খোলাবাজারে ডলারের তেজ কমছেই না

খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলারের তেজ কোনভাবেই কমছে না। ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধারাবাহিকভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। এরপরেও ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

গতকাল খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি করা হচ্ছে ১১৭ টাকা ৮০ পয়সায়। আর এসব ব্যবসায়ীরা ডলার ক্রয় করছেন ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত।

এদিকে গতকাল আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে টাকা-ডলারের বিনিময় হার ছিল ১১০ টাকা। ব্যাংকগুলো নগদ ডলার বিক্রি করার অনুমতি রয়েছে সর্বোচ্চ ১১১ টাকায়। এতে দেখা যাচ্ছে, ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলারের দরের ব্যবধান প্রায় ৭ টাকার চলে এসেছে।

পল্টনে ডলার ক্রয় করতে আসা শাহরিয়ার আহম্মেদ বলেন, বেশ কয়েকটি ব্যাংকে ডলার ক্রয়ের জন্য গিয়েছিলাম। তবে সেখানে ডলার না পেয়ে খুচরা বাজারে এসেছি। এখানে ডলারের দাম অনেক বেশি। কোন উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে নিতে হচ্ছে।

বাজারে ডলার সংকট কাটাতে কোন পদক্ষেপেই যখন কাজ হচ্ছিল না, তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) নেতারা ডলারের দাম নির্ধারণ করে দেন।

এরপরে ডলারের দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। এখন আবার বেঁধে দেয়া দাম অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক ও খুচরা বাজারে মানা হচ্ছে না।

খোলাবাজারে পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে থাকা ডলারের দর বাড়তে বাড়তে গত বছরের ১০ আগস্ট ১২০ টাকায় পৌঁছেছিল। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযানের মুখে নিম্নমুখী হয় দর। তারপরও দীর্ঘদিন ১১০ টাকার ওপরে অবস্থান করছিল।

এদিকে ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার ডলার নিয়ে সুখবর দিয়েছিলেন।

তখন তিনি বলেছিলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই ডলারের বাজার পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। রিজার্ভও বাড়বে। বন্ধুপ্রতীম দেশ হিসেবে সংকট কাটাতে রিজার্ভ থেকে শ্রীলঙ্কাকে আমরা যে ২০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছিলাম, সেটা মার্চের মধ্যে ফেরত দেবে বলে জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা। তবে ডলারের দাম এতদিনেও স্বাভাবিক হয়নি। রিজার্ভ বাড়ার পরিবর্তে আরও কমেছে। এছাড়া শ্রীলঙ্কাও বাংলাদেশের ঋণের সব ডলার ফেরত দিতে পারেনি। এর ফলে দেশের বাজারে ডলারের ব্যাপক অস্থিরতা চলছে।

মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৫ আশ্বিন ১৪৩০, ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

খোলাবাজারে ডলারের তেজ কমছেই না

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশ

খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলারের তেজ কোনভাবেই কমছে না। ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধারাবাহিকভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। এরপরেও ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

গতকাল খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি করা হচ্ছে ১১৭ টাকা ৮০ পয়সায়। আর এসব ব্যবসায়ীরা ডলার ক্রয় করছেন ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত।

এদিকে গতকাল আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে টাকা-ডলারের বিনিময় হার ছিল ১১০ টাকা। ব্যাংকগুলো নগদ ডলার বিক্রি করার অনুমতি রয়েছে সর্বোচ্চ ১১১ টাকায়। এতে দেখা যাচ্ছে, ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলারের দরের ব্যবধান প্রায় ৭ টাকার চলে এসেছে।

পল্টনে ডলার ক্রয় করতে আসা শাহরিয়ার আহম্মেদ বলেন, বেশ কয়েকটি ব্যাংকে ডলার ক্রয়ের জন্য গিয়েছিলাম। তবে সেখানে ডলার না পেয়ে খুচরা বাজারে এসেছি। এখানে ডলারের দাম অনেক বেশি। কোন উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে নিতে হচ্ছে।

বাজারে ডলার সংকট কাটাতে কোন পদক্ষেপেই যখন কাজ হচ্ছিল না, তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) নেতারা ডলারের দাম নির্ধারণ করে দেন।

এরপরে ডলারের দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। এখন আবার বেঁধে দেয়া দাম অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক ও খুচরা বাজারে মানা হচ্ছে না।

খোলাবাজারে পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে থাকা ডলারের দর বাড়তে বাড়তে গত বছরের ১০ আগস্ট ১২০ টাকায় পৌঁছেছিল। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযানের মুখে নিম্নমুখী হয় দর। তারপরও দীর্ঘদিন ১১০ টাকার ওপরে অবস্থান করছিল।

এদিকে ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার ডলার নিয়ে সুখবর দিয়েছিলেন।

তখন তিনি বলেছিলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই ডলারের বাজার পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। রিজার্ভও বাড়বে। বন্ধুপ্রতীম দেশ হিসেবে সংকট কাটাতে রিজার্ভ থেকে শ্রীলঙ্কাকে আমরা যে ২০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছিলাম, সেটা মার্চের মধ্যে ফেরত দেবে বলে জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা। তবে ডলারের দাম এতদিনেও স্বাভাবিক হয়নি। রিজার্ভ বাড়ার পরিবর্তে আরও কমেছে। এছাড়া শ্রীলঙ্কাও বাংলাদেশের ঋণের সব ডলার ফেরত দিতে পারেনি। এর ফলে দেশের বাজারে ডলারের ব্যাপক অস্থিরতা চলছে।