যশোর জেলা পরিষদ মার্কেটে দোকান বরাদ্দ নিয়ে দু’পক্ষ মুখোমুখি

সংঘর্ষের আশঙ্কা

যশোর জেলা পরিষদ ‘অনুমোদন’ ছাড়াই ৩৩টি দোকান স্থাপন শুরু করেছে। এই দোকান বরাদ্দ নিয়ে পুরনো ও নতুন ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল দুপুরে মার্কেটে পুরনো ব্যবসায়ীরা দোকান নির্মাণ কাজ শুরু করলে জেলা পরিষদ বাধা দেয়। এ সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ কারণে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। অভিযোগ উঠেছে, ‘পুরাতন ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকারভিত্তিক দোকান বরাদ্দ না দিয়ে; মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নতুন ব্যবসায়ীদের কাছে দোকান বরাদ্দ দিচ্ছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও তার ছেলে।

দীর্ঘদিন ধরে যশোর জেলা পরিষদ কার্যালয় প্রাঙ্গণে ও যশোর ইনস্টিটিউট মাঠের এক প্রান্তে পুরাতন কাপড়ের ব্যবসা করে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সম্প্রতি যশোর ইনস্টিটিউটের মাঠ উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বর্ধণের কাজ শুরু করলে ইনস্টিটিউট অংশের ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদকালে মৌখিকভাবে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় উন্নয়নকাজ শেষ হলে এসব ব্যবসায়ীদের জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণের মার্কেটে জায়গা বরাদ্দ দেয়া হবে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গতকাল ওই ১২ পুরাতন ব্যবসায়ীরা জেলা পরিষদ মার্কেটে দোকান তৈরি কারা শুরু করে। দোকান তৈরির এক পর্যায়ে জেলা পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দোকান নির্মাণে বাধা দেন। এ সময় জেলা পরিষদ কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের জানান, এখানে প্রতিটি দোকান নির্মাণ করতে হলে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা দিতে হবে। জেলা পরিষদের কর্মকর্তারা বাধা দিলে জেলা পরিষদ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

যশোর ইনস্টিটিউট মার্কেট অংশের সভাপতি বাবু বিশ^াস অভিযোগ করে বলেন,‘ইনস্টিটিউটের মাঠ থেকে যখন আমাদের উচ্ছেদ করা হচ্ছিল; তখন বলা হয়েছিল জেলা পরিষদের মার্কেটে স্থান দেয়া হবে। সেই মোতাবেক ১২ ব্যবসায়ীরা সরে আসি। আজ জেলা পরিষদের মার্কেটে দোকান নির্মাণ করতে আসলে আমাদের বাধা দেয়া হয়েছে। এখন দোকান নির্মাণ করতে দিবে না; উল্টো প্রতিটি দোকানের জন্য তিন থেকে চার লাখ টাকা দিতে হবে জেলা পরিষদকে।

তিনি জানান, ‘আমাদের জন্য বরাদ্দ জায়গা পুরাতন ব্যবসায়ীদের আগে অগ্রাধিকার না দিয়ে জেলা পরিষদ নতুন ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে। নতুন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তিন থেকে চার লাখ টাকার বিনিময়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল ও তার ছেলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লব দোকান বরাদ্দ দিচ্ছে বলে জানতে পেরেছি।

নাজমুল হোসেন নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা করি পুরাতন কাপড়ের ব্যবসা। এতো টাকা দিয়ে দোকান বরাদ্দ নিবো কীভাবে। জায়গা না দিলে আমরা ব্যবসা করবো কীভাবে। আমাদের জায়গা নতুন ব্যবসায়ীদের কাছে বরাদ্দ দিলে আমরা আন্দোলনে যাব।

এই বিষয়ে যশোর কোতয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) একে এম শফিকুল আলম বলেন, ‘দোকান বরাদ্দকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীদের দু’পক্ষ জড়ো হতে থাকে। এ সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল যেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। কোন প্রকার অপ্রতিকর ঘটনা ঘটেনি।

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান বলেন, ‘অস্থায়ী মার্কেট নির্মাণ করতে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেয়া লাগে না। আমরা নিজেরাই অনুমতি দিতে পারি।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জায়গা বরাদ্দ নিয়ে আমাদের কোন চুক্তি ছিল না। নতুন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিকভাবে দোকান বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নতুনদের কাছ থেকে বাবা ছেলে দোকান বরাদ্দ প্রসঙ্গ তিনি বলেন, তাদের অভিযোগ মিথ্যা।

মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৫ আশ্বিন ১৪৩০, ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

যশোর জেলা পরিষদ মার্কেটে দোকান বরাদ্দ নিয়ে দু’পক্ষ মুখোমুখি

সংঘর্ষের আশঙ্কা

যশোর অফিস

যশোর জেলা পরিষদ ‘অনুমোদন’ ছাড়াই ৩৩টি দোকান স্থাপন শুরু করেছে। এই দোকান বরাদ্দ নিয়ে পুরনো ও নতুন ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল দুপুরে মার্কেটে পুরনো ব্যবসায়ীরা দোকান নির্মাণ কাজ শুরু করলে জেলা পরিষদ বাধা দেয়। এ সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ কারণে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। অভিযোগ উঠেছে, ‘পুরাতন ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকারভিত্তিক দোকান বরাদ্দ না দিয়ে; মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নতুন ব্যবসায়ীদের কাছে দোকান বরাদ্দ দিচ্ছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও তার ছেলে।

দীর্ঘদিন ধরে যশোর জেলা পরিষদ কার্যালয় প্রাঙ্গণে ও যশোর ইনস্টিটিউট মাঠের এক প্রান্তে পুরাতন কাপড়ের ব্যবসা করে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সম্প্রতি যশোর ইনস্টিটিউটের মাঠ উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বর্ধণের কাজ শুরু করলে ইনস্টিটিউট অংশের ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদকালে মৌখিকভাবে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় উন্নয়নকাজ শেষ হলে এসব ব্যবসায়ীদের জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণের মার্কেটে জায়গা বরাদ্দ দেয়া হবে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গতকাল ওই ১২ পুরাতন ব্যবসায়ীরা জেলা পরিষদ মার্কেটে দোকান তৈরি কারা শুরু করে। দোকান তৈরির এক পর্যায়ে জেলা পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দোকান নির্মাণে বাধা দেন। এ সময় জেলা পরিষদ কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের জানান, এখানে প্রতিটি দোকান নির্মাণ করতে হলে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা দিতে হবে। জেলা পরিষদের কর্মকর্তারা বাধা দিলে জেলা পরিষদ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

যশোর ইনস্টিটিউট মার্কেট অংশের সভাপতি বাবু বিশ^াস অভিযোগ করে বলেন,‘ইনস্টিটিউটের মাঠ থেকে যখন আমাদের উচ্ছেদ করা হচ্ছিল; তখন বলা হয়েছিল জেলা পরিষদের মার্কেটে স্থান দেয়া হবে। সেই মোতাবেক ১২ ব্যবসায়ীরা সরে আসি। আজ জেলা পরিষদের মার্কেটে দোকান নির্মাণ করতে আসলে আমাদের বাধা দেয়া হয়েছে। এখন দোকান নির্মাণ করতে দিবে না; উল্টো প্রতিটি দোকানের জন্য তিন থেকে চার লাখ টাকা দিতে হবে জেলা পরিষদকে।

তিনি জানান, ‘আমাদের জন্য বরাদ্দ জায়গা পুরাতন ব্যবসায়ীদের আগে অগ্রাধিকার না দিয়ে জেলা পরিষদ নতুন ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে। নতুন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তিন থেকে চার লাখ টাকার বিনিময়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল ও তার ছেলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লব দোকান বরাদ্দ দিচ্ছে বলে জানতে পেরেছি।

নাজমুল হোসেন নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা করি পুরাতন কাপড়ের ব্যবসা। এতো টাকা দিয়ে দোকান বরাদ্দ নিবো কীভাবে। জায়গা না দিলে আমরা ব্যবসা করবো কীভাবে। আমাদের জায়গা নতুন ব্যবসায়ীদের কাছে বরাদ্দ দিলে আমরা আন্দোলনে যাব।

এই বিষয়ে যশোর কোতয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) একে এম শফিকুল আলম বলেন, ‘দোকান বরাদ্দকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীদের দু’পক্ষ জড়ো হতে থাকে। এ সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল যেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। কোন প্রকার অপ্রতিকর ঘটনা ঘটেনি।

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান বলেন, ‘অস্থায়ী মার্কেট নির্মাণ করতে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেয়া লাগে না। আমরা নিজেরাই অনুমতি দিতে পারি।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জায়গা বরাদ্দ নিয়ে আমাদের কোন চুক্তি ছিল না। নতুন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিকভাবে দোকান বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নতুনদের কাছ থেকে বাবা ছেলে দোকান বরাদ্দ প্রসঙ্গ তিনি বলেন, তাদের অভিযোগ মিথ্যা।