জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারকে পুনরায় নির্বাচিত করার জন্য ভোট চাওয়ার ঘটনার সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চিঠিতে মো. ইমরানকে জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার এবং সংসদ নির্বাচনে সব ধরনের নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়া থেকে বিরত রাখার সুপারিশ করেছে ইসি।
গতকাল ইসির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আশাদুল হকের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ইসি জানায়, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে, জামালপুরের ডিসি ইমরান আহমেদ স্থানীয় সংসদ সদস্য মির্জা আজমের উপস্থিতিতে এক সভায় বক্তব্যে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারকে পুনরায় নির্বাচিত করে ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘একই সঙ্গে তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য মির্জা আজমকে আগামী নির্বাচনের পর মন্ত্রী হিসেবে দেখার আশা প্রকাশ করেছেন। তার বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন উল্লেখ করে ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইসি জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পক্ষপাতহীন নিরপেক্ষ আচরণ করতে হবে। এটি সংবিধান ও সংশ্লিষ্ট সব আইনের অর্থ ও অন্তর্নিহিত চেতনা।
সংবিধানের ১২০ ও ১২৬ নং অনুচ্ছেদ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৫ ও ৯১(গ) নং অনুচ্ছেদসহ আরও বিভিন্ন আইন ও ধারায় এ বিষয়টি সুস্পষ্ট এবং নির্বাচন বিষয়ে ইসির এখতিয়ার শুধু তফসিল ঘোষণার পর নয়, সব সময় থাকে বলে উল্লেখ করেছে কমিশন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেলা প্রশাসকরা সাধারণত রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেন এবং নির্বাচনের সময় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়। ‘এ অবস্থায় সরকার, গণতন্ত্র, নির্বাচন ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা অক্ষুণœ রাখতে মো. ইমরান আহমেদকে ওই ঘটনার সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া এবং সংসদ নির্বাচনে সব ধরনের নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়া থেকে বিরত রাখা সমীচীন হবে’।
ইসি আরও জানায়, একইসঙ্গে জেলা প্রশাসকদের এ ধরনের আচরণ থেকে বিরত থাকতে সতর্কবার্তা দেয়া প্রয়োজন বলে জনপ্রশাসন সচিবকে দেয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার মাদারগঞ্জ পৌরসভার নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামালপুরের ডিসি ইমরান বলেন, ‘উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। যে সরকার এই উন্নয়ন করেছে, এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সেই সরকারকে আবার পুনরায় নির্বাচিত করে, আবার ক্ষমতায় আনতে হবে। এটা হবে আমাদের প্রত্যেকের অঙ্গীকার। আমি এটা মনে করি, আপনারা নিজের চোখে দেখে সরকারের প্রতি অকৃতজ্ঞ হবেন না।’
এর আগে গত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগকে ‘নিজের দল’ উল্লেখ করে আগামী নির্বাচনে দলকে জেতাতে কাজ করতে বলেছিলেন জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ওসি শ্যামল চন্দ্র ধর।
বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৩০ ভাদ্র ১৪৩০, ২৮ সফর ১৪৪৫
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারকে পুনরায় নির্বাচিত করার জন্য ভোট চাওয়ার ঘটনার সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চিঠিতে মো. ইমরানকে জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার এবং সংসদ নির্বাচনে সব ধরনের নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়া থেকে বিরত রাখার সুপারিশ করেছে ইসি।
গতকাল ইসির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আশাদুল হকের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ইসি জানায়, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে, জামালপুরের ডিসি ইমরান আহমেদ স্থানীয় সংসদ সদস্য মির্জা আজমের উপস্থিতিতে এক সভায় বক্তব্যে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারকে পুনরায় নির্বাচিত করে ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘একই সঙ্গে তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য মির্জা আজমকে আগামী নির্বাচনের পর মন্ত্রী হিসেবে দেখার আশা প্রকাশ করেছেন। তার বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন উল্লেখ করে ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইসি জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পক্ষপাতহীন নিরপেক্ষ আচরণ করতে হবে। এটি সংবিধান ও সংশ্লিষ্ট সব আইনের অর্থ ও অন্তর্নিহিত চেতনা।
সংবিধানের ১২০ ও ১২৬ নং অনুচ্ছেদ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৫ ও ৯১(গ) নং অনুচ্ছেদসহ আরও বিভিন্ন আইন ও ধারায় এ বিষয়টি সুস্পষ্ট এবং নির্বাচন বিষয়ে ইসির এখতিয়ার শুধু তফসিল ঘোষণার পর নয়, সব সময় থাকে বলে উল্লেখ করেছে কমিশন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেলা প্রশাসকরা সাধারণত রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেন এবং নির্বাচনের সময় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়। ‘এ অবস্থায় সরকার, গণতন্ত্র, নির্বাচন ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা অক্ষুণœ রাখতে মো. ইমরান আহমেদকে ওই ঘটনার সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া এবং সংসদ নির্বাচনে সব ধরনের নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়া থেকে বিরত রাখা সমীচীন হবে’।
ইসি আরও জানায়, একইসঙ্গে জেলা প্রশাসকদের এ ধরনের আচরণ থেকে বিরত থাকতে সতর্কবার্তা দেয়া প্রয়োজন বলে জনপ্রশাসন সচিবকে দেয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার মাদারগঞ্জ পৌরসভার নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামালপুরের ডিসি ইমরান বলেন, ‘উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। যে সরকার এই উন্নয়ন করেছে, এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সেই সরকারকে আবার পুনরায় নির্বাচিত করে, আবার ক্ষমতায় আনতে হবে। এটা হবে আমাদের প্রত্যেকের অঙ্গীকার। আমি এটা মনে করি, আপনারা নিজের চোখে দেখে সরকারের প্রতি অকৃতজ্ঞ হবেন না।’
এর আগে গত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগকে ‘নিজের দল’ উল্লেখ করে আগামী নির্বাচনে দলকে জেতাতে কাজ করতে বলেছিলেন জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ওসি শ্যামল চন্দ্র ধর।