হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস গুদাম থেকে স্বর্ণ খোয়া যাওয়ার পরই সবাই ধারণা করছিলেন এর সঙ্গে যারা দায়িত্বরত ছিলেন তারা জড়িত। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরই কাস্টমসের ৪ কর্মকর্তা ও ৪ সিপাহিকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। তদন্তের শুরুতেই অনেকটা জাল গুটিয়ে আনে তারা। ৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদে মেলে ৫৫ কেজি স্বর্ণ গায়েবের রহস্য। সর্ষের মধ্যে ভূত খুঁজে পায় পুলিশ। এরমধ্যে মামলার তদন্তভার যায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে। ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা পুলিশের কাছ থেকে ওই ৮ জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
সবমিলিয়ে ১০ দিন হেফাজতে থাকার পর ওই ৮ জনকে স্বর্ণ চুরি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠায় ডিবি পুলিশ। তাদের দেয়া তথ্যে চুরি যাওয়া স্বর্ণের মধ্য থেকে ৯৪ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তারা (এআরও) হলেন- মো. শহিদুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম সাহেদ, আকরাম শেখ ও মো. মাসুম রানা এবং সিপাহিরা হলেন- মো. মোজাম্মেল হক, মো. নিয়ামত হাওলাদার, রেজাউল করিম, আফজাল হোসেন। গতকাল মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান তাদের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে গতকাল নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ বলেন, ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তারা সবাই কাস্টমসের কর্মকর্তা ও সিপাহি। এর আগে তাদেরকে জিম্মায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পরে তাদের হেফাজত থেকে ৯৪ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে। রিমান্ডে আরও তথ্য পাবো বলে আশা করছি। তখন বাকি স্বর্ণ উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, আমরা জানার চেষ্টা করবো তাদের সঙ্গে আরও কারা জড়িত আছে এবং তারা স্বর্ণগুলো কোথায় সরিয়েছে।
স্বর্ণ চুরির এ ঘটনা ঢাকা কাস্টমস হাউজের নজরে আসে ২ সেপ্টেম্বর। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর। বিমানবন্দরের কাস্টম হাউজের নিজস্ব গুদামে দিনভর ইনভেন্টরি শেষে ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরি বা বেহাত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় মামলা হয় অজ্ঞাতদের আসামি করে। পরে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার ৮ জনকে হেফাজতে নেয় থানা পুলিশ। এরপর মামলা ডিবিতে হস্তান্তর হলে, ওই ৮ জনকেও হেফাজতে নেয় সংসস্থাটি। অন্যদিকে, প্রায় ৪৫ কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণ চুরির পুরো ঘটনা তদন্তের জন্য যুগ্ম-কমিশনার মিনহাজ উদ্দীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম গঠন করে কাস্টমস হাউজ। পরে গত সোমবার ঢাকা কাস্টমস হাউস কমিশনার একেএম নুরুল হুদা আজাদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে গ্রেপ্তারকৃত ৪ এআরওকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৩০ ভাদ্র ১৪৩০, ২৮ সফর ১৪৪৫
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস গুদাম থেকে স্বর্ণ খোয়া যাওয়ার পরই সবাই ধারণা করছিলেন এর সঙ্গে যারা দায়িত্বরত ছিলেন তারা জড়িত। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরই কাস্টমসের ৪ কর্মকর্তা ও ৪ সিপাহিকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। তদন্তের শুরুতেই অনেকটা জাল গুটিয়ে আনে তারা। ৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদে মেলে ৫৫ কেজি স্বর্ণ গায়েবের রহস্য। সর্ষের মধ্যে ভূত খুঁজে পায় পুলিশ। এরমধ্যে মামলার তদন্তভার যায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে। ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা পুলিশের কাছ থেকে ওই ৮ জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
সবমিলিয়ে ১০ দিন হেফাজতে থাকার পর ওই ৮ জনকে স্বর্ণ চুরি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠায় ডিবি পুলিশ। তাদের দেয়া তথ্যে চুরি যাওয়া স্বর্ণের মধ্য থেকে ৯৪ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তারা (এআরও) হলেন- মো. শহিদুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম সাহেদ, আকরাম শেখ ও মো. মাসুম রানা এবং সিপাহিরা হলেন- মো. মোজাম্মেল হক, মো. নিয়ামত হাওলাদার, রেজাউল করিম, আফজাল হোসেন। গতকাল মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান তাদের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে গতকাল নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ বলেন, ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তারা সবাই কাস্টমসের কর্মকর্তা ও সিপাহি। এর আগে তাদেরকে জিম্মায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পরে তাদের হেফাজত থেকে ৯৪ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে। রিমান্ডে আরও তথ্য পাবো বলে আশা করছি। তখন বাকি স্বর্ণ উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, আমরা জানার চেষ্টা করবো তাদের সঙ্গে আরও কারা জড়িত আছে এবং তারা স্বর্ণগুলো কোথায় সরিয়েছে।
স্বর্ণ চুরির এ ঘটনা ঢাকা কাস্টমস হাউজের নজরে আসে ২ সেপ্টেম্বর। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর। বিমানবন্দরের কাস্টম হাউজের নিজস্ব গুদামে দিনভর ইনভেন্টরি শেষে ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরি বা বেহাত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় মামলা হয় অজ্ঞাতদের আসামি করে। পরে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার ৮ জনকে হেফাজতে নেয় থানা পুলিশ। এরপর মামলা ডিবিতে হস্তান্তর হলে, ওই ৮ জনকেও হেফাজতে নেয় সংসস্থাটি। অন্যদিকে, প্রায় ৪৫ কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণ চুরির পুরো ঘটনা তদন্তের জন্য যুগ্ম-কমিশনার মিনহাজ উদ্দীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম গঠন করে কাস্টমস হাউজ। পরে গত সোমবার ঢাকা কাস্টমস হাউস কমিশনার একেএম নুরুল হুদা আজাদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে গ্রেপ্তারকৃত ৪ এআরওকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।