চিকিৎসা খাতে আগের চেয়ে পরিবর্তন এসেছে। কিছু উন্নতিও হয়েছে। সবচেয়ে আলোচিত যে বিষয়টি তা হলো কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা।
কিন্তু আমাদের চিকিৎসা খাতের কিছু দিক সবসময় অবহেলিত রয়ে গেছে। ১৩৬টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের পাশাপাশি প্রতিটি জেলা কিংবা বিভাগীয় শহরের অসংখ্য অনুমোদনহীন ও অনবায়নকৃত ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। এতে সরকার যেমন রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়, তেমনি জনগণ বঞ্চিত হয় সুচিকিৎসা থেকে। অনুমোদনহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে যেমন অধিক মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা থাকে, তেমনি অনেক সময় লাইসেন্সবিহীন চিকিৎসকও থাকে, যাদের হাতে রোগী নিরাপদ না।
সদর হাসপাতাল এবং বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত ও দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। বিপুল সংখ্যক রোগীকে দেখাশোনার দায়িত্ব যখন ক্ষুদ্র অংশের উপর বর্তায়, তখন সার্বক্ষণিক সুচিকিৎসা দেয়া হয়ে উঠে দুষ্কর।
হাসপাতালগুলোতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার অধিকাংশ যন্ত্রপাতি অকেজো থাকে। এ সমস্যার সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী হলো দালালরা। আর ভুক্তভোগী হলো রোগীরা। এছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্লিনিকগুলোতে সবাই পরীক্ষা নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি অনুপস্থিত বিধায় রোগীদের শহরমুখী হতে হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, যা তাদের জন্য যেমন সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়সাপেক্ষ তেমন ক্ষতিকরও।
ডাক্তার এবং রোগীর সম্পর্কের দুরবস্থা খুব প্রকট। রোগীদের প্রতি ডাক্তারদের আচরণ সম্পর্কে অনেক রোগীই সন্তুষ্ট না, যার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ ডাক্তারদের সঙ্গে রোগীর কিংবা তার আত্মীয়স্বজনের প্রায়শই ভুল বোঝাবোঝির ঘটনা দেখা দেয়।
চিকিৎসা খাতের এই নেতিবাচক দিকগুলো সমাধানের উদ্দেশ্য আমাদের কাজ করতে হবে। অনুমোদনহীন এবং অনবায়নকৃত ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে অতি দ্রুত বন্ধ করতে হবে। চিকিৎসার গুনমান বৃদ্ধির লক্ষ্যে হাসপাতাল গুলোর শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি দক্ষ জনবল গড়ে তোলাও অতীব জরুরি। দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে না পারলে যেমন চিকিৎসা ব্যবস্থায় মরিচা ধরবে, তেমনি স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনেও অন্তরায় হিসেবে কাজ করবে।
রাশেদ হোসেন
মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৫ আশ্বিন ১৪৩০, ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫
চিকিৎসা খাতে আগের চেয়ে পরিবর্তন এসেছে। কিছু উন্নতিও হয়েছে। সবচেয়ে আলোচিত যে বিষয়টি তা হলো কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা।
কিন্তু আমাদের চিকিৎসা খাতের কিছু দিক সবসময় অবহেলিত রয়ে গেছে। ১৩৬টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের পাশাপাশি প্রতিটি জেলা কিংবা বিভাগীয় শহরের অসংখ্য অনুমোদনহীন ও অনবায়নকৃত ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। এতে সরকার যেমন রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়, তেমনি জনগণ বঞ্চিত হয় সুচিকিৎসা থেকে। অনুমোদনহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে যেমন অধিক মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা থাকে, তেমনি অনেক সময় লাইসেন্সবিহীন চিকিৎসকও থাকে, যাদের হাতে রোগী নিরাপদ না।
সদর হাসপাতাল এবং বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত ও দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। বিপুল সংখ্যক রোগীকে দেখাশোনার দায়িত্ব যখন ক্ষুদ্র অংশের উপর বর্তায়, তখন সার্বক্ষণিক সুচিকিৎসা দেয়া হয়ে উঠে দুষ্কর।
হাসপাতালগুলোতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার অধিকাংশ যন্ত্রপাতি অকেজো থাকে। এ সমস্যার সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী হলো দালালরা। আর ভুক্তভোগী হলো রোগীরা। এছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্লিনিকগুলোতে সবাই পরীক্ষা নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি অনুপস্থিত বিধায় রোগীদের শহরমুখী হতে হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, যা তাদের জন্য যেমন সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়সাপেক্ষ তেমন ক্ষতিকরও।
ডাক্তার এবং রোগীর সম্পর্কের দুরবস্থা খুব প্রকট। রোগীদের প্রতি ডাক্তারদের আচরণ সম্পর্কে অনেক রোগীই সন্তুষ্ট না, যার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ ডাক্তারদের সঙ্গে রোগীর কিংবা তার আত্মীয়স্বজনের প্রায়শই ভুল বোঝাবোঝির ঘটনা দেখা দেয়।
চিকিৎসা খাতের এই নেতিবাচক দিকগুলো সমাধানের উদ্দেশ্য আমাদের কাজ করতে হবে। অনুমোদনহীন এবং অনবায়নকৃত ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে অতি দ্রুত বন্ধ করতে হবে। চিকিৎসার গুনমান বৃদ্ধির লক্ষ্যে হাসপাতাল গুলোর শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি দক্ষ জনবল গড়ে তোলাও অতীব জরুরি। দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে না পারলে যেমন চিকিৎসা ব্যবস্থায় মরিচা ধরবে, তেমনি স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনেও অন্তরায় হিসেবে কাজ করবে।
রাশেদ হোসেন