‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পে দুর্নীতি সাবেক সচিব প্রশান্ত কুমারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের পিডি থাকা অবস্থায় অবৈধভাবে বিপুল পরিমান সম্পদ অর্জন করেছেন পল্লী উন্নয়ণ ও সমবায় বিভাগের সাবেক সচিব প্রশান্ত কুমার রায়। দুদক অনুসন্ধানে এমন তথ্য বেরিয়ে আসে। অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ মন্ত্রণালয়ের সাবেক এ সচিবের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। গতকাল দুদকের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় তার বিরুদ্ধে এক কোটি ২৫ লাখ ৪০ হাজার ২৪৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও বিপুল অর্থের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ আদনান এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে গত সোমবার তার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেয়া হয়। জানা গেছে, প্রশান্ত কুমারের বাড়ি খুলনার বাটিয়াঘাটা থানার গোপ্তমারী গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত বিমলেন্দু রায়। বর্তমানে তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কাদিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৫ নম্বর রোডের ৩ নম্বর বাড়ির এ-৫ ফ্ল্যাটে থাকেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সাবেক সচিব ড. প্রশান্ত কুমার রায় ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’র প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ছিলেন। প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কেনাকাটায় ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন। এর মধ্যে এফডিসির ১৬ লাখ ৮১ হাজার টাকা খরচ করে ‘কিস্তির জ্বালা’ সিনেমা তৈরি করে বিল পরিশোধ না করা, উন্মুক্ত দরপত্র ব্যবহার না করে ৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকার আসবাবপত্র অটবি থেকে কেনা, কমিশন নিয়ে প্রকল্পে নিম্নমানের ল্যাপটপ কেনা; যেগুলো ব্যবহার করা যায়নি, প্রত্যেক উপজেলায় ইন্টারনেট বেইজড স্টেশন স্থাপন তার বন্ধুর প্রতিষ্ঠান অলওয়েজ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে করিয়ে বিপুল পরিমাণ কমিশন গ্রহণ। তার বিররুদ্ধ দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামার এজহারে তার উল্লেখযোগ্য সম্পদের মধ্যে- খুলনার বটিয়াঘাটা থানায় এক কোটি ৬৫ লাখ টাকায় কেনা দুই দশমিক চার একর জমি। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কাদিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৫ নম্বর রোডের ৩ নম্বর বাড়িতে ৪২ লাখ তিন হাজার ৮৪১ টাকায় কেনা ফ্ল্যাট (এ-৫)। মোহাম্মদপুরের পুলপাড় রোডের পূর্ব জাফরাবাদে ৫০ লাখ টাকায় কেনায় ১২শ’ বর্গফুটের আরেকটি ফ্ল্যাট। রাজধানীর ১৪৩ গ্রিন রোডের ঠিকানায় গ্রিন সুপার মার্কেটের ৩য় তলায় ১১ লাখ টাকায় কেনা ৩০০ বর্গফুটের একটি কক্ষ। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমির ওপর ২ তলা ভবন। ২৩ লাখ টাকায় কেনা একটি জাপানি প্রিমিও কার। ১৬ লাখ টাকায় কেনা একটি এক্সকাভেটর (ভেকু)। সোনালী ব্যাংকের রমনা করপোরেট শাখায় ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। ১০ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার। সাত লাখ টাকার ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও আসবাবপত্র। এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থ বছর শেষে এক কোটি ৪১ লাখ টাকা ঋণ বাদে এক কোটি ৮৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৬৪ টাকার নিট সম্পদ।

মঙ্গলবার, ০৬ জুন ২০২৩ , ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ১৭ জিলক্বদ শাওয়াল ১৪৪৪

‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পে দুর্নীতি সাবেক সচিব প্রশান্ত কুমারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের পিডি থাকা অবস্থায় অবৈধভাবে বিপুল পরিমান সম্পদ অর্জন করেছেন পল্লী উন্নয়ণ ও সমবায় বিভাগের সাবেক সচিব প্রশান্ত কুমার রায়। দুদক অনুসন্ধানে এমন তথ্য বেরিয়ে আসে। অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ মন্ত্রণালয়ের সাবেক এ সচিবের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। গতকাল দুদকের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় তার বিরুদ্ধে এক কোটি ২৫ লাখ ৪০ হাজার ২৪৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও বিপুল অর্থের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ আদনান এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে গত সোমবার তার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেয়া হয়। জানা গেছে, প্রশান্ত কুমারের বাড়ি খুলনার বাটিয়াঘাটা থানার গোপ্তমারী গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত বিমলেন্দু রায়। বর্তমানে তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কাদিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৫ নম্বর রোডের ৩ নম্বর বাড়ির এ-৫ ফ্ল্যাটে থাকেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সাবেক সচিব ড. প্রশান্ত কুমার রায় ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’র প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ছিলেন। প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কেনাকাটায় ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন। এর মধ্যে এফডিসির ১৬ লাখ ৮১ হাজার টাকা খরচ করে ‘কিস্তির জ্বালা’ সিনেমা তৈরি করে বিল পরিশোধ না করা, উন্মুক্ত দরপত্র ব্যবহার না করে ৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকার আসবাবপত্র অটবি থেকে কেনা, কমিশন নিয়ে প্রকল্পে নিম্নমানের ল্যাপটপ কেনা; যেগুলো ব্যবহার করা যায়নি, প্রত্যেক উপজেলায় ইন্টারনেট বেইজড স্টেশন স্থাপন তার বন্ধুর প্রতিষ্ঠান অলওয়েজ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে করিয়ে বিপুল পরিমাণ কমিশন গ্রহণ। তার বিররুদ্ধ দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামার এজহারে তার উল্লেখযোগ্য সম্পদের মধ্যে- খুলনার বটিয়াঘাটা থানায় এক কোটি ৬৫ লাখ টাকায় কেনা দুই দশমিক চার একর জমি। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কাদিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৫ নম্বর রোডের ৩ নম্বর বাড়িতে ৪২ লাখ তিন হাজার ৮৪১ টাকায় কেনা ফ্ল্যাট (এ-৫)। মোহাম্মদপুরের পুলপাড় রোডের পূর্ব জাফরাবাদে ৫০ লাখ টাকায় কেনায় ১২শ’ বর্গফুটের আরেকটি ফ্ল্যাট। রাজধানীর ১৪৩ গ্রিন রোডের ঠিকানায় গ্রিন সুপার মার্কেটের ৩য় তলায় ১১ লাখ টাকায় কেনা ৩০০ বর্গফুটের একটি কক্ষ। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমির ওপর ২ তলা ভবন। ২৩ লাখ টাকায় কেনা একটি জাপানি প্রিমিও কার। ১৬ লাখ টাকায় কেনা একটি এক্সকাভেটর (ভেকু)। সোনালী ব্যাংকের রমনা করপোরেট শাখায় ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। ১০ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার। সাত লাখ টাকার ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও আসবাবপত্র। এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থ বছর শেষে এক কোটি ৪১ লাখ টাকা ঋণ বাদে এক কোটি ৮৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৬৪ টাকার নিট সম্পদ।