খালেদা জিয়ার নাইকো মামলায় সাক্ষ্য দেবেন বিদেশি তিন নাগরিক

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলায় এক এফবিআই কর্মকর্তা ও দুই কানাডিয়ান পুলিশকে সাক্ষ্য দেয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল দুপুরে শুনানি শেষে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, কেবিন দুগ্গান, রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের লয়েড শোয়েপ ও নিউইয়র্কের ক্রিমিনাল ডিভিশনের মিসেস ডেব্রা ল্যাপ্রেভোট গ্রিফিথকে সাক্ষ্য দেয়ার আবেদন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। এদিন এ তিন বিদেশি নাগরিক নাইকো দুর্নীতি মামলায় আদালতে এসে সাক্ষ্য দিতে পারেন কি না সে বিষয়ে শুনানি হয়। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সাক্ষ্য দেয়ার বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। খালেদা জিয়ার পক্ষে আমিনুল ইসলাম এর বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল সারাদেশের সব মামলায় শুনানিতে উপস্থিত থাকতে পারেন। কিন্তু আবেদন করার ক্ষমতা তার নেই। আমরা এর বিরোধিতা করছি। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তিন বিদেশি সাক্ষীকে সাক্ষ্য দেয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন।

এদিকে এদিন মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক মুহা. মাহবুবুল আলমকে জেরার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু প্রস্তুতি নেই জানিয়ে জেরা পেছানোর আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১০ অক্টোবর জেরার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী হান্নান ভূঁইয়া এসব তথ্য জানান।

গত ২৩ মে মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক মুহা. মাহবুবুল আলম সাক্ষ্য দেয়া শুরু করেন। গত ১৯ মার্চ একই আদালত খালেদা জিয়াসহ ৮ আসামির অব্যাহতির আদালত নাকচ করে চার্জ গঠনের আদেশ দেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম। এদের মধ্য প্রথম তিনজন পলাতক রয়েছেন।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, একেএম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান তিন জন মারা গেছেন। তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করে দুদক। পরের বছরের ৫ মে ওই মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম সাহেদুর রহমান। অভিযোগপত্রে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।

সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৪ আশ্বিন ১৪৩০, ০২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

খালেদা জিয়ার নাইকো মামলায় সাক্ষ্য দেবেন বিদেশি তিন নাগরিক

আদালত বার্তা পরিবেশক

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলায় এক এফবিআই কর্মকর্তা ও দুই কানাডিয়ান পুলিশকে সাক্ষ্য দেয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল দুপুরে শুনানি শেষে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, কেবিন দুগ্গান, রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের লয়েড শোয়েপ ও নিউইয়র্কের ক্রিমিনাল ডিভিশনের মিসেস ডেব্রা ল্যাপ্রেভোট গ্রিফিথকে সাক্ষ্য দেয়ার আবেদন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। এদিন এ তিন বিদেশি নাগরিক নাইকো দুর্নীতি মামলায় আদালতে এসে সাক্ষ্য দিতে পারেন কি না সে বিষয়ে শুনানি হয়। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সাক্ষ্য দেয়ার বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। খালেদা জিয়ার পক্ষে আমিনুল ইসলাম এর বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল সারাদেশের সব মামলায় শুনানিতে উপস্থিত থাকতে পারেন। কিন্তু আবেদন করার ক্ষমতা তার নেই। আমরা এর বিরোধিতা করছি। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তিন বিদেশি সাক্ষীকে সাক্ষ্য দেয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন।

এদিকে এদিন মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক মুহা. মাহবুবুল আলমকে জেরার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু প্রস্তুতি নেই জানিয়ে জেরা পেছানোর আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১০ অক্টোবর জেরার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী হান্নান ভূঁইয়া এসব তথ্য জানান।

গত ২৩ মে মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক মুহা. মাহবুবুল আলম সাক্ষ্য দেয়া শুরু করেন। গত ১৯ মার্চ একই আদালত খালেদা জিয়াসহ ৮ আসামির অব্যাহতির আদালত নাকচ করে চার্জ গঠনের আদেশ দেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম। এদের মধ্য প্রথম তিনজন পলাতক রয়েছেন।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, একেএম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান তিন জন মারা গেছেন। তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করে দুদক। পরের বছরের ৫ মে ওই মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম সাহেদুর রহমান। অভিযোগপত্রে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।