পাহাড়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ

রাঙামাটির দুর্গম অঞ্চল বাঘাইছড়ির সাজেক ইউনিয়নের লংতিয়ানপাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দুজন। সেখানে সপ্তাহখানেক আগে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে বলে জানা গেছে। এই রোগে ভুগছে অর্ধশতাধিক মানুষ। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি।গুরুতর অবস্থায় অনেককে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।

লংতিয়ানপাড়ায় সুপেয় পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। একদিকে ছড়ার পানি শুকিয়ে গেছে। অন্যদিকে বৃষ্টির দেখা নেই। তীব্র গরমে পানির চাহিদা বেড়েছে। সুপেয় পানির অভাবেই মূলত সেখানে ডায়রিয়ার প্রকোপ হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন।

ডায়রিয়ায় আক্রন্ত রোগীর অবস্থা আশঙ্কজনক হলে হাসপাতালে নিয়ে তার চিকিৎসা দেয়ার কাজটাও হয়ে পড়ে কঠিন। লংতিয়ানপাড়ার সঙ্গে উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক। তারপরও অনেকে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে পৌঁছেছেন। আশার কথা হচ্ছে, সেখানে হেলিকপ্টারে করে স্বাস্থ্য সহকারী ও ওষুধ পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

ডায়রিয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে। গুরুতর অসুস্থরা যেন হাসপাতালে চিকীৎসা পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। হাসপাতালে আইভি স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় পথ্যের যেন টান না পড়ে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

ডায়রিয়ার প্রাথমিক চিকিৎসা বাড়িতেই করা সম্ভব। বাড়িতে যারা চিকীৎসা নিচ্ছে তারা যেন নিয়ম মেনে খাবার স্যালাইন খায়, বিশুদ্ধ পানি পান করে সে বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

আক্রান্ত এলাকার মানুষ সুপেয় পানি পাচ্ছে না। এটাই তাদের অসুস্থ হবার মূল কারণ। লংতিয়ানপাড়ায় পানির সংকট দূর করতে হবে। পাহাড়ি এলাকায় পানির মূল উৎস পাহাড়ি ছড়া, নদী বা খাল। সমস্যা হচ্ছে, শুষ্ক মৌসুমে নদী ও খাল একবারেই শুকিয়ে যায়। পানির সংকটে চরম মানবেতর জীবন-যাপন করতে হয় পাহাড়ের অধিবাসীদের।

পাহাড়ের নদীগুলোর বেশির ভাগ নদীকেই মৌসুমি নদী বলা হয়। কারণ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শুধু বর্ষা মৌসুমেই পানি প্রবাহ থাকে। বালু ও পাথর পড়ে দিন দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন নদী ও খাল। দীর্ঘদিন এগুলো খনন না করায় দেখা দিয়েছে নাব্যতা সংকট।

পাহাড়ি নদী খননের একটি প্রকল্প নেয়ার কথা শোনা যায়। সেখানকার নদীগুলো খনন করা হলে শুষ্ক মৌসুমেও পানি থাকবে। এতে পাহাড়ের অধিবাসীদের দৈনন্দিন কাজে পানির অভাব পূরণ হবে। বিষয়টি সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করবে বলে আমরা আশা করি।

শনিবার, ১০ জুন ২০২৩ , ২৭ জৈষ্ঠ্য ১৪৩০, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৪

পাহাড়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ

রাঙামাটির দুর্গম অঞ্চল বাঘাইছড়ির সাজেক ইউনিয়নের লংতিয়ানপাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দুজন। সেখানে সপ্তাহখানেক আগে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে বলে জানা গেছে। এই রোগে ভুগছে অর্ধশতাধিক মানুষ। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি।গুরুতর অবস্থায় অনেককে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।

লংতিয়ানপাড়ায় সুপেয় পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। একদিকে ছড়ার পানি শুকিয়ে গেছে। অন্যদিকে বৃষ্টির দেখা নেই। তীব্র গরমে পানির চাহিদা বেড়েছে। সুপেয় পানির অভাবেই মূলত সেখানে ডায়রিয়ার প্রকোপ হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন।

ডায়রিয়ায় আক্রন্ত রোগীর অবস্থা আশঙ্কজনক হলে হাসপাতালে নিয়ে তার চিকিৎসা দেয়ার কাজটাও হয়ে পড়ে কঠিন। লংতিয়ানপাড়ার সঙ্গে উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক। তারপরও অনেকে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে পৌঁছেছেন। আশার কথা হচ্ছে, সেখানে হেলিকপ্টারে করে স্বাস্থ্য সহকারী ও ওষুধ পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

ডায়রিয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে। গুরুতর অসুস্থরা যেন হাসপাতালে চিকীৎসা পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। হাসপাতালে আইভি স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় পথ্যের যেন টান না পড়ে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

ডায়রিয়ার প্রাথমিক চিকিৎসা বাড়িতেই করা সম্ভব। বাড়িতে যারা চিকীৎসা নিচ্ছে তারা যেন নিয়ম মেনে খাবার স্যালাইন খায়, বিশুদ্ধ পানি পান করে সে বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

আক্রান্ত এলাকার মানুষ সুপেয় পানি পাচ্ছে না। এটাই তাদের অসুস্থ হবার মূল কারণ। লংতিয়ানপাড়ায় পানির সংকট দূর করতে হবে। পাহাড়ি এলাকায় পানির মূল উৎস পাহাড়ি ছড়া, নদী বা খাল। সমস্যা হচ্ছে, শুষ্ক মৌসুমে নদী ও খাল একবারেই শুকিয়ে যায়। পানির সংকটে চরম মানবেতর জীবন-যাপন করতে হয় পাহাড়ের অধিবাসীদের।

পাহাড়ের নদীগুলোর বেশির ভাগ নদীকেই মৌসুমি নদী বলা হয়। কারণ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শুধু বর্ষা মৌসুমেই পানি প্রবাহ থাকে। বালু ও পাথর পড়ে দিন দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন নদী ও খাল। দীর্ঘদিন এগুলো খনন না করায় দেখা দিয়েছে নাব্যতা সংকট।

পাহাড়ি নদী খননের একটি প্রকল্প নেয়ার কথা শোনা যায়। সেখানকার নদীগুলো খনন করা হলে শুষ্ক মৌসুমেও পানি থাকবে। এতে পাহাড়ের অধিবাসীদের দৈনন্দিন কাজে পানির অভাব পূরণ হবে। বিষয়টি সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করবে বলে আমরা আশা করি।