আমন খেতে পোকার আক্রমণে ফসল বিনষ্ট, দিশেহারা কৃষক

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে চলতি আমন ধান ফসলে গোড়া পচন রোগ ও পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ২শ’ বিঘা আমন ফসলি মাঠের ধান বিনষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। বছরের খোরাক সহ একমাত্র আয়ের উৎস ক্ষতির আংশকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে শত শত কৃষকেরা।

স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় জমিতে পানির ব্যবস্থা না দিতে পারায় মাটি থেকে লবণাক্ততা সৃষ্টি হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যে ধানের শীষের গোড়া পচন রোগ ও পোকার আক্রমনের কারন। সার ওষুধ ব্যবহার করেও প্রতিকার মিলছে না। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নের সোমাদ্দারখালী পাথুরিয়া কালিবাড়ি প্রায় প্রায় ২শ’ বিঘা আমন ধানের ফসলী জমিতে পোকা আক্রমন ও গোড়া পচন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে মাঠের পর মাঠ সোনালী ধানের ফসল। ধানের শীষে কেবলমাত্র কাইচধোর এসেছে। দুই এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি শীষে দুধ ধান বেড়িয়ে আসবে। আগাম এ উচ্চ ফলনশীল জাতের বি আর ২৩/১১, চাষাবাদ বেশী হয়েছে। পাশাপাশি দেশী আমনেও ক্ষেতেও পোকার আক্রমণ দেখা গিয়েছে। এ ছাড়াও নিশানবাড়িয়া, বারইখালী, রামচন্দ্রপুর, পঞ্চকরণ, হোগলাবুনিয়া, হোগলাপাশা, বনগ্রাম ও তেলিগাতী ইউনিয়নে কিছু কিছু জমিতে পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে। এদিকে কৃষকদেরকে সচেতনার লক্ষে প্রতিরোধে লিফলেট বিতরণ ও সভা করে পরামর্শ দিচ্ছেন উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।

সোমাদ্দারখালী গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বিশৎ দাস, জোতিন হালদার, অনুতোষ হালদার, তাপস দাস, অজিৎ মিস্ত্রী, মিন্টু বিশ্বাসসহ আরও অনেক কৃষকরা বলেন, এ রোগের প্রথমে লক্ষ্যন ধানের শীষের গোড়া থেকে পচন ধরে আগা পর্যন্ত যেতে না যেতেই শুকিয়ে যায়। কম সময়ের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে। প্রতিটি কৃষকের এ পর্যন্ত জমি অনুপাতে ক্ষেতে ব্যায় হয়েছে ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত। গত বছরে যে জমিতে তারা ৬০/৭০ মন আমন ধান ঘরে তুলতে পারতো। এ বছরে খরচের টাকা উঠবে কিনা তা নিয়ে আংকায় পড়েছে কৃষকরা। বছরের খোরাক চলবে কিভাবে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌরসভায় ২৬ হাজার ৩৯৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ করেছেন কৃষকরা। ইতোমধ্যে উফশী ফলন ধান প্রায় ১২শ’ হেক্টর কর্তন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট জিউধরা ইউনিয়নে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, সোমাদ্দারখালী ও কালিবাড়ি এলাকায় কিছু অংশ আমন ফসলে পোকা আক্রমন ও পচন রোগ দেখা গিয়েছে। করনীয় সর্ম্পকে কৃষকদের নিয়ে উঠান বৈঠক ও সভা, লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।

এ সম্পর্কে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আকাশ বৈরাগী বলেন, জিউধরা ইউনিয়নসহ কয়েকটি ইউনিয়নে আমন ফসলে প্রথম পর্যায়ে যেভাবে পোকার আক্রমণ দেখা গিয়েছিল এখন কিছতা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে, কি পরিমাণ জমিতে আক্রান্ত হয়েছে তা সঠিক নিরুপণ করা যায়নি। মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ অব্যাহত রেখেছেন কৃষকদের।

image

মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) : উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এভাবেই পোকায় বিনষ্ট করছে আমন খেত -সংবাদ

আরও খবর
ডোমারে হঠাৎ গ্রামের চলাচলের রাস্তা না থাকায় জনদুর্ভোগ
কান্দাগাও প্রাথমিককে নিম্নœমাধ্যমিকে উন্নীত করা হলেও নিয়োগ হয়নি কোন শিক্ষক

বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩ , ৩০ কার্তিক ১৪৩০, ৩০ রবিউস সানি ১৪৪৫

আমন খেতে পোকার আক্রমণে ফসল বিনষ্ট, দিশেহারা কৃষক

প্রতিনিধি, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট)

image

মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) : উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এভাবেই পোকায় বিনষ্ট করছে আমন খেত -সংবাদ

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে চলতি আমন ধান ফসলে গোড়া পচন রোগ ও পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ২শ’ বিঘা আমন ফসলি মাঠের ধান বিনষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। বছরের খোরাক সহ একমাত্র আয়ের উৎস ক্ষতির আংশকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে শত শত কৃষকেরা।

স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় জমিতে পানির ব্যবস্থা না দিতে পারায় মাটি থেকে লবণাক্ততা সৃষ্টি হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যে ধানের শীষের গোড়া পচন রোগ ও পোকার আক্রমনের কারন। সার ওষুধ ব্যবহার করেও প্রতিকার মিলছে না। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নের সোমাদ্দারখালী পাথুরিয়া কালিবাড়ি প্রায় প্রায় ২শ’ বিঘা আমন ধানের ফসলী জমিতে পোকা আক্রমন ও গোড়া পচন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে মাঠের পর মাঠ সোনালী ধানের ফসল। ধানের শীষে কেবলমাত্র কাইচধোর এসেছে। দুই এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি শীষে দুধ ধান বেড়িয়ে আসবে। আগাম এ উচ্চ ফলনশীল জাতের বি আর ২৩/১১, চাষাবাদ বেশী হয়েছে। পাশাপাশি দেশী আমনেও ক্ষেতেও পোকার আক্রমণ দেখা গিয়েছে। এ ছাড়াও নিশানবাড়িয়া, বারইখালী, রামচন্দ্রপুর, পঞ্চকরণ, হোগলাবুনিয়া, হোগলাপাশা, বনগ্রাম ও তেলিগাতী ইউনিয়নে কিছু কিছু জমিতে পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে। এদিকে কৃষকদেরকে সচেতনার লক্ষে প্রতিরোধে লিফলেট বিতরণ ও সভা করে পরামর্শ দিচ্ছেন উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।

সোমাদ্দারখালী গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বিশৎ দাস, জোতিন হালদার, অনুতোষ হালদার, তাপস দাস, অজিৎ মিস্ত্রী, মিন্টু বিশ্বাসসহ আরও অনেক কৃষকরা বলেন, এ রোগের প্রথমে লক্ষ্যন ধানের শীষের গোড়া থেকে পচন ধরে আগা পর্যন্ত যেতে না যেতেই শুকিয়ে যায়। কম সময়ের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে। প্রতিটি কৃষকের এ পর্যন্ত জমি অনুপাতে ক্ষেতে ব্যায় হয়েছে ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত। গত বছরে যে জমিতে তারা ৬০/৭০ মন আমন ধান ঘরে তুলতে পারতো। এ বছরে খরচের টাকা উঠবে কিনা তা নিয়ে আংকায় পড়েছে কৃষকরা। বছরের খোরাক চলবে কিভাবে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌরসভায় ২৬ হাজার ৩৯৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ করেছেন কৃষকরা। ইতোমধ্যে উফশী ফলন ধান প্রায় ১২শ’ হেক্টর কর্তন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট জিউধরা ইউনিয়নে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, সোমাদ্দারখালী ও কালিবাড়ি এলাকায় কিছু অংশ আমন ফসলে পোকা আক্রমন ও পচন রোগ দেখা গিয়েছে। করনীয় সর্ম্পকে কৃষকদের নিয়ে উঠান বৈঠক ও সভা, লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।

এ সম্পর্কে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আকাশ বৈরাগী বলেন, জিউধরা ইউনিয়নসহ কয়েকটি ইউনিয়নে আমন ফসলে প্রথম পর্যায়ে যেভাবে পোকার আক্রমণ দেখা গিয়েছিল এখন কিছতা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে, কি পরিমাণ জমিতে আক্রান্ত হয়েছে তা সঠিক নিরুপণ করা যায়নি। মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ অব্যাহত রেখেছেন কৃষকদের।