বায়ুমান উন্নয়নে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি

রাজধানী ঢাকা বায়ুদূষণে দীর্ঘদিন ধরেই আক্রান্ত । দূষণ রোধে সরকার বিভিন্ন সময় নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তা রোধ করা সম্ভব হয়নি। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বায়ু দূষণ রোধে এখনই কার্যকর ভূমিকা না নেয়া গেলে ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তন আরও বেড়ে যাবে। এ থেকে মুক্তি পেতে বায়ু মান উন্নয়নে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘ মেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সেদিক থেকে এই তিন মেয়াদি পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে জানিয়েছে বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) নামে একটি সংগঠন।

স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপ বিষয়ে বক্তারা বলেন, নির্মাণকাজের সময় নির্মাণ স্থান ঘেরাও দিয়ে রাখতে হবে ও নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনের সময় ঢেকে নিতে হবে। এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে দূষিত শহরগুলোতে প্রতিদিন দুই থেকে তিন ঘণ্টা পরপর পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি রাস্তায় ধূলা সংগ্রহের জন্য সাকশন ট্রাকের ব্যবহার করা যেতে পারে। অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ করে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বিকল্প ইটের প্রচলন বাড়ানোর পাশাপাশি দূষণ রোধে নবায়নযোগ্য শক্তির বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।

গতকাল কারওয়ান বাজার ডেইলি স্টার ভবনে আয়োজিত ‘নির্মল বায়ু নিশ্চিত করণ : প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে বিষয়টি জানানো হয়। আলোচনা সভাটি যৌথভাবে আয়োজন করে ক্যাপস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ

বক্তারা বলেন, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রচুর পরিমাণ গাছ লাগাতে হবে এবং ছাদ বাগান করার জন্য সবাইকে উৎসাহিত করতে হবে, দূষিত শহরগুলোর আশেপাশে জলাধার সংরক্ষণ করতে হবে। এছাড়া আলাদা সাইকেল লেনের ব্যবস্থা করতে হবে। আগুনে পোড়ানো ইটের বিকল্প হিসেবে সেন্ড বক্স এর ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বাড়াতে হবে। সিটি গভর্নেন্স এর প্রচলনের মাধ্যমে উন্নয়ন মূলক কার্যকলাপের সমন্বয় সাধন করতে হবে। সেবা সংস্থার উন্নয়ন কর্মকান্ড স্বল্প সময়ে সম্পন্ন করতে হবে।

নির্মল বায়ু আইন-২০১৯ যতদ্রুত সম্ভব প্রণয়ন করতে হবে। পরিবেশ সংরক্ষণ ও সচেতনতা তৈরির জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে। নিয়মিত বায়ু পর্যবেক্ষণ স্টেশন (ক্যামস) এর ব্যাপ্তি বাড়িয়ে ঢাকা শহরের সব এলাকাকে এর আওতাধীন করতে হবে। এছাড়াও বায়ুদূষণের পূর্বাভাস দেয়ার প্রচলন করতে হবে। পরিবেশ ক্যাডার সার্ভিস এবং পরিবেশ আদালত চালু ও কার্যকর করতে হবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা যেমন বলি সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদের ক্ষেত্রে আমাদের জিরো টলারেন্স, তেমনি বায়ু দূষণের ক্ষেত্রেও একইভাবে জিরো টলারেন্সনীতিতে আমাদের চলতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে শুধু পরিবেশ অধিদপ্তর নয়, এটা রোধে সার্বিক বিষয় সবার দিক থেকে পদক্ষেপ গ্রহণ করাটা জরুরি। কারণ এককভাবে পরিবেশ অধিদপ্তর এখানে কিছুই করতে পারবে না। বায়ুদূষণ একটি নীরব ঘাতক। এটার খারাপ প্রভাব আমরা প্রকাশ্যে বা সরাসরি দেখতে পাই না। কেউ অস্ত্র নিয়ে আমাদের দিকে এগিয়ে আসলে, ব্রাশ ফায়ার করতে চাইলে এটা আমি তাৎক্ষণিক দেখতে পাই, কিন্তু এই বায়ু দূষণ যে কীভাবে নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করছে এটা আমরা বুঝতেই পারছি না।’

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘এটা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে অনেক কাজ করার আছে। শুধু পরিবেশ অধিদপ্তর এককভাবে এ কাজ করতে পারবে না। উন্নয়নের সংজ্ঞার বিষয়ে আমরা যেভাবে সবাই একমত হই। তেমনি বায়ুদূষণ রোধে আমাদের সবার একমত হয়ে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। ২০৪১ সালে আমাদের যে ভিশন আছে, উন্নয়নের ভিশন সেটার সঙ্গে এই বায়ু দূষণ রোধটাকেও রাখতে হবে। বায়ুদূষণ কেন্দ্রিক আমাদের অনেক কাজ বাকি এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। তবে আমাদের এই বায়ুদূষণকে রোধ করতে হবে এজন্য যা যা করণীয় সমস্ত কিছুই যথাযথভাবে আমাদের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘বিদ্যুতে আমরা সবাই উপকারভোগী অথচ বায়ুদূষণের কথা এলেই কেন যেন সবাই বিদ্যুৎকে সবার আগে দোষারোপ করছি। আমরা এখন রিনয়েবল এনার্জিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। কয়লাভিত্তিক অধিকাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে কাজ করছি। বায়ুদূষণ রোধে প্রকৃতপক্ষে আমাদের নবায়নযোগ্য শক্তির বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।’

‘আমাদের জমির স্বল্পতা বিবেচনা করে কিভাবে কম জায়গায় অধিক সৌর শক্তির বিদ্যুৎ পাওয়া যায় সেই টেকনলজি ব্যবহার করার চেষ্টা করছি। এছাড়া বাণিজ্যিক, আবাসিক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাদ ব্যবহার করে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো যায় সেই কাজ করছি। এছাড়া নদী মাত্রিক দেশে ভাসমান সৌর প্লান স্থাপন ও দেশের ডিজেল চালিত সেচ পাম্পগুলোকে সৌর বিদ্যুত প্রকল্পে রুপান্তর করছি। এছাড়া কক্সবাজারে একটি বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করেছি। গভীর সমুদ্রে কিভাবে বায়ু বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে কাজ চলছে।’

জাতীয় সংলাপে মূল বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ‘বায়ুমান উন্নয়ন না করলে ভবিষ্যতে আমাদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। বায়ুমান উন্নয়নে জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প হিসেবে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সৌর, বায়ু ও জলবিদ্যুৎ শক্তির মতো নবায়নযোগ্য শক্তি প্রযুক্তির অন্যতম প্রধান সুবিধা হল বায়ুমন্ডলে ক্ষতিকারক গ্রিনহাউস গ্যাস ও বায়ুদূষন নিঃসরণ ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদন করার ক্ষমতা।’

ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশের (আইএবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকীর সভাপতিত্বে ও ড. কামরুজ্জমান মজুমদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের সদস্য আহসান আদেলুর রহমান আদেল, অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল, সুইডেন দূতাবাস বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের ফাস্ট সেক্রেটারি ড্যানিয়েল নোভাক, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন প্রমুখ।

শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ১ আশ্বিন ১৪৩০, ২৯ সফর ১৪৪৫

বায়ুমান উন্নয়নে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

ক্যাপস-এর আলোচনা সভায় বক্তরা -সংবাদ

রাজধানী ঢাকা বায়ুদূষণে দীর্ঘদিন ধরেই আক্রান্ত । দূষণ রোধে সরকার বিভিন্ন সময় নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তা রোধ করা সম্ভব হয়নি। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বায়ু দূষণ রোধে এখনই কার্যকর ভূমিকা না নেয়া গেলে ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তন আরও বেড়ে যাবে। এ থেকে মুক্তি পেতে বায়ু মান উন্নয়নে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘ মেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সেদিক থেকে এই তিন মেয়াদি পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে জানিয়েছে বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) নামে একটি সংগঠন।

স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপ বিষয়ে বক্তারা বলেন, নির্মাণকাজের সময় নির্মাণ স্থান ঘেরাও দিয়ে রাখতে হবে ও নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনের সময় ঢেকে নিতে হবে। এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে দূষিত শহরগুলোতে প্রতিদিন দুই থেকে তিন ঘণ্টা পরপর পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি রাস্তায় ধূলা সংগ্রহের জন্য সাকশন ট্রাকের ব্যবহার করা যেতে পারে। অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ করে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বিকল্প ইটের প্রচলন বাড়ানোর পাশাপাশি দূষণ রোধে নবায়নযোগ্য শক্তির বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।

গতকাল কারওয়ান বাজার ডেইলি স্টার ভবনে আয়োজিত ‘নির্মল বায়ু নিশ্চিত করণ : প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে বিষয়টি জানানো হয়। আলোচনা সভাটি যৌথভাবে আয়োজন করে ক্যাপস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ

বক্তারা বলেন, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রচুর পরিমাণ গাছ লাগাতে হবে এবং ছাদ বাগান করার জন্য সবাইকে উৎসাহিত করতে হবে, দূষিত শহরগুলোর আশেপাশে জলাধার সংরক্ষণ করতে হবে। এছাড়া আলাদা সাইকেল লেনের ব্যবস্থা করতে হবে। আগুনে পোড়ানো ইটের বিকল্প হিসেবে সেন্ড বক্স এর ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বাড়াতে হবে। সিটি গভর্নেন্স এর প্রচলনের মাধ্যমে উন্নয়ন মূলক কার্যকলাপের সমন্বয় সাধন করতে হবে। সেবা সংস্থার উন্নয়ন কর্মকান্ড স্বল্প সময়ে সম্পন্ন করতে হবে।

নির্মল বায়ু আইন-২০১৯ যতদ্রুত সম্ভব প্রণয়ন করতে হবে। পরিবেশ সংরক্ষণ ও সচেতনতা তৈরির জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে। নিয়মিত বায়ু পর্যবেক্ষণ স্টেশন (ক্যামস) এর ব্যাপ্তি বাড়িয়ে ঢাকা শহরের সব এলাকাকে এর আওতাধীন করতে হবে। এছাড়াও বায়ুদূষণের পূর্বাভাস দেয়ার প্রচলন করতে হবে। পরিবেশ ক্যাডার সার্ভিস এবং পরিবেশ আদালত চালু ও কার্যকর করতে হবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা যেমন বলি সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদের ক্ষেত্রে আমাদের জিরো টলারেন্স, তেমনি বায়ু দূষণের ক্ষেত্রেও একইভাবে জিরো টলারেন্সনীতিতে আমাদের চলতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে শুধু পরিবেশ অধিদপ্তর নয়, এটা রোধে সার্বিক বিষয় সবার দিক থেকে পদক্ষেপ গ্রহণ করাটা জরুরি। কারণ এককভাবে পরিবেশ অধিদপ্তর এখানে কিছুই করতে পারবে না। বায়ুদূষণ একটি নীরব ঘাতক। এটার খারাপ প্রভাব আমরা প্রকাশ্যে বা সরাসরি দেখতে পাই না। কেউ অস্ত্র নিয়ে আমাদের দিকে এগিয়ে আসলে, ব্রাশ ফায়ার করতে চাইলে এটা আমি তাৎক্ষণিক দেখতে পাই, কিন্তু এই বায়ু দূষণ যে কীভাবে নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করছে এটা আমরা বুঝতেই পারছি না।’

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘এটা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে অনেক কাজ করার আছে। শুধু পরিবেশ অধিদপ্তর এককভাবে এ কাজ করতে পারবে না। উন্নয়নের সংজ্ঞার বিষয়ে আমরা যেভাবে সবাই একমত হই। তেমনি বায়ুদূষণ রোধে আমাদের সবার একমত হয়ে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। ২০৪১ সালে আমাদের যে ভিশন আছে, উন্নয়নের ভিশন সেটার সঙ্গে এই বায়ু দূষণ রোধটাকেও রাখতে হবে। বায়ুদূষণ কেন্দ্রিক আমাদের অনেক কাজ বাকি এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। তবে আমাদের এই বায়ুদূষণকে রোধ করতে হবে এজন্য যা যা করণীয় সমস্ত কিছুই যথাযথভাবে আমাদের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘বিদ্যুতে আমরা সবাই উপকারভোগী অথচ বায়ুদূষণের কথা এলেই কেন যেন সবাই বিদ্যুৎকে সবার আগে দোষারোপ করছি। আমরা এখন রিনয়েবল এনার্জিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। কয়লাভিত্তিক অধিকাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে কাজ করছি। বায়ুদূষণ রোধে প্রকৃতপক্ষে আমাদের নবায়নযোগ্য শক্তির বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।’

‘আমাদের জমির স্বল্পতা বিবেচনা করে কিভাবে কম জায়গায় অধিক সৌর শক্তির বিদ্যুৎ পাওয়া যায় সেই টেকনলজি ব্যবহার করার চেষ্টা করছি। এছাড়া বাণিজ্যিক, আবাসিক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাদ ব্যবহার করে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো যায় সেই কাজ করছি। এছাড়া নদী মাত্রিক দেশে ভাসমান সৌর প্লান স্থাপন ও দেশের ডিজেল চালিত সেচ পাম্পগুলোকে সৌর বিদ্যুত প্রকল্পে রুপান্তর করছি। এছাড়া কক্সবাজারে একটি বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করেছি। গভীর সমুদ্রে কিভাবে বায়ু বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে কাজ চলছে।’

জাতীয় সংলাপে মূল বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ‘বায়ুমান উন্নয়ন না করলে ভবিষ্যতে আমাদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। বায়ুমান উন্নয়নে জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প হিসেবে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সৌর, বায়ু ও জলবিদ্যুৎ শক্তির মতো নবায়নযোগ্য শক্তি প্রযুক্তির অন্যতম প্রধান সুবিধা হল বায়ুমন্ডলে ক্ষতিকারক গ্রিনহাউস গ্যাস ও বায়ুদূষন নিঃসরণ ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদন করার ক্ষমতা।’

ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশের (আইএবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকীর সভাপতিত্বে ও ড. কামরুজ্জমান মজুমদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের সদস্য আহসান আদেলুর রহমান আদেল, অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল, সুইডেন দূতাবাস বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের ফাস্ট সেক্রেটারি ড্যানিয়েল নোভাক, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন প্রমুখ।