ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৩৯ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩ হাজার ৮৪ জন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত রোববার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩ হাজার ৮৪ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৮৯৪ জন ও ঢাকার বাইরের ২ হাজার ১৯০ জন। একই সময়ে মারা যাওয়া ১৭ জনের মধ্যে ১০ জন ঢাকার ও ৭ জন ঢাকার বাইরের বাসিন্দা। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ৭০ হাজার ৭৬৮ জন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৭৪ হাজার ১২৭ জন ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ৯৬ হাজার ৬৪১ জন ভর্তি হয়েছেন।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৩৯ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৫৭৪ জন এবং ঢাকার বাইরের ২৬৫ জন। এ বছর আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন এক লাখ ৫৯ হাজার ৮৯৭ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৬৯ হাজার ৬৯২ জন এবং ঢাকার বাইরের ৯০ হাজার ২০৫ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১০ হাজার ৩২ জন ডেঙ্গু রোগী। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৩ হাজার ৮৬১ জন এবং ঢাকার বাইরে রয়েছেন ৬ হাজার ১৭১ জন।
২০২২ সালে ডেঙ্গুতে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। ২০২০ সালে করোনা মহামারীকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এদিকে ডেঙ্গু পরীক্ষায় বাড়তি ফি আদায় ও লাইসেন্স নবায়ন না করায় রাজধানীর বেসরকারি ভাটারা জেনারেল হাসপাতাল বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়। সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, মশাবাহিত এই রোগে। মৃতের তালিকাটাও দীর্ঘ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ায় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে বাড়তি ফি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়।
যদিও ডেঙ্গু রোগীদের এনএস-১ অ্যান্টিজেন পরীক্ষার খরচ সরকারি হাসপাতালের জন্য ৫০ টাকা এবং বেসরকারি হাসপাতালের জন্য ৩০০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরে তা কমিয়ে এবার সরকারি হাসপাতালে ৫০ টাকা এবং বেসরকারি হাসপাতালে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার।
কিন্তু অনেক বেসরকারি হাসপাতালে সরকারি নির্দেশনা না মেনে ডেঙ্গু পরীক্ষায় বাড়তি ফি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। এ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হুঁশিয়ারি দিলেও অনেকে তা মানেন না। গতকাল ভাটারা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষায় বাড়তি টাকা নেয়াসহ বেশ কিছু অভিযোগ পায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পরে হাসপাতালটি বন্ধ করে দেয়া হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোর অতিরিক্ত পরিচালক ডা. বেলাল হোসেন বলেন, বেশ কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে ভাটারা জেনারেল হাসপাতালকে বন্ধ ঘোষণা করেছি। আমরা এই কার্যক্রম আরও কিছুদিন পরিচালনা করব।
শিশু হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত এক শিশুর চিকিৎসা চলছে। ওই হাসপাতালে শিশুদের বেশ চাপ রয়েছে -সংবাদ
আরও খবরমঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৫ আশ্বিন ১৪৩০, ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
শিশু হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত এক শিশুর চিকিৎসা চলছে। ওই হাসপাতালে শিশুদের বেশ চাপ রয়েছে -সংবাদ
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৩৯ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩ হাজার ৮৪ জন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত রোববার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩ হাজার ৮৪ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৮৯৪ জন ও ঢাকার বাইরের ২ হাজার ১৯০ জন। একই সময়ে মারা যাওয়া ১৭ জনের মধ্যে ১০ জন ঢাকার ও ৭ জন ঢাকার বাইরের বাসিন্দা। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ৭০ হাজার ৭৬৮ জন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৭৪ হাজার ১২৭ জন ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ৯৬ হাজার ৬৪১ জন ভর্তি হয়েছেন।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৩৯ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৫৭৪ জন এবং ঢাকার বাইরের ২৬৫ জন। এ বছর আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন এক লাখ ৫৯ হাজার ৮৯৭ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৬৯ হাজার ৬৯২ জন এবং ঢাকার বাইরের ৯০ হাজার ২০৫ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১০ হাজার ৩২ জন ডেঙ্গু রোগী। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৩ হাজার ৮৬১ জন এবং ঢাকার বাইরে রয়েছেন ৬ হাজার ১৭১ জন।
২০২২ সালে ডেঙ্গুতে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। ২০২০ সালে করোনা মহামারীকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এদিকে ডেঙ্গু পরীক্ষায় বাড়তি ফি আদায় ও লাইসেন্স নবায়ন না করায় রাজধানীর বেসরকারি ভাটারা জেনারেল হাসপাতাল বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়। সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, মশাবাহিত এই রোগে। মৃতের তালিকাটাও দীর্ঘ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ায় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে বাড়তি ফি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়।
যদিও ডেঙ্গু রোগীদের এনএস-১ অ্যান্টিজেন পরীক্ষার খরচ সরকারি হাসপাতালের জন্য ৫০ টাকা এবং বেসরকারি হাসপাতালের জন্য ৩০০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরে তা কমিয়ে এবার সরকারি হাসপাতালে ৫০ টাকা এবং বেসরকারি হাসপাতালে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার।
কিন্তু অনেক বেসরকারি হাসপাতালে সরকারি নির্দেশনা না মেনে ডেঙ্গু পরীক্ষায় বাড়তি ফি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। এ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হুঁশিয়ারি দিলেও অনেকে তা মানেন না। গতকাল ভাটারা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষায় বাড়তি টাকা নেয়াসহ বেশ কিছু অভিযোগ পায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পরে হাসপাতালটি বন্ধ করে দেয়া হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোর অতিরিক্ত পরিচালক ডা. বেলাল হোসেন বলেন, বেশ কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে ভাটারা জেনারেল হাসপাতালকে বন্ধ ঘোষণা করেছি। আমরা এই কার্যক্রম আরও কিছুদিন পরিচালনা করব।