কৃষি জমির মাটি বিক্রি নিষিদ্ধ

বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যক্তি মালিকানাধীন কৃষি জমি থেকে বালু বা মাটি তোলা যাবে না। তবে ব্যক্তির নিজের প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সীমিত পরিসরে বালু বা মাটি তুলতে পারবেন, এ বিধান রেখে জাতীয় সংসদে ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) বিল-২০২৩’ পাস করা হয়েছে।

গতকাল একাদশ জাতীয় সংসদের ২৪তম অধিবেশনে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বিলটি পাসের জন্য সংসদে প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠ ভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে তা পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়।

বিলে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে বালু বা মাটি তোলা যাবে না, যদি তা উর্বর কৃষি জমি হয় বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়, কৃষি জমির উর্বর উপরিভাগের মাটি হলে যদি পরিবেশ-প্রতিবেশ বা জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি সাধিত হয়, ড্রেজারের মাধ্যমে বা যদি অন্য কোন কৌশলী প্রক্রিয়ায় বালু বা মাটি উত্তোলন করা হয়, যাতে এই জমিসহ পার্শ্ববর্তী অন্য জমির ক্ষতি, চ্যুতি বা ধসের উদ্ভব হয়।

তবে কোন ব্যক্তি বসতবাড়ি নির্মাণ বা নিজের প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে নিজের মালিকানাধীন জমি থেকে সীমিত পরিসরে বালু বা মাটি তুলতে পারবেন। বিলটিতে বলা হয়েছে, বালু ইজারার মেয়াদ সর্বোচ্চ এক বছর।

বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, ‘চাঁদপুরের হাইমচরের সেলিম চেয়ারম্যান বালু তোলা নিয়ে ২০১৫ সালে একটি মামলা করেন। ২০১৮ সালে এর রায় হয়। তিনি বালু তোলার অনুমতি পান। গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায় বাতিল করেন। এই যদি হয় বালু ব্যবস্থাপনার অবস্থা! সেলিম চেয়ারম্যান ইতোমধ্যে কত বালু তুলেছেন, মন্ত্রী তা জানেন কি না, জানাবেন।’

গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, ‘তড়িঘড়ি করে সংসদে ভূমির তিনটি বিল আনা হয়েছে। এই বিলগুলো নিয়ে সংসদ সদস্যরা পর্যালোচনারও সুযোগ পাননি। সরকার ইচ্ছা করে জনগণ থকে আড়াল করে আইন করছে। বিভিন্ন পত্রিকার খবর তুলে ধরে তিনি বলেন, অনেক জায়গায় অবৈধ বালু উত্তোলনে ব্যবস্থা না নিয়ে প্রশাসন মাসোহারা নিচ্ছে। এক্ষেত্রে রাজনীতিবিদদেরও দায়-দায়িত্ব আছে।’

বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘জনস্বার্থে কাজ করছি। এই আইন কঠোরহস্তে প্রয়োগ করাই উদ্দেশ্য। বালু নিয়ে অনেক সমস্যা। সে কারণে এই আইনে ফাঁক-ফোকর ছিল। প্রশাসন চাইলেও অনেক সময় ব্যবস্থা নিতে পারত না। এই ফাঁক-ফোকর বন্ধ করা হয়েছে। মাঠ প্রশাসন কঠোর হাতে মাটি-বালু উত্তোলনের বিষয়ে কাজ করতে পারবে। এর উদ্দেশ্য কৃষি জমির সুরক্ষা। ইট ভাটা টপ সয়েল নষ্ট করে দিচ্ছে। এই আইন হলে মহৎ উদ্দেশ্য সফল হবে।’

আরও খবর
দেশে ভয়ঙ্কর সিসা দূষণ, হৃদরোগে বছরে লাখো মানুষের মৃত্যু
দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান
সংসদে বিল পাসভুয়া দলিল তৈরি করলে ৭ বছরের জেল
বাংলাদেশের অর্থনীতির সামনে বড় চার চ্যালেঞ্জ দেখছেন ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ
সর্বশক্তি নিয়োগ করে, এ সরকারকে সরাতে হবে : মির্জা ফখরুল
আয় বাড়াতে সব আন্তঃনগর ট্রেনে যুক্ত হচ্ছে পণ্যবাহী কোচ
সরকারের পক্ষে ভোট চাইলেন জামালপুরের ডিসি
আমি কোন রাজনৈতিক দলে যোগ দেইনি : হিরো আলম
আট মাস পর বাড়ি ফিরলেন সেই নির্যাতিত বাবা
ফাস্টফুড শিশুদের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
আদালতে আইনজীবী-পুলিশ সংঘর্ষ, এডিসি-ওসিসহ আহত ১৬
৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় চার কর্মকর্তা বরখাস্ত

বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ২৯ ভাদ্র ১৪৩০, ২৭ সফর ১৪৪৫

কৃষি জমির মাটি বিক্রি নিষিদ্ধ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যক্তি মালিকানাধীন কৃষি জমি থেকে বালু বা মাটি তোলা যাবে না। তবে ব্যক্তির নিজের প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সীমিত পরিসরে বালু বা মাটি তুলতে পারবেন, এ বিধান রেখে জাতীয় সংসদে ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) বিল-২০২৩’ পাস করা হয়েছে।

গতকাল একাদশ জাতীয় সংসদের ২৪তম অধিবেশনে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বিলটি পাসের জন্য সংসদে প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠ ভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে তা পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়।

বিলে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে বালু বা মাটি তোলা যাবে না, যদি তা উর্বর কৃষি জমি হয় বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়, কৃষি জমির উর্বর উপরিভাগের মাটি হলে যদি পরিবেশ-প্রতিবেশ বা জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি সাধিত হয়, ড্রেজারের মাধ্যমে বা যদি অন্য কোন কৌশলী প্রক্রিয়ায় বালু বা মাটি উত্তোলন করা হয়, যাতে এই জমিসহ পার্শ্ববর্তী অন্য জমির ক্ষতি, চ্যুতি বা ধসের উদ্ভব হয়।

তবে কোন ব্যক্তি বসতবাড়ি নির্মাণ বা নিজের প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে নিজের মালিকানাধীন জমি থেকে সীমিত পরিসরে বালু বা মাটি তুলতে পারবেন। বিলটিতে বলা হয়েছে, বালু ইজারার মেয়াদ সর্বোচ্চ এক বছর।

বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, ‘চাঁদপুরের হাইমচরের সেলিম চেয়ারম্যান বালু তোলা নিয়ে ২০১৫ সালে একটি মামলা করেন। ২০১৮ সালে এর রায় হয়। তিনি বালু তোলার অনুমতি পান। গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায় বাতিল করেন। এই যদি হয় বালু ব্যবস্থাপনার অবস্থা! সেলিম চেয়ারম্যান ইতোমধ্যে কত বালু তুলেছেন, মন্ত্রী তা জানেন কি না, জানাবেন।’

গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, ‘তড়িঘড়ি করে সংসদে ভূমির তিনটি বিল আনা হয়েছে। এই বিলগুলো নিয়ে সংসদ সদস্যরা পর্যালোচনারও সুযোগ পাননি। সরকার ইচ্ছা করে জনগণ থকে আড়াল করে আইন করছে। বিভিন্ন পত্রিকার খবর তুলে ধরে তিনি বলেন, অনেক জায়গায় অবৈধ বালু উত্তোলনে ব্যবস্থা না নিয়ে প্রশাসন মাসোহারা নিচ্ছে। এক্ষেত্রে রাজনীতিবিদদেরও দায়-দায়িত্ব আছে।’

বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘জনস্বার্থে কাজ করছি। এই আইন কঠোরহস্তে প্রয়োগ করাই উদ্দেশ্য। বালু নিয়ে অনেক সমস্যা। সে কারণে এই আইনে ফাঁক-ফোকর ছিল। প্রশাসন চাইলেও অনেক সময় ব্যবস্থা নিতে পারত না। এই ফাঁক-ফোকর বন্ধ করা হয়েছে। মাঠ প্রশাসন কঠোর হাতে মাটি-বালু উত্তোলনের বিষয়ে কাজ করতে পারবে। এর উদ্দেশ্য কৃষি জমির সুরক্ষা। ইট ভাটা টপ সয়েল নষ্ট করে দিচ্ছে। এই আইন হলে মহৎ উদ্দেশ্য সফল হবে।’