আট মাস পর বাড়ি ফিরলেন সেই নির্যাতিত বাবা

আট মাস পর নিজের বাড়ি ফিরলেন চৌগাছার মাকাপুরের লন্ডন প্রবাসী ব্যারিস্টারের নির্যাতিত বাবা হায়দার আলী ধনী। গতকাল দুপুরে তিনি নিজের বাড়িতে ফেরেন।

চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এস এম হাবিবুর রহমান জানান, বৃদ্ধ হায়দার আলী ধনী মরণাপন্ন অবস্থায় চৌগাছায় ভাড়াবাড়িতে ছিলেন। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় তাকে নিজের বাড়িতে উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

অভিযোগে জানা যায়, নিজের সহায়-সম্পত্তি কাল হয়েছিল হায়দার আলী ধনীর। সম্পত্তির লোভে তার স্ত্রী লতিফা হায়দার, ছেলে আল ইমরান বাবু ও ইমামুল হাসান এবং মেয়ে ¯স্নেহা পারভীন বিউটি, তামান্না নাজনীন লাভলী, জেসমিন আক্তার লাকি এবং জেসমিনের স্বামী আলী আহমেদ ৭০ বছরের বৃদ্ধ বাবাকে নানাভাবে অমানুষিক নির্যাতন করতেন। বৃদ্ধ হায়দারের মৃত্যু নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সময় খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দেয়া, মারধর করা, এমনকি শীতের রাতে খালি গায়ে রাখা হতো বলেও অভিযোগ।

তার আরেক ছেলে ইংল্যান্ডে প্রবাসী ব্যারিস্টার এম মুর্তজা সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে বৃদ্ধ বাবা ওপর করা নির্যাতন দেখতে পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন বাবার চিকিৎসা করাতে। এদিকে ব্যারিস্টার মুর্তজা বাড়ি ফিরছে এ খবর পেয়ে বৃদ্ধের স্ত্রী ও অন্য ছেলেমেয়েরা হায়দার ধনীকে নিয়ে ৮ মাস আগে হঠাৎ বাড়িঘর তালাবদ্ধ করে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

ব্যারিস্টার মর্তুজা দেশে ফিরে তার বাবাকে চৌগাছা থানা পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করে আদালতের মাধ্যমে বাবাকে নিজের জিম্মায় নেন এবং তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। আদালতের নির্দেশে হায়দার আলীকে নির্যাতনের জন্য তার ছেলেমেয়েরা গ্রেপ্তার হন এবং জেল খাটেন। নির্যাতন থেকে বাবাকে উদ্ধার এবং আইনি প্রক্রিয়ায় তাদের গ্রেপ্তার ও জেল খাটানো এবং বাবার সহায়-সম্পত্তির লোভে অন্য ভাইবোনেরা ব্যারিস্টার মুর্তজাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। বার বার মিথ্যা মামলায় ব্যারিস্টারকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন। মামলায় ব্যর্থ হয়ে আবারও তারা নানা ষড়যন্ত্র, ফন্দি আটে এবং ব্যারিস্টার মুর্তজার নামে মিথ্যা অপবাদ ছড়াতে থাকে।

স্ত্রী ও মেয়েরা বৃদ্ধের নিজের বাড়িতে তালা মেরে রাখে হায়দার আলী যেন নিজের বাড়িতে না উঠতে পারেন। বাধ্য হয়ে ব্যারিস্টার মুর্তজা তার বাবাকে ভাড়া করা বাসায় রেখে ফুফু, ফুফাতো ভাই, চাচা ও অন্য লোক রেখে দেখভাল ও চিকিৎসা করার ব্যবস্থা করে লন্ডনে তার কর্মস্থলে ফিরে যান। এ সময় ব্যরিস্টারের অন্য ভাইবোনেরা সম্পত্তি লোভে বাবাকে আবারও অপহরণের চেষ্টা করে এবং আদালত থেকে নিজেদের জিম্মায় নিতে চান। তাতেও ব্যর্থ হন তারা। হায়দার ধনী লন্ডনে না গিয়ে তার জীবনের বাকি সময়টুকু নিজ বাড়িতে কাটাতে চান বলে ব্যারিস্টার ছেলেকে জানান।

হায়দার আলী তার স্ত্রী, দুই ছেলে ও মেয়েদের দ্বারা প্রাণনাশের আশঙ্কায় চৌগাছা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে গতকাল বেলা ১১টার দিকে চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এস এম হাবিবুর রহমানের সহযোগিতায় এবং স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে সন্তানদের দেয়া তালা ভেঙে নিজ বাড়িতে ফিরেন। এ সময় তিনি বাকরুদ্ধ, কান্নায় আপ্লুত হয়ে পড়েন। হায়দার আলী বাড়ি ফেরার সময় গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ইমান আলী, মাকাপুর বল্লভপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর ইসলামসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

image
আরও খবর
দেশে ভয়ঙ্কর সিসা দূষণ, হৃদরোগে বছরে লাখো মানুষের মৃত্যু
দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান
কৃষি জমির মাটি বিক্রি নিষিদ্ধ
সংসদে বিল পাসভুয়া দলিল তৈরি করলে ৭ বছরের জেল
বাংলাদেশের অর্থনীতির সামনে বড় চার চ্যালেঞ্জ দেখছেন ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ
সর্বশক্তি নিয়োগ করে, এ সরকারকে সরাতে হবে : মির্জা ফখরুল
আয় বাড়াতে সব আন্তঃনগর ট্রেনে যুক্ত হচ্ছে পণ্যবাহী কোচ
সরকারের পক্ষে ভোট চাইলেন জামালপুরের ডিসি
আমি কোন রাজনৈতিক দলে যোগ দেইনি : হিরো আলম
ফাস্টফুড শিশুদের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
আদালতে আইনজীবী-পুলিশ সংঘর্ষ, এডিসি-ওসিসহ আহত ১৬
৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় চার কর্মকর্তা বরখাস্ত

বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ২৯ ভাদ্র ১৪৩০, ২৭ সফর ১৪৪৫

আট মাস পর বাড়ি ফিরলেন সেই নির্যাতিত বাবা

যশোর অফিস

image

আট মাস পর নিজের বাড়ি ফিরলেন চৌগাছার মাকাপুরের লন্ডন প্রবাসী ব্যারিস্টারের নির্যাতিত বাবা হায়দার আলী ধনী। গতকাল দুপুরে তিনি নিজের বাড়িতে ফেরেন।

চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এস এম হাবিবুর রহমান জানান, বৃদ্ধ হায়দার আলী ধনী মরণাপন্ন অবস্থায় চৌগাছায় ভাড়াবাড়িতে ছিলেন। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় তাকে নিজের বাড়িতে উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

অভিযোগে জানা যায়, নিজের সহায়-সম্পত্তি কাল হয়েছিল হায়দার আলী ধনীর। সম্পত্তির লোভে তার স্ত্রী লতিফা হায়দার, ছেলে আল ইমরান বাবু ও ইমামুল হাসান এবং মেয়ে ¯স্নেহা পারভীন বিউটি, তামান্না নাজনীন লাভলী, জেসমিন আক্তার লাকি এবং জেসমিনের স্বামী আলী আহমেদ ৭০ বছরের বৃদ্ধ বাবাকে নানাভাবে অমানুষিক নির্যাতন করতেন। বৃদ্ধ হায়দারের মৃত্যু নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সময় খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দেয়া, মারধর করা, এমনকি শীতের রাতে খালি গায়ে রাখা হতো বলেও অভিযোগ।

তার আরেক ছেলে ইংল্যান্ডে প্রবাসী ব্যারিস্টার এম মুর্তজা সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে বৃদ্ধ বাবা ওপর করা নির্যাতন দেখতে পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন বাবার চিকিৎসা করাতে। এদিকে ব্যারিস্টার মুর্তজা বাড়ি ফিরছে এ খবর পেয়ে বৃদ্ধের স্ত্রী ও অন্য ছেলেমেয়েরা হায়দার ধনীকে নিয়ে ৮ মাস আগে হঠাৎ বাড়িঘর তালাবদ্ধ করে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

ব্যারিস্টার মর্তুজা দেশে ফিরে তার বাবাকে চৌগাছা থানা পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করে আদালতের মাধ্যমে বাবাকে নিজের জিম্মায় নেন এবং তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। আদালতের নির্দেশে হায়দার আলীকে নির্যাতনের জন্য তার ছেলেমেয়েরা গ্রেপ্তার হন এবং জেল খাটেন। নির্যাতন থেকে বাবাকে উদ্ধার এবং আইনি প্রক্রিয়ায় তাদের গ্রেপ্তার ও জেল খাটানো এবং বাবার সহায়-সম্পত্তির লোভে অন্য ভাইবোনেরা ব্যারিস্টার মুর্তজাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। বার বার মিথ্যা মামলায় ব্যারিস্টারকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন। মামলায় ব্যর্থ হয়ে আবারও তারা নানা ষড়যন্ত্র, ফন্দি আটে এবং ব্যারিস্টার মুর্তজার নামে মিথ্যা অপবাদ ছড়াতে থাকে।

স্ত্রী ও মেয়েরা বৃদ্ধের নিজের বাড়িতে তালা মেরে রাখে হায়দার আলী যেন নিজের বাড়িতে না উঠতে পারেন। বাধ্য হয়ে ব্যারিস্টার মুর্তজা তার বাবাকে ভাড়া করা বাসায় রেখে ফুফু, ফুফাতো ভাই, চাচা ও অন্য লোক রেখে দেখভাল ও চিকিৎসা করার ব্যবস্থা করে লন্ডনে তার কর্মস্থলে ফিরে যান। এ সময় ব্যরিস্টারের অন্য ভাইবোনেরা সম্পত্তি লোভে বাবাকে আবারও অপহরণের চেষ্টা করে এবং আদালত থেকে নিজেদের জিম্মায় নিতে চান। তাতেও ব্যর্থ হন তারা। হায়দার ধনী লন্ডনে না গিয়ে তার জীবনের বাকি সময়টুকু নিজ বাড়িতে কাটাতে চান বলে ব্যারিস্টার ছেলেকে জানান।

হায়দার আলী তার স্ত্রী, দুই ছেলে ও মেয়েদের দ্বারা প্রাণনাশের আশঙ্কায় চৌগাছা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে গতকাল বেলা ১১টার দিকে চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এস এম হাবিবুর রহমানের সহযোগিতায় এবং স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে সন্তানদের দেয়া তালা ভেঙে নিজ বাড়িতে ফিরেন। এ সময় তিনি বাকরুদ্ধ, কান্নায় আপ্লুত হয়ে পড়েন। হায়দার আলী বাড়ি ফেরার সময় গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ইমান আলী, মাকাপুর বল্লভপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর ইসলামসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।