনাজ (২৫নং ওয়ার্ড)।

আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান মেয়র বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরীসহ আরও কয়েকজন বিএনপি নেতা।

এদিকে জানা গেছে, বিএনপি এবং ছাত্রদলের আরও কয়েকজন নেতা বিভিন্ন ওয়ার্ডে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন জেলা ছাত্রদলের বর্তমান সভপতি আলতাফ হোসেন সুমন। সোমবার তিনি জেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে তার মনোনয়নপত্র জমা দেন।

তবে এসময় তার মুখে মাস্ক পরা থাকায় গণমাধ্যম কর্মীদের অনেকেই চিনতে পারেননি। দু’একজন চিনলেও তিনি তার সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।

সুমনের মতো এমন আরও অনেকেই গোপনে বা আড়ালে আবডালে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন।

বিএনপির মাঠের নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা নির্বাচন নিয়ে আগ্রহী তাদের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নির্বাচন বিমুখতা আমাদের সাধারণ মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। নেতারা এটা বুঝতেই পারছেন না। অংশগ্রহণ করলে কারচুপি হলেও জনগনের কাছে সেটা তুলে ধরা যেত। তাই আমরা নির্বাচনে আগ্রহী।

এমনকি ইভিএম নিয়ে সমালোচনাকেও তারা পাত্তা দিচ্ছেন না। তাদের বক্তব্য, খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে কিছুদিন আগে। ইভিএম-এ অনুষ্ঠিত এ নির্বচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ইকলাল আহমদ।

এমন তরতাজা উদাহরণ চোখের সামনে থাকায় তৃণমূল বিএনপির অনেক নেতাকর্মী মনে করেন, ইভিএম- এ হলেও নির্বাচন সুষ্ঠ সুন্দর হবে। তাই তারা রাজনৈতিক একগুয়েমিকে পাত্তা না দিয়ে নির্বাচনমুখী।

অবশ্য সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেছেন, সরকারের পাতানো ফাঁদ বুঝতে না পেরে কোন কোন বিএনপি নেতা নির্বাচন নিয়ে আগ্রহী।

তারপরও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, তারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নির্বাচন বর্জন করবেন। অন্যথায় দল থেকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন।

আরও খবর
আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু হবে : প্রধানমন্ত্রী
নিশ্চয়ই এটাতে বিএনপির ‘মৌন সম্মতি’ আছে : কাদের
শেখ তাপসের বক্তব্য প্রধান বিচারপতির নজরে আনলেন ব্যারিস্টার আমীর-উল
দুই মন্ত্রণালয়ের দুই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ছে
জাতীয় কবির জন্মদিন আজ
রাজশাহী : বহিষ্কারের হুমকিতেও আটকাতে পারল না বিএনপির ২০ নেতাকর্মীকে
খুলনা : খালেক ও মধুর ভোট নিজের টাকায়, ধার-দানে আউয়াল ও সাব্বিরের
বরিশাল : ৩২ কাউন্সিলর প্রার্থী অর্ধশতাধিক মামলায় অভিযুক্ত
আ’লীগ ‘বিএনপি নিশ্চিহ্নে’ ঝাঁপিয়ে পড়েছে : রিজভী
উপকূল, হাওর, চরাঞ্চলসহ প্রতিকূল এলাকাগুলোতে এখনও জাতীয় গড়ের চেয়ে দারিদ্র্য বেশি
প্রথম বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে ইন্টারনেট সংযোগ

বৃহস্পতিবার, ২৫ মে ২০২৩ , ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ০৫ জিলক্বদ শাওয়াল ১৪৪৪

নগর নির্বাচন

সিলেট : মেয়র পদে ১১ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন

প্রতিনিধি, সিলেট

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন ১১ জন। তাদের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রার্থী ৪ জন, বাকি ৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ এপ্রিল থেকে সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ শুরু করেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ২৭ দিনে মেয়র পদে মোট ১১ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে সবাই জমা দিয়েছেন।

সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের মিডিয়া সেল (সিটি নির্বাচন) কর্মকর্তা সৈয়দ কামাল হোসেন জানান, মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন ১১ জন। এর মধ্যে দলীয় প্রতীকের প্রার্থী ৪ জন। তারা হলেন- মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (আওয়ামী লীগ), নজরুল ইসলাম বাবুল (জাতীয় পার্টি), হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (ইসলামী আন্দোলন) ও মো. জহিরুল আলম (জাকের পার্টি)।

মনোনয়ন দাখিল করা স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীরা হলেন- মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু, মোহাম্মদ আবদুল মান্নান খান, সামছুন নুর তালুকদার, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন, মাওলানা জাহিদ উদ্দিন চৌধুরী, মো. শাহজাহান মিয়া ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।

স্বতন্ত্র প্রার্থী ছাড়াও চারটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও ধারণা করা হচ্ছে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীদের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

এই তিন প্রার্থীর মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান। তারা দুজনই স্নাতক ডিগ্রিধারী। অন্য প্রার্থী জাতীয় পার্টির মো. নজরুল ইসলাম (বাবুল) হলফনামায় নিজেকে ‘স্বশিক্ষিত’ বলে দাবি করেছেন। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে প্রার্থীর ব্যক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি তাদের আয়, আয়ের উৎস, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, মামলা, দেনাসহ বেশ কিছু তথ্য দিতে হয়। প্রার্থীদের হলফনামা ঘেঁটে শিক্ষাগত যোগ্যতার এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

তিনজন প্রার্থীই নিজেদের ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়েছেন। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারি মামলা না থাকলেও অন্য দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা ছিল এবং এখনও আছে।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটা মামলা তদন্তাধীন। এছাড়া অতীতে তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হলেও সেগুলো থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে বর্তমানে কোন মামলা না থাকলেও অতীতে তার বিরুদ্ধে একটা মামলা ছিল, এবং সেই মামলায় তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।

আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইভিএমে হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিল গতকাল (২৩ মে)। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৫ মে। আর ১ জুন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।

২০০২ সালে প্রতিষ্ঠার পর সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রথম ও দ্বিতীয় নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। ২০১৩ সাথে তৃতীয় ও ২০১৮ সালে চতুর্থ নির্বাচনে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। চারটি নির্বাচনেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে। এবার বিএনপিদলীয় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না।

নির্বাচনে যাচ্ছেন

বিএনপির কাউন্সিলররা

এদিকে বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। তবে এই সিদ্ধান্ত কয়েকজন মানলেও অন্য নেতারা কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হচ্ছেন।

দলের সিদ্ধান্ত না মেনে নেতাকর্মীরা নির্বাচনমুখী হচ্ছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ থেকে জমা দেয়া, এমনকি প্রচারাণাও চালিয়ে যাচ্ছেন বেশ জোরেশোরে। আর তাদের এই বর্জন-গ্রহণ নিয়ে সিলেটজুড়ে চলছে তুমুল আলোচনা সমালোচনা।

এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেনা বিএনপি। এমননীতিতে তারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে গেলেও মাঝে মাঝে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা এলাকাগুলোয় তারা অংশগ্রহণও করেন।

মূলত : বিএনপির এমননীতির কারণে তৃণমূল নেতাকর্মীরা দলটির নীতিনির্ধারকদের তেমন একটা বিশ্বাস করতে পারছেন না।

জানা গেছে, সিলেট সিটি করপোরেশনের এবারের নির্বাচনে বর্তমান ৭ কাউন্সিলরের মধ্যে ৬ জনই নির্বাচনী মাঠে সক্রিয়। তারা মনোনয়নপত্রও দাখিল করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়ে একমাত্র বিএনপি নেতা রেজাউল হাসান কয়েস লোদী নির্বাচন বর্জন করেছেন।

বিএনপির বর্তমান কাউন্সিলরদের মধ্যে যে ৬ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তারা হলেন, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুর রকিব তুহিন, মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌফিকুল হাদী, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মুনিম, ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবিএম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল ও সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর, সদ্য বিদায়ী সিলেট মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রোকসানা বেগম শাহনাজ (২৫নং ওয়ার্ড)।

আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান মেয়র বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরীসহ আরও কয়েকজন বিএনপি নেতা।

এদিকে জানা গেছে, বিএনপি এবং ছাত্রদলের আরও কয়েকজন নেতা বিভিন্ন ওয়ার্ডে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন জেলা ছাত্রদলের বর্তমান সভপতি আলতাফ হোসেন সুমন। সোমবার তিনি জেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে তার মনোনয়নপত্র জমা দেন।

তবে এসময় তার মুখে মাস্ক পরা থাকায় গণমাধ্যম কর্মীদের অনেকেই চিনতে পারেননি। দু’একজন চিনলেও তিনি তার সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।

সুমনের মতো এমন আরও অনেকেই গোপনে বা আড়ালে আবডালে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন।

বিএনপির মাঠের নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা নির্বাচন নিয়ে আগ্রহী তাদের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নির্বাচন বিমুখতা আমাদের সাধারণ মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। নেতারা এটা বুঝতেই পারছেন না। অংশগ্রহণ করলে কারচুপি হলেও জনগনের কাছে সেটা তুলে ধরা যেত। তাই আমরা নির্বাচনে আগ্রহী।

এমনকি ইভিএম নিয়ে সমালোচনাকেও তারা পাত্তা দিচ্ছেন না। তাদের বক্তব্য, খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে কিছুদিন আগে। ইভিএম-এ অনুষ্ঠিত এ নির্বচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ইকলাল আহমদ।

এমন তরতাজা উদাহরণ চোখের সামনে থাকায় তৃণমূল বিএনপির অনেক নেতাকর্মী মনে করেন, ইভিএম- এ হলেও নির্বাচন সুষ্ঠ সুন্দর হবে। তাই তারা রাজনৈতিক একগুয়েমিকে পাত্তা না দিয়ে নির্বাচনমুখী।

অবশ্য সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেছেন, সরকারের পাতানো ফাঁদ বুঝতে না পেরে কোন কোন বিএনপি নেতা নির্বাচন নিয়ে আগ্রহী।

তারপরও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, তারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নির্বাচন বর্জন করবেন। অন্যথায় দল থেকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন।