কালকিনিতে সরকারি খাল দখল করে বালু ভরাটের অভিযোগ

মাদারীপুরের কালকিনি পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেলোয়ার বেপারীর বিরুদ্ধ সরকারি খাল দখল করে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। তবে দেলোয়ার বেপারী খাল ভরাটের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন তিনি এই সম্পত্তি (খালের ভিপি সম্পত্তি) দলিল মূলে ক্রয় করে বালু ভরাট করছেন।

সরেজমিন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলা পরিষদের অফিস সহায়ক আবদুর রহমান চাকুরীতে থাকাকালীন সময়ে ১৯৯৮ সালে কালকিনি উপজেলার উত্তর রাজদী মৌজার ৭৮ নং খতিয়ানের ১১১০ নং দাগের ১০ শতাংশ সরকারি খাস জমি সরকারের কাছ থেকে লিজ নেন। ওই জমির পূর্ব পাশ দিয়ে একটি সরকারি খাল রয়েছে। জমির লিজ গ্রহণকারী আবদুর রহমান মারা গেলে সম্প্রতি ওই জমি তার ওয়ারিশগণ নিজেদের নামে খাস জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে দলিল করে কালকিনি পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বেপারীর কাছে দলিলমূলে ১০ শতাংশ বিক্রি করে দেন। ক্রয়কৃত ১০ শতাংশ জমিসহ নিজের সুবিধার্থে পাশের সরকারি খালের মধ্যখানে বাঁশ ও নেট দিয়ে পাইলিং করে গত এক সপ্তাহ ধরে পৌর স্বেচছাসেবক লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদী থেকে বালু এনে ভরাট করছেন। বিষয়টি স্থানীয়রা উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করলে কালকিনি উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি কায়সুর রহমান মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে মঙ্গলবার দুপুরে ড্রেজারের পাইপ ভাংচুর করে এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেন। কিন্তু এতেও থেমে নেই স্বেচছাসেবক লীগ নেতার বালু ভরাটের কাজ। বৃহস্পতিবার দুপুরে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মোবাইল কোর্টে ভেঙে ফেলা ড্রেজারের পাইপগুলোকে আবারো মেরামত করে নতুন করে দ্বিতীয় দফায় বালু ফেলার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে কালকিনি পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বেপারী বলেন, ‘আবদুর রহমানের উত্তরাধিকারদের কাছ থেকে দলিল মূলে ১০ শতাংশ জমি ক্রয় করেছি। সেখানে বালু ফেলছি। খালের ভেতরে বালু ফেলছি না।’

খালের মধ্যে পাইলিং করেছেন কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘ওখান থেকে কিছু মাটি আগে তোলার কারণে খাল মনে হচেছ। আসলে ওটা খাল নয়। আমার ক্রয় করা জমি। সেটা এখন খালের মত মনে হলে আমার তো করার কিছু নেই।’

খাস জমি বিক্রির বিষয়ে আবদুর রহমানের ছেলে রেজাউল করিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার আব্বা খাস জমি বন্দোবস্ত নিয়েছিল। কিন্তু এটা আমরা ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে লিজ নেয়ার কারণে জমিটি আমরা নিজেদের নামে দলিল করে বিক্রি করেছি। তবে খালের ভিতরে দেলোয়ার ভাই বালু ফেলতেছি কি না সেটি আমি বলতে পারছি না। খালের ভিতরে তার বালু ফেলার কথা নয়।’

খাল ভরাটের বিষয় জানতে চাইলে কালকিনি উপজেলা ভূমি সহকারী কমিশনার কায়সুর রহমান বলেন,‘বুধবার দুপুরে আমরা ওই এলাকায় গিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এক লাখ টাকা জরিমানাসহ ড্রেজার বন্ধ করেছি এবং আমরা খালের জমি সার্ভেয়ার দিয়ে সার্ভে করে দেব। যাতে কেউ খালের জমি ভরাট করতে না পারে।

এই কথার সম্পুরক প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয় বালু ভরাটের কাজ তো আবার শুরু হয়ে যাচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভরাটের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। এই প্রশ্নের উত্তরে কায়সুর রহমান বলেন,‘আমরা দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেবো।’

রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৩ আশ্বিন ১৪৩০, ০১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

কালকিনিতে সরকারি খাল দখল করে বালু ভরাটের অভিযোগ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, মাদারীপুর

image

মাদারীপুর : এভাবেই বালু দিয়ে খাল ভরাট করা হয়েছে -সংবাদ

মাদারীপুরের কালকিনি পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেলোয়ার বেপারীর বিরুদ্ধ সরকারি খাল দখল করে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। তবে দেলোয়ার বেপারী খাল ভরাটের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন তিনি এই সম্পত্তি (খালের ভিপি সম্পত্তি) দলিল মূলে ক্রয় করে বালু ভরাট করছেন।

সরেজমিন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলা পরিষদের অফিস সহায়ক আবদুর রহমান চাকুরীতে থাকাকালীন সময়ে ১৯৯৮ সালে কালকিনি উপজেলার উত্তর রাজদী মৌজার ৭৮ নং খতিয়ানের ১১১০ নং দাগের ১০ শতাংশ সরকারি খাস জমি সরকারের কাছ থেকে লিজ নেন। ওই জমির পূর্ব পাশ দিয়ে একটি সরকারি খাল রয়েছে। জমির লিজ গ্রহণকারী আবদুর রহমান মারা গেলে সম্প্রতি ওই জমি তার ওয়ারিশগণ নিজেদের নামে খাস জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে দলিল করে কালকিনি পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বেপারীর কাছে দলিলমূলে ১০ শতাংশ বিক্রি করে দেন। ক্রয়কৃত ১০ শতাংশ জমিসহ নিজের সুবিধার্থে পাশের সরকারি খালের মধ্যখানে বাঁশ ও নেট দিয়ে পাইলিং করে গত এক সপ্তাহ ধরে পৌর স্বেচছাসেবক লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদী থেকে বালু এনে ভরাট করছেন। বিষয়টি স্থানীয়রা উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করলে কালকিনি উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি কায়সুর রহমান মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে মঙ্গলবার দুপুরে ড্রেজারের পাইপ ভাংচুর করে এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেন। কিন্তু এতেও থেমে নেই স্বেচছাসেবক লীগ নেতার বালু ভরাটের কাজ। বৃহস্পতিবার দুপুরে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মোবাইল কোর্টে ভেঙে ফেলা ড্রেজারের পাইপগুলোকে আবারো মেরামত করে নতুন করে দ্বিতীয় দফায় বালু ফেলার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে কালকিনি পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বেপারী বলেন, ‘আবদুর রহমানের উত্তরাধিকারদের কাছ থেকে দলিল মূলে ১০ শতাংশ জমি ক্রয় করেছি। সেখানে বালু ফেলছি। খালের ভেতরে বালু ফেলছি না।’

খালের মধ্যে পাইলিং করেছেন কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘ওখান থেকে কিছু মাটি আগে তোলার কারণে খাল মনে হচেছ। আসলে ওটা খাল নয়। আমার ক্রয় করা জমি। সেটা এখন খালের মত মনে হলে আমার তো করার কিছু নেই।’

খাস জমি বিক্রির বিষয়ে আবদুর রহমানের ছেলে রেজাউল করিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার আব্বা খাস জমি বন্দোবস্ত নিয়েছিল। কিন্তু এটা আমরা ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে লিজ নেয়ার কারণে জমিটি আমরা নিজেদের নামে দলিল করে বিক্রি করেছি। তবে খালের ভিতরে দেলোয়ার ভাই বালু ফেলতেছি কি না সেটি আমি বলতে পারছি না। খালের ভিতরে তার বালু ফেলার কথা নয়।’

খাল ভরাটের বিষয় জানতে চাইলে কালকিনি উপজেলা ভূমি সহকারী কমিশনার কায়সুর রহমান বলেন,‘বুধবার দুপুরে আমরা ওই এলাকায় গিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এক লাখ টাকা জরিমানাসহ ড্রেজার বন্ধ করেছি এবং আমরা খালের জমি সার্ভেয়ার দিয়ে সার্ভে করে দেব। যাতে কেউ খালের জমি ভরাট করতে না পারে।

এই কথার সম্পুরক প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয় বালু ভরাটের কাজ তো আবার শুরু হয়ে যাচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভরাটের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। এই প্রশ্নের উত্তরে কায়সুর রহমান বলেন,‘আমরা দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেবো।’