শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েই চলেছে বীমা খাতের কোম্পানিগুলো। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার সার্বিক শেয়ারবাজারে দরপতন হলেও বীমা খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। এতে বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে শেয়ারবাজার। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের গতি।
এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে প্রায় তার দ্বিগুণ। এতে সবকয়টি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। তবে দাম বাড়া ও লেনদেনে বীমা খাত দাপট দেখানোর কারণে ডিএসইতে প্রায় সাতশ’ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।
এর আগে সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। তবে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায় বেশিরভাগ বীমা কোম্পানি। গত মঙ্গলবার প্রায় সবকয়টি বীমা কোম্পানির শেয়ারের দামে বড় উত্থান হওয়ায় মূল্যসূচকেও বড় উত্থান হয়। গত বুধবারও বেশিরভাগ বীমা কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ে।
এ পরিস্থিতিতে গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকয়টি বীমা কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতের ওপরও। ফলে লেনদেনের ৪০ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
লেনদেনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ বীমা কোম্পানি দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখলেও অন্য খাতগুলো তা পারেনি। লেনদেনের শেষদিকে অন্য খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমে যায়। এতে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে কমে সবকয়টি মূল্যসূচক।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৫৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৭টির এবং ১৬৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বীমা কোম্পানি রয়েছে ৩৯টি। আর দাম কমার তালিকায় বীমা কোম্পানি আছে ১১টি। অর্থাৎ দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬৭ শতাংশ বীমা কোম্পানি।
এমনকি ডিএসইতে দাম বাড়ার শীর্ষ দশটি স্থানের আটটিই রয়েছে বীমা কোম্পানির দখলে। এর মধ্যে চারটি বীমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে। এই চার প্রতিষ্ঠান হলো- প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স এবং ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স। এছাড়া আরও পাঁচটি বীমা কোম্পানির শেয়ারের দাম ৫ শতাংশের ওপরে বেড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স, নিটল ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স। বীমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এমন দাপট দেখালেও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অবশ্য সবকয়টি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের গতি। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৯৭ কোটি ৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬৬২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। সেই হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৩৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখানোর পাশাপাশি লেনদেনেও বীমা খাতের আধিপত্য ছিল। ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির সাতটিই বীমা। অবশ্য এরপরও গত কয়েক কার্যদিবসের মতো লেনদেনের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৩ কোটি ৪২ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
পরের দুই স্থানও বীমার দখলে। এর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের ২৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জেমিনি সি ফুড, মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স, গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৪৮ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৮টির এবং ৫২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ১ আশ্বিন ১৪৩০, ২৯ সফর ১৪৪৫
অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক
শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েই চলেছে বীমা খাতের কোম্পানিগুলো। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার সার্বিক শেয়ারবাজারে দরপতন হলেও বীমা খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। এতে বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে শেয়ারবাজার। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের গতি।
এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে প্রায় তার দ্বিগুণ। এতে সবকয়টি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। তবে দাম বাড়া ও লেনদেনে বীমা খাত দাপট দেখানোর কারণে ডিএসইতে প্রায় সাতশ’ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।
এর আগে সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। তবে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায় বেশিরভাগ বীমা কোম্পানি। গত মঙ্গলবার প্রায় সবকয়টি বীমা কোম্পানির শেয়ারের দামে বড় উত্থান হওয়ায় মূল্যসূচকেও বড় উত্থান হয়। গত বুধবারও বেশিরভাগ বীমা কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ে।
এ পরিস্থিতিতে গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকয়টি বীমা কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতের ওপরও। ফলে লেনদেনের ৪০ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
লেনদেনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ বীমা কোম্পানি দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখলেও অন্য খাতগুলো তা পারেনি। লেনদেনের শেষদিকে অন্য খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমে যায়। এতে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে কমে সবকয়টি মূল্যসূচক।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৫৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৭টির এবং ১৬৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বীমা কোম্পানি রয়েছে ৩৯টি। আর দাম কমার তালিকায় বীমা কোম্পানি আছে ১১টি। অর্থাৎ দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬৭ শতাংশ বীমা কোম্পানি।
এমনকি ডিএসইতে দাম বাড়ার শীর্ষ দশটি স্থানের আটটিই রয়েছে বীমা কোম্পানির দখলে। এর মধ্যে চারটি বীমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে। এই চার প্রতিষ্ঠান হলো- প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স এবং ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স। এছাড়া আরও পাঁচটি বীমা কোম্পানির শেয়ারের দাম ৫ শতাংশের ওপরে বেড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স, নিটল ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স। বীমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এমন দাপট দেখালেও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অবশ্য সবকয়টি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের গতি। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৯৭ কোটি ৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬৬২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। সেই হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৩৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখানোর পাশাপাশি লেনদেনেও বীমা খাতের আধিপত্য ছিল। ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির সাতটিই বীমা। অবশ্য এরপরও গত কয়েক কার্যদিবসের মতো লেনদেনের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৩ কোটি ৪২ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
পরের দুই স্থানও বীমার দখলে। এর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের ২৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জেমিনি সি ফুড, মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স, গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৪৮ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৮টির এবং ৫২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।