এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে চলমান আন্দোলনের ‘চূড়ান্ত’ ধাপে পৌঁছাতে চায় দলটি
সরকার পদত্যাগে ‘একদফা’ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এবার দুই সপ্তাহের ‘প্যাকেজ’ কর্মসূচি দিতে যাচ্ছে বিএনপি। নতুন কর্মসূচির মধ্যে ঢাকা ও আশপাশে ‘বড়’ সমাবেশ করার ঘোষণা থাকবে। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রোডমার্চসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে। এসব কর্মসূচি আগামীকাল থেকে শুরু হয়ে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে বলে বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে। আজ এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নতুন কমর্সূচি ঘোষণার কথা রয়েছে।
গত ১২ জুলাই ‘একদফা’ আন্দোলনের ঘোষণার পর এখন পর্যন্ত বিএনপিসহ সমমনা জোট ও দলগুলো যুগপৎভাবে ঢাকায় পদযাত্রা, মহাসমাবেশ, ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান, গণমিছিল ও কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি পালন করে। সবশেষ ‘একদফা’ দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত দুই দিন রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে ‘তারুণ্যের রোডমার্চ’ করেছে বিএনপির তিনটি অঙ্গ-সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদল।
বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঘোষণার পূর্বাভাস রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। এ তফসিল ঘোষণার আগেই ‘একদফা’ আন্দোলনের চূড়ান্ত ‘ফল’ পেতে চায় বিএনপি ও সমমনারা। সেই লক্ষ্যে নতুন কর্মসূচি দিতে চাচ্ছে তারা। তবে নতুন যে ‘প্যাকেজ’ কর্মসূচি ঘোষণা হবে, সেটি আন্দোলনের ‘চূড়ান্ত ধাপে’ যাওয়ার প্রস্তুতি হিসেবেই দেখা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে সারাদেশে শেষ ‘জনসংযোগ’ সেরে নিতে চায় তারা।
বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, নতুন ‘প্যাকেজ’ কর্মসূচি ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ করতে চায় তারা। এসব কর্মসূচিতে ‘বড় জনসমাবেশ’ ঘটিয়ে সরকারকে ‘শান্তিপূর্ণ উপায়ে’ পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার চূড়ান্ত ‘বার্তা’ দিতে চায়। তবে সরকার ‘শান্তিপূর্ণ’ সমাধানের পথে না গেলে পরবর্তীতে ‘কঠোর’ কর্মসূচিতে যাবে তারা।
বিএনপির সূত্রগুলোর ভাষ্য অনুযায়ী, আগামী অক্টোরের শুরু থেকে ‘একদফা’র আন্দোলন চূড়ান্ত ধাপে নিয়ে যেতে চায়। এক্ষেত্রে ‘প্যাকেজ’ কর্মসূচি শেষেই ‘ঘেরাও’, ‘অবরোধ’ নতুন ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সেটি ‘অক্টোবর’ মাসজুড়ে চলবে। ওই কর্মসূচি হবে কেবল ঢাকাকেন্দ্রিক। যার মধ্যে দিয়েই আন্দোলনের ‘সফল’ সমাপ্তি চায় প্রায় ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সংবাদকে বলেন, ‘আমরা একদফা দাবিতে শান্তপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছি। জনগণকে নিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্যে দিয়েই এই সরকারের পদত্যাগে বাধ্য করবো।’
‘প্যাকেজ’ কর্মসূচিতে যা থাকতে পারে
বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দুই সপ্তাহের প্যাকেজ কর্মসূচিতে ঢাকা ও আশপাশ এলাকায় একাধিক ‘বড়’ সমাবেশের পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার কেরানীগঞ্জে সমাবেশের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচির সূচনা হতে পারে। এই সমাবেশ আগামীকাল করার ঘোষণা আসতে পারে। একইভাবে নারায়ণগঞ্জেও একটি সমাবেশের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি ঢাকায় তিনটি সমাবেশ করার ঘোষণা আসতে পারে। এর মধ্যে ঢাকায় একটি পেশাজীবী সমাবেশ, একটি নারী ও একটি শ্রমিক সমাবেশ করা হবে।
দলটির সূত্র আরও জানায়, সমাবেশের বাইরে ‘প্যাকেজ’ কর্মসূচির মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ‘রোডমার্চ’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এরই মধ্যে রংপুর ও রাজশাহীতে রোডমার্চ করেছে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদল। এবার সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে চারটি রোডমার্চ কর্মসূচি কারার ঘোষণা আসতে পারে। যদিও রংপুর ও রাজশাহীতে রোডমার্চে মূল দল ও সমমনাদলগুলোর আয়োজন ছিল না। তবে এবার যেসব রোডমার্চ হবে সেগুলোতে যুগপৎভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এবারের প্রথম রোডমার্চ হতে পারে সিলেট অঞ্চলে। একটি কিশোরগঞ্জ ভৈরব বাজার থেকে শুরু করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার হয়ে সিলেট নগরে গিয়ে শেষ হতে পারে। এরপর খুলনার উদ্দেশে আরেকটি রোডমার্চ হবে, এটি ঝিনাইদহ থেকে শুরু হয়ে যশোর, নওয়াপাড়া হয়ে খুলনা শহরে যাবে। এরপর বরিশাল-পটুয়াখালী ও পিরোজপুর অঞ্চলে রোডমার্চ হবে। সর্বশেষ রোডমার্চ হবে চট্টগ্রামের পথে। এটি কুমিল্লা থেকে শুরু হয়ে ফেনী, মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রাম নগরে গিয়ে শেষ হতে পারে।
দেবে বিএনপি
সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৪ আশ্বিন ১৪৩০, ০২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫
এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে চলমান আন্দোলনের ‘চূড়ান্ত’ ধাপে পৌঁছাতে চায় দলটি
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
সরকার পদত্যাগে ‘একদফা’ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এবার দুই সপ্তাহের ‘প্যাকেজ’ কর্মসূচি দিতে যাচ্ছে বিএনপি। নতুন কর্মসূচির মধ্যে ঢাকা ও আশপাশে ‘বড়’ সমাবেশ করার ঘোষণা থাকবে। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রোডমার্চসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে। এসব কর্মসূচি আগামীকাল থেকে শুরু হয়ে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে বলে বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে। আজ এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নতুন কমর্সূচি ঘোষণার কথা রয়েছে।
গত ১২ জুলাই ‘একদফা’ আন্দোলনের ঘোষণার পর এখন পর্যন্ত বিএনপিসহ সমমনা জোট ও দলগুলো যুগপৎভাবে ঢাকায় পদযাত্রা, মহাসমাবেশ, ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান, গণমিছিল ও কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি পালন করে। সবশেষ ‘একদফা’ দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত দুই দিন রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে ‘তারুণ্যের রোডমার্চ’ করেছে বিএনপির তিনটি অঙ্গ-সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদল।
বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঘোষণার পূর্বাভাস রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। এ তফসিল ঘোষণার আগেই ‘একদফা’ আন্দোলনের চূড়ান্ত ‘ফল’ পেতে চায় বিএনপি ও সমমনারা। সেই লক্ষ্যে নতুন কর্মসূচি দিতে চাচ্ছে তারা। তবে নতুন যে ‘প্যাকেজ’ কর্মসূচি ঘোষণা হবে, সেটি আন্দোলনের ‘চূড়ান্ত ধাপে’ যাওয়ার প্রস্তুতি হিসেবেই দেখা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে সারাদেশে শেষ ‘জনসংযোগ’ সেরে নিতে চায় তারা।
বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, নতুন ‘প্যাকেজ’ কর্মসূচি ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ করতে চায় তারা। এসব কর্মসূচিতে ‘বড় জনসমাবেশ’ ঘটিয়ে সরকারকে ‘শান্তিপূর্ণ উপায়ে’ পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার চূড়ান্ত ‘বার্তা’ দিতে চায়। তবে সরকার ‘শান্তিপূর্ণ’ সমাধানের পথে না গেলে পরবর্তীতে ‘কঠোর’ কর্মসূচিতে যাবে তারা।
বিএনপির সূত্রগুলোর ভাষ্য অনুযায়ী, আগামী অক্টোরের শুরু থেকে ‘একদফা’র আন্দোলন চূড়ান্ত ধাপে নিয়ে যেতে চায়। এক্ষেত্রে ‘প্যাকেজ’ কর্মসূচি শেষেই ‘ঘেরাও’, ‘অবরোধ’ নতুন ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সেটি ‘অক্টোবর’ মাসজুড়ে চলবে। ওই কর্মসূচি হবে কেবল ঢাকাকেন্দ্রিক। যার মধ্যে দিয়েই আন্দোলনের ‘সফল’ সমাপ্তি চায় প্রায় ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সংবাদকে বলেন, ‘আমরা একদফা দাবিতে শান্তপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছি। জনগণকে নিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্যে দিয়েই এই সরকারের পদত্যাগে বাধ্য করবো।’
‘প্যাকেজ’ কর্মসূচিতে যা থাকতে পারে
বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দুই সপ্তাহের প্যাকেজ কর্মসূচিতে ঢাকা ও আশপাশ এলাকায় একাধিক ‘বড়’ সমাবেশের পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার কেরানীগঞ্জে সমাবেশের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচির সূচনা হতে পারে। এই সমাবেশ আগামীকাল করার ঘোষণা আসতে পারে। একইভাবে নারায়ণগঞ্জেও একটি সমাবেশের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি ঢাকায় তিনটি সমাবেশ করার ঘোষণা আসতে পারে। এর মধ্যে ঢাকায় একটি পেশাজীবী সমাবেশ, একটি নারী ও একটি শ্রমিক সমাবেশ করা হবে।
দলটির সূত্র আরও জানায়, সমাবেশের বাইরে ‘প্যাকেজ’ কর্মসূচির মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ‘রোডমার্চ’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এরই মধ্যে রংপুর ও রাজশাহীতে রোডমার্চ করেছে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদল। এবার সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে চারটি রোডমার্চ কর্মসূচি কারার ঘোষণা আসতে পারে। যদিও রংপুর ও রাজশাহীতে রোডমার্চে মূল দল ও সমমনাদলগুলোর আয়োজন ছিল না। তবে এবার যেসব রোডমার্চ হবে সেগুলোতে যুগপৎভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এবারের প্রথম রোডমার্চ হতে পারে সিলেট অঞ্চলে। একটি কিশোরগঞ্জ ভৈরব বাজার থেকে শুরু করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার হয়ে সিলেট নগরে গিয়ে শেষ হতে পারে। এরপর খুলনার উদ্দেশে আরেকটি রোডমার্চ হবে, এটি ঝিনাইদহ থেকে শুরু হয়ে যশোর, নওয়াপাড়া হয়ে খুলনা শহরে যাবে। এরপর বরিশাল-পটুয়াখালী ও পিরোজপুর অঞ্চলে রোডমার্চ হবে। সর্বশেষ রোডমার্চ হবে চট্টগ্রামের পথে। এটি কুমিল্লা থেকে শুরু হয়ে ফেনী, মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রাম নগরে গিয়ে শেষ হতে পারে।
দেবে বিএনপি