বেসরকারিভাবে বেড়েছে রেশম কারখানা, বাড়ছে উদ্যোক্তাৃ

প্রাচীনকাল থেকেই রাজশাহী রেশম সিল্কের জন্য বিখ্যাত। দেশে-বিদেশে রয়েছে রাজশাহীর রেশমশিল্পের সুনাম। রাজশাহী ঐতিহ্যবাহী রেশম শিল্পের উন্নয়নের ফলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যেমন বৃদ্ধি করা যায় তেমনি ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। এ শিল্পই হতে পারে বাংলাদেশেকে বিশ্বে পরিচিত করার মাধ্যম। সেই প্রাচীনকাল থেকে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে রাজশাহীর রেশম শিল্প। রাজশাহীর সিল্কের শাড়ি দেশে-বিদেশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে।

রেশম বাবসায়ীরা জানান, বর্তমানে বেসরকারি উদ্যোগে স্থাপিত রেশম কারখানা রাজশাহী আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েছে উদ্যোক্তা। দিনের পর দিন রেশম এর মান ও চাহিদা বাড়ছে, এবং এই বৃদ্ধির সঙ্গে রাজশাহীতে রেশম কারখানা নতুন উৎপাদনের দিকে এগিয়ে আসছে। চমৎকার সিল্কের শহরের উন্নত অর্থনৈতিক অবস্থা সাধারণ মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

উদ্যোক্তারা বলছেন, রাজশাহী রেশম সিল্কের বাজার সম্প্রসারণ বেসরকারি উদ্যোগে কারখানার বৃদ্ধি বাংলাদেশের বস্ত শিল্পের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এগিয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে উন্নত এবং স্থানীয় শিল্পের সবচেয়ে গর্বময় এই সিল্ক প্রসারিত হচ্ছে এবং বাংলাদেশের নাম এবং মূল্যমান বাড়িয়ে দিচ্ছে।

১৯৬১ সালে সরকারিভাবে রাজশাহীতে প্রতিষ্ঠা হয় রেশম কারখানা । প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশে-বিদেশে রাজশাহীর রেশম শাড়ি কাপড় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। সরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত রেশম কারখানার পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসে রেশম কারখানা প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৭২ সালে রাজশাহীতে প্রথম উত্তরা সিল্ক ফাক্টরি নামে বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় রেশম কারখানা, যা রেশম শাড়ি কাপড় প্রিন্ট করা হতো। এর পর দিনে পর দিন বাড়তে থাকে বেসরকারি রেশম কারখানার সংখ্যা। উদ্যোক্তারা বলছেন, রাজশাহী রেশম সিল্কের বাজার সম্প্রসারণ বেসরকারি উদ্যোগে কারখানার বৃদ্ধি বাংলাদেশের বস্ত শিল্পের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এগিয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে উন্নত এবং স্থানীয় শিল্পের সবচেয়ে গর্বময় এই সিল্ক প্রসারিত হচ্ছে এবং বাংলাদেশের নাম এবং মূল্যমান বাড়িয়ে দিচ্ছে।

বাংলাদেশ রেশম শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মো. লিয়াকত আলী। তিনি সংবাদকে বলেন, রেশম শিল্পের দুইটি অংশ। একটি গুটি থেকে সুতা উৎপাদন, আরেকটি হচ্ছে বস্ত্র খাত। বস্ত্র খাতের মাধ্যমে পোশাক তৈরি করা হয়। বর্তমানে রেশম কারখানা আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে বর্তমানে রাজশাহীতে কারখানার সংখ্যা ২৫টি। আশা করছি আগামী দিনগুলোতে আরো বৃদ্ধি পাবে ।

রাজশাহী অঞ্চলে রেশম সিল্ক কারখানা গুলিতে অত্যন্ত উন্নত ডিজাইন এবং বিভিন্ন দেশের উন্নত কারিগরি প্রযুক্তির সঙ্গে সঙ্গে কাজ করছে এবং তাদের সফলতায় ক্রেতাদের কাছে আনছে। ব্যবসায়ীরা জানান, সপুরার পুরো সিল্ক পল্লীর ঐতিহ্যবাহী কাপড়ের কদর রয়েছে সারাবছরই। বাঙালির বিভিন্ন উৎসবে সেই কদর আরো কয়েক গুণ বেড়ে যায়। হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সব শ্রেণীর মানুষের উৎসবেই এক অন্যরকম আমেজ আনে রাজশাহীর সিল্কের পোশাক। রাজশাহী রেশম সিল্ক সৃজনশীল ডিজাইন এবং সুন্দর রঙের সিল্কের জন্য পরিচিত। এই সিল্ক প্রযুক্তির ব্যবহার পুরানো ও নতুন কাপড়ের ডিজাইনে একটি নতুন জীবন আনে। উৎসব-পার্বনে রাজশাহী সিল্কের চাহিদা ছিল আকাশচুম্বী।

মহানগরীর সপুরা এলাকায় বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী সপুরা সিল্ক ইন্ডাস্ট্রিজ ১৯৭৯ সাল থেকেই রেশমের তৈরি পোশাক উৎপাদন ও বিপণনের সঙ্গে জড়িত। নিজস্ব কারখানায় রেশমের সুতা ও সেই সুতা থেকে পোশাক তৈরি করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।

রাজশাহী সপুরা সিল্ক ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক সাজ্জাদ আলী জানান, করোনায় লোকসান হয়েছে প্রচুর। করোনায় গেল দু’বছর ধরে ব্যবসায় মন্দাছিল কিন্তু করোনায় দু’বছরে বেচাকেনা তো দূরের কথা, অধিকাংশ তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে লোকসান টানতে গিয়ে। এখন ঘুরে দাঁড়ানোটায় বড় চ্যালেঞ্জ। তবুও চেষ্টা করে চলছি আমরা। রেশম ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দু’বছরে করোনাভাইরাসের লকডাউনে সারাদেশে রেশম শিল্পের ক্ষতি প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ রেশম শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের মুন্না সংবাদকে বলেন, এ খাতকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি প্রণোদনা প্রয়োজন। বেসরকারি রেশম কারখানাগুলোকে সহযোগিতা প্রশিক্ষণ নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত করা। এজন্য রেশম উন্নয়ন বোর্ডকে এগিয়ে আসতে হবে।

রেশম খাতকে আধুনিক প্রযুক্তিতে উন্নত করলে রেশম শিল্প আরও উন্নত এবং কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এই বরেন্দ্র অঞ্চলের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে।

রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৩ আশ্বিন ১৪৩০, ০১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

বেসরকারিভাবে বেড়েছে রেশম কারখানা, বাড়ছে উদ্যোক্তাৃ

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

image

প্রাচীনকাল থেকেই রাজশাহী রেশম সিল্কের জন্য বিখ্যাত। দেশে-বিদেশে রয়েছে রাজশাহীর রেশমশিল্পের সুনাম। রাজশাহী ঐতিহ্যবাহী রেশম শিল্পের উন্নয়নের ফলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যেমন বৃদ্ধি করা যায় তেমনি ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। এ শিল্পই হতে পারে বাংলাদেশেকে বিশ্বে পরিচিত করার মাধ্যম। সেই প্রাচীনকাল থেকে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে রাজশাহীর রেশম শিল্প। রাজশাহীর সিল্কের শাড়ি দেশে-বিদেশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে।

রেশম বাবসায়ীরা জানান, বর্তমানে বেসরকারি উদ্যোগে স্থাপিত রেশম কারখানা রাজশাহী আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েছে উদ্যোক্তা। দিনের পর দিন রেশম এর মান ও চাহিদা বাড়ছে, এবং এই বৃদ্ধির সঙ্গে রাজশাহীতে রেশম কারখানা নতুন উৎপাদনের দিকে এগিয়ে আসছে। চমৎকার সিল্কের শহরের উন্নত অর্থনৈতিক অবস্থা সাধারণ মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

উদ্যোক্তারা বলছেন, রাজশাহী রেশম সিল্কের বাজার সম্প্রসারণ বেসরকারি উদ্যোগে কারখানার বৃদ্ধি বাংলাদেশের বস্ত শিল্পের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এগিয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে উন্নত এবং স্থানীয় শিল্পের সবচেয়ে গর্বময় এই সিল্ক প্রসারিত হচ্ছে এবং বাংলাদেশের নাম এবং মূল্যমান বাড়িয়ে দিচ্ছে।

১৯৬১ সালে সরকারিভাবে রাজশাহীতে প্রতিষ্ঠা হয় রেশম কারখানা । প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশে-বিদেশে রাজশাহীর রেশম শাড়ি কাপড় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। সরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত রেশম কারখানার পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসে রেশম কারখানা প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৭২ সালে রাজশাহীতে প্রথম উত্তরা সিল্ক ফাক্টরি নামে বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় রেশম কারখানা, যা রেশম শাড়ি কাপড় প্রিন্ট করা হতো। এর পর দিনে পর দিন বাড়তে থাকে বেসরকারি রেশম কারখানার সংখ্যা। উদ্যোক্তারা বলছেন, রাজশাহী রেশম সিল্কের বাজার সম্প্রসারণ বেসরকারি উদ্যোগে কারখানার বৃদ্ধি বাংলাদেশের বস্ত শিল্পের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এগিয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে উন্নত এবং স্থানীয় শিল্পের সবচেয়ে গর্বময় এই সিল্ক প্রসারিত হচ্ছে এবং বাংলাদেশের নাম এবং মূল্যমান বাড়িয়ে দিচ্ছে।

বাংলাদেশ রেশম শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মো. লিয়াকত আলী। তিনি সংবাদকে বলেন, রেশম শিল্পের দুইটি অংশ। একটি গুটি থেকে সুতা উৎপাদন, আরেকটি হচ্ছে বস্ত্র খাত। বস্ত্র খাতের মাধ্যমে পোশাক তৈরি করা হয়। বর্তমানে রেশম কারখানা আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে বর্তমানে রাজশাহীতে কারখানার সংখ্যা ২৫টি। আশা করছি আগামী দিনগুলোতে আরো বৃদ্ধি পাবে ।

রাজশাহী অঞ্চলে রেশম সিল্ক কারখানা গুলিতে অত্যন্ত উন্নত ডিজাইন এবং বিভিন্ন দেশের উন্নত কারিগরি প্রযুক্তির সঙ্গে সঙ্গে কাজ করছে এবং তাদের সফলতায় ক্রেতাদের কাছে আনছে। ব্যবসায়ীরা জানান, সপুরার পুরো সিল্ক পল্লীর ঐতিহ্যবাহী কাপড়ের কদর রয়েছে সারাবছরই। বাঙালির বিভিন্ন উৎসবে সেই কদর আরো কয়েক গুণ বেড়ে যায়। হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সব শ্রেণীর মানুষের উৎসবেই এক অন্যরকম আমেজ আনে রাজশাহীর সিল্কের পোশাক। রাজশাহী রেশম সিল্ক সৃজনশীল ডিজাইন এবং সুন্দর রঙের সিল্কের জন্য পরিচিত। এই সিল্ক প্রযুক্তির ব্যবহার পুরানো ও নতুন কাপড়ের ডিজাইনে একটি নতুন জীবন আনে। উৎসব-পার্বনে রাজশাহী সিল্কের চাহিদা ছিল আকাশচুম্বী।

মহানগরীর সপুরা এলাকায় বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী সপুরা সিল্ক ইন্ডাস্ট্রিজ ১৯৭৯ সাল থেকেই রেশমের তৈরি পোশাক উৎপাদন ও বিপণনের সঙ্গে জড়িত। নিজস্ব কারখানায় রেশমের সুতা ও সেই সুতা থেকে পোশাক তৈরি করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।

রাজশাহী সপুরা সিল্ক ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক সাজ্জাদ আলী জানান, করোনায় লোকসান হয়েছে প্রচুর। করোনায় গেল দু’বছর ধরে ব্যবসায় মন্দাছিল কিন্তু করোনায় দু’বছরে বেচাকেনা তো দূরের কথা, অধিকাংশ তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে লোকসান টানতে গিয়ে। এখন ঘুরে দাঁড়ানোটায় বড় চ্যালেঞ্জ। তবুও চেষ্টা করে চলছি আমরা। রেশম ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দু’বছরে করোনাভাইরাসের লকডাউনে সারাদেশে রেশম শিল্পের ক্ষতি প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ রেশম শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের মুন্না সংবাদকে বলেন, এ খাতকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি প্রণোদনা প্রয়োজন। বেসরকারি রেশম কারখানাগুলোকে সহযোগিতা প্রশিক্ষণ নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত করা। এজন্য রেশম উন্নয়ন বোর্ডকে এগিয়ে আসতে হবে।

রেশম খাতকে আধুনিক প্রযুক্তিতে উন্নত করলে রেশম শিল্প আরও উন্নত এবং কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এই বরেন্দ্র অঞ্চলের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে।