স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন গৃহবধূ পপিয়া খাতুন (২৭)। গত শনিবার বিকেলে নড়াইল জেলা হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। অতিরিক্ত রোগীর চাপে মহিলা ওয়ার্ডের ফ্লোরে ঠাঁই হয়েছে পপিয়ার। জীবনযন্ত্রণায় হাসপাতালের বিছানায় ছটফট করছেন তিনি।
যৌতুকলোভী স্বামী নাজিম (৩৫) ও শ্বশুর সাত্তার শেখ গৃহবধূ পপিয়ার পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাঠি ও রড দিয়ে ব্যাপক মারধর করেছে। এছাড়া কিল-ঘুষি দিয়েছে। একপর্যায়ে বস্তায় ভরে বাড়ির পাশে নদীতে ফেলে দেয়ার অপচেষ্টা চালায় তারা।
গত শনিবার সকালে নড়াইল সদরের মাইজপাড়া ইউনিয়নের সলুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় শ্বশুর সাত্তার শেখ পপিয়াকে বলেন, ‘তোর মতো মেয়ে বস্তায় ভরে পুতে ফেলব ! আমাদের কিছু হবে না। নদীর পাশে গর্ত খুঁড়েছি।’ এসব কথা বলে পপিয়াকে জোর করে বস্তায় ঢোকানোর অপচেষ্টা চালায় তারা।
এ পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষার জন্য দৌঁড়ে পাশের চাচা শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন পপিয়া খাতুন। সেখানে গিয়েও বেদম মারধর করেন পপিয়ার স্বামী ও শ্বশুর। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী পপিয়া ও তার মা পলিনা খানমের। গত দু’দিন ধরে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন গৃহবধূ পপিয়া খাতুন। বেদম মারধরের শিকার পপিয়া ঠিকমত কথাও বলতে পারছেন না।
ভুক্তভোগী পপিয়ার মা পলিনা খানম বলেন, প্রায় ১২ বছর আগে নড়াইলের সলুয়া গ্রামের সাত্তার শেখের ছেলে নাজিমের সঙ্গে পপিয়ার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে নূর মোহাম্মদ শেখ নামে তাদের ১০ বছরের ছেলে সন্তান আছে। ছেলেটি মাদ্রাসায় হাফেজ বিভাগে পড়ালেখা করছে। পপিয়ার বাবার বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর থানার মশাখালী গ্রামে। বিয়ের পর জামাই নাজিম শেখকে বিদেশ পাঠানোর জন্য বাবার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময় টাকাসহ আসবাবপত্র ও স্বর্ণালঙ্কার দেয়া হয়েছে। ৩০ শতক জমি এবং চারটি গরু বিক্রি করে তাকে বিদেশ পাঠানো হয়।
নাজিম প্রায় ছয় বছর কুয়েত থাকার পরও টাকা-পয়সা তেমন কিছু জমাতে পারেননি। প্রায় চার বছর আগে বিদেশ থেকে বাড়িতে এসে টাকার জন্য আবারও স্ত্রী পপিয়াকে প্রায়ই মারধর করত নাজিম। এরই ধারাবাহিকতায় প্রায় এক বছর আগে মারধর করে পপিয়ার একটি দাঁত ভেঙে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে নাজিমের বিরুদ্ধে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ব্যাপক মারধরের শিকার হন পপিয়া। ১২ বছরের দাম্পত্য জীবনে অন্তত ৩৬ বার নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছে গৃহবধূ পপিয়া। সর্বশেষ গত শনিবার সকাল ৮টার দিকে পপিয়াকে লাঠি ও রড দিয়ে পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক মারধর করে বলে জানিয়েছেন তারা।
গৃহবধূ পপিয়ার বাবা গোলাম মাওলা বলেন, মেয়েকে নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে। স্বামী নাজিম শেখসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন গা ঢাকা দিয়েছেন। পপিয়াকে দেখতে হাসপাতালে আসেননি তারা। কোন খোঁজখবরও নেয়নি।
এদিকে, শ্বশুরবাড়ির লোকজন গৃহবধূ পপিয়া খানমকে নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৪ আশ্বিন ১৪৩০, ০২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫
প্রতিনিধি, নড়াইল
স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন গৃহবধূ পপিয়া খাতুন (২৭)। গত শনিবার বিকেলে নড়াইল জেলা হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। অতিরিক্ত রোগীর চাপে মহিলা ওয়ার্ডের ফ্লোরে ঠাঁই হয়েছে পপিয়ার। জীবনযন্ত্রণায় হাসপাতালের বিছানায় ছটফট করছেন তিনি।
যৌতুকলোভী স্বামী নাজিম (৩৫) ও শ্বশুর সাত্তার শেখ গৃহবধূ পপিয়ার পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাঠি ও রড দিয়ে ব্যাপক মারধর করেছে। এছাড়া কিল-ঘুষি দিয়েছে। একপর্যায়ে বস্তায় ভরে বাড়ির পাশে নদীতে ফেলে দেয়ার অপচেষ্টা চালায় তারা।
গত শনিবার সকালে নড়াইল সদরের মাইজপাড়া ইউনিয়নের সলুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় শ্বশুর সাত্তার শেখ পপিয়াকে বলেন, ‘তোর মতো মেয়ে বস্তায় ভরে পুতে ফেলব ! আমাদের কিছু হবে না। নদীর পাশে গর্ত খুঁড়েছি।’ এসব কথা বলে পপিয়াকে জোর করে বস্তায় ঢোকানোর অপচেষ্টা চালায় তারা।
এ পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষার জন্য দৌঁড়ে পাশের চাচা শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন পপিয়া খাতুন। সেখানে গিয়েও বেদম মারধর করেন পপিয়ার স্বামী ও শ্বশুর। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী পপিয়া ও তার মা পলিনা খানমের। গত দু’দিন ধরে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন গৃহবধূ পপিয়া খাতুন। বেদম মারধরের শিকার পপিয়া ঠিকমত কথাও বলতে পারছেন না।
ভুক্তভোগী পপিয়ার মা পলিনা খানম বলেন, প্রায় ১২ বছর আগে নড়াইলের সলুয়া গ্রামের সাত্তার শেখের ছেলে নাজিমের সঙ্গে পপিয়ার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে নূর মোহাম্মদ শেখ নামে তাদের ১০ বছরের ছেলে সন্তান আছে। ছেলেটি মাদ্রাসায় হাফেজ বিভাগে পড়ালেখা করছে। পপিয়ার বাবার বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর থানার মশাখালী গ্রামে। বিয়ের পর জামাই নাজিম শেখকে বিদেশ পাঠানোর জন্য বাবার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময় টাকাসহ আসবাবপত্র ও স্বর্ণালঙ্কার দেয়া হয়েছে। ৩০ শতক জমি এবং চারটি গরু বিক্রি করে তাকে বিদেশ পাঠানো হয়।
নাজিম প্রায় ছয় বছর কুয়েত থাকার পরও টাকা-পয়সা তেমন কিছু জমাতে পারেননি। প্রায় চার বছর আগে বিদেশ থেকে বাড়িতে এসে টাকার জন্য আবারও স্ত্রী পপিয়াকে প্রায়ই মারধর করত নাজিম। এরই ধারাবাহিকতায় প্রায় এক বছর আগে মারধর করে পপিয়ার একটি দাঁত ভেঙে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে নাজিমের বিরুদ্ধে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ব্যাপক মারধরের শিকার হন পপিয়া। ১২ বছরের দাম্পত্য জীবনে অন্তত ৩৬ বার নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছে গৃহবধূ পপিয়া। সর্বশেষ গত শনিবার সকাল ৮টার দিকে পপিয়াকে লাঠি ও রড দিয়ে পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক মারধর করে বলে জানিয়েছেন তারা।
গৃহবধূ পপিয়ার বাবা গোলাম মাওলা বলেন, মেয়েকে নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে। স্বামী নাজিম শেখসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন গা ঢাকা দিয়েছেন। পপিয়াকে দেখতে হাসপাতালে আসেননি তারা। কোন খোঁজখবরও নেয়নি।
এদিকে, শ্বশুরবাড়ির লোকজন গৃহবধূ পপিয়া খানমকে নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।