প্রধান আসামি জেলা পরিষদ সদস্যসহ গ্রেপ্তার ২

কুমিল্লার হোমনার আলোচিত পাঠান বাহিনীর প্রধান মুকবল হোসেন পাঠানের নেতৃত্বে যুবলীগ নেতা জহির হত্যার পর এবার ওই মামলার সাক্ষী ও নিহতের ভাই মো. খায়েরকে প্রকাশ্যে হাতুড়ি পেটা ও ছুরিকাঘাতে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এই ঘটনায় পাঠান বাহিনী প্রধান কুমিল্লা জেলা পরিষদ সদস্য মুকবল পাঠানকে প্রধান আসামী করে ১২জনের নাম উল্লেখ্যসহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬জনকে আসামী করে গত ২৩ মে রাতে হোমনা থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার পর অভিযুক্ত জেলা পরিষদ সদস্য মুকবল হোসেন পাঠান ও আব্দুল হক ওরফে হকসাব নামে ২ জনকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে ।

মামলা ও থানা সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় আধিপত্য ও রাজনৈতিক পূর্ব শত্রুতার জেরে দীর্ঘ দিন ধরেই পাঠান বাহিনীর লোকজন এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিল। এরই জেরে গেলো বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি আসাদপুর ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মো. সালাউদ্দিন জহিরকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত জহিরের বোন পারুল আক্তার বাদী হয়ে ওই মামলায় বর্তমান জেলা পরিষদ সদস্য মুকবল হোসেন পাঠানকে অন্যতম আসামি করা হয়। বর্তমানে বিজ্ঞ আদালতে ওই মামলাসহ প্রায় ১৬-১৭টি মামলা তার বিরুদ্ধে চলমান রয়েছে জানা যায়। জহির হত্যাসহ কয়েকটি মামলা প্রত্যাহারের জন্য পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই গত ২৩মে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আসাদপুর ইউনিয়নের ঘনিয়ারচর বাজারে নিহত জহিরের পিতা রেনু মিয়ার চায়ের দোকানে হামলা চালায় পাঠান বাহিনী।

এ সময় নিহত জহিরের ভাই খায়েরকে হামলা করে সুইচ গিয়ার দিয়ে ঘাঁই মেরে ও হাতুড়িপেটা করে হত্যা চেষ্টা করে। এ সময় অটোরিকশায় বসে থাকা মো. কামাল নামের এক ব্যক্তি তাকে বাঁচাতে গেলে ‘পাঠান বাহিনী’র লোকজন তাকেও এলোপাতাড়ি হামলা করে এবং হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে কামাল হোসেনের ৪টি দাঁত ভেঙে ফেলে। উভয়কে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হোমনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেন।

এই ঘটনায় নিহত জহিরের পিতা রেনু মিয়া বাদী হয়ে মো. মুকবল হোসেন পাঠানকে প্রধান আসামি করে ১২জনের নাম উল্লেখ্যসহ আরো অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করে হোমনা থানায় একটি মামলা রুজু হয়।

মামলার বাদী রেনু মিয়া জানান, মুকবল পাঠানের নেতৃত্বে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার বাহিনীর লোকজন বোমা-ককটেল ফাটিয়ে এবং দেশিয় অস্ত্র নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে আমার দোকানে হামলা চালায় ও লুটপাট করে। আমার এক ছেলে জহিরকে হত্যা করে এখন আবার আমার ছেলে খায়েরকেও হত্যা করতে চায়। জহির হত্যা মামলা না তুললে যেকোন সময় আমাকে বা আমার পরিবারের লোকজনকে খুন করে ফেলবে প্রকাশ্যে বলে বেড়ায়। মুকবল পাঠানের বিরুদ্ধে নারী পাচার ও হত্যাসহ ১৬-১৭টি মামলা রয়েছে।

হোমনা থানার ও.সি মো. সাইফুল ইসলাম জানান, বাদীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় মামলা এফআইআর করা হয়েছে। মুকবল পাঠান ও হক সাব নামে ২জনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। মুকবল পাঠানের বিরুদ্ধে হত্যা, নারী নির্যাতন ও নারীপাচারসহ ১১টিরও বেশি মামলা আদালতে বিচারাধীর রয়েছে।

শুক্রবার, ২৬ মে ২০২৩ , ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ০৬ জিলক্বদ শাওয়াল ১৪৪৪

জহির হত্যা মামলার সাক্ষীকে হত্যার চেষ্টা

প্রধান আসামি জেলা পরিষদ সদস্যসহ গ্রেপ্তার ২

প্রতিনিধি, হোমনা (কুমিল্লা)

কুমিল্লার হোমনার আলোচিত পাঠান বাহিনীর প্রধান মুকবল হোসেন পাঠানের নেতৃত্বে যুবলীগ নেতা জহির হত্যার পর এবার ওই মামলার সাক্ষী ও নিহতের ভাই মো. খায়েরকে প্রকাশ্যে হাতুড়ি পেটা ও ছুরিকাঘাতে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এই ঘটনায় পাঠান বাহিনী প্রধান কুমিল্লা জেলা পরিষদ সদস্য মুকবল পাঠানকে প্রধান আসামী করে ১২জনের নাম উল্লেখ্যসহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬জনকে আসামী করে গত ২৩ মে রাতে হোমনা থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার পর অভিযুক্ত জেলা পরিষদ সদস্য মুকবল হোসেন পাঠান ও আব্দুল হক ওরফে হকসাব নামে ২ জনকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে ।

মামলা ও থানা সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় আধিপত্য ও রাজনৈতিক পূর্ব শত্রুতার জেরে দীর্ঘ দিন ধরেই পাঠান বাহিনীর লোকজন এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিল। এরই জেরে গেলো বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি আসাদপুর ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মো. সালাউদ্দিন জহিরকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত জহিরের বোন পারুল আক্তার বাদী হয়ে ওই মামলায় বর্তমান জেলা পরিষদ সদস্য মুকবল হোসেন পাঠানকে অন্যতম আসামি করা হয়। বর্তমানে বিজ্ঞ আদালতে ওই মামলাসহ প্রায় ১৬-১৭টি মামলা তার বিরুদ্ধে চলমান রয়েছে জানা যায়। জহির হত্যাসহ কয়েকটি মামলা প্রত্যাহারের জন্য পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই গত ২৩মে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আসাদপুর ইউনিয়নের ঘনিয়ারচর বাজারে নিহত জহিরের পিতা রেনু মিয়ার চায়ের দোকানে হামলা চালায় পাঠান বাহিনী।

এ সময় নিহত জহিরের ভাই খায়েরকে হামলা করে সুইচ গিয়ার দিয়ে ঘাঁই মেরে ও হাতুড়িপেটা করে হত্যা চেষ্টা করে। এ সময় অটোরিকশায় বসে থাকা মো. কামাল নামের এক ব্যক্তি তাকে বাঁচাতে গেলে ‘পাঠান বাহিনী’র লোকজন তাকেও এলোপাতাড়ি হামলা করে এবং হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে কামাল হোসেনের ৪টি দাঁত ভেঙে ফেলে। উভয়কে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হোমনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেন।

এই ঘটনায় নিহত জহিরের পিতা রেনু মিয়া বাদী হয়ে মো. মুকবল হোসেন পাঠানকে প্রধান আসামি করে ১২জনের নাম উল্লেখ্যসহ আরো অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করে হোমনা থানায় একটি মামলা রুজু হয়।

মামলার বাদী রেনু মিয়া জানান, মুকবল পাঠানের নেতৃত্বে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার বাহিনীর লোকজন বোমা-ককটেল ফাটিয়ে এবং দেশিয় অস্ত্র নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে আমার দোকানে হামলা চালায় ও লুটপাট করে। আমার এক ছেলে জহিরকে হত্যা করে এখন আবার আমার ছেলে খায়েরকেও হত্যা করতে চায়। জহির হত্যা মামলা না তুললে যেকোন সময় আমাকে বা আমার পরিবারের লোকজনকে খুন করে ফেলবে প্রকাশ্যে বলে বেড়ায়। মুকবল পাঠানের বিরুদ্ধে নারী পাচার ও হত্যাসহ ১৬-১৭টি মামলা রয়েছে।

হোমনা থানার ও.সি মো. সাইফুল ইসলাম জানান, বাদীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় মামলা এফআইআর করা হয়েছে। মুকবল পাঠান ও হক সাব নামে ২জনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। মুকবল পাঠানের বিরুদ্ধে হত্যা, নারী নির্যাতন ও নারীপাচারসহ ১১টিরও বেশি মামলা আদালতে বিচারাধীর রয়েছে।