নোয়াখালী শহরের প্রাণকেন্দ্রে গণপূর্তের জমিতে চলছে অবৈধভাবে মার্কেট নির্মাণ

নোয়াখালীর জেলা সদর মাইজদীর প্রাণ কেন্দ্রে নোয়াখালী প্রধান সড়কে জেলা প্রশাসনের আদেশ অমান্য করে শাসক দলের ছএছায়ায় গণপূর্তের ৫০ কোটি টাকা মূল্যের সরকারি জায়গায় মার্কেট নির্মাণের কাজ চলছে। কর্মরত লেবাররা জানান, নোয়াখালী ক্ষুদ্ধ হকার্স সমবায় সমিতি লিমেটেডের সভাপতি একরাম উল্যাহ ডিপটি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মেয়র শহীদুল্লাহ্ খান সোহেল জানেন কে মার্কেট করছেন। তখন পাশে থাকা এক ভদ্রলোক লেবারকে ধমক দিয়ে বলল,এই কাজ কর। ডিসি,এসপি ম্যানেজ। এসব লোকের কথা শোনে কে? লোকটির পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, পিন্টু ভাইর ( জেলা পরিষদের চেয়রাম্যান) কাছে জেনে নেবেন আমি কে? এব্যাপারে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাদ মোহাম্মদ আন্দালিব বলেন, এখানে প্রায় ৬৫ শতাংশ জমিনে বিভাগীয় ও জেলা সদরের পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। তা ছাড়া একটি থ্রি স্টার হোটেল নির্মাণের জন্য নোয়াখালী শহর উন্নয়ন প্ল্যানের ও অর্ন্তভুক্ত। আমাদের অফিসের এসও এবং উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর রিপোর্টে জানা যায়, জমিনটিতে একটিমহল অবৈধভাবে ষ্টিলের দোতালা মার্কেট তৈরি করছে। আমি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে জানাই। জেলা প্রশাসক একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটকে পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। তারপরও তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এর পর আমি কতৃপক্ষের নির্দেশে এ অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনা উছেদের জন্য জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের কাছে গত ২২ সেপ্টেম্বর আমার অফিস স্মারক নং - ২৪৭৪ চিঠিতে ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগের জন্য এবং ২৪৭৪/৩ স্মারকে পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম পিপিএম এর নিকট প্রয়োজনীয় পুলিশ ফোর্স নিয়োগের জন্য বেশ কয়েকদিন আগে চিঠি দিয়েছি। জেলা প্রশাসক ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ করলেই আমরা এ স্থাপনা উচ্ছেদ করবো। স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার সন্ধ্যায় গণপূর্ত বিভাগের জায়গায় অবৈধ মার্কেট নির্মাণের খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যামাণ আদালতের একটি টিম ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। তখন অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ওই সময় নিমার্ণ কাজের শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কর্মকর্তারা চলে যাওয়ার পর পুনরায় শুক্র,শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির সুযোগে দিনরাত চলছে নির্মাণ কাজ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী ক্ষুদ্র হকার্স সমবায় সমিতি লিমেটেডের সভাপতি একরাম উল্যাহ ডিপটি বলেন, এ কাজ আমরা করছি । শুক্রবার প্রেসক্লাবে বসে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু সহ বসে সকল সাংবাদিককে অবহিত করা হয়েছে। এটা নিয়ে আপনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আর পৌর সভার মেয়রের সাথে কথা বলেন।

নোয়াখালী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাদ মোহাম্মদ আন্দালিব বলেন, আমাদেরতো সব সময় সেখানে বসে থাকা সম্ভব না। তবে এ অবৈধ স্থাপনা গুটিয়ে দেওয়া হবে।

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু বলেন, শুক্রবার আমরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে বসেছি। এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তবে জমিনের মালিক গনপূর্ত বিভাগ বা জেলা প্রশাসক মার্কেট করতে অনুমতি দেয়নি। আমি আরও মেয়র শহিদুল্লা খান সোহেল আমরা এটা করছি শহর উন্নয়নের জন্য। আপাতত কয়েক মাসের জন্য সেখানে ব্যবসা করা হবে। তারপর হকার মার্কেটের ব্যাবসায়ীরা আবার তাদের নিজের জায়গায় চলে যাবে। তখন ছিন্নমূল হকারদের জন্য কিছু করা হবে কিনা বা তাদের এখানে পূরনর্বাসন করা হবে কিনা প্রশ্ন করা হলে তার তিনি এড়িয়ে যান।

এব্যাপারে মেয়র শহিদুল্লা খান সোহেল কে না পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।

নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, কাজের শুরুতে সেখানে ম্যাজিষ্ট্রেট পাঠিয়ে বাধা দেওয়া হয়েছে। তার পরও কাজ করলে পুনরায় সরকারী বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ডিসি অফিস থেকে ১০০ গজের মধ্যে এবং সুধারাম থানার সামনে পুলিশ ও প্রশসাশনের নাকের ডগায় এভাবে কয়েক কোটি টাকার সরকারি জমিন প্রকাশ্য দখল হয়ে যাচ্ছে আর প্রশাসন ও পুলিশ নাকে তেল দিয়ে জেগে জেগে ঘুমাচ্ছেন ।

সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৪ আশ্বিন ১৪৩০, ০২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

নোয়াখালী শহরের প্রাণকেন্দ্রে গণপূর্তের জমিতে চলছে অবৈধভাবে মার্কেট নির্মাণ

প্রতিনিধি, নোয়াখালী

image

নোয়াখালী : জেলা শহর মাইজদীতে অবৈধভাবে নির্মিত হচ্ছে মার্কেট -সংবাদ

নোয়াখালীর জেলা সদর মাইজদীর প্রাণ কেন্দ্রে নোয়াখালী প্রধান সড়কে জেলা প্রশাসনের আদেশ অমান্য করে শাসক দলের ছএছায়ায় গণপূর্তের ৫০ কোটি টাকা মূল্যের সরকারি জায়গায় মার্কেট নির্মাণের কাজ চলছে। কর্মরত লেবাররা জানান, নোয়াখালী ক্ষুদ্ধ হকার্স সমবায় সমিতি লিমেটেডের সভাপতি একরাম উল্যাহ ডিপটি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মেয়র শহীদুল্লাহ্ খান সোহেল জানেন কে মার্কেট করছেন। তখন পাশে থাকা এক ভদ্রলোক লেবারকে ধমক দিয়ে বলল,এই কাজ কর। ডিসি,এসপি ম্যানেজ। এসব লোকের কথা শোনে কে? লোকটির পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, পিন্টু ভাইর ( জেলা পরিষদের চেয়রাম্যান) কাছে জেনে নেবেন আমি কে? এব্যাপারে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাদ মোহাম্মদ আন্দালিব বলেন, এখানে প্রায় ৬৫ শতাংশ জমিনে বিভাগীয় ও জেলা সদরের পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। তা ছাড়া একটি থ্রি স্টার হোটেল নির্মাণের জন্য নোয়াখালী শহর উন্নয়ন প্ল্যানের ও অর্ন্তভুক্ত। আমাদের অফিসের এসও এবং উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর রিপোর্টে জানা যায়, জমিনটিতে একটিমহল অবৈধভাবে ষ্টিলের দোতালা মার্কেট তৈরি করছে। আমি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে জানাই। জেলা প্রশাসক একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটকে পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। তারপরও তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এর পর আমি কতৃপক্ষের নির্দেশে এ অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনা উছেদের জন্য জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের কাছে গত ২২ সেপ্টেম্বর আমার অফিস স্মারক নং - ২৪৭৪ চিঠিতে ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগের জন্য এবং ২৪৭৪/৩ স্মারকে পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম পিপিএম এর নিকট প্রয়োজনীয় পুলিশ ফোর্স নিয়োগের জন্য বেশ কয়েকদিন আগে চিঠি দিয়েছি। জেলা প্রশাসক ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ করলেই আমরা এ স্থাপনা উচ্ছেদ করবো। স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার সন্ধ্যায় গণপূর্ত বিভাগের জায়গায় অবৈধ মার্কেট নির্মাণের খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যামাণ আদালতের একটি টিম ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। তখন অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ওই সময় নিমার্ণ কাজের শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কর্মকর্তারা চলে যাওয়ার পর পুনরায় শুক্র,শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির সুযোগে দিনরাত চলছে নির্মাণ কাজ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী ক্ষুদ্র হকার্স সমবায় সমিতি লিমেটেডের সভাপতি একরাম উল্যাহ ডিপটি বলেন, এ কাজ আমরা করছি । শুক্রবার প্রেসক্লাবে বসে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু সহ বসে সকল সাংবাদিককে অবহিত করা হয়েছে। এটা নিয়ে আপনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আর পৌর সভার মেয়রের সাথে কথা বলেন।

নোয়াখালী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাদ মোহাম্মদ আন্দালিব বলেন, আমাদেরতো সব সময় সেখানে বসে থাকা সম্ভব না। তবে এ অবৈধ স্থাপনা গুটিয়ে দেওয়া হবে।

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু বলেন, শুক্রবার আমরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে বসেছি। এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তবে জমিনের মালিক গনপূর্ত বিভাগ বা জেলা প্রশাসক মার্কেট করতে অনুমতি দেয়নি। আমি আরও মেয়র শহিদুল্লা খান সোহেল আমরা এটা করছি শহর উন্নয়নের জন্য। আপাতত কয়েক মাসের জন্য সেখানে ব্যবসা করা হবে। তারপর হকার মার্কেটের ব্যাবসায়ীরা আবার তাদের নিজের জায়গায় চলে যাবে। তখন ছিন্নমূল হকারদের জন্য কিছু করা হবে কিনা বা তাদের এখানে পূরনর্বাসন করা হবে কিনা প্রশ্ন করা হলে তার তিনি এড়িয়ে যান।

এব্যাপারে মেয়র শহিদুল্লা খান সোহেল কে না পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।

নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, কাজের শুরুতে সেখানে ম্যাজিষ্ট্রেট পাঠিয়ে বাধা দেওয়া হয়েছে। তার পরও কাজ করলে পুনরায় সরকারী বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ডিসি অফিস থেকে ১০০ গজের মধ্যে এবং সুধারাম থানার সামনে পুলিশ ও প্রশসাশনের নাকের ডগায় এভাবে কয়েক কোটি টাকার সরকারি জমিন প্রকাশ্য দখল হয়ে যাচ্ছে আর প্রশাসন ও পুলিশ নাকে তেল দিয়ে জেগে জেগে ঘুমাচ্ছেন ।