বিআইডব্লিউটিসির ব্যর্থতা

বেসরকারি উদ্যোগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাত্রীবাহী নৌযান পরিচালনার উদ্যোগ

রাষ্ট্রীয় নৌবাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটিসির ব্যর্থতার পর এবার একটি বেসরকারি নৌবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে নৌপথে প্রমোদ ভ্রমণের বিলাসবহুল নৌযান চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।

মেসার্স কার্নিভাল ক্রজ লাইন্স তাদের তিনতলা বিশিষ্ট বিলাসবহুল ‘এমভি রাজারহাট-সি’ নামের নৌযানের মাধ্যমে আগামী অক্টোবরে ঢাকা থেকে বরিশাল-মোংলা হয়ে কোলকাতার হাওড়াতে একটি পরীক্ষামূলক নৌপরিসেবা চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএর কাছে। কোম্পানিটির দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, প্রথম ট্রিপের সব কিছু বিবেচনা করে নিয়মিত বাণিজ্যিক ট্রিপের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএর চেয়রম্যান কমোডর আরিফ আহমদ মোস্তফা জানান, আমরা একটি প্রস্তাব পেয়েছি, বিষয়টির সবদিক বিবেচনা করা হচ্ছ। এলক্ষ্যে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণসহ তা আমরা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে জানাব। তবে আন্তঃদেশীয় এ নৌপরিসেবার বিষয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে বলে জানা গেছে।

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে করোনা পূর্বকালীন সময়ে বছরে প্রায় ২৩ লাখ যাত্রী চলাচল করতো। যার বেশীরভাগই চিকিৎসা ও পর্যটনের জন্যই যাতায়াত করতেন। দুই দেশের একাধিক স্থল বন্দর দিয়েই ৮০ ভাগেরও বেশি যাত্রী যাতায়াত করে থাকেন। এছাড়া ঢাকা থেকে সপ্তাহে ৫ দিন ও খুলনা থেকে দুই দিন ট্রেন সার্ভিস চালু রয়েছে। পাশাপাশি প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১০টি ফ্লাইট ঢাকা থেকে কোলকাতা, দিল্লি ও চেন্নাই রুটে চলাচল করছে। করোনা পরিস্থিতির কাঙ্খিত উন্নতির পরে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী চলাচল ক্রমশ বাড়ছে।

কিন্তু এসব যাত্রীদের একটি বড় অংশই চিকিৎসার জন্য কোলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন শহরে যায় বিধায় তাদের জন্য নৌপথ অত্যন্ত সহনীয় ও আরামদায়ক ভ্রমণ হতে পারে। পাশাপাশি পর্যটনের উদ্দেশে যাতায়াতকারীরাও নৌপথে ভ্রমণকালে সুন্দরবনসহ নদীমাতৃক মাতৃভূমির আসল রূপ দেখতে পাবেন। ভারত থেকে আসা পর্যটকরাও সুন্দরবন ও মোংলা বন্দরসহ বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানগুলো দেখেতে পাবেন।

কিন্তু নৌপথে ভ্রমণে দুই দেশের মানুষের বিপুল আগ্রহ থাকলেও উভয় দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের উদাসীনতাসহ যথাযথ উদ্যোগের অভাবে স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। অথচ এলক্ষ্যে নৌপ্রটোকলও স্বাক্ষর হয়েছে ইতোপূর্বে। প্রটোকল অনুযায়ী ২০১৯ সনের মার্চে রাষ্ট্রীয় বিআইডিব্লউটিসি ‘এমভি মধুমতি’ নামের যাত্রীবাহী নৌযানের সাহায্যে ঢাকা-কোলকাতা রুটে পরীক্ষামূলক পরিচালনা সম্পন্ন করার পরে বাণিজ্যিক যাত্রার আর কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। সে যাত্রাটি মূলত নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বিআইডিব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিটিটিএর কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সম্পন্ন হলেও প্রায় ১শ যাত্রীও ভ্রমণ করেছিলেন।

এদিকে মেসার্স কার্নিভাল ক্রজ লাইন্সের পরিচালক ইমরান খান রাসেল জানান, তারা তাদের ২১০ ফুট দৈর্ঘ্যরে ‘এমভি রাজারহাট-সি’ নৌযানটির মাধ্যমে সম্ভাব্য ১০ অক্টোবর ঢাকা থেকে কোলকাতার উদ্দেশে যাত্রা করতে চান। সে লক্ষ্যেই বিআইডব্লিউটিএর কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন শ্রেণীর অনেক যাত্রী ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকায় এ নৌযানে ভ্রমণে আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন বলেও জানান তিনি।

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের অনুমোদিত নকশায় তৈরি ‘এমভি রাজারহাট-সি’ নৌযানটিতে ১৪টি ভিআইপি কক্ষ ছাড়াও প্রথম শ্রেণী ১১০টি কক্ষে ২৪০ শয্যার যাত্রী সুবিধা রয়েছে। এছাড়া ডেক শ্রেণীসহ নৌযানটির যাত্রী বহন ক্ষমতা প্রায় ৭শ। কার্নিভাল শিপিং লাইন্সের মতে ঢাকা থেকে তাদের নৌযানটি ছেড়ে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে কোলকাতায় পৌঁছানো সম্ভব হবে। তবে সে ক্ষেত্রে নৌপথে রাত্রীকালীন নৌসংকেত সুবিধা অন্যতম শর্ত। তারা নৌযানটিকে এমনভাবে পরিচালা করতে চান যাতে যাত্রীরা দিনের বেলা মোংলা বন্দরসহ সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। ঢাকা থেকে বরিশাল-মোংলা-কোলকাতা নৌপথটি মোংলা থেকে উত্তরে এগিয়ে চালনা হয়ে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে আংটিহারায় পৌঁছে বাংলাদেশ অংশে কাস্টম ও ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করবে।

কিন্তু ভারতীয় অংশে এসব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নের পরে কোলকাতা পর্যন্ত বিশাল নৌপথে নৌসংকেত না থাকায় এখনো রাত্রীকালীন নৌযোগাযোগ সুবিধা নেই বলে জানা গেছে। সেক্ষেত্রে সময়সূচি নির্ধারণের ক্ষেত্রে অনেক কিছু বিবেচনায় নিতে হতে পারে বলেও জানা গেছে।

উল্লেখ্য, প্রায় ৭০ বছর পরে দুই দেশের সরকারপ্রধানের সিদ্ধান্তের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১৯ সনের মার্চে আন্তঃদেশীয় নৌপথে যাত্রীবাহী নৌযান এমভি মধুমতির সাহায্যে ঢাকা-কোলকাতা রুটে পরীক্ষামূলক পরিচালনের আনুষ্ঠানিক সূচনা হলেও পরবর্তীতে আর কোন আগ্রগতি হয়নি। অথচ গত কয়েক বছরে কোলকাতা থেকে একাধিক যাত্রীবাহী নৌযানে বেশ কিছু পর্যটক বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন।

এমনকি গত ১১ জানুয়ারি উত্তর প্রদেশের বারানসীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৫১ দিনে ৩ হাজার ২শ কিলোমিটার নৌপথ ভ্রমণে ‘এমভি গঙ্গা বিলাস’ নামের একটি প্রমোদ তরিতে ভারত-বাংলাদেশ নৌভ্রমণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি নৌযানটি ভারত-বাংলাদেশের নৌ সীমান্তের আংটিহারা হয়ে মোংলাতে পৌঁছে। ‘এমভি গঙ্গাবিলাস’ ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশালে পৌঁছে রাত্রীযাপনের পরে ঢাকায় যাত্রা করে পরবর্তীতে পদ্মা-যমুনা পাড়ি দিয়ে আসামের ডিব্রুগড়ে ৫১ দিনে নৌভ্রমণ শেষ করে। প্রায় ২শ ফুট লম্বা তিনতলা প্র্রমোদ তরীটি সুইজারল্যান্ড ও জার্মানির ২৮ জন পর্যটক নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের ২৭টি নদী ও ৫০টি পর্যটন কেন্দ্র পরিদর্শন করে। বিশে^র দীর্ঘতম এই নৌভ্রমণে খাবার সমতে প্রতি পর্যটকের কাছ থেকে ৫১ দিনে ১২ লাখ ৫৯ হাজার ভারতীয় রুপি ভাড়া আদায় করা হয়েছে, যা ছিল বাংলাদেশি টাকায় ১৬ লাখ টাকারও বেশি।

সোমবার, ১৪ আগস্ট ২০২৩ , ৩০ শ্রাবন ১৪৩০, ২৬ মহররম ১৪৪৫

বিআইডব্লিউটিসির ব্যর্থতা

বেসরকারি উদ্যোগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাত্রীবাহী নৌযান পরিচালনার উদ্যোগ

মানবেন্দ্র বটব্যাল, বরিশাল

image

রাষ্ট্রীয় নৌবাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটিসির ব্যর্থতার পর এবার একটি বেসরকারি নৌবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে নৌপথে প্রমোদ ভ্রমণের বিলাসবহুল নৌযান চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।

মেসার্স কার্নিভাল ক্রজ লাইন্স তাদের তিনতলা বিশিষ্ট বিলাসবহুল ‘এমভি রাজারহাট-সি’ নামের নৌযানের মাধ্যমে আগামী অক্টোবরে ঢাকা থেকে বরিশাল-মোংলা হয়ে কোলকাতার হাওড়াতে একটি পরীক্ষামূলক নৌপরিসেবা চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএর কাছে। কোম্পানিটির দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, প্রথম ট্রিপের সব কিছু বিবেচনা করে নিয়মিত বাণিজ্যিক ট্রিপের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএর চেয়রম্যান কমোডর আরিফ আহমদ মোস্তফা জানান, আমরা একটি প্রস্তাব পেয়েছি, বিষয়টির সবদিক বিবেচনা করা হচ্ছ। এলক্ষ্যে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণসহ তা আমরা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে জানাব। তবে আন্তঃদেশীয় এ নৌপরিসেবার বিষয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে বলে জানা গেছে।

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে করোনা পূর্বকালীন সময়ে বছরে প্রায় ২৩ লাখ যাত্রী চলাচল করতো। যার বেশীরভাগই চিকিৎসা ও পর্যটনের জন্যই যাতায়াত করতেন। দুই দেশের একাধিক স্থল বন্দর দিয়েই ৮০ ভাগেরও বেশি যাত্রী যাতায়াত করে থাকেন। এছাড়া ঢাকা থেকে সপ্তাহে ৫ দিন ও খুলনা থেকে দুই দিন ট্রেন সার্ভিস চালু রয়েছে। পাশাপাশি প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১০টি ফ্লাইট ঢাকা থেকে কোলকাতা, দিল্লি ও চেন্নাই রুটে চলাচল করছে। করোনা পরিস্থিতির কাঙ্খিত উন্নতির পরে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী চলাচল ক্রমশ বাড়ছে।

কিন্তু এসব যাত্রীদের একটি বড় অংশই চিকিৎসার জন্য কোলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন শহরে যায় বিধায় তাদের জন্য নৌপথ অত্যন্ত সহনীয় ও আরামদায়ক ভ্রমণ হতে পারে। পাশাপাশি পর্যটনের উদ্দেশে যাতায়াতকারীরাও নৌপথে ভ্রমণকালে সুন্দরবনসহ নদীমাতৃক মাতৃভূমির আসল রূপ দেখতে পাবেন। ভারত থেকে আসা পর্যটকরাও সুন্দরবন ও মোংলা বন্দরসহ বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানগুলো দেখেতে পাবেন।

কিন্তু নৌপথে ভ্রমণে দুই দেশের মানুষের বিপুল আগ্রহ থাকলেও উভয় দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের উদাসীনতাসহ যথাযথ উদ্যোগের অভাবে স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। অথচ এলক্ষ্যে নৌপ্রটোকলও স্বাক্ষর হয়েছে ইতোপূর্বে। প্রটোকল অনুযায়ী ২০১৯ সনের মার্চে রাষ্ট্রীয় বিআইডিব্লউটিসি ‘এমভি মধুমতি’ নামের যাত্রীবাহী নৌযানের সাহায্যে ঢাকা-কোলকাতা রুটে পরীক্ষামূলক পরিচালনা সম্পন্ন করার পরে বাণিজ্যিক যাত্রার আর কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। সে যাত্রাটি মূলত নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বিআইডিব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিটিটিএর কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সম্পন্ন হলেও প্রায় ১শ যাত্রীও ভ্রমণ করেছিলেন।

এদিকে মেসার্স কার্নিভাল ক্রজ লাইন্সের পরিচালক ইমরান খান রাসেল জানান, তারা তাদের ২১০ ফুট দৈর্ঘ্যরে ‘এমভি রাজারহাট-সি’ নৌযানটির মাধ্যমে সম্ভাব্য ১০ অক্টোবর ঢাকা থেকে কোলকাতার উদ্দেশে যাত্রা করতে চান। সে লক্ষ্যেই বিআইডব্লিউটিএর কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন শ্রেণীর অনেক যাত্রী ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকায় এ নৌযানে ভ্রমণে আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন বলেও জানান তিনি।

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের অনুমোদিত নকশায় তৈরি ‘এমভি রাজারহাট-সি’ নৌযানটিতে ১৪টি ভিআইপি কক্ষ ছাড়াও প্রথম শ্রেণী ১১০টি কক্ষে ২৪০ শয্যার যাত্রী সুবিধা রয়েছে। এছাড়া ডেক শ্রেণীসহ নৌযানটির যাত্রী বহন ক্ষমতা প্রায় ৭শ। কার্নিভাল শিপিং লাইন্সের মতে ঢাকা থেকে তাদের নৌযানটি ছেড়ে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে কোলকাতায় পৌঁছানো সম্ভব হবে। তবে সে ক্ষেত্রে নৌপথে রাত্রীকালীন নৌসংকেত সুবিধা অন্যতম শর্ত। তারা নৌযানটিকে এমনভাবে পরিচালা করতে চান যাতে যাত্রীরা দিনের বেলা মোংলা বন্দরসহ সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। ঢাকা থেকে বরিশাল-মোংলা-কোলকাতা নৌপথটি মোংলা থেকে উত্তরে এগিয়ে চালনা হয়ে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে আংটিহারায় পৌঁছে বাংলাদেশ অংশে কাস্টম ও ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করবে।

কিন্তু ভারতীয় অংশে এসব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নের পরে কোলকাতা পর্যন্ত বিশাল নৌপথে নৌসংকেত না থাকায় এখনো রাত্রীকালীন নৌযোগাযোগ সুবিধা নেই বলে জানা গেছে। সেক্ষেত্রে সময়সূচি নির্ধারণের ক্ষেত্রে অনেক কিছু বিবেচনায় নিতে হতে পারে বলেও জানা গেছে।

উল্লেখ্য, প্রায় ৭০ বছর পরে দুই দেশের সরকারপ্রধানের সিদ্ধান্তের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১৯ সনের মার্চে আন্তঃদেশীয় নৌপথে যাত্রীবাহী নৌযান এমভি মধুমতির সাহায্যে ঢাকা-কোলকাতা রুটে পরীক্ষামূলক পরিচালনের আনুষ্ঠানিক সূচনা হলেও পরবর্তীতে আর কোন আগ্রগতি হয়নি। অথচ গত কয়েক বছরে কোলকাতা থেকে একাধিক যাত্রীবাহী নৌযানে বেশ কিছু পর্যটক বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন।

এমনকি গত ১১ জানুয়ারি উত্তর প্রদেশের বারানসীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৫১ দিনে ৩ হাজার ২শ কিলোমিটার নৌপথ ভ্রমণে ‘এমভি গঙ্গা বিলাস’ নামের একটি প্রমোদ তরিতে ভারত-বাংলাদেশ নৌভ্রমণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি নৌযানটি ভারত-বাংলাদেশের নৌ সীমান্তের আংটিহারা হয়ে মোংলাতে পৌঁছে। ‘এমভি গঙ্গাবিলাস’ ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশালে পৌঁছে রাত্রীযাপনের পরে ঢাকায় যাত্রা করে পরবর্তীতে পদ্মা-যমুনা পাড়ি দিয়ে আসামের ডিব্রুগড়ে ৫১ দিনে নৌভ্রমণ শেষ করে। প্রায় ২শ ফুট লম্বা তিনতলা প্র্রমোদ তরীটি সুইজারল্যান্ড ও জার্মানির ২৮ জন পর্যটক নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের ২৭টি নদী ও ৫০টি পর্যটন কেন্দ্র পরিদর্শন করে। বিশে^র দীর্ঘতম এই নৌভ্রমণে খাবার সমতে প্রতি পর্যটকের কাছ থেকে ৫১ দিনে ১২ লাখ ৫৯ হাজার ভারতীয় রুপি ভাড়া আদায় করা হয়েছে, যা ছিল বাংলাদেশি টাকায় ১৬ লাখ টাকারও বেশি।