খুলনা : ভোট দিলে বিএনপি থেকে নেতাকর্মীদের বহিষ্কার

শুরু থেকেই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কঠোর অবস্থানে বিএনপি। খুলনায় দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ায় গত ৩ জুন ৯ নেতাকে আজীবন বহিষ্কার করে দলটি। নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেয়ায় গত বৃহস্পতিবার আরও ১১ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। এরপর এবার নির্বাচনের দিন ভোট দিলে নেতাকর্মীদের আজীবন বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

খুলনা নগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা জানান, সিটি নির্বাচনে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কেউ যদি কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন, কেউ যদি ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যান তাদের বিশ্বাসঘাতক আখ্যায়িত করে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে।

তিনি আরও জানান, এরই মধ্যে বিষয়টি নেতাকর্মীকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

দলের কোন নেতাকর্মীর নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক বিএনপি অফিসে তাদের নাম, সংগঠনের নাম পাঠানোর জন্য নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানানোর কথাও বলেন তিনি।

নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন জানান, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে এই সরকারের অধীনে সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার অভিযোগে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১১ নেতাকর্মীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। নেতাকর্মীদের সিটি করপোরেশন নির্বাচনী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে গত ৫ জুন চিঠি দেয়া হয়।

তুহিন আরও বলেন, এর আগে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ায় গত ৩ জুন ৯ নেতাকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়।

খুলনা নগর বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, খুলনা বিএনপি দুটি ধারায় বিভক্ত। পুরোনো কাউন্সিলররা তাদের কিছু সমর্থককে কেন্দ্রে নিতে পারলেও বিএনপির বেশিরভাগ কর্মী এবার ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। বিএনপিপন্থি একজন কাউন্সিলর প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের কর্মীদের কেন্দ্রে নেয়ার চেষ্টা থাকবে। তবে কট্টর বিএনপিপন্থিরা কাউন্সিলর পদে ভোট দিলেও হয়তো মেয়র পদে ভোট দেবেন না।

এদিকে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। তবে বিএনপির মতো বড় দল নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে অন্যপ্রার্থীদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে সন্দিহান রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ সাধারণ ভোটাররা। এক্ষেত্রে কেন্দ্রে ভোটার হাজির করাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ। তবে উত্তেজনা থাকবে ৩১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচনে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদা বলেন, বিগত দিনের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা গেছে। এবার বিএনপির মতো বড় দল নির্বাচন বর্জন করায় নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হওয়ার চিন্তা করার সুযোগ নেই।

কুদরত-ই-খুদা আরও বলেন, শক্তিমত্তা ও বাস্তবতার নিরিখে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হবেন এমন ধারণা থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে সিটি ভোট নিয়ে তেমন আগ্রহ নেই। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন এই নির্বাচন সুষ্ঠু হলেও গ্রহণযোগ্যতার সংকটে পড়বে। তবে এসব নির্বাচন থেকে ক্ষমতাসীন দল কী বার্তা পেল, তার প্রভাব থাকবে জাতীয় নির্বাচনে।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান জানান, বাস্তবতার নিরিখে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হবেন এটা ঠিক। তবে বিএনপি নির্বাচনে এলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতো।

আশরাফ উজ জামান বলেন, বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের কিছু সমর্থকদের কেন্দ্রে নিতে পারলেও বিএনপির কর্মীরা এবার সেভাবে ভোটকেন্দ্রে যাবেন না বলে মনে করছেন তিনি।

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব বাবুল হাওলাদার বলেন, নির্বাচন এলে প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতির বন্যায় ভাসে নগরবাসী। নির্বাচন হয়ে গেলে দুর্ভোগ আগের মতোই রয়ে যায়। এসব প্রতিশ্রুতির অর্ধেক বাস্তবায়ন হলেও নগরের চেহারা পাল্টে যেত। খুলনা সিটির নাগরিক সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়ানো দরকার।

তিনি বলেন, এবারের সিটি ভোট নিয়ে সাধারণ ভোটারদের আগ্রহ কম। তবে কাউন্সিলর প্রার্থীরা সাড়া ফেলেছে।

আগের নির্বাচনগুলোর ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, খুলনা সিটিতে বিএনপির একটি ভোটব্যাংক রয়েছে। গত পাঁচটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী তিনবার, আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী দুইবার মেয়র হয়েছেন।

২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার খালেক বিএনপির প্রার্থীকে ৬৭ হাজার ৯৪৬ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালে খালেক বিএনপির কাছে ৬০ হাজার ৬৭১ ভোটে হেরে যান।

এবার বিএনপি নির্বাচনে নেই।

২০১৮ সালের নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুজ্জাম্মিল হক ১৪ হাজার ৩৬৩ ভোট পান। জাতীয় পার্টির এস এম মুশফিকুর রহমান পেয়েছিলেন ১ হাজার ৭২ ভোট।

এবার ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় পার্টি প্রার্থী পরিবর্তন করেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন, খুলনায় মেয়র পদে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে না। তালুকদার আবদুল খালেক নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে রয়েছেন টানা ১৯ বছর। তিনি চার বারের সংসদ সদস্য, একবার প্রতিমন্ত্রী এবং দুবার মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার স্ত্রী হাবিবুন নাহার উপমন্ত্রী।

খুলনা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা বলেন, খুলনা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন বিভেদ নেই। দলের পাশাপাশি ১৪ দলের নেতাকর্মীরাও সিটি নির্বাচনের প্রচারণায় রয়েছেন। বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনও ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে রয়েছে। প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

বাবুল রানা বলেন, গত মেয়াদে আওয়ামী লীগ অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করেছে সব মিলিয়ে নির্বাচনে শক্ত অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপি নির্বাচনে এলে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথাও বলেন এই নেতা।

যদিও উন্নয়ন এবং ভোগান্তি নিয়ে ভোটারদের অভিযোগ রয়েছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিসহ নানা প্রতিকূল অবস্থার কারণে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও গতবার দেয়া কয়েকটি প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারার কথা স্বীকারও করছেন তালুকদার খালেক। পরিচ্ছন্ন, জলাবদ্ধতা মুক্ত ও স্মার্ট খুলনা গড়ে তুলতে ভোটারদের কাছে যেয়ে পুনরায় নগরবাসীর সমর্থন চাইছেন তিনি।

তালুকদার খালেক বলেন, গত মেয়াদে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিসহ নানা প্রতিকূল অবস্থার কারণে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও অনেক অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। এজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। তবে নগরের সার্বিক উন্নয়ন ও সেবা প্রদানে আমার আন্তরিকতার অভাব ছিল না।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সুজন খুলনা জেলা শাখার সম্পাদক কুদরত-ই-খুদা বলেন, গতবারের দেয়া প্রতিশ্রুতির ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ পূরণ করতে পেরেছেন তালুকদার আবদুল খালেক।

অবশ্য অনেক উন্নয়নকাজ চলমান। ওই কাজগুলো শেষ হলে নগরের অনেকটা পরিবর্তন আসতে পারে। তবে কাজগুলো অনেক ধীরগতিতে হওয়ায় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।

তালুকদার আবদুল খালেক আরও বলেন, ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে মানুষ দলের চেয়ে ব্যক্তির ওপর বেশি নজর রাখে। আমরা চাইছি নগরের ৫ লাখ ৩৫ হাজার ভোটারের কাছে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পৌঁছে যেতে। ভোটারদের কেন্দ্রে নেয়াও একটা বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তিনি। সেই জায়গা থেকে ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়ার বিষয়েও উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানান এই মেয়র প্রার্থী।

গত দুই নির্বাচনে অংশ নেয়া দলগুলোর মধ্যে যারা এবারের ভোটের মাঠে রয়েছেন, তার মধ্যে আওয়ামী লীগের পর ভোটার বেশি রয়েছে ইসলামী আন্দোলনের। নির্বাচনকে ঘিরে প্রচার-প্রচারণায় এবার সাংগঠনিক পূর্ণ শক্তি নিয়োগ করেছে দলটি। নগরজুড়ে মেয়র প্রার্থী আবদুল আউয়ালের পোস্টার চোখে পড়ে। প্রচার মাইকেও হাতপাখা প্রতীকে চাওয়া হচ্ছে ভোট।

দলটির নেতাকর্মীদের দাবি, ৪০ হাজার নিজেদের ভোটব্যাংক রয়েছে তাদের। প্রার্থী না দেয়ায় বিএনপির ভোট তাদের পক্ষে আসবে বলে মনে করছেন তারা। বিএনপির পাশাপাশি ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী অন্যান্য দলের ভোট হাতপাখার বাক্সে যাবে বলে বিশ্বাস তাদের।

দলটির মেয়র প্রার্থী মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, এখন মানুষ চায় ইসলামী শাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা। বিএনপির সমর্থকরা সরকারের প্রতি অনাস্থায়। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলে মানুষ আমাদের বেছে নেবে।

জাকের পার্টি থেকে মেয়র পদে প্রার্থী এস এম সাব্বির হোসেনকে দেয়া হয়েছে। খুলনায় দলটির অবস্থা খুব একটা সুসংহত না হলেও হাতপাখার প্রার্থীর বাক্সে যেত, এ রকম কিছু সাধারণ ভোটারের ভোট কাটবে জাকের পার্টি।

জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা নাজুক। কর্মী-সমর্থকের সংখ্যাও কম। খুলনায় দলটির মধ্যে বিভেদ আছে। গত নির্বাচনে দলটির প্রার্থী মুশফিকুর এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী। আর মনোনয়ন ফরম নিলেও বেগম রওশন এরশাদের নির্দেশনায় দলটির সাবেক সংসদ সদস্য গফ্ফার বিশ্বাস নির্বাচন থেকে সরে আসেন। তবে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন করবেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।

২০১৮ সালের বিপর্যয় কাটাতে জাতীয় পার্টি থেকে এবার মনোনয়ন দেয়া হয়েছে জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধুকে। যদিও তিনি ২০১৩ সালে মেয়র পদে নির্বাচন করে মাত্র হাজার তিনেক ভোট পেয়েছিলেন।

তবে নিজেকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী দাবি করে মধু বলেন, ২০১৩ সালে নির্বাচনে তার দোয়াত-কলম প্রতীক ছিল, এবার লাঙ্গল হওয়ায় তিনি লড়াইয়ে থাকবেন। বিএনপি মাঠে না থাকায় বিএনপির সমর্থকরা তাকে ভোট দেবেন বলে মনে করেন তিনি।

সিটি নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নির্বাচনে অংশ না নেয়ার বক্তব্য দিলেও নগরের পাঁচটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন জামায়াতের পাঁচ নেতা।

এ বিষয়ে খুলনা নগর জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমান জানান, অনেক নেতা এবং তাদের পরিবার নিজ এলাকায় জনপ্রিয়। তারা এর আগেও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেকে অংশ নিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও কেউ কেউ প্রার্থী হয়েছেন।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে খুলনা নগর জামায়াতের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, জামায়াতের ভোটাররা কাউন্সিলর পদে তাদের প্রার্থীদের ভোট দিলেও মেয়র পদে হয়তো একক কোন প্রার্থী তাদের ভোট পাবেন না।

নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে। ১২ জুন এই নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ ৩১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন এবং সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের দুইজন কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচন উপলক্ষে ১২ জুন সোমবার খুলনা নগর এলাকায় ছুটি ঘোষণা করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, যেকোন মূল্যে একটি মডেল নির্বাচন উপহার দেয়া হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে সব প্রার্থীর এজেন্টের অবস্থান নিশ্চিত করা হবে। আইনের ভেতরে থেকে প্রার্থীদের যে সুবিধা পাওয়ার কথা, তা তারা পাবেন।

নির্বাচনে ২৮৯টি কেন্দ্রে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এজন্য তিন হাজার ইভিএম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন ও পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন।

প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের সামনে একটি করে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। পাশাপাশি ১ হাজার ৭৩২টি ভোট কক্ষের প্রতিটিতেও একটি করে ক্যামেরা বসছে।

শনিবার, ১০ জুন ২০২৩ , ২৭ জৈষ্ঠ্য ১৪৩০, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৪

নগর নির্বাচন

খুলনা : ভোট দিলে বিএনপি থেকে নেতাকর্মীদের বহিষ্কার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, খুলনা

শুরু থেকেই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কঠোর অবস্থানে বিএনপি। খুলনায় দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ায় গত ৩ জুন ৯ নেতাকে আজীবন বহিষ্কার করে দলটি। নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেয়ায় গত বৃহস্পতিবার আরও ১১ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। এরপর এবার নির্বাচনের দিন ভোট দিলে নেতাকর্মীদের আজীবন বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

খুলনা নগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা জানান, সিটি নির্বাচনে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কেউ যদি কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন, কেউ যদি ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যান তাদের বিশ্বাসঘাতক আখ্যায়িত করে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে।

তিনি আরও জানান, এরই মধ্যে বিষয়টি নেতাকর্মীকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

দলের কোন নেতাকর্মীর নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক বিএনপি অফিসে তাদের নাম, সংগঠনের নাম পাঠানোর জন্য নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানানোর কথাও বলেন তিনি।

নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন জানান, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে এই সরকারের অধীনে সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার অভিযোগে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১১ নেতাকর্মীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। নেতাকর্মীদের সিটি করপোরেশন নির্বাচনী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে গত ৫ জুন চিঠি দেয়া হয়।

তুহিন আরও বলেন, এর আগে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ায় গত ৩ জুন ৯ নেতাকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়।

খুলনা নগর বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, খুলনা বিএনপি দুটি ধারায় বিভক্ত। পুরোনো কাউন্সিলররা তাদের কিছু সমর্থককে কেন্দ্রে নিতে পারলেও বিএনপির বেশিরভাগ কর্মী এবার ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। বিএনপিপন্থি একজন কাউন্সিলর প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের কর্মীদের কেন্দ্রে নেয়ার চেষ্টা থাকবে। তবে কট্টর বিএনপিপন্থিরা কাউন্সিলর পদে ভোট দিলেও হয়তো মেয়র পদে ভোট দেবেন না।

এদিকে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। তবে বিএনপির মতো বড় দল নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে অন্যপ্রার্থীদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে সন্দিহান রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ সাধারণ ভোটাররা। এক্ষেত্রে কেন্দ্রে ভোটার হাজির করাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ। তবে উত্তেজনা থাকবে ৩১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচনে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদা বলেন, বিগত দিনের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা গেছে। এবার বিএনপির মতো বড় দল নির্বাচন বর্জন করায় নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হওয়ার চিন্তা করার সুযোগ নেই।

কুদরত-ই-খুদা আরও বলেন, শক্তিমত্তা ও বাস্তবতার নিরিখে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হবেন এমন ধারণা থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে সিটি ভোট নিয়ে তেমন আগ্রহ নেই। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন এই নির্বাচন সুষ্ঠু হলেও গ্রহণযোগ্যতার সংকটে পড়বে। তবে এসব নির্বাচন থেকে ক্ষমতাসীন দল কী বার্তা পেল, তার প্রভাব থাকবে জাতীয় নির্বাচনে।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান জানান, বাস্তবতার নিরিখে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হবেন এটা ঠিক। তবে বিএনপি নির্বাচনে এলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতো।

আশরাফ উজ জামান বলেন, বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের কিছু সমর্থকদের কেন্দ্রে নিতে পারলেও বিএনপির কর্মীরা এবার সেভাবে ভোটকেন্দ্রে যাবেন না বলে মনে করছেন তিনি।

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব বাবুল হাওলাদার বলেন, নির্বাচন এলে প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতির বন্যায় ভাসে নগরবাসী। নির্বাচন হয়ে গেলে দুর্ভোগ আগের মতোই রয়ে যায়। এসব প্রতিশ্রুতির অর্ধেক বাস্তবায়ন হলেও নগরের চেহারা পাল্টে যেত। খুলনা সিটির নাগরিক সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়ানো দরকার।

তিনি বলেন, এবারের সিটি ভোট নিয়ে সাধারণ ভোটারদের আগ্রহ কম। তবে কাউন্সিলর প্রার্থীরা সাড়া ফেলেছে।

আগের নির্বাচনগুলোর ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, খুলনা সিটিতে বিএনপির একটি ভোটব্যাংক রয়েছে। গত পাঁচটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী তিনবার, আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী দুইবার মেয়র হয়েছেন।

২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার খালেক বিএনপির প্রার্থীকে ৬৭ হাজার ৯৪৬ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালে খালেক বিএনপির কাছে ৬০ হাজার ৬৭১ ভোটে হেরে যান।

এবার বিএনপি নির্বাচনে নেই।

২০১৮ সালের নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুজ্জাম্মিল হক ১৪ হাজার ৩৬৩ ভোট পান। জাতীয় পার্টির এস এম মুশফিকুর রহমান পেয়েছিলেন ১ হাজার ৭২ ভোট।

এবার ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় পার্টি প্রার্থী পরিবর্তন করেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন, খুলনায় মেয়র পদে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে না। তালুকদার আবদুল খালেক নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে রয়েছেন টানা ১৯ বছর। তিনি চার বারের সংসদ সদস্য, একবার প্রতিমন্ত্রী এবং দুবার মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার স্ত্রী হাবিবুন নাহার উপমন্ত্রী।

খুলনা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা বলেন, খুলনা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন বিভেদ নেই। দলের পাশাপাশি ১৪ দলের নেতাকর্মীরাও সিটি নির্বাচনের প্রচারণায় রয়েছেন। বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনও ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে রয়েছে। প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

বাবুল রানা বলেন, গত মেয়াদে আওয়ামী লীগ অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করেছে সব মিলিয়ে নির্বাচনে শক্ত অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপি নির্বাচনে এলে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথাও বলেন এই নেতা।

যদিও উন্নয়ন এবং ভোগান্তি নিয়ে ভোটারদের অভিযোগ রয়েছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিসহ নানা প্রতিকূল অবস্থার কারণে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও গতবার দেয়া কয়েকটি প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারার কথা স্বীকারও করছেন তালুকদার খালেক। পরিচ্ছন্ন, জলাবদ্ধতা মুক্ত ও স্মার্ট খুলনা গড়ে তুলতে ভোটারদের কাছে যেয়ে পুনরায় নগরবাসীর সমর্থন চাইছেন তিনি।

তালুকদার খালেক বলেন, গত মেয়াদে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিসহ নানা প্রতিকূল অবস্থার কারণে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও অনেক অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। এজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। তবে নগরের সার্বিক উন্নয়ন ও সেবা প্রদানে আমার আন্তরিকতার অভাব ছিল না।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সুজন খুলনা জেলা শাখার সম্পাদক কুদরত-ই-খুদা বলেন, গতবারের দেয়া প্রতিশ্রুতির ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ পূরণ করতে পেরেছেন তালুকদার আবদুল খালেক।

অবশ্য অনেক উন্নয়নকাজ চলমান। ওই কাজগুলো শেষ হলে নগরের অনেকটা পরিবর্তন আসতে পারে। তবে কাজগুলো অনেক ধীরগতিতে হওয়ায় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।

তালুকদার আবদুল খালেক আরও বলেন, ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে মানুষ দলের চেয়ে ব্যক্তির ওপর বেশি নজর রাখে। আমরা চাইছি নগরের ৫ লাখ ৩৫ হাজার ভোটারের কাছে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পৌঁছে যেতে। ভোটারদের কেন্দ্রে নেয়াও একটা বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তিনি। সেই জায়গা থেকে ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়ার বিষয়েও উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানান এই মেয়র প্রার্থী।

গত দুই নির্বাচনে অংশ নেয়া দলগুলোর মধ্যে যারা এবারের ভোটের মাঠে রয়েছেন, তার মধ্যে আওয়ামী লীগের পর ভোটার বেশি রয়েছে ইসলামী আন্দোলনের। নির্বাচনকে ঘিরে প্রচার-প্রচারণায় এবার সাংগঠনিক পূর্ণ শক্তি নিয়োগ করেছে দলটি। নগরজুড়ে মেয়র প্রার্থী আবদুল আউয়ালের পোস্টার চোখে পড়ে। প্রচার মাইকেও হাতপাখা প্রতীকে চাওয়া হচ্ছে ভোট।

দলটির নেতাকর্মীদের দাবি, ৪০ হাজার নিজেদের ভোটব্যাংক রয়েছে তাদের। প্রার্থী না দেয়ায় বিএনপির ভোট তাদের পক্ষে আসবে বলে মনে করছেন তারা। বিএনপির পাশাপাশি ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী অন্যান্য দলের ভোট হাতপাখার বাক্সে যাবে বলে বিশ্বাস তাদের।

দলটির মেয়র প্রার্থী মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, এখন মানুষ চায় ইসলামী শাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা। বিএনপির সমর্থকরা সরকারের প্রতি অনাস্থায়। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলে মানুষ আমাদের বেছে নেবে।

জাকের পার্টি থেকে মেয়র পদে প্রার্থী এস এম সাব্বির হোসেনকে দেয়া হয়েছে। খুলনায় দলটির অবস্থা খুব একটা সুসংহত না হলেও হাতপাখার প্রার্থীর বাক্সে যেত, এ রকম কিছু সাধারণ ভোটারের ভোট কাটবে জাকের পার্টি।

জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা নাজুক। কর্মী-সমর্থকের সংখ্যাও কম। খুলনায় দলটির মধ্যে বিভেদ আছে। গত নির্বাচনে দলটির প্রার্থী মুশফিকুর এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী। আর মনোনয়ন ফরম নিলেও বেগম রওশন এরশাদের নির্দেশনায় দলটির সাবেক সংসদ সদস্য গফ্ফার বিশ্বাস নির্বাচন থেকে সরে আসেন। তবে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন করবেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।

২০১৮ সালের বিপর্যয় কাটাতে জাতীয় পার্টি থেকে এবার মনোনয়ন দেয়া হয়েছে জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধুকে। যদিও তিনি ২০১৩ সালে মেয়র পদে নির্বাচন করে মাত্র হাজার তিনেক ভোট পেয়েছিলেন।

তবে নিজেকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী দাবি করে মধু বলেন, ২০১৩ সালে নির্বাচনে তার দোয়াত-কলম প্রতীক ছিল, এবার লাঙ্গল হওয়ায় তিনি লড়াইয়ে থাকবেন। বিএনপি মাঠে না থাকায় বিএনপির সমর্থকরা তাকে ভোট দেবেন বলে মনে করেন তিনি।

সিটি নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নির্বাচনে অংশ না নেয়ার বক্তব্য দিলেও নগরের পাঁচটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন জামায়াতের পাঁচ নেতা।

এ বিষয়ে খুলনা নগর জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমান জানান, অনেক নেতা এবং তাদের পরিবার নিজ এলাকায় জনপ্রিয়। তারা এর আগেও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেকে অংশ নিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও কেউ কেউ প্রার্থী হয়েছেন।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে খুলনা নগর জামায়াতের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, জামায়াতের ভোটাররা কাউন্সিলর পদে তাদের প্রার্থীদের ভোট দিলেও মেয়র পদে হয়তো একক কোন প্রার্থী তাদের ভোট পাবেন না।

নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে। ১২ জুন এই নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ ৩১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন এবং সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের দুইজন কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচন উপলক্ষে ১২ জুন সোমবার খুলনা নগর এলাকায় ছুটি ঘোষণা করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, যেকোন মূল্যে একটি মডেল নির্বাচন উপহার দেয়া হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে সব প্রার্থীর এজেন্টের অবস্থান নিশ্চিত করা হবে। আইনের ভেতরে থেকে প্রার্থীদের যে সুবিধা পাওয়ার কথা, তা তারা পাবেন।

নির্বাচনে ২৮৯টি কেন্দ্রে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এজন্য তিন হাজার ইভিএম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন ও পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন।

প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের সামনে একটি করে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। পাশাপাশি ১ হাজার ৭৩২টি ভোট কক্ষের প্রতিটিতেও একটি করে ক্যামেরা বসছে।