তেলের দাম নিয়ে মার্কিন চাপ রিয়াদের প্রত্যাখ্যান

ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ও তেলের দামের বিষয়ে মার্কিন চাপ প্রত্যাখ্যান করেছে রিয়াদ। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সৌদি আরব সফর করার সময় ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে রিয়াদের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ব্যাপারে যে চাপ সৃষ্টি করেছেন তা প্রত্যাখ্যান করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এছাড়া, তেলের দাম কমানো এবং সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার কথা বললেও তা মেনে নিতে রাজি হয়নি রিয়াদ।

গত বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন অ্যান্টনি ব্লিংকেন এবং সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আলে সৌদ। সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব এবং ইসরাইলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন তার অবিচ্ছেদ্য ভূমিকা পালন করে যাবে। তিনি বলেন, ইসরাইল এবং সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের বিষয়টি ওয়াশিংটনের কাছে অগ্রাধিকার পাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনের সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করলে সৌদি আরবের খুব সামান্যই লাভ হবে। ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠা না হলে এই সম্পর্ক থেকে কোনো লাভ পাওয়া যাবে না। তিনি সুস্পষ্ট করে বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যু আরব দেশগুলোর কাছে এখনো কেন্দ্রীয় ইস্যু এবং এটি সৌদি আরবের পররাষ্ট্রনীতির শীর্ষে রয়েছে। তিনি এই একই বক্তব্য গত ১৯ মে আরব লীগের শীর্ষ সম্মেলনেও দিয়েছিলেন।

সে সময় সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা ফিলিস্তিনি ভূখ- উদ্ধার, সেখানকার জনগণের বৈধ অধিকার এবং ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী পূর্ব বায়তুল মুকাদ্দাসকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে জনগণকে সহযোগিতা দিতে মোটেই দেরি করব না। সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সিরিয়ার সঙ্গে আমেরিকা সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না এবং অন্য কোনো দেশ বাশার আসাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করুক তাও সমর্থন করে না।

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার দেশের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলেন, সিরিয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগকে খুব স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করেছে। প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান বলেন, আমাদের মধ্যে মতবিরোধ থাকতে পারে কিন্তু আমরা একসঙ্গে কিভাবে কাজ করতে পারি তার পথ ও পদ্ধতি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। চীনের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রিন্স ফারহান বলেন, আমরা আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার পাশাপাশি আরো বহু মিত্র দেশের সঙ্গেই সম্পর্ক রাখতে পারি। এ ধরনের নজির আমেরিকা বহু ক্ষেত্রেই রেখেছে।

অপরদিকে, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান পরমাণু সমঝোতা পুনর্বহালের বিষয়ে আমেরিকার সঙ্গে একটি অন্তর্র্বতী চুক্তিতে পৌঁছেছে বলে যে খবর বেরিয়েছে তা নাকচ করে দিয়েছে তেহরান। প্রকাশিত খবরে দাবী করা হয়েছে- ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে আমেরিকা এবং বিনিময়ে পরমাণু কর্মসূচিতে কিছু পরিবর্তন আনবে তেহরান- এমন বিধান রেখে ইরান ও আমেরিকা একটি অন্তর্র্বতী সমঝোতায় পৌঁছেছে। লন্ডনভিত্তিক মিডল ইস্ট আই নামের একটি গণমাধ্যম এই খবর প্রকাশ করেছে। এর ফলে মার্কিনীদের যে প্রভাব মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর উপর ছিল তা ক্ষর্ব হবার লক্ষণ স্পস্ট হতে শুরু করেছে।

শনিবার, ১০ জুন ২০২৩ , ২৭ জৈষ্ঠ্য ১৪৩০, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৪

তেলের দাম নিয়ে মার্কিন চাপ রিয়াদের প্রত্যাখ্যান

image

ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ও তেলের দামের বিষয়ে মার্কিন চাপ প্রত্যাখ্যান করেছে রিয়াদ। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সৌদি আরব সফর করার সময় ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে রিয়াদের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ব্যাপারে যে চাপ সৃষ্টি করেছেন তা প্রত্যাখ্যান করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এছাড়া, তেলের দাম কমানো এবং সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার কথা বললেও তা মেনে নিতে রাজি হয়নি রিয়াদ।

গত বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন অ্যান্টনি ব্লিংকেন এবং সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আলে সৌদ। সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব এবং ইসরাইলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন তার অবিচ্ছেদ্য ভূমিকা পালন করে যাবে। তিনি বলেন, ইসরাইল এবং সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের বিষয়টি ওয়াশিংটনের কাছে অগ্রাধিকার পাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনের সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করলে সৌদি আরবের খুব সামান্যই লাভ হবে। ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠা না হলে এই সম্পর্ক থেকে কোনো লাভ পাওয়া যাবে না। তিনি সুস্পষ্ট করে বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যু আরব দেশগুলোর কাছে এখনো কেন্দ্রীয় ইস্যু এবং এটি সৌদি আরবের পররাষ্ট্রনীতির শীর্ষে রয়েছে। তিনি এই একই বক্তব্য গত ১৯ মে আরব লীগের শীর্ষ সম্মেলনেও দিয়েছিলেন।

সে সময় সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা ফিলিস্তিনি ভূখ- উদ্ধার, সেখানকার জনগণের বৈধ অধিকার এবং ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী পূর্ব বায়তুল মুকাদ্দাসকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে জনগণকে সহযোগিতা দিতে মোটেই দেরি করব না। সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সিরিয়ার সঙ্গে আমেরিকা সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না এবং অন্য কোনো দেশ বাশার আসাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করুক তাও সমর্থন করে না।

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার দেশের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলেন, সিরিয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগকে খুব স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করেছে। প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান বলেন, আমাদের মধ্যে মতবিরোধ থাকতে পারে কিন্তু আমরা একসঙ্গে কিভাবে কাজ করতে পারি তার পথ ও পদ্ধতি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। চীনের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রিন্স ফারহান বলেন, আমরা আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার পাশাপাশি আরো বহু মিত্র দেশের সঙ্গেই সম্পর্ক রাখতে পারি। এ ধরনের নজির আমেরিকা বহু ক্ষেত্রেই রেখেছে।

অপরদিকে, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান পরমাণু সমঝোতা পুনর্বহালের বিষয়ে আমেরিকার সঙ্গে একটি অন্তর্র্বতী চুক্তিতে পৌঁছেছে বলে যে খবর বেরিয়েছে তা নাকচ করে দিয়েছে তেহরান। প্রকাশিত খবরে দাবী করা হয়েছে- ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে আমেরিকা এবং বিনিময়ে পরমাণু কর্মসূচিতে কিছু পরিবর্তন আনবে তেহরান- এমন বিধান রেখে ইরান ও আমেরিকা একটি অন্তর্র্বতী সমঝোতায় পৌঁছেছে। লন্ডনভিত্তিক মিডল ইস্ট আই নামের একটি গণমাধ্যম এই খবর প্রকাশ করেছে। এর ফলে মার্কিনীদের যে প্রভাব মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর উপর ছিল তা ক্ষর্ব হবার লক্ষণ স্পস্ট হতে শুরু করেছে।