কালকিনিতে বাবার বিরুদ্ধে সন্তান বিক্রির অভিযোগ

অবশেষে শিশুকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিলেন পুলিশ

মাদারীপুরে কালকিনিতে গোপনে বিক্রি করা আলিফ নামে দুই মাস বয়সের এক শিশুকে উদ্ধার শেষে অসহায় মায়ের কোলে ফিরেয়ে দিলেন থানা পুলিশ।

শিশু আলিফ পৌর এলাকার চর-ঠেঙ্গামারা গ্রামের আশ্রয় কেন্দ্রের বাসিন্দা আলী আজগরের ছেলে। গত মঙ্গলবার সকালে ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়।

কালকিনি থানা পুলিশ ও শিশুর মা জানান, শিশু আলিফের মা কাজল বেগম গত তিনদিন আগে আলিফকে ঘরে ঘুম পাড়িয়ে বাহিরে যায়। এ সুযোগে আলিফের বাবা ও তার দাদি পারুল বেগম মিলে আলিফকে তার মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে গোপনে এক অজানা স্থানে নিয়ে যায়। পরে তারা আলিফকে নাজমা বেগম নামে এক দালালের মাধ্যমে মাদারীপুর জেলার কালিকাপুর গ্রামের রতন হাওলাদারের ছেলে জামাল হোসেনের কাছে গোপনে ১ লাখ টাকার বিনিময় বিক্রি করে দেয়। পরে বিক্রিত ওই এক লাখ টাকা দালাল নাজমা বেগম ও শিশুর বাবা আজগর আলী মিলে ৫০ হাজার টাকা করে ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়। এদিকে শিশু আলিফকে কোথায় খুঁজে না পেয়ে মা কাজল বেগম দিশেহারা হয়ে পড়েন।

পরে ওই শিশুর মা কাজল বেগম কালকিনি থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ দেন। পুলিশ দ্রুত মাদারীপুর জেলায় অভিযান চালিয়ে শিশু আলিফকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে ফিরেয়ে দেন। এবং থানা পুলিশ অভিযুক্ত দাদি পারুল বেগম, জামাল হোসেন ও দালাল নাজমা বেগমকে থানায় নিয়ে আসেন।

শিশুর মা কাজল বেগম কান্না জরিত কন্ঠে বলেন, আমি আগে ধন্যবাদ দেব থানা পুলিশকে, তারা আমার বুকের ধনকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে। আমার স্বামী ও শ্বাশুরী মিলে গোপনে আমার সন্তান বিক্রি করে দিয়েছিল। আমি এখন আপনাদের কী বলবো তা ভাষায় খুঁজে পাচিছ না।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অভিযুক্ত নবজতাকের বাবা আজগর আলীকে এলাকায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। পৌর ২নং ওয়ার্ড মোহাম্মদ বাবুল বেপারী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমার বাড়ির পাশের ঘটনা। কত বড় পাষাণ হলে একজন বাবা দুই মাসের শিশুকে বিক্রি করে দিতে পারে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমি একজন পিতা হিসেবে লজ্জা অনুভব করছি।’

এই ব্যাপারে কালকিনি থানার উপ-পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মারগুব তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, বড় বিষয় হল আমরা শিশু আলিফকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। এটাই সবচেয়ে আনন্দের কথা। শিশুটির কোন ধরনের ক্ষতি হয়নি। সুস্থই রয়েছে।’

বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৩০ ভাদ্র ১৪৩০, ২৮ সফর ১৪৪৫

কালকিনিতে বাবার বিরুদ্ধে সন্তান বিক্রির অভিযোগ

অবশেষে শিশুকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিলেন পুলিশ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, মাদারীপুর

মাদারীপুরে কালকিনিতে গোপনে বিক্রি করা আলিফ নামে দুই মাস বয়সের এক শিশুকে উদ্ধার শেষে অসহায় মায়ের কোলে ফিরেয়ে দিলেন থানা পুলিশ।

শিশু আলিফ পৌর এলাকার চর-ঠেঙ্গামারা গ্রামের আশ্রয় কেন্দ্রের বাসিন্দা আলী আজগরের ছেলে। গত মঙ্গলবার সকালে ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়।

কালকিনি থানা পুলিশ ও শিশুর মা জানান, শিশু আলিফের মা কাজল বেগম গত তিনদিন আগে আলিফকে ঘরে ঘুম পাড়িয়ে বাহিরে যায়। এ সুযোগে আলিফের বাবা ও তার দাদি পারুল বেগম মিলে আলিফকে তার মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে গোপনে এক অজানা স্থানে নিয়ে যায়। পরে তারা আলিফকে নাজমা বেগম নামে এক দালালের মাধ্যমে মাদারীপুর জেলার কালিকাপুর গ্রামের রতন হাওলাদারের ছেলে জামাল হোসেনের কাছে গোপনে ১ লাখ টাকার বিনিময় বিক্রি করে দেয়। পরে বিক্রিত ওই এক লাখ টাকা দালাল নাজমা বেগম ও শিশুর বাবা আজগর আলী মিলে ৫০ হাজার টাকা করে ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়। এদিকে শিশু আলিফকে কোথায় খুঁজে না পেয়ে মা কাজল বেগম দিশেহারা হয়ে পড়েন।

পরে ওই শিশুর মা কাজল বেগম কালকিনি থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ দেন। পুলিশ দ্রুত মাদারীপুর জেলায় অভিযান চালিয়ে শিশু আলিফকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে ফিরেয়ে দেন। এবং থানা পুলিশ অভিযুক্ত দাদি পারুল বেগম, জামাল হোসেন ও দালাল নাজমা বেগমকে থানায় নিয়ে আসেন।

শিশুর মা কাজল বেগম কান্না জরিত কন্ঠে বলেন, আমি আগে ধন্যবাদ দেব থানা পুলিশকে, তারা আমার বুকের ধনকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে। আমার স্বামী ও শ্বাশুরী মিলে গোপনে আমার সন্তান বিক্রি করে দিয়েছিল। আমি এখন আপনাদের কী বলবো তা ভাষায় খুঁজে পাচিছ না।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অভিযুক্ত নবজতাকের বাবা আজগর আলীকে এলাকায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। পৌর ২নং ওয়ার্ড মোহাম্মদ বাবুল বেপারী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমার বাড়ির পাশের ঘটনা। কত বড় পাষাণ হলে একজন বাবা দুই মাসের শিশুকে বিক্রি করে দিতে পারে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমি একজন পিতা হিসেবে লজ্জা অনুভব করছি।’

এই ব্যাপারে কালকিনি থানার উপ-পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মারগুব তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, বড় বিষয় হল আমরা শিশু আলিফকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। এটাই সবচেয়ে আনন্দের কথা। শিশুটির কোন ধরনের ক্ষতি হয়নি। সুস্থই রয়েছে।’