ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫২ জনে।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৯৫৬ জন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৯৫৬ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৯১১ জন ও ঢাকার বাইরের ২ হাজার ৪৫ জন, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। একই সময়ে যে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে তিনজন ঢাকার ও ৮ জন ঢাকার বাইরের বাসিন্দা।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বাইরের বিভাগগুলোর মধ্যে বেশি রোগী পাওয়া গেছে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে। ঢাকা বিভাগে ৫৬১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৬২ জন এবং বরিশালে ৪৬৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগে ৭৫ জন, খুলনা বিভাগে ২৬৬, রাজশাহী বিভাগে ১৫৮, রংপুরে ৪৮ এবং সিলেটে ৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ২২৮ জন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৬৮ হাজার ৯৩৭ জন ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ৮৫ হাজার ২৯১ জন ভর্তি হয়েছেন। বছরের একই সময়ে আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১ লাখ ৪৩ হাজার ৪৬১ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৬৪ হাজার ১৪৮ জন এবং ঢাকার বাইরের ৭৯ হাজার ২৭৭ জন।
এর আগে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। ২০২০ সালে করোনা মহামারীকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এদিকে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, এতদিন রোগীর সংখ্যা রাজধানীতে বেশি ছিল। এখন গ্রামেও বৃদ্ধি পাচ্ছে। শহরে স্বাস্থ্য অবকাঠামো খুব একটা সাজানো না থাকলেও এখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। কিন্তু গ্রামে ভালো অবকাঠামো থাকলেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও জরুরি ব্যবস্থাপনার ঘাটতি রয়েছে। এমন বাস্তবতায় সামনের দিনগুলোয় অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। গত বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ জুন মাস থেকে শুরু হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর মে মাস থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একই সঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। তাহলে হয়তো রক্ষা পাব।
বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ২৯ ভাদ্র ১৪৩০, ২৭ সফর ১৪৪৫
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫২ জনে।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৯৫৬ জন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৯৫৬ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৯১১ জন ও ঢাকার বাইরের ২ হাজার ৪৫ জন, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। একই সময়ে যে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে তিনজন ঢাকার ও ৮ জন ঢাকার বাইরের বাসিন্দা।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বাইরের বিভাগগুলোর মধ্যে বেশি রোগী পাওয়া গেছে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে। ঢাকা বিভাগে ৫৬১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৬২ জন এবং বরিশালে ৪৬৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগে ৭৫ জন, খুলনা বিভাগে ২৬৬, রাজশাহী বিভাগে ১৫৮, রংপুরে ৪৮ এবং সিলেটে ৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ২২৮ জন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৬৮ হাজার ৯৩৭ জন ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ৮৫ হাজার ২৯১ জন ভর্তি হয়েছেন। বছরের একই সময়ে আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১ লাখ ৪৩ হাজার ৪৬১ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৬৪ হাজার ১৪৮ জন এবং ঢাকার বাইরের ৭৯ হাজার ২৭৭ জন।
এর আগে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। ২০২০ সালে করোনা মহামারীকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এদিকে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, এতদিন রোগীর সংখ্যা রাজধানীতে বেশি ছিল। এখন গ্রামেও বৃদ্ধি পাচ্ছে। শহরে স্বাস্থ্য অবকাঠামো খুব একটা সাজানো না থাকলেও এখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। কিন্তু গ্রামে ভালো অবকাঠামো থাকলেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও জরুরি ব্যবস্থাপনার ঘাটতি রয়েছে। এমন বাস্তবতায় সামনের দিনগুলোয় অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। গত বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ জুন মাস থেকে শুরু হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর মে মাস থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একই সঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। তাহলে হয়তো রক্ষা পাব।