রাজধানীর শাহবাগ থানায় নিয়ে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির মেয়াদ ৫ কর্মদিবস বাড়ানো হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হলেও বহালে আছেন আলোচিত অন্য পুলিশ কর্মকর্তা সানজিদা আফরিন নিপা। এমনকি বিভাগীয় তদন্ত চলাকালে বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নিপাসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা নিজেদের মতো করে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হচ্ছেন। যদিও এ নিয়ে খোঁদ ডিএমপি কমিশনারের বারণ রয়েছে। এদিকে রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুনের স্ত্রী এডিসি নিপা গণমাধ্যমে এডিসি হারুনের পক্ষে বক্তব্য দেয়ার পর সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়েছে। নেটিজেনরা নানারকম বক্তব্য তুলে ধরে পোস্ট করছেন নিপা ও হারুনকে জড়িয়ে।
তদন্ত কমিটির সময় বাড়ার বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ফারুক হোসেন বলেন, দুই ছাত্রলীগ নেতাকে থানায় নিয়ে মারধরের ঘটনায় কারা কারা জড়িত সেটি বের করতে আরও ৫ দিন সময় চেয়ে কমিশনারের কাছে আবেদন করে তদন্ত কমিটি। আবেদনের প্রেক্ষিতে কমিশনার আরও ৫ দিন সময় বর্ধিত করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ ঘটনায় নির্ধারিত দুই দিনে তেমন কোন তথ্য বের করতে পারেনি পুলিশের তদন্ত কমিটি। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য নিউমার্কেট জোনের এডিসি শাহেন শাহ জানান, আমরা চেষ্টা করেছি দুই দিনের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করতে। তবে সেটা সম্ভব হয়নি। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ, সাক্ষ্যগ্রহণ, জিজ্ঞাসাবাদসহ অনেক কাজ বাকি রয়েছে। আশা করি বর্ধিত সময়ের মধ্যে তদন্তকাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
গত শনিবার রাতে তুলে নিয়ে শাহবাগ থানা হেফাজতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠে এডিসি হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী দুইজন হলেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম। পরে এ ঘটনায় এডিসি হারুনকে প্রত্যাহার করে প্রথমে ডিএমপির পিওএম বিভাগে, পরে এপিবিএনে বদলি করা হয়। এরপর সাময়িক বরখাস্ত করে প্রথমে পুলিশ সদরদপ্তরে এবং পরে রংপুর রেঞ্জে ডিআইজি’র কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। এরআগেই ডিএমপি সদর দপ্তরের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) আবু ইউসুফকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটির গত মঙ্গলবার তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়।
ঢাবি ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানায়, এডিসি হারুন আরেক নারী পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বারডেম হাসপাতালে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওই সময় নারী কর্মকর্তার স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুন ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান। তাদের সঙ্গে এডিসি হারুনের বাগবিত-া হয়। পরে এডিসি হারুন দুই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাকে শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে যান। সেখানে তাদের ওপর চালানো হয় নির্যাতন। এরপর অবস্থা খারাপ হলে ওই দুজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ ও এডিসি সানজিদা আফরিন দাবি করেছেন, ঘটনার জন্য সানজিদার স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুন দায়ী। ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে তিনিই প্রথম হারুনের ওপর হামলা চালান।
বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৩০ ভাদ্র ১৪৩০, ২৮ সফর ১৪৪৫
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
রাজধানীর শাহবাগ থানায় নিয়ে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির মেয়াদ ৫ কর্মদিবস বাড়ানো হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হলেও বহালে আছেন আলোচিত অন্য পুলিশ কর্মকর্তা সানজিদা আফরিন নিপা। এমনকি বিভাগীয় তদন্ত চলাকালে বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নিপাসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা নিজেদের মতো করে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হচ্ছেন। যদিও এ নিয়ে খোঁদ ডিএমপি কমিশনারের বারণ রয়েছে। এদিকে রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুনের স্ত্রী এডিসি নিপা গণমাধ্যমে এডিসি হারুনের পক্ষে বক্তব্য দেয়ার পর সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়েছে। নেটিজেনরা নানারকম বক্তব্য তুলে ধরে পোস্ট করছেন নিপা ও হারুনকে জড়িয়ে।
তদন্ত কমিটির সময় বাড়ার বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ফারুক হোসেন বলেন, দুই ছাত্রলীগ নেতাকে থানায় নিয়ে মারধরের ঘটনায় কারা কারা জড়িত সেটি বের করতে আরও ৫ দিন সময় চেয়ে কমিশনারের কাছে আবেদন করে তদন্ত কমিটি। আবেদনের প্রেক্ষিতে কমিশনার আরও ৫ দিন সময় বর্ধিত করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ ঘটনায় নির্ধারিত দুই দিনে তেমন কোন তথ্য বের করতে পারেনি পুলিশের তদন্ত কমিটি। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য নিউমার্কেট জোনের এডিসি শাহেন শাহ জানান, আমরা চেষ্টা করেছি দুই দিনের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করতে। তবে সেটা সম্ভব হয়নি। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ, সাক্ষ্যগ্রহণ, জিজ্ঞাসাবাদসহ অনেক কাজ বাকি রয়েছে। আশা করি বর্ধিত সময়ের মধ্যে তদন্তকাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
গত শনিবার রাতে তুলে নিয়ে শাহবাগ থানা হেফাজতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠে এডিসি হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী দুইজন হলেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম। পরে এ ঘটনায় এডিসি হারুনকে প্রত্যাহার করে প্রথমে ডিএমপির পিওএম বিভাগে, পরে এপিবিএনে বদলি করা হয়। এরপর সাময়িক বরখাস্ত করে প্রথমে পুলিশ সদরদপ্তরে এবং পরে রংপুর রেঞ্জে ডিআইজি’র কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। এরআগেই ডিএমপি সদর দপ্তরের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) আবু ইউসুফকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটির গত মঙ্গলবার তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়।
ঢাবি ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানায়, এডিসি হারুন আরেক নারী পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বারডেম হাসপাতালে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওই সময় নারী কর্মকর্তার স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুন ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান। তাদের সঙ্গে এডিসি হারুনের বাগবিত-া হয়। পরে এডিসি হারুন দুই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাকে শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে যান। সেখানে তাদের ওপর চালানো হয় নির্যাতন। এরপর অবস্থা খারাপ হলে ওই দুজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ ও এডিসি সানজিদা আফরিন দাবি করেছেন, ঘটনার জন্য সানজিদার স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুন দায়ী। ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে তিনিই প্রথম হারুনের ওপর হামলা চালান।