পীযূষ কান্তি বড়ুয়ার সুবর্ণ স্মারক

সজীব মোহাম্মদ আরিফ

“প্রাণবন্ত পঞ্চাশে” সব্যসাচী লেখক পীযূষ কান্তি বড়ুয়ার পঞ্চাশতম জন্মবার্ষিক স্মারক। কবি মুহাম্মদ ফরিদ হাসান, মাইনুল ইসলাম মানিক, কাদের পলাশ ও আরিফ রাসেলের নিপুণ হাতে চিত্রিত হয়েছে পীযূষ কান্তি বড়ুয়ার পঞ্চাশ বছরের জীবনপূর্তিতে শিল্প-সাহিত্য ও যাপিত জীবনের নান্দনিক প্রতিচ্ছবি। যাকে ঘিরে এই আয়োজন তিনি সব্যসাচী লেখক পীযূষ কান্তি বড়ুয়া। জন্ম, বেড়ে ওঠা ও শিক্ষা জীবন চট্টগ্রামে অতিবাহিত হলেও পেশাগত কারণে তিনি চাঁদপুরে স্থায়ী নিবাস গড়ে তুলেছেন। পেশাগত জীবনে তিনি একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক। শিল্পজীবনে তিনি একাধারে একজন কবি, ছড়াকার, শিশু সাহিত্যিক, গীতিকার, নাট্যকার, গবেষক, প্রাবন্ধিক, অনুবাদক, কলামিস্ট,বিতার্কিক ও সংগঠক। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তাঁর এখনও পর্যন্ত বাইশটি মৌলিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।

‘প্রাণবন্ত পঞ্চাশে’ শীর্ষক স্মারকগ্রন্থে ফুটে উঠেছে পীযূষ কান্তি বড়–য়ার সৃষ্টিশীল কর্মের বিভিন্ন দিক। তার ভক্তকুল, পাঠক, অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ীদের জন্যে এটা হতে পারে অমৃতধারা। পীযূষ বড়–য়ার জন্ম, শৈশব, শিক্ষাজীবনসহ ফু০টে উঠেছে তার যাপিত জীবনের চৌম্বক অংশ।

‘প্রাণবন্ত পঞ্চাশে’ গ্রন্থে স্থান পেয়েছে সব্যসাচী লেখক পীযূষ কান্তি বড়–য়ার লেখার উল্লেখযোগ্য অংশ যার মধ্যে রয়েছে কিশোর কবিতা, শিশুতোষ ছড়া, অনুবাদ ছড়া, শিশুতোষ গল্প, বড়দের ছড়া, কবিতা, ছোটগল্প, নাটক, বিতর্ক-সাহিত্য, বিজ্ঞান-সাহিত্য, চিকিৎসা বিজ্ঞান, প্রবন্ধ, গানের কবিতা ইত্যাদি। আরও গ্রন্থিত হয়েছে লেখকের প্রাপ্তির বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্নসহ প্রকাশিত গ্রন্থসমূহের প্রচ্ছদ চিত্র। রয়েছে লেখকের একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকার।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি’র ভূমিকা সম্বলিত এই গ্রন্থে স্থান পেয়েছে কবিপত্নী মুক্তা পীযূষসহ দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন কবি, লেখক, সাংবাদিক ও ?গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের লেখক সম্পর্কে মূল্যায়ন, স্মৃতিচারণ, পাঠ প্রতিক্রিয়া ও সাহিত্য পর্যালোচনা। লেখক পীযূষ কান্তি বড়ুয়াকে জানতে ‘প্রাণবন্ত পঞ্চাশে’ হতে পারে একটি উত্তম ও মননশীল মাধ্যম।

সমালোচকের দৃষ্টিতে বলতে হয়, বইটিতে বিভিন্নজনের লেখায় লেখকের সৃষ্টিশীলতার অধিকাংশ বিষয় ফুটে উঠলেও আমার মতে পীযূষ কান্তি বড়ুয়ার সব থেকে বড় গুণটাই এখানে উহ্য রয়েছে। ?পীযূষ কান্তি বড়ুয়াকে আমার কাছে মনে হয়েছে একজন ইতিহাসবেত্তা। বিশেষ করে বিশ্বের প্রচলিত ধর্মসমূহের উৎপত্তি বিকাশ ও ঐতিহাসিক ঘটনা প্রবাহ তাঁর কাছে আদর্শলিপির মতো ঠোঁটস্থ।?তুখোড় স্মৃতিশক্তির অধিকারী পীযূষ কান্তি বড়ুয়া বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহ বলে দিতে পারেন সন-তারিখ-সময়সহ। এছাড়া মৃদুভাষী পীযূষ?কান্তি বড়ুয়া একজন অসাধারণ বক্তাও বটে। রাজনৈতিক কর্মী না হলেও দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে রাজনৈতিক পথ পরিক্রমা সম্পর্কে রাখেন অগাধ জ্ঞান। আপাদমস্তক অসাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী পীযূষ কান্তি বড়ুয়া মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে শতভাগ আপোসহীন। অনুজ লেখক ও? তরুণদের প্রতি রয়েছে তাঁর গভীর মমত্ববোধ।

চমৎকার প্রচ্ছদে সজ্জিত ১৬ ফর্মার বইটিতে সব্যসাচী লেখক পীযূষ কান্তি বড়–য়ার পঞ্চাশ বছরের শিল্প-সাহিত্য ও ?ব্যক্তিজীবনের প্রায় ১৬ আনাই ফুটে উঠেছে। গ্রন্থটি চাঁদপুর তথা বাংলাদেশের সাহিত্য ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন বলে আমি মনে করি।

বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩ , ৩০ কার্তিক ১৪৩০, ৩০ রবিউস সানি ১৪৪৫

পীযূষ কান্তি বড়ুয়ার সুবর্ণ স্মারক

সজীব মোহাম্মদ আরিফ

image

“প্রাণবন্ত পঞ্চাশে” সব্যসাচী লেখক পীযূষ কান্তি বড়ুয়ার পঞ্চাশতম জন্মবার্ষিক স্মারক। কবি মুহাম্মদ ফরিদ হাসান, মাইনুল ইসলাম মানিক, কাদের পলাশ ও আরিফ রাসেলের নিপুণ হাতে চিত্রিত হয়েছে পীযূষ কান্তি বড়ুয়ার পঞ্চাশ বছরের জীবনপূর্তিতে শিল্প-সাহিত্য ও যাপিত জীবনের নান্দনিক প্রতিচ্ছবি। যাকে ঘিরে এই আয়োজন তিনি সব্যসাচী লেখক পীযূষ কান্তি বড়ুয়া। জন্ম, বেড়ে ওঠা ও শিক্ষা জীবন চট্টগ্রামে অতিবাহিত হলেও পেশাগত কারণে তিনি চাঁদপুরে স্থায়ী নিবাস গড়ে তুলেছেন। পেশাগত জীবনে তিনি একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক। শিল্পজীবনে তিনি একাধারে একজন কবি, ছড়াকার, শিশু সাহিত্যিক, গীতিকার, নাট্যকার, গবেষক, প্রাবন্ধিক, অনুবাদক, কলামিস্ট,বিতার্কিক ও সংগঠক। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তাঁর এখনও পর্যন্ত বাইশটি মৌলিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।

‘প্রাণবন্ত পঞ্চাশে’ শীর্ষক স্মারকগ্রন্থে ফুটে উঠেছে পীযূষ কান্তি বড়–য়ার সৃষ্টিশীল কর্মের বিভিন্ন দিক। তার ভক্তকুল, পাঠক, অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ীদের জন্যে এটা হতে পারে অমৃতধারা। পীযূষ বড়–য়ার জন্ম, শৈশব, শিক্ষাজীবনসহ ফু০টে উঠেছে তার যাপিত জীবনের চৌম্বক অংশ।

‘প্রাণবন্ত পঞ্চাশে’ গ্রন্থে স্থান পেয়েছে সব্যসাচী লেখক পীযূষ কান্তি বড়–য়ার লেখার উল্লেখযোগ্য অংশ যার মধ্যে রয়েছে কিশোর কবিতা, শিশুতোষ ছড়া, অনুবাদ ছড়া, শিশুতোষ গল্প, বড়দের ছড়া, কবিতা, ছোটগল্প, নাটক, বিতর্ক-সাহিত্য, বিজ্ঞান-সাহিত্য, চিকিৎসা বিজ্ঞান, প্রবন্ধ, গানের কবিতা ইত্যাদি। আরও গ্রন্থিত হয়েছে লেখকের প্রাপ্তির বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্নসহ প্রকাশিত গ্রন্থসমূহের প্রচ্ছদ চিত্র। রয়েছে লেখকের একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকার।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি’র ভূমিকা সম্বলিত এই গ্রন্থে স্থান পেয়েছে কবিপত্নী মুক্তা পীযূষসহ দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন কবি, লেখক, সাংবাদিক ও ?গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের লেখক সম্পর্কে মূল্যায়ন, স্মৃতিচারণ, পাঠ প্রতিক্রিয়া ও সাহিত্য পর্যালোচনা। লেখক পীযূষ কান্তি বড়ুয়াকে জানতে ‘প্রাণবন্ত পঞ্চাশে’ হতে পারে একটি উত্তম ও মননশীল মাধ্যম।

সমালোচকের দৃষ্টিতে বলতে হয়, বইটিতে বিভিন্নজনের লেখায় লেখকের সৃষ্টিশীলতার অধিকাংশ বিষয় ফুটে উঠলেও আমার মতে পীযূষ কান্তি বড়ুয়ার সব থেকে বড় গুণটাই এখানে উহ্য রয়েছে। ?পীযূষ কান্তি বড়ুয়াকে আমার কাছে মনে হয়েছে একজন ইতিহাসবেত্তা। বিশেষ করে বিশ্বের প্রচলিত ধর্মসমূহের উৎপত্তি বিকাশ ও ঐতিহাসিক ঘটনা প্রবাহ তাঁর কাছে আদর্শলিপির মতো ঠোঁটস্থ।?তুখোড় স্মৃতিশক্তির অধিকারী পীযূষ কান্তি বড়ুয়া বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহ বলে দিতে পারেন সন-তারিখ-সময়সহ। এছাড়া মৃদুভাষী পীযূষ?কান্তি বড়ুয়া একজন অসাধারণ বক্তাও বটে। রাজনৈতিক কর্মী না হলেও দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে রাজনৈতিক পথ পরিক্রমা সম্পর্কে রাখেন অগাধ জ্ঞান। আপাদমস্তক অসাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী পীযূষ কান্তি বড়ুয়া মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে শতভাগ আপোসহীন। অনুজ লেখক ও? তরুণদের প্রতি রয়েছে তাঁর গভীর মমত্ববোধ।

চমৎকার প্রচ্ছদে সজ্জিত ১৬ ফর্মার বইটিতে সব্যসাচী লেখক পীযূষ কান্তি বড়–য়ার পঞ্চাশ বছরের শিল্প-সাহিত্য ও ?ব্যক্তিজীবনের প্রায় ১৬ আনাই ফুটে উঠেছে। গ্রন্থটি চাঁদপুর তথা বাংলাদেশের সাহিত্য ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন বলে আমি মনে করি।