মোরেলগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট, এক যুগ ধরে পরিত্যক্ত নৌ-অ্যাম্বুলেন্স

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও কোন প্রকার উন্নতি ঘটেনি স্বাস্থ্য সেবায়। ৩১ শয্যার এ হাসপাতালটি ২০১১ সালে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হলেও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চলছে ৩১ শয্যার জনবল ও যন্ত্রপাতি দিয়ে। প্যাথলজি বিভাগ বলতে কিছু নেই এক যুগ ধরে হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ২২ লাখ টাকার দ্রুতগতি সম্পন্ন নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি নদীর চরে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বাথরুম, লেটিনে দুর্গন্তময় পরিবেশ। অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে এক্সরে মেশিনও। গোটা হাসপাতাল হ-য-ব-র-ল অবস্থা।

মোরেলগঞ্জ উপজেলার সাড়ে ৩ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ৩১ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০১১ সালে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হয়। কিন্তু জনবল ও প্রয়োজনীয় মালামাল বাড়ানো হয়নি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, শিশু, মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের কনসালটেন্টসহ ৪১টি পদের মধ্যে ২৩টি পদ শূণ্য বছরের পর বছর। অ্যানেস্থিসিয়া বিশেষজ্ঞ না থাকায় অপারেশন কার্যক্রম কখনোই আলোর মুখ দেখেনি এখনে। সে কারনে অপারেশন থিয়েটারের অনেক মালামাল অকেজো হবার পথে।

প্রতি বছর এ হাসপাতালে ২৫-২৮ লাখ টাকার ওষুধ সরবরাহ করে থাকেন কর্তৃপক্ষ। সেসব ওষুধ রাখার উপযোগী স্টোর রুম না থাকায় তা রাখা হচ্ছে কর্মচারীদের পরিত্যক্ত আবাসিক ভবনে। ১৫ বছর সময় ধরে প্যাথলজিস্ট নেই। ফলে হাসপাতালে কোন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারছেন না রোগীরা। এক্স-রে টেকনিশান থাকলেও মেশিন পড়ে আছে অকোজে অবস্থায়। হাসপাতালে প্যাথলজির এ সংকটের কারণে হাসপাতালের গা ঘেষে কয়েকটি প্যাথলজির দোকান সৃষ্টি হয়েছে। কোন দোকানেই নেই ডিপ্লোমাধারি প্যাথলজিস্ট। মোবাইল কোর্টের খবরে ওইসব দোকানে তালা ঝুলিয়ে সটকে পড়েন কথিত প্যাথলজিস্টরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুমুর্ষূ রোগীদের উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে দ্রুত স্থানান্তরের জন্য উচ্চ শক্তি সম্পন্ন একটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স এ হাসপাতালে দিয়েছেন। যা একদিনের জন্য কোন রোগীর সেবায় লাগানো যায়নি। দুই বছরের অধীক সময় ধরে এটি নদীর চরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অবহেলায় ভাঙাড়ি পণ্যে পরিণত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের সেই নৌ অ্যাম্বুলেন্স।

হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের দেয়া খাবার নিয়েও রয়েছে অভিযোগ। কোন প্রকার তদারকি না থাকায় নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৫০ গ্রাম ওজনের মাছের সঙ্গে দেয়া হয় এক টুকরা আলু ও সবজি। রোগীদের জন্য মাছের লেজ ও মাথা রোগীদের জন্য সরবারাহ নিষিদ্ধ থাকলেও মাছের লেজ দেয়া হচ্ছে হামেশাই। সব মিলিয়ে মোরেলগঞ্জ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান এখন তলানিতে পৌঁছেছে। এ বিষয়ে সদস্য যোগদানকৃত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শর্মী রায় বলেন, জনবল সংকট, এ্যানেস্থিসিয়া বিশেষজ্ঞ না থাকায় অপারেশন বন্ধ আছে। ঘূর্ণিঝড় চিত্রাংয়ের পর নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি একবার সারানো হয়েছিল। বর্তমানে ব্যবহারে অনুপযোগী। প্যাথলজি বিভাগ কয়েক বছর ধরে বন্ধ আছে। এক্স-রে মেশিন অকেজো। ২৩ জন কর্মকর্তার পদ শূন্য। এসব বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাপ্তরিকভাবে লেখালেখি করা হচ্ছে।

image

মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) : মোরেলগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিত্যক্ত নৌ অ্যাম্বুলেন্স -সংবাদ

আরও খবর
চালু হলো জেলার তৃতীয় সীমান্তহাট
৪ হাজার ইয়াবাসহ কাভার্ডভ্যান জব্দ আটক-২
গোপাল-লক্ষ্মণ-রানিপছন্দে জমজমাট আমের হাট
নবীনগরের ভাটি অঞ্চলে সারি সারি হিজল গাছ
প্রধান আসামি জেলা পরিষদ সদস্যসহ গ্রেপ্তার ২
গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঘরছাড়া বিএনপির নেতাকর্মীরা
হঠাৎ আর্বিভূত প্রধান শিক্ষককে নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড়
পাহাড়ের সম্ভাবনাময়ী স্বর্ণজয়ী অনিতার পাশে পার্বত্য প্রেসক্লাব
ঈশ্বরগঞ্জে মোবাইল অ্যাপসের জুয়ায় নিঃস্ব যুবসমাজ
দশমিনায় দৃষ্টিনন্দন গার্ডার ব্রিজ উদ্বোধন
গৃহবধূকে ধর্ষণের ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল, আটক ৩

শুক্রবার, ২৬ মে ২০২৩ , ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ০৬ জিলক্বদ শাওয়াল ১৪৪৪

মোরেলগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট, এক যুগ ধরে পরিত্যক্ত নৌ-অ্যাম্বুলেন্স

প্রতিনিধি, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট)

image

মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) : মোরেলগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিত্যক্ত নৌ অ্যাম্বুলেন্স -সংবাদ

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও কোন প্রকার উন্নতি ঘটেনি স্বাস্থ্য সেবায়। ৩১ শয্যার এ হাসপাতালটি ২০১১ সালে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হলেও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চলছে ৩১ শয্যার জনবল ও যন্ত্রপাতি দিয়ে। প্যাথলজি বিভাগ বলতে কিছু নেই এক যুগ ধরে হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ২২ লাখ টাকার দ্রুতগতি সম্পন্ন নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি নদীর চরে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বাথরুম, লেটিনে দুর্গন্তময় পরিবেশ। অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে এক্সরে মেশিনও। গোটা হাসপাতাল হ-য-ব-র-ল অবস্থা।

মোরেলগঞ্জ উপজেলার সাড়ে ৩ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ৩১ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০১১ সালে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হয়। কিন্তু জনবল ও প্রয়োজনীয় মালামাল বাড়ানো হয়নি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, শিশু, মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের কনসালটেন্টসহ ৪১টি পদের মধ্যে ২৩টি পদ শূণ্য বছরের পর বছর। অ্যানেস্থিসিয়া বিশেষজ্ঞ না থাকায় অপারেশন কার্যক্রম কখনোই আলোর মুখ দেখেনি এখনে। সে কারনে অপারেশন থিয়েটারের অনেক মালামাল অকেজো হবার পথে।

প্রতি বছর এ হাসপাতালে ২৫-২৮ লাখ টাকার ওষুধ সরবরাহ করে থাকেন কর্তৃপক্ষ। সেসব ওষুধ রাখার উপযোগী স্টোর রুম না থাকায় তা রাখা হচ্ছে কর্মচারীদের পরিত্যক্ত আবাসিক ভবনে। ১৫ বছর সময় ধরে প্যাথলজিস্ট নেই। ফলে হাসপাতালে কোন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারছেন না রোগীরা। এক্স-রে টেকনিশান থাকলেও মেশিন পড়ে আছে অকোজে অবস্থায়। হাসপাতালে প্যাথলজির এ সংকটের কারণে হাসপাতালের গা ঘেষে কয়েকটি প্যাথলজির দোকান সৃষ্টি হয়েছে। কোন দোকানেই নেই ডিপ্লোমাধারি প্যাথলজিস্ট। মোবাইল কোর্টের খবরে ওইসব দোকানে তালা ঝুলিয়ে সটকে পড়েন কথিত প্যাথলজিস্টরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুমুর্ষূ রোগীদের উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে দ্রুত স্থানান্তরের জন্য উচ্চ শক্তি সম্পন্ন একটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স এ হাসপাতালে দিয়েছেন। যা একদিনের জন্য কোন রোগীর সেবায় লাগানো যায়নি। দুই বছরের অধীক সময় ধরে এটি নদীর চরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অবহেলায় ভাঙাড়ি পণ্যে পরিণত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের সেই নৌ অ্যাম্বুলেন্স।

হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের দেয়া খাবার নিয়েও রয়েছে অভিযোগ। কোন প্রকার তদারকি না থাকায় নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৫০ গ্রাম ওজনের মাছের সঙ্গে দেয়া হয় এক টুকরা আলু ও সবজি। রোগীদের জন্য মাছের লেজ ও মাথা রোগীদের জন্য সরবারাহ নিষিদ্ধ থাকলেও মাছের লেজ দেয়া হচ্ছে হামেশাই। সব মিলিয়ে মোরেলগঞ্জ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান এখন তলানিতে পৌঁছেছে। এ বিষয়ে সদস্য যোগদানকৃত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শর্মী রায় বলেন, জনবল সংকট, এ্যানেস্থিসিয়া বিশেষজ্ঞ না থাকায় অপারেশন বন্ধ আছে। ঘূর্ণিঝড় চিত্রাংয়ের পর নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি একবার সারানো হয়েছিল। বর্তমানে ব্যবহারে অনুপযোগী। প্যাথলজি বিভাগ কয়েক বছর ধরে বন্ধ আছে। এক্স-রে মেশিন অকেজো। ২৩ জন কর্মকর্তার পদ শূন্য। এসব বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাপ্তরিকভাবে লেখালেখি করা হচ্ছে।