সাময়িকী কবিতা

একটি অথবা

তিনটি কবিতা

খায়রুল আলম সবুজ

বিষজল- ছুঁইও না

বুড়িগঙ্গা মরে গেছে

ও জলে হাত ধুইও না।

*

জানো যদি পাবে না কূল

তবে কেন নাবতে যাবে

জলের অধিক জলাঞ্জলি

তাকে নিয়েই থাকো তবে

*

পথ করে দেয় পথের দিশা

এমন কথাই বলবে সবে

ভুল হলে ভুল শুধরে দেবে

এমন মানুষ ক’জন পাবে?

তেতাল্লিশ বছর বয়স

মুশাররাত

অনেক হেঁটেছি,

মন্তব্যে-গন্তব্যহীন।

রাতের শেষ হাওয়া লাগিয়েছি গায়ে

মুদির দোকানের ঝাঁপি নেমে গেছে।

নিয়ন আলোয় ফ্লাশব্যাকে দ্রুত

ছুটে গেলো রিকশার চাকা

শুধু তোমার সেলফোন তখনও

বলে না “কোথায় তুমি?”

চল্লিশ গেল;

উল্টানো বিয়াল্লিশের পাতাও

কোন্ ঠিকানার সন্ধানে

আর হাঁটাহাঁটি! দুর্বোধ্য রেখা,

আর ক’পাক দিলে পূর্ণ হবে

চক্র তোমার?

কোঁচড় ভরা স্বপ্নের মুলো

দেখিয়ে আর কত হাঁটাবে!

এবার থাম।

দেখো না কপালের তিনটি ভাঁজ

আর জুলফির চারটি সাদা চুল

কমিয়ে দিচ্ছে আয়না দেখার সাধ।

মা

শেখর দেব

চেয়েছি উড়ন্ত মেঘ হবো আকাশের

মা বলল- ঐ যে আকাশ উড়ে যা

বুঝেছি মেঘের পরিণতি বৃষ্টি

মাটির কাছেই ফেরা

একাবার চেয়েছি আগুন ছুঁতে

মা বললো- ঠিক আছে বাবা ছুঁয়ে আয়

পোড়া হাতে ফিরেছি মায়ের কাছে

একবার সোনার হরিণ চেয়ে বায়না করেছি

মা বললো- দেখেছিস কোনখানে

নিয়ে আয় বাবা

সেদিনও খালি হাতে ফিরেছি ঘরের দ্বারে

ক্লান্তি মুছে দিয়ে আঁচলের স্বর্গে

বলেছে বিশ্রাম নেয় বাবা

মা কখনো পরিণতি বলেনি কিছুর

তবুও দারুণভাবে আজ বুঝে গেছি

মেঘ, আগুন ও সোনার হরিণ বিষয়ক

সবকিছুর পরিণতি মা।

বৈষম্যের শ্রাবণ

কুসুম তাহেরা

কতশত অজস্র লেখা নির্বাসনে গেল

অনুভূতিরা কারফিউ জারি করলো

চিঠি লিখেও পাঠানো হলো না

লাল নীল হলুদের আর্কাইভে

চাপা পড়ে রইল মনের ছন্দপতন!

এবারের মতো

কিছু অলৌকিক সাদা খামের

ভিতর থেকে,

আজও তারা আমাকে জানায়-

ভালোবাসার কাফন জুড়ে

রয়েছে অতৃপ্ত আত্মার রাত্রিবাস!

বৃষ্টির তালে সমন্বয় ঘটাচ্ছে

স্যাঁতসেঁতে কুনো বাঙের কুহকিনী সুর

বাড়ির ছাদে হাওয়া দোল খাচ্ছে

ঢেকে গেছে মেঘের গর্জনের দায় যা চিরকাল,

ত্রিনয়ণী ভেজা চুলে সখ্য গড়েছে এই শ্রাবণে

কয়েকটা ছাপা শাড়ি, মলিন সুতির শার্ট,

তুলে নিতে এসে হিসেব ভুলভাল করছে...

বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৩০ ভাদ্র ১৪৩০, ২৮ সফর ১৪৪৫

সাময়িকী কবিতা

একটি অথবা

তিনটি কবিতা

খায়রুল আলম সবুজ

বিষজল- ছুঁইও না

বুড়িগঙ্গা মরে গেছে

ও জলে হাত ধুইও না।

*

জানো যদি পাবে না কূল

তবে কেন নাবতে যাবে

জলের অধিক জলাঞ্জলি

তাকে নিয়েই থাকো তবে

*

পথ করে দেয় পথের দিশা

এমন কথাই বলবে সবে

ভুল হলে ভুল শুধরে দেবে

এমন মানুষ ক’জন পাবে?

তেতাল্লিশ বছর বয়স

মুশাররাত

অনেক হেঁটেছি,

মন্তব্যে-গন্তব্যহীন।

রাতের শেষ হাওয়া লাগিয়েছি গায়ে

মুদির দোকানের ঝাঁপি নেমে গেছে।

নিয়ন আলোয় ফ্লাশব্যাকে দ্রুত

ছুটে গেলো রিকশার চাকা

শুধু তোমার সেলফোন তখনও

বলে না “কোথায় তুমি?”

চল্লিশ গেল;

উল্টানো বিয়াল্লিশের পাতাও

কোন্ ঠিকানার সন্ধানে

আর হাঁটাহাঁটি! দুর্বোধ্য রেখা,

আর ক’পাক দিলে পূর্ণ হবে

চক্র তোমার?

কোঁচড় ভরা স্বপ্নের মুলো

দেখিয়ে আর কত হাঁটাবে!

এবার থাম।

দেখো না কপালের তিনটি ভাঁজ

আর জুলফির চারটি সাদা চুল

কমিয়ে দিচ্ছে আয়না দেখার সাধ।

মা

শেখর দেব

চেয়েছি উড়ন্ত মেঘ হবো আকাশের

মা বলল- ঐ যে আকাশ উড়ে যা

বুঝেছি মেঘের পরিণতি বৃষ্টি

মাটির কাছেই ফেরা

একাবার চেয়েছি আগুন ছুঁতে

মা বললো- ঠিক আছে বাবা ছুঁয়ে আয়

পোড়া হাতে ফিরেছি মায়ের কাছে

একবার সোনার হরিণ চেয়ে বায়না করেছি

মা বললো- দেখেছিস কোনখানে

নিয়ে আয় বাবা

সেদিনও খালি হাতে ফিরেছি ঘরের দ্বারে

ক্লান্তি মুছে দিয়ে আঁচলের স্বর্গে

বলেছে বিশ্রাম নেয় বাবা

মা কখনো পরিণতি বলেনি কিছুর

তবুও দারুণভাবে আজ বুঝে গেছি

মেঘ, আগুন ও সোনার হরিণ বিষয়ক

সবকিছুর পরিণতি মা।

বৈষম্যের শ্রাবণ

কুসুম তাহেরা

কতশত অজস্র লেখা নির্বাসনে গেল

অনুভূতিরা কারফিউ জারি করলো

চিঠি লিখেও পাঠানো হলো না

লাল নীল হলুদের আর্কাইভে

চাপা পড়ে রইল মনের ছন্দপতন!

এবারের মতো

কিছু অলৌকিক সাদা খামের

ভিতর থেকে,

আজও তারা আমাকে জানায়-

ভালোবাসার কাফন জুড়ে

রয়েছে অতৃপ্ত আত্মার রাত্রিবাস!

বৃষ্টির তালে সমন্বয় ঘটাচ্ছে

স্যাঁতসেঁতে কুনো বাঙের কুহকিনী সুর

বাড়ির ছাদে হাওয়া দোল খাচ্ছে

ঢেকে গেছে মেঘের গর্জনের দায় যা চিরকাল,

ত্রিনয়ণী ভেজা চুলে সখ্য গড়েছে এই শ্রাবণে

কয়েকটা ছাপা শাড়ি, মলিন সুতির শার্ট,

তুলে নিতে এসে হিসেব ভুলভাল করছে...