মাদারীপুরে সাব-রেজিস্ট্রার নেই তিন মাস, ভোগান্তিতে দলিল গ্রহীতারা

মাদারীপুর সদর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার পদে তিন মাস ধরে কাউকে নিয়োগ না দেওয়ায় উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ের বাসিন্দারা জমির দলিল করতে চরম ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে। সরকার আরও কতদিন পরে সাব রেজিস্ট্রার পদে কাউকে নিয়োগ দেবে তার কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা বলতে পারছেন না জেলা রেজিস্ট্রার। তবে তিনি জানালেন কর্তৃপক্ষের কাছে জনবল চেয়ে আবেদন করা হলেও কাউকে এখানে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। সাব রেজিস্ট্রার পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হলে দলিল করতে ভোগান্তি কমে আসেব। এই আপদকালীন সময়ে শিবচর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার সপ্তাহে তিনদিন মাদারীপুরে এসে জমির দলিল সম্পাদনের কাজ করেন।

মাদারীপুর সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের ১২ মার্চ সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার শর্মিলা আহমেদ শম্পা বদলি হয়ে গেলে ওই মাসেরই ২৩ তারিখে সুমন ঘোষ মাদারীপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু তিনি জুন মাসেই আবার অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যান। এরপর থেকে মাদারীপুর সদর সাব- রেজিস্ট্রার পদে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। কিন্তু সদর উপজেলার পৌরসভাসহ ১৫টি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের জমির দলিল সম্পাদনের বিষয়টি চিন্তা করে ওই সময়ের দায়িত্বে থাকা জেলা রেজিস্ট্রার রুহুল কুদ্দুস রাজৈর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে সপ্তাহে একদিন সদর সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে দলিল সম্পাদনের দায়িত্ব দেন। কিন্তু তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে অসমর্থ হন। এরমধ্যে জেলা রেজিস্ট্রার রুহুল কুদ্দুসও বদলি হয়ে চলে যান। গত আগস্ট মাসে মাদারীপুর জেলা রেজিস্ট্রার পদে নতুন যোগ দেন মনিরুল হাসান। তিনি এসে শিবচর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমানকে সদর উপজেলায় সাব রেজিস্ট্রার হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেন। কিন্তু শিবচর উপজেলা জেলা শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় প্রতিদিন জেলা সদরে এসে জমির দলিল সম্পাদন করা তার পক্ষে সম্ভব হয় না। তিনি সপ্তাহে এক থেকে দুইদিন এসে দলিল সম্পাদনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ দলিল করতে এসে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা নরেশ মন্ডল। তিনি এসেছেন সদর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে গত সোমবার এসেছেন তার কাকাতো ভাইয়ের দশ কাঠা জমি দলিল সম্পাদন করতে। কিন্তু সাব-রেজিস্ট্রার উপস্থিত না থাকায় দলিল করতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘শহর থেকে আমাগো বাড়ি প্রায় পচিশ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু রেজিস্ট্রি অফিসে এসে দেখি কর্মকর্তা নেই। তাই দলিল করতে পারলাম না। আগামী বৃহস্পতিবার তিনি আসবেন। তখন সিরিয়াল যদি পাই, তাহলে দলিল করতে পারবো। আমাদের এখানে দ্রুত সাব-রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ দেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।-একই ধরনের অভিযোগ করলেন সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মাসুদুর রহমান।

শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ১ আশ্বিন ১৪৩০, ২৯ সফর ১৪৪৫

মাদারীপুরে সাব-রেজিস্ট্রার নেই তিন মাস, ভোগান্তিতে দলিল গ্রহীতারা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, মাদারীপুর

মাদারীপুর সদর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার পদে তিন মাস ধরে কাউকে নিয়োগ না দেওয়ায় উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ের বাসিন্দারা জমির দলিল করতে চরম ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে। সরকার আরও কতদিন পরে সাব রেজিস্ট্রার পদে কাউকে নিয়োগ দেবে তার কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা বলতে পারছেন না জেলা রেজিস্ট্রার। তবে তিনি জানালেন কর্তৃপক্ষের কাছে জনবল চেয়ে আবেদন করা হলেও কাউকে এখানে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। সাব রেজিস্ট্রার পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হলে দলিল করতে ভোগান্তি কমে আসেব। এই আপদকালীন সময়ে শিবচর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার সপ্তাহে তিনদিন মাদারীপুরে এসে জমির দলিল সম্পাদনের কাজ করেন।

মাদারীপুর সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের ১২ মার্চ সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার শর্মিলা আহমেদ শম্পা বদলি হয়ে গেলে ওই মাসেরই ২৩ তারিখে সুমন ঘোষ মাদারীপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু তিনি জুন মাসেই আবার অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যান। এরপর থেকে মাদারীপুর সদর সাব- রেজিস্ট্রার পদে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। কিন্তু সদর উপজেলার পৌরসভাসহ ১৫টি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের জমির দলিল সম্পাদনের বিষয়টি চিন্তা করে ওই সময়ের দায়িত্বে থাকা জেলা রেজিস্ট্রার রুহুল কুদ্দুস রাজৈর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে সপ্তাহে একদিন সদর সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে দলিল সম্পাদনের দায়িত্ব দেন। কিন্তু তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে অসমর্থ হন। এরমধ্যে জেলা রেজিস্ট্রার রুহুল কুদ্দুসও বদলি হয়ে চলে যান। গত আগস্ট মাসে মাদারীপুর জেলা রেজিস্ট্রার পদে নতুন যোগ দেন মনিরুল হাসান। তিনি এসে শিবচর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমানকে সদর উপজেলায় সাব রেজিস্ট্রার হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেন। কিন্তু শিবচর উপজেলা জেলা শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় প্রতিদিন জেলা সদরে এসে জমির দলিল সম্পাদন করা তার পক্ষে সম্ভব হয় না। তিনি সপ্তাহে এক থেকে দুইদিন এসে দলিল সম্পাদনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ দলিল করতে এসে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা নরেশ মন্ডল। তিনি এসেছেন সদর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে গত সোমবার এসেছেন তার কাকাতো ভাইয়ের দশ কাঠা জমি দলিল সম্পাদন করতে। কিন্তু সাব-রেজিস্ট্রার উপস্থিত না থাকায় দলিল করতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘শহর থেকে আমাগো বাড়ি প্রায় পচিশ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু রেজিস্ট্রি অফিসে এসে দেখি কর্মকর্তা নেই। তাই দলিল করতে পারলাম না। আগামী বৃহস্পতিবার তিনি আসবেন। তখন সিরিয়াল যদি পাই, তাহলে দলিল করতে পারবো। আমাদের এখানে দ্রুত সাব-রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ দেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।-একই ধরনের অভিযোগ করলেন সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মাসুদুর রহমান।